সাকল্যে ১৮-১৯ কোটি টাকা লোকসান হয়ে গেল।
ভারতীয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি হিসেবে বিপিএলের আয়োজনের জন্য দরপত্র জমা দিয়েছিল 'গেম অন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট'। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তারা ছয় বছরের জন্য বিপিএল আয়োজনের দায়িত্বও পেয়েছে। কিন্তু বিপিএলের প্রথম আসর শেষ হওয়ার আগেই বাতাসে গুঞ্জন, বিপিএলের সিংহভাগ শেয়ার নাকি বাংলাদেশিদের। দুরন্ত রাজশাহীর স্বত্বাধিকারী মুশফিকুর রহমান মোহন গেম অন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের বাংলাদেশি মালিকদের অন্যতম... আসরের মাঝপথে এ নিয়ে কোনো কথা না বললেও গতকাল মুখ খুলেছেন তিনি।
সমকালের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছেন ৭০ শতাংশ শেয়ারের মালিক তিনি নিজেই। তার সঙ্গে খোলামেলা আলাপে বেরিয়ে এলো আরও অনেক কিছু ...
সমকাল : সবাই জানে, গেম অন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট ভারতীয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, এটির সিংহভাগ শেয়ার নাকি আপনারই!
মোহন : আসলে কিছু টেকনিক্যাল কারণে এত দিন সামনে আসিনি। এ ছাড়া দুরন্ত রাজশাহীকে পরিচালনার একটা ব্যাপার ছিল; কিন্তু বিষয়টা বুঝি আর গোপন রাখা গেল না। এক কান দু'কান হতে হতে অনেকেই এখন জেনে গেছে।
গেম অনের ৭০ ভাগ শেয়ার আমার। অঞ্জন গাঙ্গুলি ১০ ভাগ, কোস্তভ লাহিড়ী ১০ ভাগ এবং অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক প্লেয়ার্স এজেন্ট কোম্পানি এসেনসিয়াল গ্রুপ অবশিষ্ট ১০ ভাগের মালিক।
সমকাল : এখন নাকি এর বাইরে অনেকেই গেম অনের মালিকানা দাবি করছে! এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
মোহন : আসলে এসব উড়ো কথা আমি পাত্তা দিতেই রাজি নই। আকাশে তারা উঠলে সবাই দেখবে। আমি সব সময় পজেটিভ চিন্তা করি।
তাই এসব নিয়ে আমি কোনো কথাই বলতে চাই না।
সমকাল : অঞ্জন গাঙ্গুলিদের সঙ্গে যোগাযোগটা হলো কীভাবে?
মোহন : মুন্না ভাইয়ের (বিসিবি পরিচালক শফিকুর রহমান মুন্না) সঙ্গে অঞ্জন গাঙ্গুলিদের ২৫ বছর পুরনো সম্পর্ক। তার সঙ্গে আমার সম্পর্কও অনেক দিনের। এভাবে যোগাযোগ।
সমকাল : গেম অন তৈরি হলো কীভাবে? বিপিএলকে সামনে রেখে?
মোহন : ছোট হলেও গেম অন অনেক পুরনো কোম্পানি।
যখন সিদ্ধান্ত হয়, গেম অন বাংলাদেশে কাজ করবে তখন এটাও সিদ্ধান্ত হয় যে, বাংলাদেশের অংশীদারদের ৭০ ভাগ মালিকানা দেওয়ার বিষয়টি।
সমকাল : গেম অনের একজন মালিক হিসেবে বিপিএলের প্রথম আসরকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
মোহন : নানা কারণে বিপিএল আয়োজন নিয়েই কিন্তু শঙ্কা ছিল। বিপিএল নিয়ে আমাদের ভাবনা শুরু প্রায় বছরখানেক আগে থেকে। তবে শেষ দিকে এসে সময় এতই কম ছিল যে, আমাদের সামনে শুধু দুটি পথ খোলা ছিল। চোখ বন্ধ করে আয়োজনে লাগো নয়তো বাদ দাও।
ভুল হোক বা যাই হোক, আমাদের ভাবনার কোনো সময়ই ছিল না। তাই আয়োজন লেজেগোবরে হয়েছে; কিন্তু আল্লাহর কাছে হাজার শোকরিয়া যে, আমরা বিপিএল শেষ করতে পেরেছি এবং সেটা সাফল্যের সঙ্গেই। আর যে ভুলগুলো হয়েছে সেগুলো একটাও ইচ্ছাকৃত নয়। আমার কাছে এ বিষয়টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এত অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে আমাদের দেশে এমন একটা মেগা ইভেন্ট শেষ করতে পারা চাট্টিখানি কথা নয়।
একদিন হয়তো আমরা এ আয়োজনের সঙ্গে থাকব না। কিন্তু আমাদের হাতে বিপিএল শুরু হয়েছে। তবে আমার কথা হলো, প্রথমবার হিসেবে যা হওয়ার হয়েছে। সামনে এ ভুলগুলো যাতে আর না হয়।
সমকাল : এবারের আয়োজনে বড় ভুল কী কী ছিল?
মোহন : এবার সবচেয়ে বড় ভুলটি ছিল স্পন্সর সংক্রান্ত।
এমন মেগা আয়োজনে স্পন্সররা হলো প্রধান স্টেকহোল্ডার; কিন্তু তাদের ভূমিকা, করণীয়, কীভাবে তারা এখান থেকে উপকৃত হবে_ তা আমরা তাদের সময়মতো জানাতে পারিনি। হয়তো তারাও বুঝতে পারেনি। আর যতক্ষণে আমরা তাদের বোঝাতে সক্ষম হলাম ততক্ষণে টুর্নামেন্ট শেষ। আগামী বছর থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের পেছনে সম্ভবত স্পন্সররা ঘুরবে। তাই এ বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি ভাবতে হবে না।
এরপর হলো প্লেয়ার্স পেমেন্ট। নানা জটিলতার কারণে সময়মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিরা বিদেশি ক্রিকেটারদের পেমেন্ট করতে পারেনি। ব্যাংকের নিয়ম-কানুন না মানলে আবার মানি লন্ডারিং হয়ে যাবে। তাই আমাদের সবাইকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে। অবশ্যই সবার টাকা পরিশোধ হয়ে যাবে।
আর সামনের বছর এসব জটিলতা থাকবে না। তবে অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং প্রচারণার অভাবে দর্শক প্রথম দিকে কম ছিল বলেই আমি মনে করি।
সমকাল : শেষ পর্যন্ত ভালোমতো বিপিএল শেষ হওয়ায় কেমন লাগছে?
মোহন : আমি খুশি এবং দুঃখিত দুটোই। খুশি এ কারণে, অনেক অনিশ্চয়তা, অব্যবস্থাপনা, অল্প সময় সত্ত্বেও আমরা টুর্নামেন্টটা শেষ করতে পেরেছি। আর খারাপ লাগার কারণ হলো, সাকল্যে ১৮-১৯ কোটি টাকা লোকসান হয়ে গেল।
এখান থেকে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা ব্যবসা করার সুযোগ ছিল View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।