ভালবাসি ভালবাসব। আপনি কি প্রমোশন পেতে চান? সাফল্য পেতে চান নিজের চাকরি ক্ষেত্র কিংবা ব্যবসায়? কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে চমত্কার কিছু পথ বের করতে হবে। বের করতে হবে সহজ কিছু উপায়। প্রমোশনের সহজ কিছু উপায় জানাচ্ছে তরিকুর রহমান সজীব
চাকরি ক্ষেত্রে প্রমোশন কিংবা ব্যবসায় উন্নতির ক্ষেত্রে আনুষাঙ্গিক বাধা বিপত্তিকে টপকাতে হবে- এতে কোন কিছু চিন্তা করারই অবকাশ নেই। আর আর্থিক উন্নতি ও প্রমোশনের ক্ষেত্রে সততা ও সহিষ্ণুতা থাকাটা জরুরি।
হতে হবে সুযোগ সন্ধানীও। সুযোগ বার বার আসেনা তাই সুযোগ আসা মাত্র তা গ্রহণ করতে হবে। সফলতা পেতে হলে আপনি কি করতে চান? কি করলে আপনি সফলতা পেতে পারেন? কোন কাজটি আপনি করতে পারবেন? এসব প্রশ্নের উত্তর বের করেই শুরু করতে হবে লক্ষ্যে পৌঁছবার লড়াই। এইসকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চিন্তা-ধারাগুলোই আপনাকে সাফল্যের উচ্চ শিখরে নিয়ে যাবে। আপনি যে কাজ করবেন সে সিদ্ধান্তটা নেয়া হয়ে হয়েছে।
আপনাকে এবার আরও কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যেমন আপনি যা করছেন তা কি পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে খাপ খাবে? কাজটি কি আপনার ক্যারিয়ার গড়তে যথেষ্ঠ উপযোগী? এই প্রশ্নগুলোর যথোপযুক্ত জবাব বের করেই আপনাকে কাজে হাত দিতে হবে। অন্যথায়, আপনার কাজের ক্ষেত্রই আপনাকে সফলতা পেতে দিবে না। ব্যর্থতার সাগরে ডুবিয়ে দেবে। সেই সাগরের কূল আদৌ খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে।
প্রমোশন পেতে হলে :আপনার বসের চাহিদা মাফিক আপনাকে কাজ করতে হবে, আর এটাই উচিত। জানতে হবে আপনার কাছে তার চাহিদা কী? বা, কী করলে প্রতিষ্ঠান আরও উন্নত হতে পারবে, হতে পারবে লাভবান? প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ করতে হবে প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার সত্ পরিকল্পনার কথা। আপনার সত্ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় সকলকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আপনার প্রতিষ্ঠান আপনার সাফলাঙ্ক সর্ম্পকে জানবে।
জানবে আপনার দক্ষতা, কর্মক্ষমতা, কর্মস্পৃহা, সততা ইত্যাদি সর্ম্পককেও। এরপরও বাচনভঙ্গি, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদিতো আছেই। তারপরই না পদোন্নতির প্রশ্ন। তাছাড়া কাজের মাপকাঠিতে মাপার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান আপনাকে বিভিন্ন প্রকার সাময়িক কাজ দিবে। সেই কাজে দক্ষতা প্রমাণ করতে পারলেই পাওয়া যাবে প্রমোশন।
এরপর যদি নতুন অবস্থানে আপনার সমর্থ প্রমাণ করতে পারেন, তখনি কেবলমাত্র আপনাকে নতুন অবস্থানের জন্য স্থায়ীভাবে বহাল করবে। নতুন অবস্থানে আসার পর আপনাকে আপনার নিজের কাজকেও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মনে মনে স্থির করতে হবে আপনি আপনার বর্তমান অবস্থানে সর্বোচ্চ সাফল্য দেখাতে পারবেন। নিজেকে স্থির করে নিতে হবে- ‘হ্যা! আমি পারবো’। আরও একটি বিষয়ে মনস্থির করতেই হবে যে আমি আমার সাফল্যের জন্য অতিরিক্ত সময়ও ব্যয় করতে পারবো।
অনেকের ধারণা সকাল-সন্ধ্যা কাজ করলেই প্রমোশন পাওয়া যাবে। কিন্তু এই ধারণাটা ভুল। সকাল-সন্ধ্যা কাজ করলেই প্রমোশন পাওয়া যাবে না। প্রমোশন পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কমর্দক্ষতা, বিচক্ষণতা, কর্মস্পৃহা, উন্নত ধারণা, নতুন নতুন কাজ করার মত সাহস থাকতে হবে, যা আপনার উর্দ্ধতনের নজর কাড়বে। আর এই কাজগুলো আপনাকে এনে দিবে সফলতা, পাইয়ে দিবে প্রমোশন।
তাছাড়া উর্দ্ধতন যেভাবে চায় তার পুরোটাই দিতে পারলে ভাল। এছাড়া প্রমোশনের ক্ষেত্রে আরও একটি জরুরি বিষয় হলে,া আপনি যদি বর্তমান কাজে পুরো সফলতা ছাড়াও অন্যান্য কাজেও দক্ষতার সাথে কাজ সম্পাদন করার ক্ষমতা অবমুক্ত করতে পারেন। তবে অবশ্যই আপনার উর্দ্ধতন আপনার প্রতি খুশি থাকবে।
উর্দ্ধতনকে আগ্রহী করতে :আপনার উচিত উর্দ্ধতনকে নতুন নতুন পরিকল্পনার কথা জানানো। উর্দ্ধতন কর্মকর্তা যখন ব্যস্ত থাকে তখন অবশ্য এই কাজ করা ঠিক নয়।
একটি ভাল সময় বিচার করেই আপনাকে কাজটি করতে হবে। সময়টা হতে পারে লাঞ্চের সময় কিংবা অফিস শেষে অথবা কোন আনন্দঘন মূহুর্তে। মনে করেন আপনার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোন ওয়েবসাইট নেই। আপনার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আপনি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতনকে আহবান করলেন। তাছাড়া ওয়েবসাইটটি তৈরি করতেও আপনি সাহায্য করলেন।
এতে আপনার উর্দ্ধতন কর্মকর্তা আপনার প্রতি খুশি থাকবে। কারণ ওয়েবসাইটটিতে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রকার বিজ্ঞাপনসহ সকল ধরণের তথ্য সরবরাহ করা যাবে। এমন সব নিত্য নতুন ধারণা তৈরি করলে আপনার প্রতিষ্ঠানটি অবশ্যই লাভবান হবে। আর প্রতিষ্ঠান লাভবান হলে আপনার প্রমোশন নির্ঘাত। মোটকথা, বসের মাথা যখন ঠান্ডা থাকবে তখনি কেবলমাত্র এমন সব নতুন ধারণা সর্ম্পকে বসকে জানাতে হবে।
নতুন ধারণা সর্ম্পকে পূর্ণ বিবরণ দিতে হবে। তাছাড়া আপনার পরিকল্পনাটি আর্থিক আয়ের ক্ষেত্রে কতটা যথোপযুক্ত তার পিছনেও কিছু যুক্তি দিতে হবে। সব শোনার পর বসের মতামত সম্পর্কেও জানতে হবে।
যথোপযুক্ততা বিচার করুন :আপনার নতুন অবস্থানে অফিস আপনাকে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে কিনা? তাছাড়া পদোন্নতি হয়ে আপনি এখন যে অবস্থানে আছেন তা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য কিনা? আপনার উর্দ্ধতনরা আপনাকে কিভাবে গ্রহণ করছে? আপনার পূর্বের অবস্থানের শূণ্যস্থান পূরণ করতে কি অফিস কোন উদ্যোগ নিয়েছে কিনা? এসব উত্তর বের করেই আপনার উচিত নিজের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসেব তৈরি করা, অন্যাথায় নয়। কারণ পদোন্নতির পর আপনার অবস্থানটি সাধারণত নড়বড়ে অবস্থায় থাকে।
আসলে আপনি নতুন কাজটি ঠিকভাবে করতে পারবেন কিনা এই বিষয়ে আপনার প্রতিষ্ঠানটির কিছু দ্বিধা থাকে। উর্দ্ধতনকে বুঝাতে হবে যে কোন কাজের জন্য আপনি উপযুক্ত আর নতুন এই অবস্থানে আপনি আপনার সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতা প্রমাণ করতে সক্ষম। তবে আপনি যদি নতুন কাজটিতে বহাল হবার পর হতেই নিজের দায়িত্ব সর্ম্পকে তত্পর থাকেন তবে সেই অবস্থানেও পূর্বের মতো দক্ষতা প্রমাণ করতে পারবেন।
মনে করেন প্রথমে আপনি একটি ব্যবসার ধারণা দিলেন। প্রতিষ্ঠান তা গ্রহণও করলো কিন্তু ধারণাটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলো না।
ফলে দেখা গেল, পরবর্তী কাজের ক্ষেত্রে আপনার ধারণা বাস্তবায়নের পিছনে প্রতিষ্ঠান খুব বেশি আগ্রহী হতে চাইবেনা বা বড় অংকের ঝুঁকি নিতে চাইবেনা। সেক্ষেত্রে আপনাকে ভেঙ্গে পড়লে চলবেনা। আবার কিছু নতুন ধারণা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানকে প্রেষণা যোগাতে হবে। প্রতিষ্ঠান যদি আপনার এই নতুন ধারণা বাস্তবায়নের পর সফলতা পায় তবে পরবর্তী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠানটি আবার হারানো আগ্রহ ফিরে পাবে। তাই আপনার উচিত নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাওয়া।
কাজের সাথে নাছোড়বান্দার মতো লেগে থাকা। কোন কাজে সফলতা না পেলেই যে ভাববেন আমি অদক্ষ এটা মোটেও ঠিক নয়। যে কাজে আপনি ব্যর্থ হয়েছেন একবার। সে কাজটিই শতবার সফলতা এনে দিবে আপনাকে। প্রমাণ করবে কর্মক্ষমতা ও কর্মদক্ষতা।
তারজন্য চাই মনোবল ও অদম্য স্পৃহা। কাজে সফলতার ক্ষেত্রে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সূক্ষ্মতা। অতি সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করলে ব্যর্থ হবার কারণগুলো খুঁজে বের করা কোন ব্যাপার না। ব্যর্থ হবার কারণ বের করার পর মনে মনে স্থির করতে হবে আমি পরবর্তীতে এই ভুল এড়িয়ে যাব। তাছাড়া নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় চোখ কান খোলা রেখে কাজ করলে সফলতা আসবে।
Source: ittefaq ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।