আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
তৌফিক এলাহী কে তা আমরা মোটামুটি জানি! যে এই ব্যাক্তি ৭১এর স্বাধীনতা যুদ্ধে মুজিব নগর সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন সহ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে দেশের জ্বালানি তথা গ্যাস-কয়লা খাতকে এমন সব অসম ও দেশের স্বার্থ বিকিয়ে বিদেশী কোম্পানী গুলোর সাথে চুক্তিতে ভূমিকা রেখেছেন যার ফলে দেশীয় ভাবে গ্যাস উত্তোলনের চেয়ে ৩ গুণ মূল্যে বর্তমানে গ্যাস কিনতে হচ্ছে! তাও মার্কিন ডলারে এই মূল্য শোধ করতে হচ্ছে। সেই পাকিস্তান আমলে তিতাস হতে শুরু করে ১৯৯৬ পর্যন্ত মোট ১২ টি গ্যাস ফিল্ড হতে গ্যাস উত্তোলন হত। যার ৯টিই দেশী এবং ৩টি বিদেশী কোম্পানী তুলত। এরশাদের সময় সিমিটার ও খালেদার ১৯৯১-৯৬ সময়ে দুটি যা একটি অক্সিডেন্টাল(মাগুরছড়া) ও হেলিবার্টনকে(সাঙ্গু) দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আর হাসিনার প্রথম আমলে ১১টি ফিল্ড হতে গ্যাস উত্তোলনের জন্য সব গুলিকেই বিদেশী কোম্পানী যেমন ইউনিকল, শেভরন, নাইকো ইত্যাদির কাছে তুলে দেওয়া হয়। তিতাস বা পেট্রবাংলাকে দায়িত্ব দেওয়াতো দূর কি শর্তে চুক্তি তা দেশবাসী ও সংসদকে না জানিয়ে করা হয়। বড় রকমের উৎকোচ তথা ঘুষ বাণিজ্য এখানে জড়িত ছিল। ঐ মেয়াদের ২০০০ সালে ডঃ কামাল হাইকোর্টে রিট করলে আদালত বলে সংসদের অনুমোদন না নিয়ে কোন গ্যাস উত্তোলন চুক্তি করা যাবে না। কিন্তু ততদিনে ১১টি ফিল্ড লিজের চুক্তি হয়ে গেছে।
২০০১ সাল নাগাৎ দেশের মোট গ্যাস ফিল্ড দাড়ায় ২৩টি। তৌফিক এলাহীর প্রচন্ড ক্ষমতা ও অর্থের লেনদেনে ঐ সময়ে তথা ১৯৯৮ সালে হেলিবার্টনের কর্ণধার ডিক চেনী(পরে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট) বাংলাদেশে সফর করেন। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে সারা বিশ্বে হাসিনার সরকার প্রচার চালায় বাংলাদেশ গ্যাসের উপর ভাসছে। এই ডিক চেনী পৃথিবীর অন্যতম ভয়ংকর ব্যাক্তি! বুশ জুনিয়রের ৮ বছরে তার প্রভাবও কোন অংশেই কম ছিল না। তারপর ২০০০ সালের মার্চের ২০ তারিখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনও সফরে আসেন।
কি চেনী কি ক্লিন্টন তারা পৃথিবীর কোথাও এমনি এমনি সফর করে না। তাদের শ্বেত হস্তিও বললেও কম বলা হবে। এরা বাংলাদেশের গ্যাস এবং এটা যেন ভারতে রপ্তানি হয় সেটাই তাদের সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন বাজারের চেয়ে ভারতে গ্যাস বিক্রিতে অধিক মূল্য পাওয়া যাবে এটা তার ভালভাবেই জানতেন। এই সব কিছুর নাটের গুরু তৌফিক এলাহী।
আর হাসিনার এই বুদ্ধি না থাকলেও ১১টি ফিল্ডের জন্য বড় ধরণের অবৈধ আয় হয়। এই তৌফিক এলাহী রাষ্ট্রের মাত্র ৬% স্বত্ব রেখে এশিয়া এনার্জির কাছে ফুলবাড়ি কয়লাখনির লিজ চুক্তি করে যান। যার করুণ পরিণতি ঘটে ২০০৬ সালে জোট সরকারের আমলে। যে গ্যাস ও বিদ্যুৎ আজকে যদিও স্বয়ং সম্পূর্ণ নাও থাকত তথাপি গরম কালে এত সংকট ও লোডশেডিং হত না। বিদেশীদের উচ্চমূল্য পরিশোধ ও ভর্তূকির জন্যই এই জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত উল্লেখযোগ্য অগ্রসর হতে পারেনি।
এবার ২২ বছর আগে তথা ১৯৯০ হতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের চিত্র তুলে ধরি। এরশাদ ক্ষমতা ছাড়ার সময় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ২৮০০ মেগা ওয়াটের কিছু বেশী। এটা ১৯৯১-৯৬ সাল নাগাৎ দাড়ায় ৩৪০০ মেগা ওয়াট। আর হাসিনার প্রথম আমলে তথা ২০০১ সালে তা দাড়ায় ৪৩৫০ মেগা ওয়াট। আর খালেদার দ্বিতীয় তথা জোট সরকারের মেয়াদ শেষে ২০০৬ সালে দাড়ায় ৫৬০০ মেগা ওয়াট।
এই জোট আমলে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি বর্তমান অর্থমন্ত্রী মুহিত স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা বইতে আছে। তবে এই কথা বলতে হয় ১৯৯১ হতে যেখানে বছরে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি ছিল ২০০ মেগা ওয়াট তা ২০০১ এর পর ৩০০তে দাড়ায়। তথা ১৯৯১ হতে আজ পর্যন্ত বিএনপি বা আলীগ কেউই চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি।
ইংরেজীতে Legacy বলে একটা কথা আছে। যা আমাদের দেশের ক্ষমতার পালা বদলে বিশেষ করে বিদেশী কোম্পানী অথবা কোন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা(বিশ্বব্যাংক, আই.এম.এফ) গুলোর সাথে অনেক গুরুত্ব বহন করে।
বিএনপি করে গেলে আলীগ আর আলীগ করে গেলে বিএনপিকে সরকারে এসেও তা করতে বাধ্য থাকবে। তাই ১৯৯১-৯৬ সালে যেভাবে বিএনপি অত্যন্ত সতর্ক হয়ে বিদেশী কোম্পানী গুলোর সাথে যেভাবে চুক্তি করে তাতে দেশের অর্থনীতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হয়নি। ন্যায্য ভাবেই দেশের স্বার্থ রক্ষা করেই চুক্তি গুলো হয়েছে। তাই হাসিনা ১৯৯৬-২০০১ ও ফখরুদ্দিনের সরকারও অক্সিডেন্টাল এবং হেলিবার্টনের সাথে চুক্তিতে কোন অনিয়ম পায়নি। যত বিপত্তি শুরু হয় ১৯৯৬-২০০১।
আলীগ ঐ সময়ে ১১টি ফিল্ড হতে গ্যাস এবং ৯০০ মেগার কিছু বেশী বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও তার মূল্য অনেক বেশী হয়। তাদের লোভের জন্যই বিদেশী প্রভাবশালী কোম্পানী গুলো বাংলাদেশের গ্যাসের উপর শকুনী দৃষ্টি আরো জোরাল হয়। যার প্রভাব ২০০১-০৬ সালেও থাকে। ঐ সময় বিবিয়ানা হতে শ্যাভরন ও নাইকো সহ ২/১টি বিদেশী কোম্পানী(হাসিনার সময় চুক্তি করে যাওয়া) গ্যাস উত্তোলন করে এবং নতুন কয়েকটি ফিল্ডেও চুক্তি করে। ২০০১-০৬ মেয়াদে অতিরিক্ত ব্যায়ে গ্যাস উত্তোলন চুক্তি না হলেও হাসিনার আগের মেয়াদের চেয়ে কম মূল্যে গ্যাস উত্তোলন করা যায়নি।
জ্বালানি খাতে বিগত জোট সরকার বেশ শক্তভাবেই বিদেশী কোম্পানী গুলোর সাথে দেন দরবার করে। এদেরকে একবার পথ দেখানো হলে তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলোর জন্য নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়। শুরুর মতই নিজেরা সব সময় মূল ভূখন্ডের গ্যাস তুললে এই সমস্যা হত না। কিন্তু রাষ্ট্রের পরিচালনাকারীরা অসৎ হলে কি আর করার! তার উপর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইইউতে গার্মেন্টস সহ বহু পণ্য রপ্তানি হয়। জ্বালানি ও গ্যাস খাতে একবার উদার হয়ে আবার রক্ষণশীল হলে এই সমস্ত রপ্তানি খাত বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
সে কারণে বিগত জোট আমলেও ১২০০ মেগা ওয়াটও পর্যাপ্ত ছিল না। তবে এই সময় আওয়ামী-বাকশালী ও তথাকথিত সুশীল মিডিয়া প্রোপাগান্ডা চালায় যে ২০০১-০৬ মেয়াদে নাকি হাওয়া ভবন ২০ হাজার কোটি টাকা বিদ্যুৎ খাতে র্দূনীতি করেছে। ২০০৭-০৮তে নির্বাচনের পূর্ব ও পরে কিছুদিন পর্যন্ত এই অপপ্রচার থাকে। পরে দেখা যায় জোট আমলে এই খাতে বাজেটই ছিল ১৩ হাজার কোটি টাকা! আর এই সুযোগে আরকি ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে হাসিনা ও তার দল জোর গলায় দাবী করে যে তারা ক্ষমতায় গেলে এক বছরের মধ্যেই বিদ্যুতের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। কোন লোডশেডিং থাকবে না।
ডিজিটাল বাংলাদেশের মানুষ ১০ টাকা/কেজি চাল খেয়ে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ পেয়ে সুখী থাকবে!
আর ২০০৯ সালের জানুয়ারীতে ক্ষমতা নিয়ে শুরুতেই যেখানে গ্যাস ও কয়লা উত্তোলন নিয়ে দেশের স্বার্থ ঠিক রেখে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বিভিন্ন ফিল্ড লিজ দেওয়ার কথা তার কোন কিছুই না করে হঠাৎই সাগর বক্ষের ৩টি ব্লক কানকো-ফিলিপস ও তাল্লোর কাছে অসম ও দেশের স্বার্থের ক্ষতি করে চুক্তির জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠে। বলা হয় ৮০% গ্যাসের মালিক হবে এই বিদেশী কোম্পানী গুলো তাতে আন্তর্জাতিক মূল্যে গ্যাস নির্ধারণ হবে এবং তাতে রপ্তানীর সুযোগও থাকবে। ঐ সময় দেশব্যাপী হৈ চৈ হওয়ার জন্য ২০০৯এ কোন গ্যাস-কয়লা উত্তোলন চুক্তি হয়নি। অথচ ফখরুদ্দিনের সময় হতেই বিদ্যুতের সংকট প্রকট হয়। এই বিষয়টি হাসিনার উপদেষ্টা তৌফিকের ভালই জানা আছে।
সে জানত ধীরে ধীরে বিদ্যুতের ঘাটতি বেশী বৃদ্ধি পেলে জনগণ অতিষ্ঠ হবে সেই সুযোগেই গ্যাস উত্তোলনের জন্য অসম চুক্তির ব্যাবস্থা করা যাবে। আর যেহেতু নতুন গ্যাস অথবা কয়লা উত্তোলন সময় সাপেক্ষ তথা নিম্নে দুই বছর তাই তাপভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আরকি স্থায়ী পাওয়ার প্লান্টও ৩/৪ বছরের কমনা তাই কুইক রেন্টালে তথা ডিজেল ভিত্তিক জেনারটেরর মাধ্যমে বেসরকারী খাত হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। কি গ্যাস-কয়লা ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ ২০০৯ ও ২০১০ সালে কিছুই হয়নি। তারপর গত বছর ২০১১তে নিজ দলের নেতাদের এক তরফা কুইক রেন্টাল প্লান্ট অনুমোদন দেওয়া হয়। যেখানে একেতো ভর্তূকি মূল্যে ডিজেল বিক্রি করা হয় উপরন্ত ১৮ টাকা ইউনিট দরে বিদ্যুৎ কিনে তা ৪টাকা দরে বিক্রি করা হয়।
তথা রাষ্ট্রের ব্যাপক ভর্তূকি দিতে হয়। এই বিষয়টি বছর দুয়েকের জন্য মানা ও সহ্য করা যেতে পারে। কারণ রাষ্ট্রের বিগত এক বছরে এই কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা ভর্তূকি দিতে হয়েছে। এই কারণে সরকারের বাজেট, রাষ্ট্রীয় ও প্রাইভেট ব্যাংক গুলো বড় ধরণের ঋণ দিয়ে তারা প্রচন্ড অর্থ সংকটে ভূগছে। তারপরে যখন গত বছর বিদ্যুতের লোডশেডিং অনেকটা কমে এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাৎ আবহাওয়াগত গরম হ্রাস পেলে পুরোপুরি লোডশেডিং দূর হয় তখন হাসিনা ও বাকশালীদের আনন্দ কে দেখে! বলে যে তারা নাকি গত বছর নতুন ভাবে সাড়ে ৩ হাজার বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সংযূক্ত করেছে।
আর এই সাময়িক সময়ের জন্যই রাষ্ট্রের এত বিশাল ভর্তূকি ও বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী ব্যাংকের দূর্বল অবস্থা কিছুটা হলেও ঢাকা পড়ে। কিন্তু যেই গত ফেব্রুয়ারী হতে আবার গরম বাড়তে থাকে এবং সেচ মৌসুম শরু হয় তখন আবার বিদ্যুৎ সংকট শুরু হয়। তাও অসহনীয় পর্যায়ে। মূলত কুইক রেন্টালের জন্য যে পরিমাণ ডিজেল সরবারাহ তাতো দূর আভ্যন্তরীন খাতের পরিবহন ও অন্যান্য খাতের ক্ষেত্রেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলো হতে জ্বালানি তেল পর্যাপ্ত আমদানী করতে পারছে না। পেট্রবাংলা বর্তমান হাজার হাজার কোটি টাকার দেনায় ডুবে আছে;
Click This Link
আর গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পায়।
তাই ভর্তূকি কমানোর জন্য ডিজেলের দাম ১০ টাকা বৃদ্ধি করলেও রাষ্ট্রের লোকসান কমেনি বরং বেড়েছে। কোন ব্যাংকই এখন আর পেট্রবাংলাকে ঋণ দিতে পারছে না। তাই পেট্রবাংলা এখন অর্থমন্ত্রণালয়ের কাছে ত্রাহি ত্রাহি চিৎকার দিচ্ছে। ঐ দিকে বিশ্বব্যাংক, আই.এম,এফ সহ কোন স্বীকৃত দাতা সংস্থা গুলি কঠিন শর্তেও সরকারকে ঋণ দিতে চাচ্ছে না। তাই কুইক রেন্টাল গুলোকে ডিজেল সরবারাহ করতে পেট্রবাংলা হিমশিম খাচ্ছে।
আর দেশব্যাপী বিদ্যুৎ কি সংকট সেটা ভূক্তভোগী মাত্রই ভাল বুঝে। কিন্তু সরকারের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া আছে বলে মনে হয় না। তাইতো হাসিনার মহাজোটের বড় শরীক দল জাপার এমপি ফজলে রাব্বি বলেন;
বুধবার সকালে বিদ্যুৎ না থাকায় নিজের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন সরকারি দলের সাংসদ ফজলে রাব্বী মিয়া। তিনি বলেন, ‘সকালে বিদ্যুৎ ছিল না। পানি তুলতে না পেরে বাথরুম ব্যবহার করতে পারিনি, গোসল করতে পারিনি।
প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় এসে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করেছেন। এত বিদ্যুৎ যাচ্ছে কোথায়? বিদ্যুৎ উৎপাদিত হওয়ার পরও এত লোডশেডিং হচ্ছে কেন?’
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর কাছে ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দাবি করে ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ‘কৃষকদের ছয় ঘণ্টার জায়গায় তিন ঘণ্টা বা দেড় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ হতে হচ্ছে। আমরা মানুষের কাছে আর প্রশ্নবিদ্ধ হতে চাই না। তাই বিদ্যুতের অবস্থা কী, তা জানতে চাই।
’
তারপর জাসদের মঈনউদ্দিন খান বাদল বলেন;
উপদেষ্টা এবং প্রতিমন্ত্রীকে সতর্ক করে জাসদের সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে প্রতিবছর ২০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এই পরিমাণ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার পর আমরা আর কোনো অজুহাত শুনব না। আপনাদের কারণে দেশের পুরো অর্থনীতি চাপের মধ্যে পড়েছে। ’ তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী, উপদেষ্টা, উপদেষ্টার পেছনের উপদেষ্টাদের বলতে চাই, আপনাদের কাজ করে দেখাতে হবে। অন্যথা হলে সংসদ সদস্যরা আপনাদের আরও জোরালোভাবে ধরবে।
’
এমনকি সরকারী দলের সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদও বলেন;
‘প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভোলায় একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। কিন্তু সরকারের তিন বছর পার হয়ে গেছে। এখনো কাজ শুরু হয়নি। সরকারি দল করি, এ জন্য কিছু বলতে পারি না। কিন্তু এলাকায় গেলে বিদ্যুৎ-গ্যাসের সমস্যা নিয়ে জনগণ জানতে চায়।
এ বিষয়ে এলাকার মানুষের প্রশ্নের জবাব আমি দিতে পারি না। ’ তিনি বলেন, ‘আমি ভারাক্রান্ত হূদয় নিয়ে আজ ভোলায় যাব। গিয়ে এলাকার মানুষকে আবারও বলব, হবে। ’
সরকারি দলের এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় কে চালায়? ৪৭ জন মন্ত্রী আছেন। আরও আছেন উপদেষ্টা।
এ মুহূর্তে সংসদে আছেন স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা এবং ভূমিমন্ত্রী। আর আছেন চারজন প্রতিমন্ত্রী। কার কাছে কথা বলব। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নেই। উপদেষ্টাকে তো কৈফিয়ত দিতে হয় না।
অথচ তাঁর কথার বাইরে কিছুই হয় না। ’
Click This Link
এই যখন অবস্থা তখন গতকালকের পত্রিকায় দেখি;
সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নতুন ৫০টি বিদ্যুেকন্দ্র থেকে তিন হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উত্পাদন হয়েছে। কিন্তু তার পরও সারা দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের কাছে কমিটি এর কারণ জানতে চেয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার পরেও কেন জনগণ এর সুফল পাচ্ছে না, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে কমিটির বৈঠকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া সেচযন্ত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কমিটি মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন এবং পুরোনোগুলোর মেরামতের মধ্যে কোনটি সাশ্রয়ী ও লাভজনক, সে সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন কমিটির পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
Click This Link
আজকে ক্ষমতায় আসার তিন বছর এবং এত বাস্তবতার পর আলীগের সুবিদ আলী ভুইয়ার সংসদীয় কমিটি জানতে চায় যে পুরানতন কেন্দ্র মেরামত না নতুন কেন্দ্র(কুইক রেন্টাল) স্থাপন সাশ্রীয়! অথচ ২০০৯ সালের শুরু হতেই স্বচ্ছতার সাথে দেশের স্বার্থের পক্ষে গ্যাস ও কয়লা উত্তোলন চুক্তি হয়ে তা উত্তোলিত হলে এতদিনে স্থায়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে ৫০০-১০০০ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হত। কুইক রেন্টালের বিশাল ভর্তূকির অনেকটাই হ্রাস পেত। লোডশেডিংও থাকত না।
জবাব অবশ্য এই রিপোর্টেই আছে;
আবদুল্লাহ আল ইসলামের ক্ষোভ প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে কমিটির সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, মন্ত্রণালয় বিদ্যুতের পুরোনো কেন্দ্রগুলো মেরামত না করে নতুন কেন্দ্র স্থাপনের ব্যাপারে বেশি মনোযোগী। কারণ এতে অন্য রকম কিছু ব্যাপার আছে। এ নিয়ে কমিটি অসস্তোষ প্রকাশ করেছে। বরং পুরোনো কেন্দ্রগুলো মেরামত করা হলে সরকারের ব্যয় কম হতো এবং জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুতের সংকটও কম থাকত। তাই কমিটির পক্ষ থেকে পুরনো বিদ্যুেকন্দ্রগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
কারণ এতে অন্য রকম কিছু ব্যাপার আছে। এখন প্রকৃত সত্য হল নাটের গুরু তৌফিক এবং তার গডমাদার হাসিনাকে জেরা করে আসল ঘটনা জানাতো দূর নিজেরাও কোন কিছু অন্য উপায়ে সত্য ঘটনা জানলেও তা গণ-মাধ্যম ও দেশবাসী জানবে না। অন্তত এই হাসিনার সরকারের মেয়াদে নয়। এই সাড়ে ৩ হাজার মেগা বিদ্যুৎ ও অন্য রকম ব্যাপারের সবচেয়ে সহজ উত্তর আছে। যা বটতলার টাকলা উকিল কামরুল ভালই জানেন।
কামরুল বলবে যে দেশনেত্রী হাসিনার ২০ হাজার কোটি টাকা মহামূল্যবান ৩৫০০ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ যুদ্ধাপরাধীরা স্যাবোটাজের মাধ্যমে গায়েব করে দিচ্ছে। যাতে জনগণ বিদ্যুৎ লোডশেডিং এ অতিষ্ঠ হয় এবং বিচার কাজ বানচাল হয়ে যায়...
ব্লগার ভাইরা কি বলেন! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।