আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

।। অতিপ্রাকৃত একজন ।। (শেষ পর্ব)

আমি আমাকে নিয়েই তো এখনও বেচে আছি । একদিনআমাকে নিয়েই চলে যাব । সেদিন খুঁজলেও আর পাবি না..........আমার ভার্চুয়াল ফ্যাক্টরিতে স্বাগতম । আমার মন খারাপের সময়টা এখানে আর ফেসবুকে কাটে । মাঝে মাঝে দু একটা লেখা তৈরি করতে ইচ্ছা হলে চলে আসি এখানে ।

https://www.facebo আস্তে আস্তে তার জীবনটা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায় । কিন্তু কেনো জানি তার সাথে মানুষ স্বাভাবিকভাবে মিশতে পারতো না । একটা মেয়েকে ভীষন ভালো লাগতো তার । আস্তে আস্তে মেয়েটার সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যায় তার । একদিন সন্ধ্যায় মেয়েটাকে প্রপোজ করতে যায় সে ।

বর্ষাকাল ছিলো তখন । আকাশটা বেশ মেঘলা ছিলো । মেয়েটার সাথে একটা রেস্তোরায় দেখা করে । ভেজা কাক হয়ে ইরফান রেস্তোরাটায় যায় । মেয়েটাকে প্রপোজ করতে যাবে , ঠিক তখনই বজ্রপাত হয় ।

রেস্তোরার উপর এসে পরে আগুনের গোলা । ইরফানের চোখের সামনে মেয়েটার শরীর ছাই হয়ে যায়। ইরফান দিশেহারা হয়ে যায় । শকওয়েভের প্রচন্ড ধাক্কায় উঠে গিয়ে একটা গাছের সাথে বাড়ি খায় সে । অবাক করা হলেও সত্য যে ইরফানের শরীরে সামান্য কেটে ছড়ে যাওয়া ছাড়া অন্যকোন ক্ষতি হয়নি ।

মেয়েটার লাসও পাওয়া যায়নি। এর পর থেকে ইরফান বদলে গেছে একদম । একদিন বাথরুমে ঢুকে গোসল করতে গিয়ে নিজের ভীতরে অস্বাভাবিক একটা ক্ষমতা আবিস্কার করে সে । বাথটাবের পানি টাটকা গরম ছিলো । ইরফান খেয়াল করেনি ।

সরাসরি বাথটাবে ঝাপ দিয়েছিলো সে । পানি এতোটাই গরম ছিলো যে ইরফানের শরীর সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো । কিন্তুআশ্চর্য হলেও সত্য ইরফানের কিছুই হয়নি । তারপর পরপর কিছু মারাত্মক ঘটনা ঘটে যায় । সে সপ্নে বিভিন্ন অশুভ জিনিস দেখতে শুরু করে ।

অনেকটা ফাইনাল ডেস্টিনেশনের নায়কের মতো । প্রথম প্রথম বিশ্বাস করতো না । কিন্তু তার সপ্নগুলো সত্যি হতে থাকে । তারপর থেকে ভয় পেয়ে যায় ইরফান । মানুষ তাকে ভয় পেতে শুরু করে ।

বিভিন্নভাবে মারার চেষ্টা করে । ইরফান ঢাকা থেকে চলে আসে । তারপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছে । হটাত্‍ ইরফানের ঘুম ভেঙ্গে যায় । অশুভ একটা চিন্তা নাড়া দেয় তাকে ।

বিছানা ছেড়ে ডাক্তারের কেবিনের দিকে যেতে থাকে সে । (৪) ডাক্তার সাহেব তার চেয়ারে বসে আছেন । আজকের রোগীটাকে নিয়ে ভাবছেন তিনি । ছেলেটা অদ্ভুত । অদ্ভুত কিছু আছের তার মধ্যে ।

ভালো লাগছে না । কফির কেটলিটা হিটারের উপর রাখলেন তিনি । খেয়াল করলেন না , তার সার্জিক্যাল ছুড়িটার গায়েও হিটারটার তাপ লাগছে। নিজের চেয়ারে বসলেন আবার । চিন্তায় ডুবে গেলেন ।

অন্যদিকে ইরফান দৌড়াচ্ছে হাসপাতালের করিডোর দিয়ে । ছোটার সময়ই তার চোখ পরে জানালায় । বাইরে আকাশে ঘনমেঘ । চাঁদ দেখা যাচ্ছে না । ছোটার মাত্রাটা বাড়িয়ে দিলো ।

ডাক্তারের চেম্বারের কাছাকাছি এসে চিত্‍কার করে উঠলো সে । ডাক্তার সাহেব আতংকিত হয়ে দাড়িয়ে গেলেন । তার হাত সার্জিক্যাল প্লেইটে ধাক্কা খেলো । সাই করে সার্জিক্যাল ছুড়িটা তার ঘাড়ের পিছন দিয়ে ঢুকে গেলো । এফোড় ওফোড় হয়ে গেলো তার গলা ।

গরম ছুড়িটা তার রক্তের সাথে লাগায় ধোয়া উঠলো চারপাশে । মাংস পোড়ার বিশ্রি দুর্গন্ধ মূহুর্তেই ছড়িয়ে পরলো চারপাশে । আর ডাক্তারের মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে এলো ফোয়ারার মতো । ঠিক ঐ মূহুর্তে প্রচন্ড বাজ পরলো । আগুনে গোলা সরাসরি ডাক্তারের চেম্বারটার উপর পরলো ।

ইরফান তখনো করিডোরে দাড়িয়ে আছে । ইরফানের চোখের সামনে ডাক্তারের চেম্বারটা ধূলায় পরিনত হলো । প্রানপনে ছুটতে লাগলো সে । হাসপাতাল ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে এলো সে । ছুটছে সে ।

আর বজ্রপাত হয়েই যাচ্ছে। ইরফানের চারপাশের গাছপালায় গিয়ে পরছে । ইরফান জানে তাকে মরতেই হবে । প্রকৃতি তাকে বাঁচতে দিবে না । কেননা সে অস্বাভাবিক ।

প্রকৃতিরশৃঙ্গলতার উর্দ্ধে । আর কয়েকবার বজ্রপৃষ্ঠ হলেই তার মৃত্যু নিশ্চিত । তবুও বেঁচে থাকার তীব্র আকাঙ্গায় ছুটে চলছে ইরফান। প্রকৃতি আর মানুষের যুদ্ধ। তবে প্রকৃতিরই জয় হবে হয়তো ।

হওয়াটাই উচিত । না হয় পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলতা দেখা দিবে । কিন্তু পৃথিবীর সবকিছুই একটা নির্দিষ্ট ছকে চলে । সেই ছকের বাইরে কিছু ঘটলে চরম বিপদে পরতে হবে সব জীবন্ত জিনিসকে । তাই মাঝে মাঝে প্রকৃতি নিজ থেকেই ঐ সব অস্বাভাবিক জিনিস অথবা প্রানিকে নিধন করে ।

ইরফানের দুর্ভাগ্য প্রকৃতির নিধনের খাতায় তার নামটাও আছে । - - কিছু কথা - - গল্পের নায়ক ইরফানের মধ্যে যে অতিপাকৃত ক্ষমতাগুলো ছিলো , ঠিক ঐ ক্ষমতার মানুষ পৃথিবীতে আসলেই আছে । "টিমো কাওকানেন" নামক এক ব্যাক্তি আছেন যার বাড়ি ফিনল্যান্ড এ । সে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ফুটন্ত পানিতে ১৬ মিনিট অবলিলায় দাড়িয়ে থাকতে পারে । "ক্রিস রবিনসন" এর বর্তমান অবস্থান এডিনবার্গ ।

যেটা স্কটল্যান্ড অবস্থিত । এইলোক ভবিষ্যত্‍ দেখতে পায় । বিজ্ঞানিরা তাকে না জানিয়ে তার বাসার ফ্রিজে একটা ডিম রেখেছিলো । সে ঐ ডিম রাখার খবর প্রায় কয়েকহাজার কিলোমিটার দূর থেকে বলে দিয়েছিলো । "টিম ক্রিডল্যান্ড" এর বাড়ি নিউইয়র্ক ।

এই লোক নিজেকে শূলে বিদ্ধ করেন এবং তার শরীর থেকে কোন রক্তই বের হয় না । "রাজমোহন নায়ার" এর অবস্থান ইন্ডিয়ায় । এক এম্পিয়ারের মাত্র এক দশমাংশ বিদ্যুত্‍ই যে কোনসাধারন মানুষের মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম । কিন্তু তার উপর গবেষনা করে দেখা যায় যে এই লোক ঐ পরিমান বিদ্যুত্‍ ৩০ বার তার দেহের ভীতর দিয়ে আনা নেওয়া করতে পারেন । কেনো এই অস্বাভাবিকতা ? বিজ্ঞানিদের ধারনা মানুষে মস্তিস্কে কোটি কোটি নিউরনের মধ্যে হাতে গোনা শুধু কয়েকটা কাজ করে।

বাকি সব নিষ্ক্রিয় থাকে । কোনভাবে যদি ঐ সব নিউরনকে সক্রিয় করা যায় । তাহলে মানুষের মধ্যে অস্বাভাবিক ক্ষমতার সৃষ্টি হতে পারে । - - উত্‍সর্গ - - শ্রদ্ধেয় ইরফান ভাইকে । তার নামটা গল্পে ব্যাবহারকরেছি ।

তার কাছে ক্ষমাপার্থী যে গল্পের নায়কের পরিণতিটা নেগেটিভ দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য । তবে ইরফান ভাই সত্যিকারের সুপার হিউম্যান অথবা সুপার ন্যাচারাল । মানুষের ব্যাবহারই তার সবচেয়ে বড় ক্ষমতা । এবং সেদিক দিয়ে তিনি আসলেই সুপার ন্যাচারাল । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।