আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

!!! পর্নো সিডির বেড়াজাল থেকে রক্ষা পেলো সিলেটের নববধূ শিরিনা !!!

বোরহান উদ্দিন আহমেদ (মাসুম) স্বামী মুসা খানের পর্নো সিডির বেড়াজাল থেকে রক্ষা পেলো সিলেটের নববধূ শিরিনা আক্তার ফাতেমা। ধোঁকা দিয়ে স্ত্রীকে সিলেট থেকে মৌলভীবাজার নিয়ে একটি সাততলা ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে আটকে রেখেছিল মুছা। রাতে শুটিংয়ে মহড়া দেয়ার পর দিন ক্যামেরা শুটিংয়ের আগেই রক্ষা পায় ফাতেমা। এ ঘটনায় সিলেটে তিনজনকে আটক করে গণধোলাইয়ের পর পুলিশের সোপর্দ করা হলেও পুলিশ তাদের ছেড়ে দিয়েছে। আর এ নিয়ে তোলপাড় চলছে সিলেট শহরতলির শাহপরান এলাকায়।

পর্নো সিডিচক্রের কবল থেকে রক্ষা পাওয়া ফাতেমার স্বজনরা জানিয়েছেন, মৌলভীবাজারের চাঁদনীঘাট এলাকায় নীল রঙের একটি সাততলা ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে পর্নো সিডি তৈরি করা হয়। আর ওই এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ফাতেমাকে। উদ্ধার করার সময় ওই কক্ষে আরও এক তরুণী ছিল। সিলেট শহরতলির খাদিমপাড়া ইউনিয়নের ২নং রোডের বাসিন্দা শিরিনা আক্তার ফাতেমা। তার পিতা ফারুক আহমদ (মরহুম)।

বড় ভাই মো. হারুন আহমদ ঢাকার বায়িং হাউসের চাকরিজীবী। ২০০৩ সালে হারুনের পরিচয় হয় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের রহমত খানের ছেলে মুছা খানের। সেই থেকে দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। এর মধ্যে হারুন চলে যায় ঢাকায়। সে বায়িং হাউসে কাজ নেয়।

আর মুছা ২০০৭ সালে দুবাই চলে যায়। এর আগে ফাতেমার সঙ্গে মুছার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০০৯ সালে মুছা দেশে এসে সবসময় ফাতেমাদের বাসায় যাতায়াত করতো। এ নিয়ে দু’জনের প্রেম শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ায়। প্রায় ৯ মাস আগে একদিন এলাকার লোকজন অপ্রীতিকর অবস্থায় মুছা ও ফাতেমাকে আটক করে।

এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের কাবিন ধরা হয় ৫ লাখ টাকা। বিয়ের আসনে কনের আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও বরের পক্ষে বরের পিতা রহমত খান, ছোটভাই তানভীর, আত্মীয় রুহেল আহমদ উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় মেম্বার আনুও বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের দিনই কনের পক্ষের লোকজন স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেয় মুছাকে।

কিন্তু ঘটা করে অনুষ্ঠানের কথা বলে ফাতেমাকে পিতার বাড়িতে রেখেই পিতা ও ভাইকে নিয়ে বাড়ি চলে যায় মুছা। এরপর সে আর কোন যোগাযোগ করেনি। দীর্ঘ ৯ মাসে সে কনেকে তুলে নেয়ার জন্য পরপর ৫টি তারিখ পরিবর্তন করে। পর পর দু’টি অনুষ্ঠানে ৬০ জন বরযাত্রী নিয়ে আসার কথা বলে আর আসেনি। মুছা ফোন বন্ধ রাখে এক পর্যায়ে।

পর পর দু’টি তারিখ পরিবর্তন করায় আর্থিকভাবে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফাতেমার পরিবার। তারিখ দিয়ে না আসার পর মুছা এক পর্যায়ে স্ত্রী ফাতেমার সঙ্গে গোপনে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ শুরু করে। তাকে সে জিন্দাবাজার আসার কথা বলে। কিন্তু সে অনুরোধ রাখেনি ফাতেমা। অবশেষে ৬ই মার্চ বিকালে মুছা তার বন্ধু মঞ্জুকে নিয়ে ফাতেমার বাসায় আসে।

ওখানে এসে সে জিন্দাবাজার নিয়ে আসার কথা বলে ফাতেমাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। ফাতেমার পরিবার জানায়, ফাতেমাকে মুছা ও মঞ্জু একটি মাইক্রোবাসে তুলে মৌলভীবাজার সদরের চাঁদনীঘাট এলাকার নীল রঙের একটি সাততলা ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে যায়। আন্ডারগ্রাউন্ডের ভেতরে একটি পরিত্যক্ত কক্ষ আছে। ওই কক্ষটি সবসময় বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকে। মুছা স্ত্রী ফাতেমাকে নিয়ে ওই কক্ষে রাখে।

এ সময় ওই কক্ষে আরও একটি মেয়ে ছিল। আগে থেকে থাকা ওই মেয়েটি ফাতেমাকে জানায়, তাকে ওখানে আটকে রাখা হয়েছে। তাকে দিয়ে পর্নো সিডি তৈরি করা হয়েছে। চালানো হয়েছে তার ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন। রাতে মুছা যায় ওই কক্ষে।

ফাতেমার সঙ্গে মিলিত হওয়া ছাড়াও সে ওই মেয়েটিকেও স্ত্রীর সামনে ধর্ষণ করে। এ সময় ফাতেমা ভয়ে কিছু বলেনি। রাতে ফাতেমার মাথায় পিস্তল ধরে মুছা মোবাইল ফোন তার মায়ের কাছে ধরিয়ে দিয়ে তাকে দিয়ে বলায়, সে মুছাদের বাড়ি আছে। সে খুব ভাল। রাতে মুছা স্ত্রীর কাছে পর্নো সিডি তৈরির কথা জানায় এবং কিভাবে পর্নো সিডি তৈরি করা হবে তার একটি মহড়া দেয়।

মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা পর্নো সিডির একটি অংশ ফাতেমাকে দেখায় মুছা। ৭ই মার্চ রাতে তারা দু’জন মিলে পর্নো সিডি বানাবে বলে জানায়। এদিকে, ৭ই মার্চ সকাল ৭টার দিকে তালাবদ্ধ ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে ফাতেমা বাইরের দৃশ্য দেখার জন্য উঁকি দেয়। এ সময় সে দেখে বাইরে একজন দারোয়ান হাঁটাহাঁটি করছে। ফাতেমা দারোয়ানকে ডেকে এনে অনুনয় বিনয় করে মোবাইল ফোনে কথা বলার অনুরোধ জানায়।

এ সময় দারোয়ানের মোবাইল ফোনে মায়ের মোবাইল ফোনে ফোন দেয় ফাতেমা। ফোন দিয়ে মাকে জানায়, ‘আমি মৌলভীবাজারের চাঁদনীঘাট ব্রিজ পাড়ি দিয়ে নীল রঙের একটি সাততলা বিল্ডিংয়ের আন্ডারগ্রাউন্ডের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় আছি। ২০ মিনিটের মধ্যে আমাকে উদ্ধার করলে জীবিত পাবেন নতুবা আমি মারা যেতে পারি। ’ ফোন পেয়েই ভাই হারুন তার মামা নওশাদ মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে মৌলভীবাজার যায়। মৌলভীবাজারের স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সাততলা বিল্ডিং তারা খুঁজে পায়।

খুব কৌশলে ওই কক্ষ থেকে তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে। এ সময় অপর মেয়েটিও কক্ষেই বন্দি ছিল। এদিকে ফাতেমা বাড়ি আসার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধু মঞ্জুকে নিয়ে তাদের বাড়ি ছুটে আসে মুছা। এরপর আসে মুছার আরও দুই স্বজন। বাড়ি আসার পর ফাতেমার আত্মীয়-স্বজনরা তার মুখ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে ক্ষুব্ধ হন।

মুছাসহ চারজনকে আটক করে তারা গণপিটুনি দেয়। এ সময় সিলেট শহর থেকে ৫টি মোটরসাইকেলে ও দু’টি মাইক্রোবাস নিয়ে মুছার ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ অস্ত্র উঁচিয়ে মুছাকে ছিনিয়ে নিয়ে আসে। তবে ওইখানে রেখে আসে মুছার বন্ধু মঞ্জুসহ আরও দু’জনকে। স্থানীয় লোকজন আটক মঞ্জু, মুছার চাচা ও ফুফাতো ভাইকে গণপিটুনি দিয়ে রাতে শাহপরান থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। শনিবার রাতে শাহপরান থানায় তাদের নিয়ে আসার পর প্রথমে খাদিমপাড়া ইউনিয়নের স্থানীয় মেম্বার কনের পক্ষে শক্ত ভূমিকা পালন করেন।

কিন্তু অজ্ঞাত কারণে পরে তিনি কনের পক্ষ ছেড়ে বরের পক্ষ নেন। রাতে মঞ্জুসহ তিনজনকে ধরে নিয়ে আসার পর ফাতেমার ভাই হারুন শাহপরান থানার ওসি এনামুল মনোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তিনি পরদিন সকাল ১০ কিংবা ১১টায় এসে এজাহার দেয়ার কথা বলেন। এ সময় তিনি হারুনের কাছে সমঝোতার প্রস্তাবও দেন। এদিকে সকালে হারুন থানায় গিয়ে দেখেন মঞ্জুসহ আটক তিনজনকে পুলিশ আগেই ছেড়ে দিয়েছে।

এরপর থেকে হারুনকে কোন পাত্তাই দিচ্ছে না পুলিশ। এ ব্যাপারে শাহপরান থানার ওসি এনামুল মনোয়ার গতকাল মানবজমিনকে জানান, তিনজনকে স্থানীয় লোকজন ধরে পুলিশে দিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ না থাকায় রোববার সকালে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। নববধূ ফাতেমার ভাই হারুন আহমদ গতকাল জানিয়েছেন, তার বোনকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে মৌলভীবাজারে আটকে রাখা হয়। কিন্তু ঘটনার আগেই আমরা তাকে উদ্ধার করেছি।

হারুন জানান, ওসি মনোয়ার তার সঙ্গে ধোঁকাবাজি করেছেন। তিনি এ ঘটনায় মুছা ও মঞ্জুর শাস্তি দাবি করেন। ফাতেমার মামা নওশাদ মিয়া জানান, প্রতারণার মাধ্যমে মুছা তার পর্নো সিডি চক্রকে সঙ্গে নিয়ে ফাতেমার জীবন নষ্ট করার প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। সোনার বাংলা বল্গ থেকে । http://sonarbangladesh.com/blog/post/99079  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।