বাংলা আমার দেশ একাত্তরে দিন যতই যাচ্ছিল, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নীল নকশা ততই গাঢ় হচ্ছিল। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান হঠৎ করেই ২৫ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সংসদ অধিবেশন স্থগিত করেন। যা ছিল ২৫ মার্চের গণহত্যার পরিকল্পনারই একটি অংশ। কিন্তু ইয়াহিয়ার এমন ঘোষণার পেছনে যে রোমহর্ষক এ নীলনকশা ছিল, তখনও জানতে পারেনি এ দেশের মানুষ।
তবে ইয়াহিয়ার এ ঘোষণায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে স্বাধীনতাকামী পূর্ব পাকিস্তানের কোটি জনতা।
ঢাকাসহ সারাদেশেই বিক্ষোভ-মিছিল-সমাবেশে উত্তাল হয়ে ওঠে। কোথাও কোথাও পাক হানাদারদের সঙ্গে প্রতিরোধও গড়ে তোলে বীর বাঙালি।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার পাশাপাশি ঢাকায় এসে উপস্থিত হন পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো। মুক্তিপাগল বাঙালির মধ্যে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ক্রমশ অগ্নিস্ফুলিঙ্গে রূপ নেয়।
ইয়াহিয়ার সঙ্গে সিদ্ধান্তহীন বৈঠকের পরও সংকট দূর করার আশায় ভুট্টোর সঙ্গে আলোচনায় বসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবনে ৭৫ মিনিট স্থায়ী এ বৈঠকও ব্যর্থ হয়।
এতসব আলোচনা যে শুধুই কালক্ষেপণ তা বুঝতে পারেন বঙ্গবন্ধু। আর এই কালক্ষেপণের আড়ালেই চলে ভিন্ন ষড়যন্ত্র। পাকিস্তান থেকে আনা হয় বাড়তি সৈন্য, আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ।
অবশ্য পাক সামরিক জান্তার ষড়যন্ত্র বাড়লে বাঙালিও মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্র¯'তির দিকে এগিয়ে যায়।
ঘরে ঘরেই চলে প্রতিরোধের প্র¯'তি। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা নেয় গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ। তারা অত্যন্ত গোপনে নানাভাবে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ সংগ্রহ অভিযান চালিয়ে যান।
অন্যদিকে মার্চের শুরু থেকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে যে গণবিস্ফোরণের সৃষ্টি হয়, তা দৃঢ় করতে জাতীয় দৈনিকগুলো ২২ মার্চে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য একটি বাণী দেন।
এ ছাড়া একাত্তরের এই দিনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো, পূর্ব পাকিস্তানের সব দৈনিকের প্রথম পাতায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকার ছবি প্রকাশ। সারাবিশ্বের মানুষকে জানাতে এবং বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় করতেই মানচিত্রখচিত স্বাধীন বাংলার এ পতাকার ছবি ছাপানো হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।