বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির খেড়োপাতা নিয়ে একটু কচলানো যাক। কারণ বিষয়টি নিয়ে বড্ডো বেশী বিতর্ক চলছে প্রতিনিয়ত। একথা বাংলাদেশের যে কোন মানুষ স্বীকার করবে যে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। আমি বিদেশী মানবাধিকার গোষ্ঠী বা দেশীয় কিছু মানবাধিকারের দালাল বা এনজিওদের কথা না হয় বাদই দিলাম। কারণ তারা তাদের নানা রকম কূটকৌশল ব্যবহার করে এ বিষয়ে নিজেদের স্বার্থ আদায়ে।
কিন্তু বিষয়টি যে সত্য তাতে কিন্তু সন্দেহ নেই।
যেভাবে গতকালও একজন বিএনপি নেতাকে হত্যা করা হলো, সর্বসম্প্রতি সাগর রুনি সাংবাদিক দম্পতি হত্যার বিষয়ে হত্যাকারীদের ধরা দূরে থাক এখন চলছে রাজনৈতিক বক্তব্য। শেখ হাসিনা বলছেন- বেডরুম পাহারা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের নয়। অন্যদিকে খালেদা জিয়া বলছেন – এ খুনের পেছনে সরকারের হাত রয়েছে। তো তাদের এইসব বক্তব্য কিন্তু জনগণ শুনতে চান না।
জনগণ সরকারের কাছ থেকে আশা করেন – খুনীরা ধরা পড়ুক । কিন্তু সরকারের কথাই সার – এতদিন হয়ে গেলেও পুলিশ নানা রকম গল্প ফাদছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবারও নতুন চমকপ্রদ কথা বললেন কিন্তু খুনীরাতো ধরা পড়েননি –আদৌ ধরা পড়বেন বলে মনে হয় না। এদিকে আদালও গতকাল একটি রুল জারি করেছে এ ব্যাপারে । বিরোধী দলীয় নেত্রীর বক্তব্যকে সমালোচনা করেছে আদালত এবং সরকারের অবস্থানকে সন্তোষজনক বলেছে। যাই হোক আদালতের অভিমত নিয়ে কোন কথা বলবো না – কারণ মাননীয় আদালত বলে কথা।
তয় এবার মাননীয় স্বরাস্ট্রমন্ত্রী মহোদয়া আবার যে বক্তব্যের বাণ সংসদে দিয়েছেন – তাতে আসলে মন্ত্রীদের কথা নিয়ে বোধহয় দেশের জনগণ আর বিশ্বাস রাখার মতো কোন ভরসা পাচ্ছেন না। কারণ যদি মন্ত্রীদের মতো দেশের সবচেয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত গালে মুখে- কথা বলেন, সকালের কথা বিকেলে পাল্টে যায় তাহলে ---- আর কি বলা যায় বলুন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ‘গুম’ নিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন । গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সংসদের প্রশ্নোত্তরে ‘গুম’ বলে কিছু নেই বলে জানালেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিনি বললেন, গুম ও গুপ্তহত্যা প্রতিরোধের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তাহলে আমরা কোনটি বিশ্বাস করবো -! তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা আর কি জনগণ বিশ্বাস করবেন – কারণ দেশে বর্তমান সরকারের আমলে গত তিনবছরে প্রথমে বিচারবর্হির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও পরে গুমের বহু ঘটনা ঘটেছে- আর যাদের প্রিয়জন গুম হয়েছেন আর ফিরছেন না ঘরে, তাদের সন্তানেরা অপেক্ষার প্রহর গুণছেন তবে তারা আর কখনও ফিরবেন কিনা সেই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না।
তাদের কাছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে থোড়াই মূল্য আছে !
তবে একটি বাস্তবতা কিন্তু স্বীকার করতেই হবে- আর সেটি হচ্ছে কথিত তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশ হিসেবে বাংলাদেশে সমস্যা আছে, ছিল এবং থাকবে, অর্থনীতি নিন্মমুখী, দুর্নীতি প্রকট, দলীয়করণ ইতিহাসে নজিরবিহীন, আর মাদক, সামাজিক অবক্ষয়, বেকারত্ব, স্বাস্থ্যহীনতা, এভাবে এমন কোন দিক নেই যে –সুস্থ্যভাবে চলছে। ফলে সেখানে সন্ত্রাস- নিরাপত্তাহীনতা থাকতেই পারে। সেটাও জনগণ মেনে নিতেন যদি এই সত্যকথাটা মন্ত্রীরা তাদের মুখ থেকে স্বীকার করতেন। আরো একটি দু:খজনক ঘটনা হচ্ছে স্বাধীনতার এতোটা বছর পর কেন বাংলাদেশের এই অবস্থা- এই প্রশ্ন আজ দেশের ষোল কোটি মানুষ শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, এরশাদসহ যারা রাজনীতি করেন, মন্ত্রী এমপি, সরকারী দল বিরোধীদলসহ সকলের কাছে। এই প্রশ্নের জবাব তাদের দিতে হবে জনগণের আদালতে আজ কাল পরশু অথবা যে কোন দিন ! আপনারা প্রস্তুত থাকেন- ইতিহাস কিন্তু আপনাদের ক্ষমা করবে না ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।