ধীরে ধীরে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে এলো বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক দল থেকে মোস্তফা সাহেবকে সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন দেওয়া হলো। তারপর শুরু হলো নির্বাচনী প্রচারণা। ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, তদবিরসহ নানাবিধ অবৈধ কাজের মাধ্যমে প্রচুর টাকা পয়সার মালিক হওয়ায় তারা নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহে বেশ এগিয়ে চলল। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক দলের প্রতিটি জনসভায় জনসমাগমও ঘটল অনেক। মিছিল মিটিং সবকিছুতেই জনগণের অংশ গ্রহণ দেখে মোস্তফা সাহেব যেন স্বপ্নে বিভোর হলেন।
কিন্তু জনগণের রায় বুঝতে মোস্তফা সাহেবের ভুল হয়েছিল। জনগণের রায় তাঁর বিপরীতে গেল। মোস্তফা সাহেব নির্বাচনের রায় সহজভাবে মেনে নিলেন। ভোটের রেজাল্টের পর নেতা কর্মীদের অনেকে মোস্তফা সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে এলো। তার ঘনিষ্ঠদের মধ্যে পাশাপাশি চেয়ারে বসেছেন বেলায়েত সাহেব ও উদীয়মান নেতা জামাল।
বেলায়েত সাহেব ও জামালকে বেশ ক্লান্ত এবং বিষন্ন দেখাচ্ছিল কিন্তু মোস্তফা ভেঙ্গে পড়েননি, নেতা কর্মীদের দিকে তাকিয়ে অনেক কষ্টে বলতে শুরু করলেন, আমি বুঝতে পাচ্ছি আমি নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় আমার সাথে আপনারাও কষ্ট পেয়েছেন এটা দেখে আমি সান্ত্বনা পাচ্ছি। নির্বাচনে জয়-পরাজয় আছে, জনগণ যাকে পছন্দ করেছে যে দলকে পছন্দ করেছে তাকেই ভোট দিয়েছে। এটাই গণতন্ত্র, নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছাই প্রতিফলিত হয়েছে, আমি জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান জানাচ্ছি। জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচনে বিজয় শুধুমাত্র প্রার্থীর ওপর নির্ভর করে না, দলীয় কর্মকাণ্ডও সমালোচিত হয় এবং অনেকেই দলীয় কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
দলীয় কর্মকাণ্ডের কারণেই হোক আর আমার ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের কারণেই হোক জনগণের সিদ্ধান্তই আজ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক দল ক্ষমতা থেকে বিদায় দিল। এখন মূল্যায়ন করার সময় এসেছে। নির্বাচনে পরাজয়ের কারণগুলো খুঁজে বের করে মুল্যায়ণ করতে হবে পাঁচ বছরের মধ্যে দলের হারানো ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হবে। দলের জন্য কাজ করতে হবে। জনগণের কাছাকাছি যেতে হবে জনগণের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মিশতে হবে।
আশা করি আজকের পরাজয়ের গ্লানি মুছে আপনারা নতুনভাবে দলের জন্য কাজ করবেন পরবর্তী নির্বাচনে ইনশাল্লাহ আমরা জয়ী হবো।
এমন সময় নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী ফরিদ সাহেব মোস্তফা ভাই, মোস্তফা ভাই বলে ডাকতে ডাকতে বাসায় ঢুকলেন। কর্মীদের অনেকেই ফরিদ সাহেবের দিকে তাকিয়ে রইল। ফরিদ সাহেব মোস্তফা সাহেবকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন, মোস্তফা ভাই এটা গণতন্ত্র, জনগণের দ্বারাই সরকার গঠিত হবে এবং জনগণের দ্বারা সরকার পরিচালিত হবে। আমি আপনার ছোট ভাইয়ের মতো, জনগণ আমার পক্ষে, আমার দলের পক্ষে মতামত দিয়েছে।
আমি জনগণের মতামতকে শ্রদ্ধা জানাই। এই এলাকা আমাদের, এই দেশ আমাদের আপনি আমাকে সহযোগিতা করবেন, আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন জনগণের দেয়া দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি।
মোস্তফা সাহেবের দু'চোখ সজল হয়ে উঠল। তিনি ফরিদ সাহেবকে পার্শ্বের চেয়ারে বসতে বললেন, ফরিদ ভাই বসুন প্লিজ।
ফরিদ সাহেব বসলেন, জামাল একবার ফরিদ সাহেবের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে ফিস্ ফিস্ করে বলল, বেটা ভদ্রতা দেখাতে এসেছে।
ফরিদ সাহেব মোস্তফা সাহেবকে বিনয়ের সাথে বললেন, মোস্তফা ভাই আপনি অনুমতি দিলে আমি সবার উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চাই?
মোস্তফা সাহেব মলিন হেসে বললেন, ফরিদ ভাই এজন্য আমার অনুমতির কোন প্রয়োজন নেই, বলুন প্লিজ।
ফরিদ সাহেব দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন, উপস্থিত ভাইয়েরা আমার, আস্সালামুয়ালায়কুম। গতকালকের নির্বাচনে আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছেন।
ফরিদ সাহেবের মুখে একথা শুনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক দলের নেতা কর্মীরা পরস্পরের মুখের দিকে তাকালো।
ফরিদ সাহেব বললেন, আপনারা হয়ত ভাবছেন আমরা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক দলের কর্মী, আপনারা আমাকে ভোট দেননি। কিন্তু সেকথা ঠিক না আমি মনে করি নির্বাচিত সব নেতারই মনে করা উচিত সকল ভোটার তাকে ভোট দিয়েছে। এই মনে করুন ভোটের আগে আপনারা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক দলের ভোটার ছিলেন এখনো সেই দলেরই কর্মী। কিন্তু আমি যদি আপনাদেরকে বিভক্ত করে ফেলি তবে তো আমি সবার সেবা করতে পারবো না। আমি একটা দলের প্রার্থী ছিলাম এখনো আমি অন্য একটা দলের নেতা কিন্তু ভোটে জয়ী হওয়ার পর আমি সকলের হয়ে গেছি।
এখন আমার কাজ দল-মত নির্বিশেষে এলাকার উন্নয়ন করা, আপনাদের সেবা করা, আমি আপনাদের যেকোন প্রয়োজনে আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবো। মোস্তফা ভাইকে আমার অনুরোধ আপনি কোন সংকোচ না করে আমাকে বলবেন, আপনার যেকোন কর্মীকে যে কোন কাজে আমার কাছে পাঠিয়ে দিবেন। আমি যে কথাটা বার বার আপনাদের বলতে চাই আমি আপনাদের সকলের, আপনারা সবাই যেকোন কাজে আমার কাছে আসবেন। এলাকার উন্নয়নে আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি আপনাদের সকলের মঙ্গল কামনা করে আমার বক্তব্য শেষ করছি, বলে ফরিদ সাহেব তার বক্তব্য শেষ করলেন।
ফরিদ সাহেব বক্তব্য শেষ করে মোস্তফা সাহেব, বেলায়েত সাহেব ও জামালের সঙ্গে হ্যান্ডশ্যাক করে চলে গেলেন।
ফরিদ সাহেব চলে যাবার পর জামাল রাগান্বিত স্বরে বলল, মোস্তফা ভাই কাজটা আপনি ঠিক করলেন না, আপনার মনে নেই, বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় ফরিদ সাহেব খুব ছোট খাট ইস্যু নিয়ে কিভাবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলেছিলেন। আজ ভোটে জিতে এসেছেন দলমত নির্বিশেষে উন্নয়নের বুলি শোনাতে আর আপনিও তাকে আমাদের কর্মীদের সামনে বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ দিলেন।
জামাল তুমি তো রাজনীতিতে নতুন আর একেবারে তরুণ একটু বয়স হলে সব বুঝবে। ফরিদ সাহেব এসেছেন তাকে তো নিষেধ করা যায় না, আর তিনি বক্তৃতা দেওয়ার মানে এই নয় যে আমাদের দলের সব নেতা কর্মী তার দলে চলে গেল, বলে মোস্তফা সাহেব সবার উদ্দেশ্যে বললেন, আপনারা সবাই ভোটে আমার জন্য খুব কাজ করেছেন সে জন্য আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
আপনারাও সবাই ক্লান্ত, আমার মনে হয় আমি অযথা সময় নষ্ট করছি। একথা বলার পর কর্মীদের অনেকে উঠে চলে গেল। জামাল এবং বেলায়েত সাহেবও বিদায় নিলেন।
নির্বাচনে দলের পরাজয়ের পর জামালের মনোবল অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। মোস্তফা সাহেব এবং বেলায়েত সাহেবও জামালকে সতর্ক করে দিয়েছেন।
তাছাড়া জাহিদের মৃত্যুর পর জামাল আর ফেন্সিডিলের ব্যবসা চালু করেনি। তারপর ক্ষমতা হারানোর ফলে জামাল পুনঃরায় ফেন্সিডিলের ব্যবসা চালু করার সাহস পায়নি তাই জামাল শুধুমাত্র ধান-চাউলের ব্যবসা আর ঠিকাদারী ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত আছে।
আজকাল ঠিকাদারী ব্যবসাও অনেকটা রাজনৈতিক ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ার ফলে ঠিকাদারী ব্যবসায় কাজ পাওয়া জামালের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। বলতে গেলে জামালের ঠিকাদারী ব্যবসাও চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। তাই জামালের অর্থনৈতিক অবস্থাও আগের মতো নেই।
কাজ কর্মে তেমন ব্যস্ততাও নেই তাই তার মাথায় দুষ্ট চিন্তা ভর করেছে আরো বেশি। জামাল প্রায় দিনই সন্ধ্যাবেলা ব্যবসায়িক কাজ সেরে ঠিক যুথির কাছে চলে যায়। চোখের সামনে সবসময় যুথির মুখ ও বুকের ছবি ভেসে ওঠে।
যুথিকে লোভ দেখিয়ে এবং জোর খাটিয়ে সে ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু হাল ছাড়েনি। সে যুথির ওপর জোর খাটানোর ইচ্ছা ত্যাগ করে তাকে জয় করার চেষ্টা করছে প্রতিনিয়ত, বিভিন্ন কৌশলে।
যুথি জামালকে হাড়ে হাড়ে চেনে, তাই সেও নিজেকে রক্ষা করার সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জামাল যুথিদের বাসায় গিয়ে কলিং বেল এ টিপ দিতেই জাহানারা দরজা খুলে দিলেন। কিন্তু বাসায় অনেক আত্মীয় স্বজনের আগমণ দেখে জামাল কিছুটা অবাক হলো, কী ব্যাপার খালা? বাসায় এত মেহমান?
আগে ভিতরে এসো বাবা, বলে জাহানারা এবং জামাল দরজা বন্ধ করে দিয়ে ভিতরে ঢুকলো। জামাল যুথির রুমে গিয়ে ঢুকলো।
জামাল যুথিকেও একই প্রশ্ন করল, যুথি তোমাদের বাসায় এত মেহমান কোথা থেকে এসেছে?
আমার খালাত ভাইয়ের বউ, তার ছেলে আর খালাত বোন।
জামাল একবার দরজার দিকে তাকালো, তাহলে তো খুব আনন্দের ব্যাপার।
কেন আনন্দের কী হলো?
জামাল একটা মুচকি হাসি হাসল।
আপনি বসুন আমি চায়ের ব্যবস্থা করছি। যুথি বের হয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই যুথির খালাত বোন ঘরে ঢুকতে গিয়ে থমকে দাঁড়ালো।
যুথি ডাক দিল, বীথি এদিকে আয়।
বীথি ভিতরে ঢুকে সালাম দিল। যুথি জামালের সঙ্গে বীথিকে পরিচয় করে দিল। তারপর বলল, জামাল ভাই আপনি বসুন বীথির সঙ্গে গল্প করুন আমি চায়ের ব্যবস্থা করি।
যুথি চলে যাবার পর জামাল বীথির মুখের দিকে তাকাতেই চোখে চোখ পড়ল। বীথি চোখ নামাল, সে লজ্জায় জড়সড় হয়ে গেল।
জামাল বীথির বুকের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল, এবার তোমার পালা, দেখি কিভাবে তোমাকে-
বীথি উঠে দাঁড়ালো জামাল জিজ্ঞেস করল, উঠলে কেন বসো? তুমি কোন ক্লাসে পড়ো?
এবার এইচ.এস.সি পরীক্ষা দিবো।
কোথায় থাক যেন তোমরা?
ঢাকা।
বীথির ভাবী ঘরে ঢুকে সালাম দিল, বীথি তার ভাবীর সঙ্গে জামালের পরিচয় করে দিল। জামাল মনে মনে বিরক্ত বোধ করল কিন্তু মুখে কিছু বলল না, কৃত্রিম হাসি হেসে বলল, ভাবী বসুন।
না ভাই আপনি বসুন আমার বাচ্চা পাশের রুমে ঘুমাচ্ছে যেকোন সময় ঘুম থেকে উঠতে পারে, বলে সে চলে গেল।
জামাল যেন মনে মনে খুশি হলো এবং একবার বীথির বুকের দিকে তাকিয়ে বলল, তোমরা ঢাকা থাক কোথায়?
মিরপুর।
নিজেদের বাসায় নিশ্চয়ই? বলেই জামাল জিহব্বায় কামড় দিল, সরি।
বীথি মৃদু হেসে বলল, কী যে বলেন ভাইয়া? ঢাকায় বাড়ি থাকা কী কম কথা। আসলে আমরা ভাড়া বাসায় থাকি।
জামাল বলল, তোমার হাসিটা তো খুব সুন্দর।
জামাল বলল, সরি শুধু হাসিটা সুন্দর বললে ভুল হবে, তুমি আসলে খুব সুন্দর বলে আরো কি যেন বলতে যাচ্ছিল বীথি মৃদু হেসে বলল, ভাইয়া আপনি বাড়িয়ে বলছেন, আমাকে তো আপনি ছাড়া কেউ কোনদিন সুন্দর বলেনি।
দেখ বীথি সুন্দরের সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম। কেউ তোমাকে মনের চোখ দিয়ে দেখেনি বলে তোমাকে সুন্দর বলেনি, আমি বলছি তারমানে আমার চোখে তুমি সুন্দর হয়ত আর সবার চোখে না। দেখ না অনেক সুন্দর ছেলের সঙ্গে অসুন্দর মেয়ের আবার অসুন্দর ছেলের সঙ্গে সুন্দর মেয়ের মধ্যে প্রেম হয় তার মানে যার চোখে যে সুন্দর।
বীথি হাসল কিন্তু কিছু বলল না।
জামাল আবার বলতে শুরু করল, এই যে ধর তোমাকে আমার সুন্দর লাগছে আর কাউকে তোমার সুন্দর নাও লাগতে পারে। আবার তুমি হয়ত কাউকে পছন্দ কর সে হয়ত তোমাকে পছন্দ করে না।
জামাল কথা বলার সময় বীথি জামালের মুখের দিকে তাকিয়েছিল এবার বলল, আপনি খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারেন?
জামাল কৌতুহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, আর কিছু?
বীথি একটা মুচকি হাসি হেসে মাথা নত করল। যুথি নাস্তা নিয়ে ঘরে ঢুকতেই জামাল এবং বীথির দিকে নাস্তার প্লেট বাড়িয়ে দিয়ে বলল, জামাল ভাই খান প্লিজ, বীথি খা।
সবাই মিলে অনেকক্ষণ গল্প করল।
জামাল বার বার করে বীথি আর যুথির দিকে তাকালো, তার মনের মধ্যে দু'জনের একটা তুলনামূলক ছবি ভেসে উঠল। শেষে যুথি বলল, জামাল ভাই একটা কথা তো আপনাকে বলাই হয়নি। আমি কাল বীথির সঙ্গে ঢাকা যাচ্ছি।
জামাল বলল, তাই নাকি?
হ্যাঁ খালা বলে পাঠিয়েছেন আমাকে নিয়ে যেতে।
জামাল মনে কষ্ট পেল তারপরও কৃত্রিম হাসি হেসে বলল, বেশ তো যাবে কিন্তু তুমি আমাকে আগে বললে না।
তারপর জামাল পকেট থেকে টাকা বের করে যুথির হাতে দিয়ে বলল, এই টাকাটা রাখো তোমার কাজে লাগবে আর হ্যাঁ আমার মোবাইল নাম্বার তো তোমার মোবাইলে সেভ করা আছে যোগাযোগ করবে।
যুথি মৃদু হেসে বলল, টাকা কেন?
বাহ্ তুমি ঢাকা যাচ্ছ, টাকার প্রয়োজন আছে না।
কিন্তু তাই বলে আপনি-
জামাল যুথির কথার মাঝে বাধা দিয়ে রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে বলল, কেন আমি দিচ্ছি তো কী হলো? টাকার গায়ে কী লেখা থাকবে আমার দেয়া টাকা?
না, তাই বলে-
কোন কথা নেই তুমি আর কোন কথা বলবে না।
অগত্যা যুথি আর কোন কথা বলল না।
জামাল মনে মনে ভাবল বীথিকে টাকা দিলে কেমন হয়?
জামালকে চুপ করে থাকতে দেখে যুথি বলল, নিলাম তো আবার কী ভাবছেন?
ভাবছি তোমরা যদি কিছু মনে করো।
যুথি এবং বীথি দু'জনে বলল, বলুন আমরা কিছুই মনে করবো না।
জামাল পকেট থেকে আরো টাকা বের করে বীথিকে বলল, তোমার হাতটা বাড়িয়ে দাও তো।
বী হাত বাড়াতেই তার হাতে টাকা গুঁজে দিয়ে জামাল বলল, ডণ্ট মাইণ্ড।
বীথি আমতা আমতা করে বলল, আমাকে কেন ভাইয়া?
রাখো তোমার কাজে লাগবে।
কিন্তু কেন?
এত কেন কেন বলো না তো তোমার ভাইয়া তোমাকে টাকা দিলে কি এত কথা জিজ্ঞেস করো?
তাই বলে আপনি?
জামাল কৃত্রিম মুখ ভার করে অভিমানের সুরে বলল, ও বুঝেছি তোমরা আসলে আমাকে কেউ আপন করে ভাবতে পারছ না।
বীথি মুচ্কি হাসি হেসে বলল, ছি আপনি মাইণ্ড করছেন জানলে কিছু বলতাম না। আপনার একটা কার্ড দেবেন প্লিজ!
অবশ্যই, বলে জামাল বিথীর হাতে তার একটা ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বলল, যুথি, বীথি তোমরা তাহলে বসো আমি আসি বলে জামাল বেরিয়ে গেল।
জামার বেরিয়ে যাওয়ার পর বীথি জিজ্ঞেস করল, লোকটা কে রে এভাবে টাকা বিলায়।
যুথি কয়েকমিনিট ধরে জামালের পরিচয় এবং তার জীবনের বর্ণাঢ্য কাহিনী বলে বলল, লোকটার একটু বলে যুথি একটা চোখ মেরে বলল, ইয়ের দোষ আছে।
তাইনাকি?
হুঁম, যা বললাম, একটু সাবধানে থাকিস।
আচ্ছা।
আর যদি সেরকম ইচ্ছা থাকে, বলতেই দু'জনে হেসে উঠল। তারপর হাসি থামিয়ে যুথি বলল, কার্ড তো সঙ্গেই আছে যোগাযোগ করিস।
বীথি রহস্যময় দৃষ্টিতে যুথির দিকে তাকিয়ে জামালের কার্ডে একটা চুমু খেয়ে বলল, ইয়াহু।
চলবে..
গডফাদার-০১ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।