প্রায় ৩মাস পর বাড়িতে গিয়েছিলাম। বাসায় বেকার বসে থাকতে ভাল লাগছিল না। তাই ভাবলাম কিছু একটা করি। কি করব?
পরে মাথায় আসল সামনে তো ২১ ফেব্রুয়ারী, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটা সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতা করি। বন্ধুদের বললাম, কেউ রাজী হল না।
অনেকে অনেক কথা বলল।
কেউ কেউ বলল, আমার সাথে নাকি এসব কাজ মানায় না।
সবার কথা-বার্তা শুনে আমি এক প্রকার আশাহত হলাম। তারপর রবীন্দ্রনাথের একলা চলরে থিওরি অনুসরণ করতে লাগলাম।
নবম-দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতার আয়োজন করলাম।
২৫ টা প্রশ্ন দিলাম। প্রথম – দ্বিতীয় আর তৃতীয় পুরুষ্কার বই। ৪র্থ, ৫ম পুরুষ্কার একটি করে কলম।
প্রায় ৭৮জনের মত প্রতিযোগীকে পেয়েছিলাম।
সবই ভাল লাগল।
কিন্তু খারাপ লাগল, যখন তাদের প্রশ্নের উত্তর দেখলাম।
ভাবতে পারেন—আমাদের দেশের নবম আর দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা জানেনা বাংলাদেশে কয়জন মুক্তিযোদ্ধা বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি পেয়েছেন।
কেউ কেউ এই প্রশ্নের উত্তর দেয় নি, কেউ লিখেছে ৩টা আবার ৫টা। এই উত্তর দেখে নিজের কপালটাকে নিজেই ফাটাতে ইচ্ছে করছিল।
যে ৫টা লিখেছে, তাকে বললাম, তুমি ৫টা কেন লিখেছ?
উত্তরে তারা বলল ক্লাশ ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত ৫জন বীরশ্রেষ্ঠের গল্প পড়েছি।
তাই নাকি ৫জন বীরশ্রেষ্ঠ হবে।
যে ৩টা লিখেছে, সে বলল, 1st, 2nd, 3rd হিসেবে ৩জন মুক্তিযোদ্ধা।
আমার তো এইসব শুনে পুরো মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে।
মনে হচ্ছিল লাঠি দিয়ে প্রত্যেকের মাথা ফাটিয়ে দিই।
পরে নিজেকে প্রশ্ন করলাম-
কার দোষ দিব?
কার নিন্দা করব?
এই দোষ – এই নিন্দা আমার আর তোমার, আমাদের সবার।
নিজের দেশের ছেলে-মেয়েদের কাছে আমাদের গৌরবমাখা মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারিনি, তখন বাইরে কেমন করে পারব? আমরা নিজেরাই জানিনা আমরা কি?
আমাদের দেশে বর্তমানে গ্রামের ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষার ফলাফল ভাল হলেও গুণগত মান ভাল হয়নি। ভাল ফলাফল দিয়ে তো আর দেশ এগিয়ে যাবেনা। সবার মাঝে দরকার গুণগত মানসম্মত শিক্ষা, যেটা তারা পাচ্ছেনা।
আমাদের পরিবর্তন আমাদেরকেই করতে হবে।
তাই মুখে নয় কাজের মাধ্যমে আমাদের সবার একটু এগিয়ে আসা উচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।