আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডাঃ জাকির নায়েকের ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বের দ্বীনী বিষয়ের এক প্রোজ্জ্বল আলোকবর্তীকা ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম দেওবন্দের যুগান্তকারী ফাতওয়া

[এই লেখাটি jamiatulasad.com এ প্রকাশিত হয়েছে। পাঠকদের জানার প্রয়োজনে এখানে পোষ্ট করলাম] প্রসঙ্গঃ ডাঃ জাকির নায়েক ‎[দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া]‎ সমস্যাঃ ‎ সম্মানিত মুফতি সাহেবান, (আল্লাহ আপনাদেরকে দীর্ঘজীবি করুন)‎ জানার বিষয় হল ডা. জাকির নায়ক ব্যক্তিটি কেমন? তার আকিদা-বিশ্বাস কি আহলে সুন্নাত ‎ওয়াল জামাতের আকিদা-বিশ্বাসের সাথে সামাঞ্জস্যশীল? হাদিসের ব্যাখ্যা ও কুরআনের ‎তাফসীরের ক্ষেত্রে তার মতামত কতটুকু গ্রহণ যোগ্য? এবং ফিকহ সাস্ত্রে তার মাযহাব কি? ‎তিনি কোন ইমামের অনুসারী? আমরা তার আলোচনা শুনে তার উপর আমল করতে পারব ‎কি না? দয়া করে সন্তুষজনক উত্তর দিয়ে ধন্য করবেন। ‎ নিবেদক রিয়াজ আহমদ খাঁন আলিয়া প্রিন্টার্স, উত্তর সুইয়া, ইলাহবাদ, ভারত। ‎ ‎দৃষ্টি আর্কষণ ডাঃ জাকির নায়েক সর্ম্পকে প্রতিনিয়ত ধারাবাহিকভাবে প্রশ্ন আসছেই, এই প্রশ্নটিও ঐ ‎ধারবাহিকতার অংশ বিশেষ। এখানে তার আকিদা-বিশ্বাস ও মাযহাব এবং কুরআন-‎হাদিস সম্পর্কে তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মূল্যায়ন, বিস্তারিত আলোচনার আবেদন করা ‎হয়েছে।

তাই, ডাঃ জাকির নায়কের আলোচনা ও রচনাকে সামনে রেখে একটি সবিস্তার ‎সমাধান পেশ করা হল। ‎ সমাধান ‎ আল্লাহ তা‘য়ালাই তাওফীক দাতা ও তিনিই পদস্খলন থেকে রক্ষাকর্তা। ‎ ডাঃ জাকির নায়ক সাহেবের বক্তব্য ও আলোচনায় বিশুদ্ধ আকিদা-বিশ্বাসের বিকৃতি, পবিত্র ‎কুরআনের মনগড়া অপব্যাখ্যা, বিজ্ঞানের চুলচেরা বিশ্লেষণের আতঙ্ক, ইসলাম বিদ্ধেষী ‎পশ্চিমা বিশ্বের চেতনা এবং ফিক্হি মাসায়িল সমূহে সালফে সালেহীন ও উম্মতের ‎অধিকাংশ ওলামায়ে কিরামগণের মত ও পথ থেকে বিচ্যুতির মত ভ্রষ্টতা অনুভূত হয়। ‎ এবং তিনি মুসলিম জাতিকে মুজতাহিদ ইমামগণের অনুসরণ থেকে বিরত, দ্বীনি মাদরাসা ‎সমূহ থেকে মানুষকে বিমুখ এবং হক্বানী ওলামায়ে কিরামদেরকে জনসাধরণের কাছে ‎সন্দেহান্বিত ও হেয় প্রতিপন্ন করার অপ-প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। নিম্নে তার অসামানঞ্জস্যপূর্ণ ‎কিছু আলোচনার উদাহরণ দেয়া হলো।

‎ [এক] আকিদা সর্ম্পকে ডাঃ জাকির নায়ক সাহেবের কয়েকটি মন্তব্যঃ‎ আকিদা- অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়! তাতে সমান্য পদস্খলন অনেক সময় ঈমানের জন্য ‎আশঙ্কাজনক হয়ে দাঁড়ায়। এই আকিদা সর্ম্পকে ডাঃ জাকির নায়ক সাহেবের মন্তব্য- ‎ ‎(ক) ‘বিষ্ণু’ ও ‘ব্রাহ্মম’ বলে আল্লাহ তা‘য়ালাকে ডাকা বৈধ। ‎ ডাক্তার সাহেব এক প্রোগ্রামে আলোচনার এক পর্যায়ে বলেন,‎ “আল্লাহ তা‘য়ালাকে হিন্দুদের উপাস্যদের নামে ডাকা বৈধ, যেমন ‘বিষ্ণু অর্থ প্রভু ‎এবং ‘ব্রাহ্মণ’ অর্থ সৃষ্টিকর্তা। তবে শর্ত হল এই বিশ্বাস রাখা যাবে না যে, বিষ্ণুর ‎চারটি হাত রয়েছে এবং পাখির উপর আরোহিত” অথচ অনারবী ঐ সকল শব্দ দ্বারাই এক মাত্র আল্লাহ তা‘য়ালাকে ডাকা যায় যা ‎‎কেবল মাত্র আল্লাহ তা‘য়ালার জন্যই নির্দিষ্ট। তা ব্যতীত অন্য কোন শব্দ যেমন ‎বিষ্ণু, ব্রাহ্মণ [যা হিন্দুদের প্রতীক] তা দ্বারা আল্লাহকে ডাকা কোনভাবেই বৈধ নয়।

‎ ‎ (খ) আল্লাহ তা‘য়ালার কালাম (কুরআন শরিফ) বিজ্ঞান ও টেকনোলজী দ্বারা প্রমাণ ‎ করা জরুরি। ‎ ডাক্তর সাহেব এক প্রোগ্রামে বলেন, মানুষ মনে করে পবিত্র কুরআন মজিদ আল্লাহ ‎তা‘য়ালার কালাম (বাণী)। কিন্তু কোনটি প্রকৃত আল্লাহর কিতাব তা জানতে হলে ‎আপনাকে সর্বশেষ পরীক্ষা ‘আধুনিক বিজ্ঞান ও টেকনোলজী’ দ্বারা তা প্রমাণ করাতে ‎হবে। যদি তা আধুনিক বিজ্ঞান সমর্থন করে তাহলে ধরে নিতে হবে তা আল্লাহর ‎কিতাব ‎। ‎এ কথা দ্বারা ডাক্তার সাহেবের পবিত্র কুরআন সর্ম্পকে নির্ভীকতা ও চিন্তার বিপথগামীতা ‎এবং অধুনিক বিজ্ঞানের প্রতি অতিভক্তির অসারতা প্রমাণিত হয়।

তিনি প্রতিনিয়ত ‎পরিবর্তনশীল অধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণাকে আসমানী কিতাব বিশেষত আল্লাহ তা‘য়ালার ‎পবিত্র কালাম ‘কুরআন’ মজিদের সততা প্রমাণের মানদণ্ড সাব্যস্ত করেছেন। অথচ কুরআন ‎মজিদ আল্লাহ তা‘য়ালার কালাম বা বাণী হওয়ার বড় প্রমাণ তার ‘ই‘জাজ’ বা তার মত রচনা ‎‎থেকে মানুষকে অক্ষম করে দেয়া। এটা দিয়ে আল্লাহ তা‘য়ালা বিভিন্ন স্থানে চ্যাল্যাঞ্জ ঘোষণা ‎করেছেন। ‎ ‎(গ) ফতোয়া দেয়ার অধিকার সকলের রয়েছে অন্যত্র ডঃ. জাকির নায়ক সাহেব বলেন, ‘যে কোন মানুষের ফতোয়া দেয়ার অধিকার রয়েছে’ ‎কারণ ফতোয়া দেয়া মানে অভিমত ব্যক্ত করা ‎। ‎ ফতোয়া মূলতঃ এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহঃ-এর ভাষ্যমতে, মুফতি ‎আল্লাহ তা‘য়ালার বিধান বর্ণনায় তাঁরই ভাষ্যকার ও স্থলাভিষিক্ত হয়ে স্বাক্ষরের যিম্মাদার ‎হয়ে থাকেন।

‎ لم تصلح مرتبة التبليغ بالرواية‎ ‎والفتيا إلا لمن اتصف بالعلم والصدق………..وإذا كان منصب التوقيع عن الملوك‎ ‎بالمحل ‏الذي لا يُنكر فضله ، ولا يُجهل قدره ، وهو أعلى المراتب السنيّات‏‎ ‎، فكيف بمنصب التوقيع عن رب الأرض والسموات ؟ ‏فحقيق بمن أُقيم في هذا المنصب أن يعد له عدته ، وان يتأهب له أهبته ، وأن يعلم قدر المقام الذي أُقيم فيه .‏ ‏ ‏ অর্থঃ আলিম ও সত্যবাদীরা ছাড়া অন্য কেউ হাদিস বর্ণনা ও ফতোয়ার যোগ্য ‎নই_____। যখন পৃথিবীর রাজা-বাদশাহদের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পদমর্যদা অস্বীকার ও ‎ভুলে যাওয়ার মত নয়, বরং তা সর্বোচ্চ সম্মান ও পদ হিসেবে বিবেচিত, তাহলে নভোমন্ডল ‎ও ভুমন্ডলের প্রভুর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার মর্যদা কতইনা বড় হবে? প্রকৃত বিষয় হল, যাকে ‎এই দায়িত্ব দেয়া হবে তাকে এব্যাপারে অভিজ্ঞ ও দক্ষ এবং এই পদমর্যদার তাৎপর্য ‎অনুধাবনকারী হতে হবে। ‎ ডাক্তার সাহেব ফতোয়াকে ‘অভিমত’ বলে একটি সাধারণ শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার মাধ্যমে ‎শুধু নিজের জন্য নয় বরং অভিজ্ঞ ও অনভিজ্ঞ সকলের জন্য ফতোয়ার দ্বার উন্মুক্ত করে ‎দিলেন। এবং তিনি পবিত্র কুরআনের এই আয়াত-‎ ‏فسئلوا اهل الذكر ان كنتم لاتعلمون ‎(অর্থ: যদি তোমরা না জেনে থাক তাহলে জ্ঞানীদের কাছ থেকে জেনে নাও)‎‏ ‏এবং রাসুলুল্লাহ ‎সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নের হাদিসটি সম্পূর্ণরূপে ভুলে গেলেন;‎ من افتى بغيرعلم كان إثمه على من أفتاه ‎(অর্থাৎ যে ব্যক্তি পূর্ণ জ্ঞানী হওয়া ছাড়া (অশুদ্ধ) ফতোয়া দেয় ঐ (অশুদ্ধ) ফতোয়ার গুনাহ ‎ফতোয়া প্রদানকারীর উপরই বর্তাবে। ‎ ‎ [দুই] তাফসীরের মনগড়া ব্যাখ্যা তথা অর্থ বিকৃতি:‎ কুরআন মজিদের তাফসীরের বিষয়টি খুবই সুক্ষ্ম।

কেননা মুফাস্সির আয়াত থেকে আল্লাহ ‎তা‘য়ালার উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট করেন যে, আল্লাহ তা‘য়ালা এই অর্থই বুঝিয়েছেন। তাই অযোগ্য ‎‎লোকদের এ বিষয়ে পা রাখা অত্যন্ত বিপদজনক। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে-‎ من قال في القرآن برأيه فليتبوأمقعده من النار অর্থঃ যে ব্যক্তি মনগড়া কুরআনের তাফসীর করল সে জাহান্নামে আপন স্থান বানিয়ে নিল, ‎‎(তিরমিযি শরিফ-২৯৫১)‎ তাই মুফাস্সিরের জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যেমন, ‎ ‎১. কুরআনের সকল আয়াতের উপর দৃষ্টি থাকতে হবে। ‎ ‎২. হাদীসের ভান্ডার থেকে সংশ্লিষ্ট প্রচুর হাদীসের জ্ঞান থাকতে হবে।

‎ ‎৩. আরবী ভাষা ও ব্যকরণ তথা নাহু, ছরফ, ইশতিক্বাক্ব, এবং অলঙ্কার শাস্ত্রে ‎পাণ্ডিত্য রাখতে হবে। ‎ ডাক্তার সাহেবের মধ্যে এ সকল শর্তের একটিও যথাযথ ভাবে পাওয়া যায় না। তিনি আরবী ‎ভাষা ও আরবী ব্যকরণ সর্ম্পকে যথাযথ পারঙ্গম নন। ‎ এবং হাদিস ভাণ্ডারের উপরও তার কোন গভীর পড়াশোনা নেই। ‎আর আরবী সাহিত্য ও অলঙ্কার শাস্ত্রেও তেমন পন্ডিত নন।

‎ ‎ (নিম্নের উদাহরণ দ্বারা তা স্পষ্ট হয়ে যাবে)‎ অপরদিকে তাফসীরের ক্ষেত্রে বিপদগামী হওয়ার যত উপকরণ হতে পারে, সবকটিই তার ‎মধ্যে বিদ্যমান, যেমন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কিরাম ও ‎তাবেয়ীন থেকে বর্ণিত তাফসীর থেকে বিমুখিতা, অস্বাবাভিক আধুনিকতা এবং পবিত্র ‎কুরআনের বিষয়বস্তুকে যথাযত অনুধাবনে অক্ষমতা ইত্যাদি। তাই অজ্ঞতার কারণে তিনি ‎‎দশাদিক আয়াতকে শক্তিচর্চার ক্ষেত্র বানিয়েছেন। নিম্নে তার কিছু উদাহরণ দেয়া গেল। ‎ প্রথম আয়াত:‎ الرجال قوامون على النساء ‎(অর্থ: পুরুষরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল)‎ এর তাফসীর করতে গিয়ে বলেন, অনেকে বলেন ‘ক্বাওয়্যাম’ অর্থ এক স্তর উর্ধে হওয়া। ‎কিন্তু বাস্তবে ‘ক্বাওয়্যাম’ শব্দটি ইক্বামাতুন শব্দ থেকে নির্গত।

‘ইক্বামাতুন’ অর্থ দাঁড়ানো। ‎তাই ‘ইক্বামাতুন’-এর মর্ম হল যিম্মাদারিতে একস্তর উর্ধে হওয়া, সম্মান ও মর্যদায় উর্ধে ‎হওয়া নয়‎। ‎ ডাক্তার সাহেব পশ্চিমা বিশ্বের ‘সমানাধিকার’ নীতির সমর্থনে উক্ত আয়াতের মনগড়া ‎তাফসীর করতে গিয়ে সম্মান ও মর্যদায় পুরুষের এক স্তর উর্ধে হওয়াকে অস্বীকার ‎করেছেন। অথচ উম্মতের বড় বড় মুফাস্সিরগণ ‘সম্মান ও মর্যদায়’ শ্রেষ্ঠ হওয়ার কথা ‎বলেন। যেমন আল্লামা ইবনে কাসীর রহ.‎ الرجال قوامون على النساء আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে বলেন,‎ أي الرجل قيم على المرأة أي هورئيسها وكبيرها والمحاكم عليها،مؤدبها إذااعوجت অর্থ: স্ত্রীর কাছে স্বামীর অবস্থান শাসনকর্তা ও সরদারের ন্যায়।

প্রয়োজনে স্বামী স্ত্রীকে ‎উপযুক্ত সংশোধনও করতে পারবেন। এবং ‎ وللرجال عليهن درجة এর তাফসীরে লিখেন-‎ وللرجال عليهن درجة أي في الفضيلة في الخلق والمنزلة وطاعة الأمروالإنفاق والقيام بالمصالح والفضل في الدنيا والآخرة ‏ অর্থঃ স্বামী স্ত্রী থেকে সম্মান, মর্যদা, অনুকরণ ইত্যাদিতে এক স্তর উর্ধে। এবং ডাক্তার ‎সাহেবের এই তাফসীর রাসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নের হাদিসটির সম্পুর্ণ ‎বিপরীত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-‎ لوكنت آمرأحداأن يسجد لأحد،لأمرت النساء أن يسجدن لأزوجهن অর্থঃ যদি আল্লাহ তা‘য়ালা ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে আমি ‎মহিলদেরকে আপন আপন স্বামীকে সিজদা করার আদেশ দিতাম। (আবু দাউদ)‎ যদি স্বামী-স্ত্রী উভয় জন সাম্মান ও মর্যদায় সমান এবং স্বামীর মর্যদা স্ত্রীর উর্ধে না হতো ‎তাহলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদেরকে সিজদা (যা সর্বোচ্চ সম্মানের ‎প্রতীক) করার কেন আদেশ দিয়েছিলেন?‎ দ্বিতীয় আয়াত ‎ويعلم ما في الارحام ডাক্তার সাহেবের কাছে একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল ‘পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে যে মাতৃগর্ভে ‎নবজাত শিশুর লিঙ্গ কেবল মাত্র আল্লাহ তা‘য়ালাই জানেন। কিন্তু এখন বিজ্ঞান অনেক উন্নতি ‎করেছে, আমরা আল্ট্রাসনুগ্রাফীর মাধ্যমে নবজাতকের লিঙ্গ নির্ধারণ করে থাকি।

কুরআনের ‎এই আয়াত কি মেডিকেল সাইন্সের বিপরীত নয়?‎ তার উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি সত্য যে, অনেকেই এই আয়াতের তরজমা ও ‎ব্যাখ্যা এভাবে করেছেন যে, “কেবল আল্লাহ তা‘য়ালাই জানেন মাতৃগর্ভে নবজাতকের ‎লিঙ্গের কথা”। কিন্তু এই আয়াতের বর্ণনা ভঙ্গির প্রতি গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা ‎যায়, এখানে ইংরেজী শব্দ (ংবী) এর অর্থ প্রদানকারী কোন শব্দ নেই। মূলতঃ কুরআন যা ‎বলতে চাই তা এই যে, মাতৃগর্ভে কি আছে তা আল্লাহ জানেন। বহু সংখ্যক মুফাস্সিগণ ‎এখানে ভুলের শিকার হয়েছেন। তারা বলেছেন ‘মাতৃগর্ভে নবজাতকের লিঙ্গ আল্লাহই ‎জানেন’ এটি অশুদ্ধ।

এই আয়াতটি নবজাতকের লিঙ্গের দিকে ইঙ্গিত করে না। বরং তা ‎‎থেকে উদ্দেশ্য হল এই নবজাতকের স্বভাব কেমন হবে, সে ছেলেটি মাতা-পিতার জন্য ‎রহমত হবে না অভিশাপ? ইত্যাদি‎। ‎ ডাক্তার সাহেব অধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে তার একটি অভিযোগের উত্তর ‎‎দেয়ার জন্য কুরআনের অন্য আয়াত ও সাহাবী-তাবেয়ী থেকে বর্ণিত তাফসীরকে পশ্চাপদ ‎‎রেখে একটি সু-প্রশিদ্ধ অর্থকে অস্বীকার করে দিলেন। এবং বড় বড় মুফাসসিরীনদের উপর ‎অভিযোগ করে তাদেরকে ভ্রান্তিতে নিক্ষেপ করলেন। ডাক্তার সাহেব যে ব্যাখ্যা করেছেন তা ‎ما موصوله’-এর ব্যাপকতায় আসতে পারে।

আনেক মুফাস্সিরগণ সম্ভাবনা হিসাবে প্রথম ‎অর্থের সাথে এটিকেও যোগ করেছেন। কিন্তু অন্য অর্থকে বিলকুল অশুদ্ধ বলা, ডাক্তার ‎সাহেবের গবেষণায় ঘাটতি ও অমনযোগিতা এবং তাফসীরের ক্ষেত্রে সাহাবা-তাবেয়ীদের ‎মতামতকে অবমূল্যায়নের বড় প্রমাণ। কেননা ডাক্তার সাহেব যে অর্থকে অস্বীকার করছেন ‎তার প্রতি সুরায়ে রা‘দের আট নাম্বার আয়াত ইঙ্গিত করছে। ‎ الله يعلم ما تحمل كل أنثى وما تغيض الارحام وما تزداد অর্থঃ আল্লাহ তা‘য়ালা সবকিছুর খবর রাখেন; যা মাতৃগর্ভে থাকে তার, এবং যাকিছু মায়ের ‎‎পেটে কম-বেশী হয় তার‎ ‎। ‎ এবং প্রশিদ্ধ তা‘বেয়ী, তাফসীর শাস্ত্রের ইমাম হযরত কাতাদাহ রহ. থেকেও এই অর্থই ‎বর্ণিত।

যেমন তিনি বলেন,‎ فلاتعلم مافي الارحام أذكر أم أنثي الخ অর্থঃ মাতৃগর্ভে ছেলে না মেয়ে তার বাস্তব জ্ঞান আল্লাহ তা‘য়ালা ব্যতীত অন্য কারো কাছে ‎‎নেই। তেমনি আল্লামা ইবনে কাসীর রহঃ রূহুল মা‘য়ানীর ষষ্ট খন্ডের ৩৫৫ পৃষ্টায় এবং ‎আল্লামা নাসাফী রহঃ তাফসীরে মাদারিকের তৃতীয় খন্ডের ১১৬ নং পৃষ্টায় এবং আল্লামা ‎শাওকানী রহ. তাফসীরে ফাতহুল কাদীরের পঞ্চম খন্ডের ৪৯৮ নং পৃষ্টায় উপরোক্ত ‎আয়াতের এই অর্থই বলেছেন। ‎ কিন্তু ডাক্তার সাহেব এই সকল শীর্ষ মুফাসসিরগণের অর্থকে অশুদ্ধ বলে নিজের পক্ষ থেকে ‎বর্ণনাকৃত অর্থকেই একান্ত— বিশুদ্ধ মনে করে তার উপরই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ‎ উল্লেখিত প্রশ্নের বিশুদ্ধ জবাবঃ ‎ আয়াতের উদ্দেশ্য আল্লাহ তা‘য়ালার জন্য ‘ইলমে গায়ব’ বা অদৃশ্যের জ্ঞান সাব্যস্ত করা। ‎বস্তুত ‘ইলমে গায়ব’ বলা হয় ঐ দৃঢ় ও নিশ্চিত জ্ঞানকে যা কোন বাহ্যিক উপকরণ ছাড়া, ‎যন্ত্র ব্যতীত সরাসরি অর্জিত হয়।

মেডিকেল সাইন্সের যন্ত্র দ্বারা ডাক্তারদের অর্জিত জ্ঞান ‎‎দৃঢ়-নিশ্চিত জ্ঞানও নয় আবার উপকরণ ছাড়াও নয়; বরং তা একটি ধারণা প্রসূত জ্ঞান মাত্র; ‎যা যন্ত্র দ্বারা অর্জিত হয়। অতএব আল্ট্রাসোনুগ্রাফী দ্বারা অর্জিত এই ধারণা প্রসূত জ্ঞান দ্বারা ‎পবিত্র কুরআনের আয়াতের উপর কোন ধরণের অভিযোগ উত্থাপন করা যাবে না। ‎ তৃতীয় আয়াত ‎ ياايها النبي اذاجاءك المومنات يبايعنك على أن لايشركن بالله شيئا অর্থঃ হে নবী আপনার নিকট মু‘মিন নারীরা এসে আনুগত্যের শপথ করে যে, তারা আল্লাহ ‎তা‘য়ালার সাথে অংশিদার সাব্যস্ত করবে না,_________ তখন তাদের আনুগত্য গ্রহণ ‎করুন। ‎ ডাক্তার সাহেব এই আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে বলেন, এখানে ‘বায়আত’ শব্দ ব্যবহার ‎করা হয়েছে। তাই ‘বায়আত’ শব্দে বর্তমানে আমাদের ইলেক্শনের অর্থও অন্তর্ভুক্ত।

কেননা ‎রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিকে আল্লাহ তা‘য়ালার রাসুল ছিলেন, ‎অপরদিকে রাষ্ট্র প্রধানও ছিলেন। এখানে ‘বায়াআত’ থেকে ঐ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অনুমোদন ‎উদ্দেশ্য। ইসলাম ঐ যুগে নারীদেরকে ভোটাধিকার প্রদান করেছিল ‎। ‎ এখানে ডাক্তার সাহেব আয়াতের অপ-ব্যাখ্যার মাধ্যমে মহিলাদের ভোটাধিকার প্রমাণ করতে ‎চাচ্ছেন; তিনি বলেন, মহিলারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে এসে ‎‘বায়আত’ গ্রহণ করা; মূলত বর্তমান গণতন্ত্রের নির্বাচন পদ্ধতির প্রাচীন পদ্ধতি। ‎ অথচ গণতন্ত্র সর্ম্পকে যারা অবগত তারা ভালভাবেই জানেন যে, ডাক্তার সাহেবের এই ‎ব্যাখ্যা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবতা বিরোধী, এবং তাফসীরের ক্ষেত্রে যুক্তির অপ-প্রয়োগ মাত্র।

‎‎কেননা বর্তমান গণতন্ত্রে রাষ্ট্র প্রধান নির্বাচন করার জন্য আপন আপন ভোটাধিকার প্রয়োগ ‎করার অধিকার সকলের রয়েছে ঠিক তবে যদি কোন ব্যক্তি সংখ্যাগরিষ্ট লোকের ভোট না ‎পায় তাহলে তিনি রাষ্ট্র প্রধান হতে পারবেন না। কিন্তু হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ‎ওয়াসাল্লামের ক্ষেত্রে এটা অসম্ভব যে, তিনি সংখ্যাগরিষ্ট লোকদের ভোট না পেলে রাষ্ট্র প্রধান ‎হতে পারবেন না। ‘বায়আত’ গ্রহণ যদি ভোট নেয়া হতো তা হলে ঐ মহিলা সাহাবীয়্যাদের ‎রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাষ্ট্র প্রধান মেনে নেওয়া ও না নেওয়া উভয়টির ‎অধিকার থাকা উচিত ছিল। অথচ ঐ মহিলাদের না মানার কোন সুযোগ ছিলনা। (তাহলে ‎তা দ্বারা মহিলাদের ভোটাধিকার প্রমাণ হয় কেমনে?)‎ চুতুর্থ আয়াতঃ ‎ সুরায়ে মারয়ামের আটাশ নাম্বার আয়াত-‎ ياأخت هارون ما كان ابوك إمرأسوء وما كانت أمك بغيا উক্ত আয়াতের উপর প্রশিদ্ধ প্রশ্ন; “হযরত মারয়াম আঃ হযরত হারুন আঃ-এর বোন ছিলেন ‎না, উভয় জনের যুগের মধ্যে প্রায় এক হাজার বছরের ব্যবধান রয়েছে”।

এর অজ্ঞতাবশত ‎উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘ খৃষ্টান মিশনারীরা বলেন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ‎ওয়াসাল্লামের নিকট যীশুখৃষ্টের মাতা মেরী (সধৎু-মারয়াম) ও হারুনের বোন মারয়ামের ‎মধ্যে প্রার্থক্য জানা ছিল না” অথচ আরবী ভাষায় ‘উখত’ বলতে সন্তানকেও বুঝায়। এ জন্য লোকেরা তাকে বলেছিল হে ‎হারুনের সন্তান, বাস্তবেও তা থেকে হারুন আঃ-এর সন্তান উদ্দেশ্য। ‎ ডাক্তার সাহেবর হাদিস ও ভাষা সর্ম্পকে অজ্ঞতা ও অনিভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল এই ‎বক্তব্যের সমালোচনার জন্য মুসলিম শরীফের নিম্নের হাদিসটি যথেষ্ট। ‎ ‏ سألته عن ذلك، فقال‏‎: ‎إنهم كانوا يسمّون بأنبيائهم‎ ‎والصالحين عن‎ ‎المغيرة بن شعبة؛ قال: لما قدمت‎ ‎نجران سألوني فقال: إنكمقبلهم تقرؤون‎ “‎يا أخت هارون” وموسى قبل‎ ‎عيسى ‏بكذا وكذا، فلما قدمت على‎ ‎رسول الله ‏ অর্থঃ হযরত মুগিরা ইবনে শু‘বা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যখন নাজরানে গেলাম ‎তখন আমাকে জিজ্ঞাসা করা হল, তোমরা পড় ‘‘ইয়া উখতা হারুন’’ ‘‘হে হারুনের বোন’’ ‎অথচ মুসা আঃ এর যুগ ঈসা আঃ-এর যুগের অনেক পূর্বের। অতপর আমি রাসুলুল্লাহ ‎সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে তার ব্যাখ্যা জিজ্ঞাসা করলাম।

তখন ‎রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারা (তখনকার লোকেরা) নবীগণ ও ‎‎যোগ্য উত্তরসুরীদের নামে নিজেদের নাম করণ করতেন। (মুসলিম শরিফ)‎ ‎ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত আয়াতের স্পষ্ট ব্যাখ্যা আজ থেকে ‎‎চৌদ্দশত বছর পূর্বে দিয়েছেন। তার সারাংশ হল হযরত ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‎মাতা হযরত মারয়াম আলাইহাস্ সালাম হযরত মুছা আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভাই হারুন ‎আলাইহিস্ সালাম-এর বোন ছিলেন না; বরং হযরত ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাতার ‎ভায়ের নামও হারুন ছিল। এবং তারা নবীগণ ও নির্বাচিত জ্ঞানতাপসদের নামে নিজেদের ‎নামকরণ করতেন। অতএব একথা স্পষ্ট যে, এ কোন নতুন অভিযোগ নয়; যার উত্তর ‎নিজের পক্ষ থেকে তৈরী করে দিতে হবে।

‎ তাফসীর সর্ম্পকিত হাদিস ভাণ্ডার থেকে ডাক্তার সাহেব এতটুকু অবগত নন যে, হাদিস দ্বারা ‎তার প্রকৃত সমাধান বের করার চেষ্টা না করে নিজের পক্ষ থেকে মনগড়া ব্যাখ্যা দেয়া শুরু ‎করেছেন। ‎ পঞ্চম আয়াতঃ ‎والارض بعد ذلك دحاها ডাঃ জাকির নায়ক সাহেব সুরায়ে নাযি‘আতের ত্রিশ নাম্বার আয়াত‏ ‏সর্ম্পকে বলেন, এখানে ‎ডিমের জন্য ব্যবহৃত শব্দ ‘দাহা’-এর অর্থ উটপাখির ডিম। উটপাখির ডিম জমিনের সাদৃশ্য। ‎তাই পবিত্র কুরআন বিশুদ্ধভাবে পৃথিবীর আকৃতির ব্যাখ্যা করছে। অথচ কুরআন নাযিলের ‎সময় পৃথিবীকে (ঋষধঃ) সমতল মনে করা হতো ‎।

‎ এখানে ডাক্তার সাহেব বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে এবং পবিত্র কুরআনের ‎আলোচ্য বিষয় (তাওহীদ ও রিসালত, প্রাকৃতিক বিষয়াদির আলোচনা প্রাসঙ্গিক মাত্র) প্রতি ‎‎দৃষ্টিপাত না করে পৃথিবীর আকৃতির বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আয়াতের অপ-ব্যাখ্যার মাধ্যমে ‎মনগড়া তাফসীর পেশ করেছেন। ‎ ‎ কেননা, আরবী ভাষায়-‎دحـــو‎ শব্দটির ধাতুতে বিস্তৃত ও বিস্তীর্ণ করার অর্থ বিদ্ধমান। এই ‎অর্থে ‘দাহাহা’-এর অনুবাদ ও তাফসীর হল ‘পৃথিবীকে বিস্তৃত করা ও তাতে বিদ্ধমান বস্তু ‎সমূহকে সৃষ্টি করা’। (তাফসীরে ইবনে কাসীর) এই শব্দটি ‘ডিমের’ অর্থে নয়। ‎ [তিন] হাদীসে নববীতে অজ্ঞতা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশাল হাদিস ভাণ্ডার সম্পর্কে ডাক্তার সাহেবের ‎অজ্ঞতার কারণে অনেক জায়গায় তিনি বিশুদ্ধ হাদিসের বিপরীত মাস্আলা বলে থাকেন।

‎এবং বহু মাস্আলা সর্ম্পকে অনেক হাদিস বিদ্যমান থাকা সত্তেও তিনি বলে দেন ‘এই ‎বিষয়ে কোন ‘হাদিস’ দলিল নেই’। নিম্নে কয়েকটি চুড়ান্ত মাসআলার উদাহরণ দেয়া গেল, ‎‎যে মাসআলা সম্পর্কে ডাক্তার সাহেব হাদিস না জেনে, বা জানার পরও অজ্ঞতার ভান করে ‎অনেক শীতলতা প্রর্দশন করেছেন । ‎ ‎(ক) হায়েয অবস্থায় মহিলাদের কুরআন পড়ার অনুমতি এক প্রোগ্রামে ডাক্তার সাহেব মহিলাদের বিশেষ দিন (হায়য চলাকালীন সময়) সম্পর্কে ‎বলেন, ‘কুরআন হাদিসে নামায মাফ হওয়ার কথা আছে; কিন্তু (মহিলারা হায়য অবস্থায়) ‎কুরআন পড়তে পারবে না’ এই মর্মে কোন হাদিস নেই। ‎ অথচ তিরমিযি শরিফে স্পষ্ট আছে-‎ لاتقرأ الحائض ولاالجنب شيئا من القرآن অর্থঃ জুনুবী ব্যক্তি ও হায়য অবস্থায় মহিলারা কুরআন মজিদ পড়বে না। ‎ বিশুদ্ধ ও স্পষ্ট হাদিস বিদ্যমান থাকা সত্তেও সর্বজ্ঞ দাবী করে তা অস্বীকার করা খুবই ভাবার ‎বিষয়।

‎ ‎ (খ) রক্ত বের হলে অজু ভাঙ্গার ব্যাপারে ‘হানাফী মাজহাবের’ কোন দলিল নেই ডাক্তার সাহেব এক অনুষ্ঠানে রক্ত বের হলে অজু ভাঙ্গা-না ভাঙ্গার ব্যাপারে আলোচনা করতে ‎গিয়ে বলেন, ‘কতিপয় ওলামায়ে কিরাম বিশেষত হানাফী মাযহাবের অনুসারী ওলামায়ে ‎কিরামের মতে রক্ত বের হলে অজু ভেঙ্গে যায়। নামাযের মধ্যখানে রক্ত বের হলে কি করতে ‎হবে, এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তার ফতোয়া (হানাফীদের ফতোয়া) এক প্রকারের ‎বাড়াবাড়ি, অথচ এই মাযহাবের স্বপক্ষে স্পষ্ট কোন দলিল নেই’ এখানে ডাক্তার সাহেব ফিকহে হানাফীর সংশ্লিষ্ট ওলমায়ে কিরামের বিরোদ্ধে অভিযোগ ‎করলেন যে, তারা বিনা দলিলে অজু ভাঙ্গার কথা বলেন। অথচ রক্ত বের হলে অজু ভাঙ্গার ‎‎স্বপক্ষে অসংখ্য হাদিস রয়েছে, এবং সাহাবায়ে কিরামের আমলও তার উপর ছিল। নিম্নে ‎তার কিছু বর্ণনা তুলে ধরা হল। ‎ ‏ (১) أخرج البخاري عن عائشة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا , حَدَّثَتهُ‎ ‎أَنَّ‎ ‎فَاطِمَةَ بِنْتَ أَبِي حُبَيْشٍ جَاءَتْ إِلَى ‏رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى‎ ‎اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَتْ تُسْتَحَاضُ ، فَقَالَتْ : يَا‎ ‎رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُسْتَحَاضُ فَلا أَطْهُرُ ‏، أَفَأَدَعُ الصَّلاةَ‎ ‎أَبَدًا ؟‎ ‎قَالَ‎ ‎النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‎ : ” ‎إِنَّمَا ذَلِكَ عِرْقٌ ، وَلَيْسَتْ بِالْحَيْضَةِ ، فَإِذَا‎ ‎أَقْبَلَتِ الْحَيْضَةُ فَاتْرُكِي الصَّلاةَ ، وَإِذَا أَدْبَرَتْ‎ ‎فَاغْسِلِي عَنْكِ الدَّمَ وَصَلِّي‎. ‎‏ قال هشام : قال أبي ثم ‏توضئي لكل صلاة حتي يجيئ ذلك الوقت.‏ অর্থঃ হযরত আয়শা রা. বলেন, হযরত ফাতেমা বিনতে আবি হুবাইশ রা. হায়য অবস্থায় ‎রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি ‎হায়য হলে (দশ দিনের পরও) পবিত্র হই না।

(দশ দিনের পরও) কি নামায ছেড়ে দিব? ‎উত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইহা তো শরীরের ঘাম, হায়য নয়। ‎হায়য হলে নামায পড়বে না। আর হায়য বন্ধ হয়ে গেলে রক্ত ধুয়ে নামায পড়বে। হিসাম ‎বলেন, আমার পিতা বলেন, অতপর প্রত্যেক নামাযের জন্য অজু করবে, আর এই অজু ‎ওয়াক্ত বাকি থাকা পর্যন্ত অব্যহত থাকবে। ( বুখারি শরিফ)‎ ‏ (২) اذارغف احدكم في صلاته فلينصرف فليغتسل عنه الدم ثم ليعدوضوءه ويستقبل صلاته أخرجه ‏الدارقطني. ‏ অর্থঃ নামাযের মধ্যে যদি কারো নাক থেকে রক্ত বের হয় তখন সে রক্ত ধুয়ে পুনরায় অজু ‎করবে।

‎ ‏ (৩) عن زيدبن ثابت –رضي الله عنه- الوضوء من كل دم سائل. أخرجه ابن عدي في الكامل অর্থ: প্রবাহিত রক্তের কারণে অজু করতে হয়। ‎ এছাড়া আরো অনেক হাদিস থাকা সত্তেও ডাক্তার সাহেব আপন অজ্ঞতাকে গোপন করে ‎মুজতাহিদ সেজে বলে দিলেন, ‘রক্ত দ্বারা অজু ভাঙ্গার ব্যাপারে কোন দলিল নেই’। ‎ ‎ (গ) নারী-পুরুষের নামাযে পার্থক্য অবৈধ অন্য এক জায়গায় ডাঃ জাকির নায়ক সাহেব নারী-পুরুষের নামাযে পার্থক্য প্রসঙ্গে বলেন, ‎‘‘কোথাও একটি সনদবিশিষ্ট বিশুদ্ধ হাদিস পাওয়া যায় না যেখানে নারীদেরকে পুরুষ থেকে ‎পৃথক নামায আদায় করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তার পরির্বতে বুখারী শরিফে বর্ণিত যে, ‎হযরত উম্মে দারদা রাঃ বলেন, আত্তাহিয়্যাতের বৈঠকে মহিলারা পুরুষের ন্যায় বসবে’’। ‎ এখানে ডাক্তার সাহেব সরাসরি দুইটি ভুলের শিকার হয়েছেন:‎ ‎(ক) নারী-পুরুষের নামাযে কোন পার্থক্য নেই।

‎ ‎(খ) হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে পুরুষের ন্যায় বসতে বলেছেন। ‎ ডাক্তার সাহেব প্রথম কথা বলে ঐ সকল হাদিস অস্বীকার করে বসল যার মধ্যে নারী-‎পুরুষের নামাযে পার্থক্যের কথা রয়েছে। নিম্নে তার কিছু উল্লেখ করা হয়েছে। ‎ ‏ (১) ‏ أخرج البخاري عن النبي – عليه السلام- أنه قال: يا أيها الناس ما لكم حين نابكم شيء ‏في الصلاة أخذتم في التصفيق إنما التصفيق للنساء ‏ ‏ অর্থঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হে লোক সকল, তোমাদের ‎কি হল? নামাযে কোন অসুবিধা দেখলে করতালি দাও; করতালি তো একমাত্র মহিলাদের ‎জন্যই। (বুখারি শরিফ) ‎ ‏(২) ‏ عن وائل بن حجر قال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم يا وائل بن حجر! إذا‎ ‎صليت ‏فاجعل يديك حذاء أذنيك والمرأة تجعل يديها حذاء ثدييها.‏ ‏ ‏ অর্থঃ হযরত ওয়ায়েল ইবনে হাজার রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‎আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেন, হে ওয়ায়েল, নামায পড়ার সময় হাত কান পর্যন্ত ‎উঠাও আর মহিলারা সিনা পর্যন্ত উঠাবে।

(তাবরানী )‎ ‏ (৩) ‏ عن يزيد بن أبي حبيب أن رسول الله صلى الله عليه وسلم مر على امرأتين‎ ‎تصليان فقال ‏‏: إذا سجدتما فضما بعض اللحم إلى الأرض ، فإن المرأة ليست في‎ ‎ذلك كالرجل ‏ অর্থঃ হযরত ইয়াযিদ ইবনে আবি হাবীব রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ‎ওয়াসাল্লাম নামাযরত দুই মহিলার পাশ্ব দিয়ে গমন করছিলেন, তখন (তাদেরকে উদ্দেশ্য ‎করে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সিজদা অবস্থায় শরীরের কিছু অংশ ‎মাটির সাথে মিলিয়ে দাও। কেননা, এই ক্ষেত্রে মহিলারা পুরুষের মত নয়। (আবু দাউদ ‎শরিফ)‎ (৪) ‏ سئل ابن عمر كيف كن النساء يصلين على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ‏كن يتربعن ثم أمرن أن يتحفزن ‏ অর্থঃ হযরত ইবনে উমর রা. থেকে জিজ্ঞাসা করা হল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ‎ওয়াসাল্লামের যুগে মহিলারা কিভাবে নামায পড়তেন? তিনি বলেন, তারা এক পায়ের উপর ‎বসে আরেক পা খাড়া করে আড়াআড়িভাবে বসতেন, পরে উভয় পা বিছিয়ে নামায পড়ার ‎আদেশ দেয়া হয়। (জামিউল মাসানিদ)‎ এ সকল বর্ণনায় নারী-পুরুষের নামাযে বিভিন্ন ধরণের পার্থক্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ‎এ ছাড়াও আরো অনেক হাদিস রয়েছে, এই বিষয়ে রচিত কিতাবাদীতে দেখা যেতে পারে।

‎ এবং দ্বিতীয় বিষয় অর্থাৎ বুখারী শরিফে মহিলাদেরকে পুরুষের ন্যায় নামায আদায় করার ‎কথাটি একটি অশুদ্ধ কথার সংযোজন মাত্র। ডাক্তার সাহেব হযরত উম্মে দারদা রাঃ এর যে ‎হাদিসটির উদ্ধৃতি দিয়েছেন তা মূলতঃ এভাবে বর্ণিত-‎ وكانت أم الدرداء تجلس في صلاتها جلسة الرجل وكانت فقيهة ‏ অর্থঃ এবং উম্মে দারদা রাঃ নামাযে পুরুষের ন্যায় বসতেন, এবং তিনি ‘ফকীহা’ ছিলেন। ‎ এখানে কোথাও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী বা আমলের কথা উল্লেখ ‎‎নেই; বরং এক মহিলা সাহাবীর আমল মাত্র। যা উল্লেখ করে ইমাম বুখারী রহঃ ইঙ্গিতও ‎করেছেন যে, তিনি ফকীহা ছিলেন, আপন ইজতিহাদ দ্বারা এমন করতেন। এবং ইমাম ‎বুখারী রহঃ ‘তা‘লীকাতে’ (অধ্যায়ের সূচনাতে) সনদ বিহীন উল্লেখ করেছেন।

‎ [চার] ডাক্তার সাহেবের মাযহাব ‎ ডাক্তার সাহেবের বক্তব্য ও রচনায় মুজতাহিদ ইমামগণের অবাধ্যতা ও ফিকহী মাসাআলা ‎সমূহে সংখ্যাগরিষ্ট দল থেকে উল্লেখযোগ্য বিরোধীতার কারণে তিনি যে কোনো ইমামের ‎অনুসারী, তা মনে হয় না। বরং তিনি মুক্তচিন্তা, অধুনিকতা ও প্রগতিবাদী চেতনায় ‎উজ্জেবিত, ‘লা মাযহাবী’ ‘গায়রে মুকাল্লিদের’ (মাযহাব অমান্যকারীদের) অন্তর্ভুক্ত, তাই ‎ফুটে উঠে। শুধু এতটুকু যতেষ্ট নই যে, ডাক্তার সাহেব কোন মাযহাবের অনুসারী নন; বরং ‎তিনি অনেক ক্ষেত্রে ইমামদের অনুসরণ না করার জন্য সাধরণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে ‎‎থাকেন। তিনি মাসআলার বর্ণনা দিতে গিয়ে অনেক সময় এক ইমামের কথা বা ঐ ইমামের ‎গবেষণালব্দ সিদ্ধান্ত নিজের গবেষণা ও সিদ্ধান্ত বলে চালিয়ে দেন। কখনো কখনো ‎মুজতাহিদ সেজে নিজেই মাসআলার বিবরণ দেন।

অথচ ডাক্তার সাহেবের উচিৎ ছিল যিনি ‎কষ্ট করে এই মাসআলার সমাধান বের করেছেন ঐ নির্দিষ্ট ইমামের নাম উল্লেখ করা। ‎ মূলতঃ তিনি এর মাধ্যমে মানুষকে প্রতারিত করতে চান; কুরআন-হাদিস থেকে কেবল ‎এতটুকুই প্রমাণিত। এ ব্যতীত যার উপর মানুষ আমল করে তা অশুদ্ধ; যদিও ইমামদের ‎সিদ্ধান্তই হোক না কেন। নিম্নের আলোচনা দ্বারা উল্লেখিত বিষয়গুলো প্রস্ফুটিত হবে। ‎ ‎ (ক) বিনা অজুতে কুরআন শরিফ স্পর্শ করা ‎ ডাক্তার সাহেব এক স্থানে বলেন, বিনা অজু কুরআন মজিদ র্স্পশ করা জায়েয।

অথচ ‎ডাক্তার সাহেবের এই সিদ্ধান্তটি কুরআনের আয়াত ও ইমামগণের সিদ্ধন্তের সাথে সাংঘর্ষিক। ‎ لايمسه الاالمطهرون ‎[অর্থঃ (অজু বা গোসল দ্বারা ) পবিত্র হওয়া ছাড়া কুরআন মজিদ স্পর্শ করো না। ]‎ ‎(খ) জুমার খুতবা স্থানীয় ভাষায় হওয়া চাই ‎ তিনি অন্যত্র বলেন, ‘আমাদের দেশে জুমার খুতবা স্থানীয় ও মাতৃভাষায় হওয়া উচিত মনে ‎করি’। ‎ অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত জুমার খুতবা ‎আরবী ভাষাই চলে আসছে। আর এখন ডাক্তার সাহেব জুমার খুতবা স্থানীয় ভাষায় দেয়ার ‎‎দাওয়াত দিচ্ছেন; যেন মানুষ খুতবা বুঝতে সক্ষম হয়।

অথচ এই যুক্তি (অনারবরা খুতবা ‎বুঝা) রাসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগেও বিদ্যমান ছিল। কেননা ‎রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খুতবায় অনারবরাও উপস্থিত থাকতেন, তা ‎সত্তেও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদা আরবী ভাষায় খুতবা দিতেন; অন্য ‎‎কোন ভাষায় নয়। এবং পরবর্তীতে অনুবাদও করাতেন না। অনুরূপভাবে সাহাবায়ে কিরাম, ‎তাবেয়ী, তবে তাবেয়ী ও তাদের অনুসারীগণ আরব থেকে বের হয়ে ‘আজম’ অনারব রাষ্ট্রে ‎বসবাস করেছেন, প্রাশ্চ্য ও প্রাশ্চাত্যে ইসলামের আলো বিতরণ করেছেন, কিন্তু সবর্ত্রে খুতবা ‎হত আরবী ভাষায়। অথচ ইসলামের প্রচার-প্রসারের জন্য আজকের তুলনায় তারা এর ‎অনেক বেশী মুখাপেক্ষী ছিল।

তখন সাহাবী ও তাবেয়ীগণ অনারবী ভাষা খুব ভালভাবে ‎জানতেন। তা সত্তেও তারা আরবী ভাষায় খুতবা দিতেন। ‎ সারকথা খুলাফায়ে রাশেদীন সাহাবায়ে কিরাম ও বড় বড় তাবেয়ীনগণের ধারবাহিক আমল এবং ‎‎গোটা উম্মতের উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করা আমলের মাধ্যমে একথা স্পষ্ট যে, খুতবা আরবী ‎ভাষাই দিতে হবে। এমনকি ‘আরবী ভাষায় খুতবা দেয়া’ ইমাম মালেক রহঃ-এর মতে জুমা ‎বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত। যদি সমবেত সকল লোক অনারবী হয়, কেউ আরবী জানেনা, ‎আরবীতে খুতবা দেয়ার কোন লোক না থাকে, তখন তারা যোহরের নামায আদায় করবে, ‎জুমার নামায নয়।

জুমার নামায তাদের যিম্মায় বর্তাবে না। ‎ ولو كان الجماعة عجما لا يعرفون العربية ، فلو كان ليس فيهم من يحسن‏‎ ‎الإتيان ‏بالخطبة عربية لم يلزمهم جمعة . ‏ অর্থঃ যদি গোটা জামাত অনারবী হয়, কেউ আরবী ভাষা জানেনা, এবং তাদের মধ্যে কোন ‎ব্যক্তি সুন্দর আরবীতে খুতবা দিতে পারে না তখন তাদের উপর জুমা ওয়াজিব হবে না। ‎ এবং হযরত শাহ্ ওলিউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভী রহঃ বলেন, খতুবা শুধুমাত্র আরবী ভাষাই ‎হতে হবে। পুরো বিশ্বে সদা এটার উপরই আমল চলে আসছে‎ ‎। ‎ ‎ (গ) তিন তালাকে এক তালাক হওয়া চাই ডাঃ জাকির নায়ক বলেন, তিন তালাকের জন্য এতগুলো শর্ত রয়েছে যে, সবকটি এক সাথে ‎পাওয়া যাওয়া দুষ্কর ও অসম্ভব।

এ সর্ম্পকে সৌদি আরবের তিনশ ফতোয়া বিদ্যমান। ‎বর্।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।