আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈএ...ক, থু...থু।ভারতীয় মালোরগো কর্ম দেখুন, মানে কর্ম সম্পাদান করে কিভাবে তা।

শুধু ভালবাসি, আর ভালবাসতে চাই। ভারতীয়দের অর্ধেকই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয় উন্মুক্ত স্থানে! আন্তর্জাতিক ডেস্ক বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ঢাকা : ১২০ কোটি অধিবাসীর ভারতে অর্ধেক মানুষই খোলা আকাশের নীচে মলত্যাগ করে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে দেখা যায়, ভারতের মোট বসতবাড়ির অর্ধেকেই কোনো শৌচাগার নেই। অথচ দেশটিতে এর থেকে বেশি মানুষের হাতেই রয়েছে মোবাইল ফোন। ভারতের মোট ২৪ কোটি ৪৬ লাখ বসতবাড়ির মধ্যে শৌচাগার আছে ৪৬.৯ শতাংশ বাড়িতে।

বাকি ৪৯.৮ শতাংশ বাড়ির বাসিন্দারা খোলা আকাশের নিচেই কর্মটি সম্পন্ন করেন। ৩.২ শতাংশ বাড়ির বাসিন্দারা ব্যবহার করেন পাবলিক টয়লেট। ভারতের শুমারি বিভাগের এক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে। ২০১১’র সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যায়, ভারতের ৬৩.২ শতাংশ বাড়িতেই টেলিফোন সংযোগ আছে। অর্থাৎ যে বাড়িতে টয়লেট নেই সেই বাড়িতেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হয়।

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন জরিপের এই তথ্য একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে সমাজব্যবস্থার বিশেষ করে ভারতীয় সমাজের জটিল প্রকৃতি ও অসঙ্গতিপূর্ণ বৈপরীত্যকেই উন্মোচন করছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সুফলভোগী ভারতের কোটি কোটি মানুষ যেখানে নিত্যনতুন প্রযুক্তির পণ্যসামগ্রী ক্রয় করার সামর্থ্য রাখে সেখানে ন্যূনতম মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত দেশটির অর্ধেক মানুষেরই এমনকি টয়লেটে যাওয়ারও সঙ্গতি নেই। জরিপে দেখা যায়, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ঝাড়খন্ড রাজ্যের ৭৭ শতাংশ বাড়িতেই টয়লেট নেই। উড়িষ্যায় এই হার ৭৬.৬ শতাংশ এবং বিহারে ৭৫.৮ শতাংশ। এই তিনটি রাজ্যই ভারতের সবচেয়ে অবহেলিত অঞ্চল যেখানে বেশিরভাগ মানুষই দৈনিক এক ডলারেরও কম আয়ে জীবন ধারণ করে।

ভারতের শুমারি কমিশনার এবং রেজিস্ট্রার জেনারেল সি চন্দ্রমউলি গত মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের সময় বলেন, ‘খোলা আকাশের নিচে মলত্যাগ অব্যাহত থাকা ভারতের জন্য একটি গভীর উদ্বেগের ব্যাপার। দেশের অর্ধেক মানুষই এই কাজে বাধ্য হচ্ছে। ’ প্রচলিত সংস্কৃতি ও সংস্কার এবং উপযুক্ত শিক্ষার অভাবই এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের জন্য দায়ী বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আরো অনেক রাস্তা পাড়ি দিতে হবে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন। জরিপে এর পাশাপাশি ভারতের পরিবার ব্যবস্থা সম্বন্ধেও আরেকটি বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে।

ভারতীয় পরিবারগুলোর ৭০ শতাংশই এখন এক দম্পতি বিশিষ্ট। এই ফলাফল ভারতের পারিবারিক এবং আর্থসামাজিক অবস্থার নাটকীয় পরিবর্তন নির্দেশ করে যেখানে পূর্বে যৌথ পরিবারকেই ভারতীয় ঐতিহ্যের আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এছাড়া বিনোদন ও তথ্যের সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে ভারতের সমাজ জীবনে কি ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে তার একটি চিত্রও উঠে আসে জরিপের তথ্যে। জরিপে দেখা গেছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৫৩.২ শতাংশই বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। এছাড়া ৪৭.২ শতাংশের বাড়িতে টেলিভিশন রয়েছে।

তবে এখনও কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে ভারতের বিশাল জনগোষ্ঠী এখনও পিছিয়ে আছে। মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩.১ শতাংশ ইন্টারনেট সুবিধাসহ কম্পিউটার ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে আসে। এই জরিপ আসলে সবার সামনে একটি তিক্ত সত্য উন্মোচিত করে। দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণে যেখানে ভারতে সৃষ্টি হওয়া উঠতি মধ্যবিত্ত ও ধনিক শ্রেণি নাগরিক জীবনের সাম্প্রতিকতম সুবিধাগুলো সহজেই গ্রহণ করতে পারে সেখানে উন্নয়নের চাকায় পিষ্ট হয়ে দেশটির বেশির ভাগ মানুষই এখনও তাদের বেঁচে থাকার মৌলিক চাহিদাও মেটাতে পারে না। বাজার অর্থনীতির এই যুগে এ সত্য শুধু ভারতের জন্যই প্রযোজ্য নয়, বরং তৃতীয় বিশ্বের স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল সব দেশের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য।

সম্পদের সুষম ব্যবহার এবং সামাজিক সমতা এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একটি উপায় হতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন। Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।