আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কমা-দাড়ি-সেমিকোলন এবং জীবন্ত কিছু অক্ষর।

আপডেট। আপগ্রেড। লাভ হোয়াট ইউ ডু। ডু হোয়াট ইউ লাভ। ১. রাতের অন্ধকার চিঁরে আঁধা বাদুড় আধা মানব জীবটি জানালা বেয়ে নেমে আসে, এসে ঘুমে অঘোর তরুনী- হালকা নিঃশ্বাসের সাথে বুক উঠা নামা করছে- তার দিকে একটু সময় তাকিয়ে থাকে এরপর কাঁধে দাঁত বসিয়ে রক্ত নেয় চুষে! মেয়েটি আড়মোড়া দিয়ে উঠে বসে চোখ গোল করে তার দিকে তাকিয়ে থাকে একটু, এখুনি চিৎকার চেচাঁমেচি করা ঠিক হবে কি হবে না এইরকম একটা চিন্তাভাবনা, এইসময় জীবটি খানিকটা উসখুস করে বলল- তোমার ডায়াবেটিস না-কি? মেয়েটি চোখ গোল করে তাকিয়ে থেকেই উপর নিচে মাথা ঝাঁকায়; জীবটি খুব একটা বিরক্তির বিষয় হয়ে গেছে এইরকম চেহারায় বলল দেখে বোঝা যায় না ধুর।

আমি ডায়াবেটিসের রুগীর রক্ত খাই না! ভ্যাম্পায়ার জিনিসটি আছে কি নাই সেটি নিশ্চিত করে বলা না গেলেও রোমানিয়ায় এদের ওপর একটি প্রচলিত বিশ্বাস এইরকম ঃ একটি ভ্যাম্পায়ার একজন কোন গর্ভবতী মহিলার দিকে তাকিয়ে থাকলে সেই বাচ্চাটি জন্মাবে ভ্যাম্পায়ার হিসেবে। আহা আইনষ্টাইন নিউটনদের বেলা এই নিয়ম খাটলে কতই না সুবিধা হতো। ভদ্রলোকদের গর্ভবতী মহিলাদের সামনে বসিয়ে দেয়া যেত- ডজন ডজন প্রতিভাবানে দুনিয়া হয়ে যেত ভর্তি! ২. হায়দার বেশ একটা উৎসাহ নিয়ে সকাল সকাল পাতা উল্টে রাশি-ফলে চোখ বুলিয়ে নেয় একটু; সেই খানে লিখা- “ প্রেম শুভ। চাকরিক্ষেত্রে সুনাম মিলিতে পারে। পাওনা টাকা ফেরত পাইতে পারেন।

” অফিসে গিয়ে জানা গেল তার চাকরি গেছে চলে। শিমুকে বলি বলি করে বলা হয় নাই, হৃদয়ের কথা বলার জন্যে হায়দার আজকের দিনটিই নিল বেছে, শিমু দু’টা চড় একটা কিল হাত ব্যাগ ঘুরিয়ে একটু মারপিট করে ফেরত পাঠিয়ে দিল- সাথে দ্বিতীয় বার এটি গঠলে পুলিশ ইত্যাদি বিষয় গুলি চলে আসবে এইরকম একটা হুমকি! দিনারের কাছে টাকা অনেক দিনের পাওনা সেটি ফেরত চাইতে গেল ফিরল দুই চোখের নিচে কালো দাগ নাকের ডানপাশ বাঁকা- এই চেহারা নিয়ে। ফেরত এসে এসেই সে প্রথম যেটি করল সেটি হল ঃ সাত আটশ রকম গাল দিয়ে পাতা ভরিয়ে সেটি রাশিফলের লোকজনের নামে ডাকযোগে দিল পাঠিয়ে! ভবিষ্যত আগে আগেই জেনে ফেলা গেলে কি একটা সুবিধেই নাহতো- কিন্তু অনেক কয়টি পদ্ধতির প্রচলন থাকলেও কোনটিই আজ অবধি বিজ্ঞান সম্মত ভাবে প্রমাণিত হয় নি। তারপরেও নিজের ভাগ্য জানার বিষয়ে মানুষের আগ্রহ চিরন্তন, ভবিষ্যত জানার সবচাইতে জনপ্রিয় পদ্ধতি গুলির একটি হলো “ফরচুন কুকি”। মজার ব্যাপার হলো এগুলোর ভেতর যে প্রবাদ গুলি পাওয়া যায় সেগুলি বেশির ভাগিই চাইনিজ হলেও এর প্রচলন চায়নাতে ঘটে অনেক পরে- ১৯৯৩ তে।

৩. পাশে পাশে বাড়ি দুইজনের ভেতর প্রেম। একদিন বিশাল রকম বৃষ্টি, দুই বাড়ির সামনে পানি জমলো হাঁটু সমান। ছেলেটি কাগজে লিখে নৌকো বানিয়ে মেয়েকে পাঠায়। মেয়ে খুলে দেখে লেখা ঃ “ভালবাসি”। মেয়েটি জবাবে লিখল, “কিসের মত?”।

ছেলেটি লেখে “শাজাহান মমতাজকে যেই টুকু বাসত সেই রকম। তুমি?”। উত্তর যেটি আসল ছেলেটি খুলে দেখে নানা কিছু অংক করে রাখা দেখে ধাঁধাঁ লেগে যায়; মেয়েটি তাড়াতাড়ি নূতন করে লেখে “অংক নোট দিয়েছি পাঠিয়ে হেহেহে। ” প্রেম বিষয়টি এলেই শাহজাহান ভদ্রলোককে নিয়ে আমাদের টানাটানি করে অভ্যাস, কিন্তু মজার বিষয় হলো মমতাজকে দেয়া শাহজাহানের প্রেমের নিদর্শন তাজমহল স্থাপত্যটির পেছনে রয়েছে একটি নির্মম ইতিহাস- এই স্থাপত্যটি নির্মাণের পরপরে শাহজাহান শ্রমিকদের হাত কেটে দেন যেন তারা এই ধরণের আরেকটি কিছু নির্মাণ করতে না পারেন! ৪. এ-২৪ তিন সেন্টিমিটার শরীরের ছয় পায়ের রোবট, শরীরের জায়গায় জায়গায় অনেক কয়টা ক্যামেড়া সংযুক্ত সাথে সূক্ষ্ম দু’চারটি যন্ত্রাদি- সেগুলো প্রতি সেকেন্ডে নানা তথ্য মূলকেন্দ্রে পাঠিয়ে দিচ্ছে; এটি পিলপিল করে ব্যস্ত ফুটপাতে মানুষজনের পায়ের ফাঁক দিয়ে জায়গা করে এগিয়ে যায়- চৌকো কাঠামোর বাসাবাড়িটির বাহিরে বেশ ক’টি গাড়ি পার্ক করানো, একটির পাশে এসে এটি দাঁড়া হয়ে যায় যেন এখুনি একটা কিছু ঘটবে। মিনিট পাঁচেকের ভেতর দ্রুত পায়ে শক্ত চোয়ালের একজনকে হেঁঠে আসতে দেখা যায়; মানুষটি চাবি ঘুরিয়ে গাড়ির দরজা খুলে গাড়িতে চড়ে বসার ঠিক আগে আগে খেয়াল করেন না তার গোড়ালির কাছে বুট জুতোর গায়ে একটি ছোট্ট তিন সেন্টিমিটারের রোবট লেপ্টে জড়িয়ে গেছে।

ইংরেজী মুভি গুলিতে রোবটেরা হরহামেশাই মানুষজনকে মেরে ফেলে, কিন্তু বাস্তবে এই ধরণ ঘটনা ঘটেছে হাতে গোনা কয়েকবার। প্রথম ঘটনাটি ঘটে ১৯৮১ তে যখন একটি রোবটিক আর্ম সংক্রান্ত দূর্ঘটনা বশত একজন জাপানি কারখানার কর্মচারীর মৃত্যু হয়। ৫. পৃথিবীতে সর্বাধিক ব্যবহৃত নাম মোহাম্মদ। ছোট থাকতে ঈদের দিন সকাল সকাল আব্বার সাথে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়া একটা অভ্যাস ছিল এখন সেটি কমে এসছে; এই দিন গুলিতে খুব সকাল করে উঠতে হতো, উঠেও ঘুমচোখে নানান জায়গায় ধাক্কা খেয়ে খেয়ে বাথরুম ঢুকি, ঢুকে ব্রাশ মুখে নিয়ে চিরুনীতে চুল আঁচড়া দেই না হয় চিরুনী মুখে নিয়ে ব্রাশ দিয়ে চুল আঁচড়া দেই দুটার একটা; দুনিয়াজাহান কিরকম, আগেরমত আছে না চিকন মোটা দুই চারটা পরিবর্তন চলে এসছে সেই গুলি হদিস করতে করতেই আম্মা পাঞ্জাবী দিতেন পড়িয়ে! টুপি যেটি পড়ানো হতো সেটির ওজন নিশ্চয় আশি না হয় নব্বুই কেজি, এটি নিচে নেমে এসে নাক চোখ ঢেকে যায় এইরকম একটা অবস্থা! আমি আব্বার সাথে লাইন ধরে নামাজ পড়তে যাই- একটা কি দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন সেইটা আঙ্গুলে গুনে গুনে পড়তে থাকি, মসজিদ পৌঁছতে পৌঁছতে কমকরে দুইশবার পড়া লাগবে এর কমে চলবে না এইরকম একটা চিন্তা ভাবনা মানুষজন পথঘাটের দুরত্ব ইত্যাদি মাইল না হয় কিলোমিটারে হিসাব করে- আমি বাসা থেকে মসজিদের রাস্তা লম্বায় কত সেটি এই দুয়া দিয়ে হিসেব করে ফেলি! আব্বা রাস্তায় যার সাথে দেখা করিয়ে দেন তাকেই কপালে হাত দিয়ে লম্বা সালাম দেই, ছোট মানুষ তাই সবাইকে জিনের বিরাট লাগতে থাকে; ইমাম খুৎবা দেন দুনিয়া কিভাবে একটা সময় ধ্বংস হয়ে যাবে সেটির বিবরণ- শুনে আমার একটু একটু চিন্তা হতে থাকে আহা দুনিয়া ধ্বংস হয়ে গেলে আমি আমার জিনিসপত্র রাখব কই! নামাজ শেষে হাত তুলে দুয়ার ভিতর নানা কিছু চাওয়ার নিয়ম, আমি কোন সুযোগ নেই না একদমে এক দেড়শ জিনিস চেয়ে দুয়া সেরে ফেলি! ঈদের নামাজ- এটি শেষে নিশ্চয়ই আয়োজন করে কিল-ঘুষি ইত্যাদি মারা হবে তা নয়, সবাই কোলাকুলি করতে লেগে যায়, আমি ছোট মানুষ আমাকে ছোট ছোট ছেলে পুলেদের সাথে দেয়া হলো ভিড়িয়ে- কোলাকুলি শান্তির প্রতীক কিন্তু আমি গায়ে যেটুকু জোড় আছে পুরোটা দিয়ে কোলাকুলি করতে থাকি; যার সাথে করা হচ্ছে তার কোলাকুলির আগের চাইতে পরে বুকের সাইজ দুই চার ইঞ্চি কমে গেল কিনা পরীক্ষা করে দেখা লাগে এই অবস্থা! ঘটনা এইখানে থেমে গেলে সেটি নিয়ে লেখার কিছু ছিলনা- পরোটার মত চেপটা চেহারা একটি ছেলেকে মুখে বিশ মাইল লম্বা হাসি, এই ছেলেটিকে দেখে আমার মনে হতে থাকে কোথায় একটা কি ঝামেলা আছে- একটা যেন কি গোলমাল, একটু খেয়াল করে দেখা গেল তার দু’টা হাতই নাই, পাঞ্জাবির যেই জায়গায় দু’টা হাত বাহির হয়ে থাকার কথা সেইখানে কিছু নাই- হাতা দুটো আলগা ঝুলে আছে। ছেলেটিকে কোলাকুলি করতে হচ্ছে একটু ঝুঁকে শুধু বুক লাগিয়ে- ছেলেটির তাতে এতটুকু উৎসাহের কমতি নাই তার গাল ভর্তি হাসি; দৃশ্যটুকুর কোথায় জানি একটা বিরাট শুন্যতা আছে- আমার তখন কচি মন কান্নামত পেয়ে যায়- গলার কাছে একটা কি এসে আটকে থাকে! ঈদ যে আসলেও সবার জন্যেই আনন্দ নিয়ে আসে সেটি বুঝে নিতে আমার বেশি অসুবিধা হয় না।

আর হ্যা- সবচাইতে জোড় বেশি কোলাকুলি টুকু আমার থেকে এই ছেলেটিই পেয়েছিল! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।