আজ থেকে শুরু হল ১৮ দলের ডাকা দু'দিনের সকাল সন্ধ্যা হরতাল। হরতালের প্রধান ইস্যু ৫ মে হেফাজতে ইসলামীর কর্মসূচীতে পুলিশি হস্তক্ষেপ এবং হতাহতের ঘটনা। কিন্তু তাদের শুরু হওয়া এই হরতালে হেফাজতে ইসলামও সর্মথন দিয়েছেন। হেফাজতে ইসলাম নারী নেতৃত্বের পরিবর্তন আনতে চায় দেশে। অথচ তারা এই নারী নেতৃত্বের হরতালের সমর্থন করে কিভাবে।
তার মানে কি এটা দাঁড়ায় যে, হাসিনা কিংবা আওয়ামীলীগ করলে সব হারাম আর খালেদা কিংবা বি.এন.পি করলে সব হালাল? এই হরতালে আশংকা রয়েছে আরো হতাহতের। কারণ আজ এবং আগামীকালের হরতালে মাঠে বি.এন.পির চেয়ে হেফাজত বাহিনী বেশী থাকবে এবং তারা পুলিশ কিংবা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দেখলেই ছুড়ে মারবে ইট-পাটকেল। আর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও কিন্তু দেখে থাকবেনা। তারাও তখন পিকেটারদের উপর আক্রমণ করতে বাধ্য হবেন। হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলাম, বি.এন.পি এরা কি আসলেই দেশের উন্নয় চায়? আমার মনে হয় না, তারা তা চায় না।
যদি চাইতো তাহলে তারা কখনোই সাধারণ মানুষের হত দরিদ্র মানুষের জান-মালের ক্ষতি সাধন করত না। এরা প্রতিনিয় গাড়ি ভাংচুর, গাড়ীতে, ট্রেনে আগুন দিয়ে কার ক্ষতি করছে? এই ক্ষতিতো আমাদের। সরকারের না। কোন সরকারই তার বাপের টাকা দিয়ে দেশ পরিচালনা করে না। সব আমাদের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নেওয়া টাকা দিয়ে হয়।
আমাদের ক্ষতি করে দেশের বিরোধী দলগুলো কি বুঝা্তে চাচ্ছেন তা আদৌ বোধগম্য নয়। এমনিতেই দেশের বিপর্যয় চলছে। সাভারের ভবন ধ্বসে অনেকগুলো তাজা মানুষ লাশ হতে হল। এই বিপর্যয় পুরোপুরি কাটিয়ে উঠার আগেই দিয়ে বসল হেফাজতে ইসলামীর কর্মসূচী। তারা বুদ্ধি খাটিয়ে এই সময়টিকে বেঁচে নিয়েছেন, যাতে ২ জন মরলেও ২০০০/৩০০০ বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য।
তাদের যখন নিখোঁজ কিংবা নিহত ব্যক্তিদের নাম ঠিকানা সহ প্রকাশ করতে বলা হয়, তারা এখন তালিকা করছে ঠিকই, কিন্তু তা ৫মে মিতিঝল শাপলা চত্বরে নিহতদের নয়, বরং সাভারের রানা প্লাজায় নিঁখোজ ব্যক্তিদের নাম তালিকাভূক্ত করে দেখানোর পায়তারা করছেন। এই হুজুর যারা মানুষকে ইসলাম শিক্ষা দিবেন, ইসলামের প্রচার করবেন, যারা মানুষকে সৎ পথের দিক নির্দেশনা দিবেন তারাই যদি মিথ্যাচার করে, কথায় কথায় মিথ্যা বলে তাহলে আমরা কার উপর বিশ্বাস করবো। কাকে ইমানদার জানবো? এরকম মুমিন তো কাউকে দেখছিনা। তাই আমার আকুল আবদেন দেশের সমস্ত ইসলামী দলগুলোর প্রতি আপনারা সহিংসতার রাজনীতি ছেড়ে দিন। আপনার শান্তির পথ অনুসরণ করুন।
অন্তত দেশের মানুষের শান্তির জন্য, দেশের জন্য। গতকাল আমি সামাজিক যোগাযোগ সাইটের অন্যতম ফেইসবুকে একটি মন্তব্য দেখে অবাক। হেফাজতে ইসলামের এক অনুসারী লিখেছেন এবং সকলের প্রতি আহবান করেছেন, তারা যেন দেশের কোন পুলিশ, বিজিবি, কিংবা আওয়ামীলীগ কারো জানাজা না পড়েন, কারো মৃত্যুতে যেন শোক প্রকাশ না করেন। তাদের উদ্দেশ্য বলছি, ভাই আপনারা আগে ইসলামকে সঠিকভাবে জানুন। তারপর ইসলামের প্রচারে আসুন।
কই আপনারা তো এখনও পর্যন্ত দেশে এমন কোন ইসলামীক অনুষ্ঠান করেননি যেখানে ভিন্ন ধর্মের লোক বেশি থাকে! ইসলামের যদি সত্যি প্রচার করতে চান তাহলে ডাঃ জাকির নায়েকের মত ভিন্ন ধর্মের মানুষের সামনে দাঁড়ান। তাদের সওয়ালের জবাব দেন। তাদের যুক্তিসহকারে বুঝান ইসলাম কি। যারা ইসলাম সম্বন্ধে জানে এবং পালন করে আল্লাহর দোহাই লাগে তাদেরকো বিদ্রুপ করবেন না। আপনি নিজেকে খাঁটি মুসলমান কিংবা ইমনদার ভাবলেও আপনি নিজেও জানেন না, মৃত্যুর আগ মুহুর্তে আপনার কালেমা নসিব হবে কিনা।
দেশটাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবেন না। দেশে এখন চরম বিপর্যয় চলছে। সাভারের দুর্ঘটনা, কালবৈশাখী, বজ্রপাত, শাপলা চত্বরের ঘটনা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংঘর্ষে বিগত ১৫ দিনে ১০০০ এর বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তাই দেশের আর কারো মৃত্যু কামনা না করে যারা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাতের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন।
আমার এই পোষ্টটি একই সাথে আমার ব্লগে প্রকাশিত ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।