আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"মন তুমি কার?" - একটি চালুনি বিশ্লেষন

আমি গেছি আমার এক ফ্রেন্ড আশিক এর বাসায়। ফেইসবুকিং করতেসি, এমন সময় আশিক এমুন নিউজ শুনাইলো যে আমি আসমান থাইকা মাটিতে না, এক্কেরে পাতালে পইরা গেলাম। আশিক- আমজাদ এর নাকি বই বাইর হইসে। আমি- কস কি মামা? হাচা নাকি? - তাইলে আর কি কই... - অই হালায় তো পাঠ্য বইয়ের গল্পের নাম ই মনে রাখবার পারে না। অয় লেখসে বই? মানা যায়না... - হুদা লেখেনাই, পুরাই প্রেমের ছ্যাকা খাওয়া গল্প।

- কাহিনী কি? ক্যামনে বাইর করলো? - আরে মামা, পকেটে পাত্তি থাকলে তুই বইমেলায় তর বাসার বাজারের লিস্ট ও ছাপায়া বাইর করতে পারবি। - আইচ্ছা। পাবলিকে বই খায় কেমন? - আমি জানি না। তয় অর কলেজে নাকি অনেক খাইসে। আমার বন্ধু আমজাদ হোসেন।

অমর একুশে বইমেলা ‘১২ তে ওর একটা বই বের হইসে। বইয়ের নাম হেব্বি ফাটাফাটি; “মন তুমি কার?”। ৪৫ পৃষ্ঠার বই। বই এর প্রচ্ছদ ব্যাপুক জটিল। প্রচ্ছদ দেইখাই নাকি সবার বই কিনতে মন চায়।

ভিতরে কি মাল-মসলা আছে, সেইটা পরের ব্যাপার। এইটা নিয়া আমার কিছু বলা চলে না, কারন বইটা আমি এখনো আমি নিজেই পড়িনাই। ক্যান পড়িনাই- সেইখানে পরে আসতেসি... কয়েকদিন পর আরেক ফ্রেন্ড; রাশেদ এর সাথে দেখা। কথাবার্তার এক পর্যায়ে আমজাদের বই এর কথা উঠলো। অর কাছ থাইকা বিস্তারিত জানলাম।

“আরে দোস্ত কইস না। অর বই ধার নিয়া পরসি। পইরা মনে অইসে অরে ফোন কইরা কিসু কথা কই। তোর কাসে বন্ধ নাম্বার থাকলে আমারে দিস, অরে কল দিমু। কল দিয়া কমুঃ আপনে সালমান না?” কথার মইধ্যে ডাইন হাত ঢুকায় দিলাম “সালমান ক্যান?” “হালায় তো বই এর উপরে অর নাম দিসে সালমান” আমি তো আরো অবাক খায়া গেলাম।

যাই হোক, রাশেদ আবার শুরু করসে “যখন কইবো যে, অয় ই সালমান, তারপর কমুঃ আপনের বই পইরা আমি নিজে তো ধইন্য হইসি-ই, আমার বাপে ও ধইন্য হয়া গেসে। বা*এর গল্প লেখসেন?” এইবার বাম হাত ঢুকাইলাম “ক্যান মামা, গল্প নাকি ঢাকা কলেজ়ের পুলাপান ব্যাপুক লাইক মারসে? আশিকরে তো আমজাদ এইটাই কইসে। “ *%৳#%&ঁ%&ঁ%&*&*ঁ(এইখানে রাশেদ খাশ বাংলা গালি দিসে। সেন্সর্ড)। ওর বই বাইর হইসে ২১শে ফেব্রুয়ারি।

২২ তারিখে খবর পাইসি, বই বিক্রি হইসে ৮ কপি। আমি জিগাইলাম “অর খরচ উঠসে?” -অয় তো ফোন কইরা সবাইরে বই এর কথা জানাইসে, হেই ফোনবিলটাও উঠেনাই। অর টোটাল খরচ হইসে ৫০০০০ টাকা। ৪০০০০ বই ছাপানোতে, ১০০০০ টাকা বিজ্ঞাপনে। - ওর বাপ এতো টাকা দিলো অরে? - ওর বাপের কথা হইলোঃ কয়জনের পোলায় বই লেখতে পারে? আমার পোলায় বই লেখসে।

- কাহিনী কি? - আরে, অর লাইফ এর কাহিনী। একটা মাইয়্যারে বালুবাসতো। মাইয়্যা তো অরে ভাবতো এটিএম এর বুথ। আসলে মাইয়্যাটা খারাপ আসিলো। অর লগে অভিনয় করসিলো।

এই কাহিনীরে ইলাস্টিকের লাহান টাইন্যা বড় করসে। আন্টি(আমজাদের আম্মা) তো গল্প পইরা কইসে, পুলাপান সব নষ্ট হয়া গেসে। এইডি কি লেখসস? - ভিতরে কি আসিলো রে? উল্টা-পাল্টা কিসু আছে? - আরে না। ৪৫ পৃষ্ঠার বইয়ে আর কি থাকবো? অয় কিন্তু প্রকাশকের কাছে জমা দিছিলো ২৫০ পৃষ্ঠার পান্ডুলিপি। প্রকাশক ব্যাটায় বড়ই ত্যাদর টাইপ পাবলিক।

মনে লয় কি-বোর্ড থাইকা ব্যাকস্পেস চাইপা ধইরা বইসা আসিলো। নাইলে ২৫০ পৃষ্ঠার গল্পরে ৪৫ পৃষ্ঠা কেমনে বানাইলো- এখনো বিরাট রহইস্য। না কইরাই উপায় কি... ইডেন কলেজরে পচাইসিলো। - ক্যামনে? (রাশেদ যা কইলো, এইখানে লেখা যাইবো না। নিজ দায়িত্বে বুইঝা লন।

) - বাহ বাহ... আর কিছু? - হালার কতো বড় সাহস, হুমায়ুন আহমেদ রে পছাইসিলো। শাওনরে ও পচাইসিলো। - কস কি? - অর গল্প ছাপানোর পর যখন কইসে অয় এইরকম পচাইসে, তহনি কইসি, তুই ৫০০০০ টাকা দিয়া বই বাইর করসস; ১ কোটি আরো রেডি রাখ। কেস তো খাবি ই... বই বাইর হওয়ার পর দেখে কিচ্ছু নাই। বুঝস না, ২৫০ পৃষ্ঠারে ৪৫ পৃষ্ঠা বানাইসে।

- হিঃ হিঃ হিঃ - অর বাপে নাকি ১০০ কপি অর বাপের কলিগ সচিবগো দিসে। হেগো খায়া দায়া আর কাম নাই, গল্পের বই পরবো। - দোস্ত, বইটা একটু জোগার কইরা দিবার পারবি? - পারুম না। তুই কিন্যা ল। অই জিনিস আর দেখবার চাই না।

(মনে মনে কইলাম, এর থাইকা অই ট্যাকা দিয়া মুবাইলে কথা কমু, তবু এই বই কিনুম ন। । রাশেদ এর সাথে কথা না হইলে বইটা হইতো কিনতাম...) [পরিশিষ্টঃ কেউ কেউ ভাবতে পারেন, এ কেমন বন্ধু... কই বন্ধুর উপকার করবে, তা না কইরা উলটা বন্ধুর সমালোচনা করে... তাদেরকে কই, যারা আমজাদরে দেখেন নাই, হেরা বুঝবেন না। এই পুলা এত্তোডি ট্যাকা নষ্ট করসে, ভাইবাই খারাপ লাগতেসে। প্রকাশক ব্যাটায় ক্যামনে অর পুটু মারসে, সেইটাই চিন্তা করতেসি।

যাই হোক, আমি হয়তো ঠিকভাবে বুঝাইতে পারিনাই। বাট, যা য্যামনে ঘটসে, ত্যামনেই কইসি। একটু যে ত্যানা প্যাচাইনাই, তা কিন্তু না। মাফ করবেন] ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।