নিজেরে হারায়ে দিগদিগন্তে খুঁজি- "আপনভোলা"
ডেইলি স্টারে "Niazi's book mocks Jamaat's claim" শিরোণামে একটি লেখা ছাপা হয়েছিল। Click This Link । বেশ আগের রিপোর্ট, একবন্ধু রিসেন্টলি FB তে পোস্ট করায় চোখে পড়ল।
রিপোর্টটা পড়েই মনে হলো এইবার জামাতের সব গোমর ফাস হলো! সব ব্যাটাকে ধরে এখন ফাসিতে ঝুলানো যাবে। ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটররা খালি খালি ধমক খাচ্ছে evidences –এর অভাবে।
এই তো কত বড় evidence। ট্রাইবুনালের ওরা কি Daily Star পড়েনা? ব্যাপারটা একটু ঝালিয়ে দেখা দরকার।
বইটা হাতে নেন। বইটার নাম হলো 'The Betrayal of East Pakistan'। ….. কি বললেন? খুজে দেখেছেন? রিপোর্টের সাথে মিলছে না? হতেই পারেনা।
৩২১ পৃষ্ঠার বই ভালো করে খুজে দেখেন? কি বললেন, রিপোর্টার রা ভেবেছেন কেও খুজে দেখবেনা? আর দেখলেও কজন দেখবে? Daily Star প্রথম সারির পত্রিকা বেশির ভাগ মানুষ এটাকেই সত্য ধরে নিবে।
পুরো লেখাটিতে কিছু কোটেশন ব্যবহার করা হয়েছে। পৃষ্ঠা নামাবার দেয়নি তাতে কি, কোটেশন তো আর মিথ্যা হতে পারেনা? তবে আপনি ঠিক ধরেছেন রিপোর্টের কোটেশন গুলোতে জামাতের নাম নেই। কিন্তু আন কোটেড অংশ গুলোতে জামাতের নাম এমন ভাবে লিখা হয়েছে যে দেখে মনে হচ্ছে নিয়াজি মিয়া বলেছেন যে জামাত –ই প্রধান রাজাকার দল ছিলো, তাই না?
কি বললেন? বই টা তে এরকম কিছুই পাচ্ছেননা? বলেন কি? বই টা তে কি পাচ্ছেন তাহলে?
১। Daily Star-এর রিপোর্টের শিরোণাম (Niazi's book mocks Jamaat's claim) থেকে প্রশ্ন আসে জামায়াতের কোন একটি দাবীটি নিয়াজীর বই ভুল প্রমান করছে? এর উত্তরটি প্রথম প্যারা থেকে পাওয়া যাচ্ছে।
সেখানে বলা হচ্ছে, জামায়াত বলে : "that the Army of Razakars was formed by the erstwhile Pakistan government itself to fight against the liberation forces of Bangladesh. " এ অংশ পড়লে মনে হচ্ছে নিয়াজীর বই পড়লে বোঝা যাবে রাজাকার পাকিস্তান সরকারের তৈরী একথা সত্য নয় বরং তা জামায়াতে ইসলামীরই তৈরী। অথচ নিয়াজীর বই-এর এবিষয় সংশ্লিষ্ট অংশ পড়লে এটা যে পাকিস্তান সরকারেরই তৈরী এ বিষয়ে আর কোন সন্দেহ থাকেনা। যেমন তিনি বলেছেন:
"The proposal for raising an organized Razakar Force remained under consideration with HQ CMLA and GHQ for a long time. Although their recruitment had started earlier, sanction for the raising of this force was givenat the end of August 1971. A separate Razakar Directorate was established, and the whole setup started taking proper shape...
...The Razakars were mostly employed in areas where army elements were around to control and untilizethem. Being raw and not fully trained, they were prone to subversion through local influences."[“The Betrayal of East Pakistan”, by Lt.- Gen. A. A. k. Niazi, published by Oxford University Press, 1998, page-78]
"Battle schools were established to train Razakars platoon and company commanders. To provide an effective command structure to this organization, about sixty young officers selected to be appointed as Razakar Group Commanders."[“The Betrayal of East Pakistan”, by Lt.- Gen. A. A. k. Niazi, published by Oxford University Press, 1998, page-79]
২. এই রিপোর্টের চতুর্থ প্যারায় বলা হচ্ছে: "According to Niazi's book, Jamaat-e-Islami, Nizam-i-Islam Party, and several factions of Muslim League were known as rightist political parties at the time, and the Army of Razakars was formed with men recruited from those parties.দেখুন -
এখানে বোঝা যাচ্ছে নিয়াজী বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী, নিজামে ইসলামী ও মুসলিম লীগ - এই সমস্ত দল থেকে লোকজন নিয়ে রাজাকার গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে কোন পৃষ্ঠা নম্বর দেয়া হয়নি। এমনকি এটাও সরাসরি বলছেনা যে এই অংশ নিয়াজি মিয়ার উপরোক্ত বই থেকে কোট করা হয়েছে নাকি এটা লেখকের নিজের কথা।
এখন নিয়াজির বই টা খুজে দেখেন? এমন কিছু কি পাচ্ছেন? কি বললেন? চারদিন ধরে খুজছেন? বই-এর এই বিষয় সংশ্লিষ্ট অংশ খুঁজে এরকম তথ্যের কোন অস্তিত্ব পাওয়া গেলনা? বলেন কি? সেখানে কোন দলের নামই উল্লেখ নাই!
রাজাকার ফোর্স কাদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল এ সম্পর্কে নিয়াজী বলেছেন: "...local Razakars, mainly consisting of ex-Biharis and loyal East Pakistanis..." [The Betrayal of East Pakistan”, by Lt.- Gen. A. A. k. Niazi, published by Oxford University Press, 1998, page-87]
দেখুন-
এখন যদি ওদেরকে চ্যালঞ্জ করেন? কি বললেন? করেছেন? বহুবার? ওরা বলে জামাতের বিরুদ্ধে মিথ্যা লিখলে হলুদ সাংবাদিকতা হয়না?
তাতো ঠিক, তাতো ঠিক কথা। জামাতিদেরকে খুন করলেও পাপ হয় না বরং পুন্য হয়।
“Criteria to evaluate a research work and article” – এ বিষয়ের উপর পেশাগত কারনেই পড়াশনা করতে হয়েছিল। তাতে কতগুলো বিষয়ে পাঠকদেরকে প্রথমেই সাবধান করা হয়েছে। আর তা হচ্ছে কিছু কিছু লেখকরা নিজের মতামতকে প্রতিষ্ঠিত করতে কিছু অনৈতিক কাজ করে যাকে বলা হয়, “Dishonest Tricks”।
এই Tricks ব্যাবহারে বাংলাদেশের পত্রিকা ওয়ালাদের জুড়ি নেই। এরা আমাদের কে খুব-ই বোকা মনে করে। আর আমরা বোকাও বটে। এদের হাল্কা Tricks- এই আমরা কাত হয়ে যাই আর অরা বাজি মাত করে নিয়ে যায়। দুই একটা tricks যে ধরা খায় না তা না।
এই যে যেমন Stephen J Rapp – এর ট্রাইবুনাল সম্পর্কে মন্তব্য প্রকাশ করলো Daily Star। তারা বললো ট্রাইবুনালের কার্যক্রম নিয়ে Rapp নাকি মহা Happy। Rapp তখন বাংলাদেশে। প্রকাশ করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জিব কেটে রিপর্ট রিমুভ করতে হলো। এই তো কদিন আগেই খালেদা জিয়া – আই এস আই নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে প্রথম আলো তো এখনো মুখ কালো করে মাফ চাইছে।
কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এদের মাফ চাইতে হয় না। যেমন, Chitagong University - তে কারা প্রোভিসির গাড়ী ভাংলো আর ওরা কি লিখলো? প্রতিবাদ করেও লাভ হয় না।
এটা কোন সাংবাদিকতা নয় এটা মুলত সাম্প্রদায়িকতা, দলিয় সাম্প্রদায়িকতা। একটি দলকে দোষি প্রমান করবার জন্য সমস্ত নৈতিকতাকে বিষর্জন দিয়ে মিথ্যাচার। এধরনের মিথ্যাচার করে সাম্প্রদায়িকরা, প্রতিক্রিয়াশীল রা।
কখনো ধর্মের নামে, কখনো আদর্শের আড়ালে আবার কখনো দলের নামে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।