জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com মেনে চলা মানুষের স্বভাবের মধ্যে অন্যতম। কিছু না কিছু মেনে চলবেই, যদি সে সুস্থ-সম্পন্ন মানুষ হয়। চাই সত্য কি মিথ্যা; কোন না কোন নিয়ম-পদ্ধতির অনুসরণের নেশা তার রক্তের সাথে মেশানো আছে। ব্যবধান থাকে যার যার পছন্দের মাঝে। কিন্তু মেনে চলার নীতিতে সবাই সমান।
কেউ সত্যকে সত্য বলে মানে এবং এ নীতিকে জীবনের জন্য পছন্দ করে। কেউ মিথ্যাকে পছন্দ করে এবং মিথ্যার চর্চা করে বানিয়ে নেয় জীবনের জন্য চলার পথ। যার কাছে মিথ্যাই বোধগম্য, মিথ্যাই যার বিবেচনায় লাভজনক, তার দৃষ্টি সীমায় সত্য ধূঁ ধূঁ কুয়াসা। দেখতে পায় না সত্যের রশ্মি। আবার যার বিবেচনায় সত্যই সঠিক এবং পরিণামে লাভজনক, তার দৃষ্টিতে মিথ্যা চির পরিত্যাজ্য।
চাই তাতে পরাজয় তার পিছু লেগে থাকুক, বিপদ তার নিত্য সঙ্গী হয়ে থাকুক, ক্ষতি তার প্রতিদিনের অর্জন হয়ে থাকুক; তার বিশ্বাস একদিন তার জয় হবেই হবে। মূলতঃ জগতের ইতিহাসে এযাবৎ কাল মানব জাতি তাই অবলোকন করে এসেছে।
মানব জাতির জন্য সত্য-বাণী নিয়ে মহাসত্যের নিকট হতে যে গ্রন্থ এসেছে, তার নাম আল কুরআন। একমাত্র এই একটি গ্রন্থই পেরেছে পৃথিবীকে রঙিন করে সাজিয়ে দিতে। এ রঙ সত্যের রঙ।
এ রঙ যার মনে একবার লেগেছে, কেবল সেই উপলব্ধি করতে পারে কত প্রশান্ত সুন্দর এ রঙ। কিন্তু লেগে থাকার মত নয়; বরং ধুয়ে যাওয়ার মত, মুছে যাওয়া এ রঙের ধর্ম। তাই যারাই রঙিন হতে নয় শুধু বরং চিরদিন রঙিন থাকতে চায় কুরআনের রঙে, তাদের জন্য একান্ত আবশ্যক যে, তারা প্রতিদিন, প্রতিটি মুহূর্তে নিজেদের মনে, নিজেদের অবয়বে মাখাবে এ রঙ। শুধু তাই নয়; যাদের মাঝে নেই কুরআনের রঙ, যারা দেখতে পায়নি এখনো এ প্রশান্ত সুন্দর, তাদের মাঝে বিতরণ করা আবশ্যক। তবেই কেবল রঞ্জিত থাকা যাবে কুরআনের রঙে।
যিনি এ কুরআন নিয়ে এসেছেন মানুষের মাঝে, তিনি তাঁর নিজ হাতে গড়ে তুলেছিলেন এমন কিছু মানুষ, যারা ছিলেন এ কুরআনের রঙে রঞ্জিত। পৃথিবীতে তাদের মত এমন করে কুরআনকে ধারন করার নজির আর কেউ দেখাতে পারেনি ইতিপূর্বে; পারবেও না। আসুন দেখে নেই কিভাবে ধারণ করেছেন তারা কুরআনকে? কিভাবে রাঙিয়েছেন নিজেদেরকে কুরআনের রঙে?
আবূ আব্দুর রহমান সালফী তার কুরআন শিক্ষক সাহাবাবৃন্দ হতে বর্ণণা করেন যে, তাঁর শিক্ষক সাহাবীরা বলেছেন- 'আমরা মহানবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হতে এ নিয়মে আল-কুরআন শিখতাম যে, দশটি আয়াত শেখার পর আমরা তা পুরোপুরি আমল করতাম এবং তারপর পরবর্তী আয়াত শিখতাম। অর্থাৎ, পূর্বায়ত্ত দশটি আয়াত কার্যকরী না করে পরবর্তী কোন আয়াত শিখতাম না। এভাবে আমরা কুরআনের ইলম ও আমল একই সঙ্গে আয়ত্ত করেছি।
" [ইবনে কাসীর: ১/১৭০]
এই ছিল তাদের পদ্ধতি, যাদের সামনে জিবরাঈল 'আলাইহিস্ সালাম সরাসরি মহান আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর বাণী আল-কুরআন নিয়ে এসে শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে পৌঁছে দিতেন। আজ নবী নেই, সাহাবীগণও নেই; নেই সে পর্যায়ের কোন মানুষও। মুসলমানদের জন্য ভরসা তো কেবল আল-কুরআন; যা আজো অবিকল এক চূড়ান্ত মু'জিজা হয়ে বর্তমান মুসলমানদের নিকট। এ সেই কুরআন যা শিখে ও সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে সাহাবীগণ হতে পেরেছেন বিশ্বসেরা। আজো যদি কুরআনকে আমরা সাহাবীদের মত করে ধারণ করতে পারি, তাদের মত করে কয়েকটি আয়াত মুখস্থ করি এবং নিজেদের জীবনে সেগুলোর বাস্তাবায়ন করতে পারি, তবে কুরআনের সে মু'জিজা আজো পারে আমাদেরকে জগৎসেরা বানিয়ে দিতে।
বাস্তবায়ন বলতে বুঝাতে চেয়েছি- আমরা সূরা ফাতেহা পাঠ করি এবং এর অর্থ ও তাৎপর্য অনুধাবন করি এবং জীবনের কোথায় কোথায় এর ব্যবহার রয়েছে তা জেনে সে অনুযায়ী নিজেকে সাজাতে পারি, তবে মুসলমানদের জানা উচিত- এ সেই কুরআন। আল্লাহর কসম! এ সেই কুরআন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।