বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্বকালীন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন পূর্বক শিক্ষা নীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় যুগপোযোগী শিক্ষানীতি প্রনয়ন করছে মর্মে জানা যায়। ইতোপূর্বে সরকার ১৯৯২ সাল সার্বজনীন শিক্ষা বছর হিসাবে শুরু করে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনার চেষ্ঠা করলেও সুনির্দিষ্ট কোন শিক্ষানীতি না থাকায় প্রচুর শিক্ষার্থী অকালে স্কুল-কলেজ জীবন থেকে ঝরে পড়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতোমধ্যে কতিপয় কার্যপ্রণালী শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন করলেও বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার মূল্যায়ন ও অগ্রগতির সুযোগ হয় পাবলিক পরীক্ষার মাধ্যমে। দেশে অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় শুধুমাত্র একটি বিষয়ে ফেল করে বিভিন্ন প্রতিকুল অবস্থার স্বীকার হয়ে কিংবা শুধুমাত্র একটি বিষয়ে দূর্বলতার কারণে পরবর্তীতে পড়ালেখা চালিয়ে নিতে পারেননি ।
তাছাড়া দরিদ্র দেশ হিসাবে এদেশের অধিকাংশ মা-বাবা ছেলে মেয়েদের প্রথমবার পরীক্ষায় ফেল করায় পুনরায় পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে। যদিও এসব ছাত্র-ছাত্রী ভবিষ্যত আরও উজ্জ্বল হতে পারত। এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা দুপ্রকার যথা সাধারণ ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা। সাধারনত বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য এসএসসি ও এইচএসসিতে সব বিষয়ে দক্ষ ও পাশের দরকার নেই। শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট কারিগরী কাজের সহায়ক জ্ঞান থাকলে চলে।
তবে দেখা যায় বিভিন্ন কারিগরী ট্রেনিং কোর্সে ভর্তির জন্য যোগ্যতা হিসাবে ন্যূনতম এসএসসি ও এইচএসসি পাস চেয়ে থাকেন। কিন্তু অতীব দূঃখের বিষয় এদেশে এসএসসি ও এইচএসসিতে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ভালো নম্বর পেয়েও এক বিষয়ে এক/দুইবার ফেল করে দারিদ্রতা ও বিভিন্ন কারনে পড়ালেখা হতে ঝরে পড়েছে। ফলে তাদের জন্য কোন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় দীর্ঘ ১০/১২ বৎসরের শিক্ষাকালের মূল্যায়ন করার কোন সুযোগ নেই। দেখা যায় সরকারি চাকরিতে আবেদনের জন্য একজন এসএসসি ফেল শিক্ষার্থীকেও ২ বৎসর শিক্ষাকালকে পিছিয়ে অষ্টম শ্রেণী পাস সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ফলে এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো নম্বর পেয়েও এক বিষয়ে ফেল করার কারণে তাঁদের দীর্ঘ ১০/১২ বৎসরের শিক্ষাকাল কোন কাজেই আসছেনা।
অথচ তাদেরকে বিশেষ বিবেচনায় উত্তীর্ণ করা হলে এসব ছাত্র-ছাত্রীর দীর্ঘ ১০/১২ বৎসরের শিক্ষাকালকে মূল্যায়ন করা যেত। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে শ্রমিক কাজেও এসএসসি পাস বাধ্যতামূলক করেছে মর্মে জানা যায়। এমতবস্থায় এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো নম্বর পেয়ে যারা এক বিষয়ে ফেল করেছে তাদেরকে বিশেষ বিবেচনায় উত্তীর্ণ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট প্রদান করার প্রয়োজনী উদ্যোগ গ্রহণ করলে হাজার-হাজার শিক্ষার্থীর দীর্ঘ ১০/১২ বৎসরের শিক্ষাকালকে মূল্যায়ন করার সুযোগ হত। হতে পারে এটি সরকারে একটি যুগান্তরকারী ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।
এমতাবস্থায় মানবিক কারনে একজন শিক্ষার্থীর দীর্ঘ ১০/১২ বৎসরের শিক্ষাকালকে মূল্যায়ন করার নিমিত্তে এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো নম্বর পেয়ে যারা এক বিষয়ে ফেল করে পড়ালেখা হতে ঝরে পড়েছে তাদেরকে বিশেষ বিবেচনায় উত্তীর্ণ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট প্রদান করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি কামনা করি ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।