আমি আমাকে নিয়েই তো এখনও বেচে আছি । একদিনআমাকে নিয়েই চলে যাব । সেদিন খুঁজলেও আর পাবি না..........আমার ভার্চুয়াল ফ্যাক্টরিতে স্বাগতম । আমার মন খারাপের সময়টা এখানে আর ফেসবুকে কাটে । মাঝে মাঝে দু একটা লেখা তৈরি করতে ইচ্ছা হলে চলে আসি এখানে ।
https://www.facebo বাঙ্গালি হিসেবে জাতীয় দিবস হিসেবে আমরা ২১ফেব্রুয়ারী , ২৬মার্চ , ১৬ ডিসেম্বরকেই বুঝে থাকি সাধারনত ।
ফেব্রুয়ারী মাস টা যেমন আমাদের জন্য গর্বে ঠিক তেমনি এটি কলংকও বটে ।
কেননা মাত্র ৩ বছর আগেই ২৫শে ফেব্রুয়ারী একটা লোমহর্ষক আর হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেলো ।
জ্বী হ্যা । আমি বিডিআর বিদ্রোহের কথা বলছি ।
যেটা এখন প্রায় ধামাচাপা পরে গেছে ।
আসলে কি ঘটেছিলো ঐ কয়েকটা দিন ?
আসুন কিছু সম্ভাব্যতা আর কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করা যাক ।
(১)--{শুরুর কথা}--
প্রথমেই বলে নিতে চাই । এই ঘৃন্য বিদ্রোহে ৫৭ জন আর্মি অফিসার মারা গেছেন ।
যাদের মধ্যে ১ জন মেজর জেনারেল , ৪ জন লেফটেনেন্ট জেনারেল , আর বাকিরা সব কর্নেল , মেজর এবং ২ জন ক্যাপ্টেন ছিলেন।
[আনুমানিক]
ঐ দিন দরবার হলে সম্মেলিতো হয়েছিলেন ১২০ জন অফিসার । যারা মূলত দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনির প্রধান ।
১০-১২টার দিকে সমস্ত মিডিয়াগুলো পাগলের মতো খবর প্রচার করতে থাকে ।
তখনো দেশের মানুষ কিছুই জানে না ।
পরে আস্তে আস্তে লোমহর্ষক ও হৃদয়বিদারক ঘটনার অস্তিত্ব পাওয়া যায় যখন ড্রেনেজ ব্যাবস্থার মাধ্যমে বুড়িগঙ্গায় পাওয়া যায় কতিপয় অফিসারের ক্ষতবিক্ষত লাস ।
(২)--{ আপাত দৃষ্টিতে প্রথমে যা মনে হয়}--
আপাত দৃষ্টিতে প্রথম দেশের মানুষ বিডিআর কে সমর্থন করে যায় । কিন্তু তখনো দেশের মানুষ সঠিক ভাবে কিছু জানে না ।
বিভ্রান্ত মানুষকে একের পর এক ভূয়া খবর শোনানো হয় ।
এবং যার দায় আমাদের দেশের তথাকথিতো কিছু মিডিয়া ।
যারা সত্যকে গোপনের চেষ্টায় লিপ্ত ।
(৩)--{মূলত যা ঘটেছে}--
আমার ফুফাতো ভাই (আর্মি অফিসার) ২ টার দিকে আব্বাকে ফোন করে বলেন যে পিলখানায় নির্বিচারে আর্মি অফিসারদেরকে মারা হচ্ছে ।
প্রথমে আমরা বিশ্বাস করতে চাইনি কিন্তু পরবর্তিতে লাসগুলো পাওয়ার কথা শুনে ভাইয়ার কথার অর্থটা স্পষ্ট হয়ে যায় ।
ঐ দিন উচ্চপদস্থ অনেক আর্মি অফিসারদেরকে চরম নিষ্ঠুরভাবে মারা হয় । এমনকি তাদের মূত্যু নিশ্চিত করার জন্য তাদের সারা শরীরে বেয়োনেট চার্জকরা হয় ।
(৪)--{কিছু প্রশ্ন }--
বিডিআর বিদ্রোহের ঠিক আগের দিন পিলখানায় প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন।
অথচ ঠিক পরদিনই এই নির্মমও নিষ্ঠুর ঘটনাটা ঘটল ।
তাহলে কি করেছে আমাদের ইন্টিলিজেন্স সংস্থা ?
কোথায় ছিলো CID , SSF ?
তাদের কাজটা কি তাহলে ?
তারমানে কি সেখানে প্রধানমন্ত্রীর জীবনের ঝুকিও ছিলো ?
(৫)--{প্রকৃত কথা}--
ভাইয়ার মুখ থেকে শুনেছি ।
মেজর জেনারেল শাকিল (সাবেক বিডিআর প্রধান) নাকি ২৫ তারিখ বড় ধরনের হামলার আশংখা করেছেন ।
এবং তিনি এটা তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরকেও জানিয়েছেন ।
এছাড়া CID ও এরকম কিছুর আভাস দিয়েছিলো ।
(৬)--{কিছু হাস্যকর ও অদ্ভুত ব্যাপার}--
নানক সাহেব সাদা পতাকা উড়িয়ে গিয়ে পিলখানায় ঢুকলেন ।
মজার ব্যাপার হলো এই নানককে এই ঘটনার আগে কেউই ঠিকমত চিনতো না ।
তাহলে এতো বড় জাতীয় সংকটের দিন এই লোক কে কেনো এত গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব দেয়া হল ?
আমাদের শ্রদ্ধেয় সরাষ্ট মন্ত্রী মাত্র একটা কি দুটো পরিবারকে উদ্ধার করে আনলেন !
তাহলে কি এগুলো শুধুই লোক দেখানো ?
হাস্যকর ! !
(৭)---{কিছু অদ্ভুত সিদ্ধান্ত এবং সম্ভাব্যতা । }---
আর্মি সর্ম্পূন বিডিআর ক্যাম্প অথবা পিলখানা ঘিড়ে ফেলেছিলো ।
এমনকি সেটা ছিলো আর্টিলারি ব্রিগেড ।
যাদেরকে তৈরিই করা হয় এধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন এবং যুদ্ধ করার জন্য ।
এছাড়া ছিলো লাইট মর্টার , হেবিওয়েট মেশিনগান ।
কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্ট থেকে আর্মি আসছিলো ।
এবং সাভার ক্যান্টনমেন্ট এর একটা কম্পানিকে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছিলো ।
সাভার ক্যান্টনমেন্টের ঐ টিমটাতে ছিলো হেবিওয়েট গানস্ , টর্পেডো , ট্যাংক ।
এছাড়া আর্টিলারি ব্রিগেট ।
অদ্ভুদ হলেও সত্য এই আর্মিকে পিলখানায় ঢুকতে দেয়া হয়নি ।
সাবেক কিছু আর্মি কমান্ডারদের ভাষ্য মতে ঐ ব্রিগেডের শুধু ২-৩ টা প্লাটুন পিলখানায় ঢুকলেই হয়তো এতো অফিসারকে মরতে হতো না ।
সরকারের এই অদ্ভুত সিদ্ধান্তের কোন কারন জানা যায় নি ।
(৮)---{ক্ষতি ও যারা ক্ষতিগ্রস্থ ।
}---
বিডিআর এর লোকজন দাবি আদায়ের দামে হত্যা , লুটতরাজ , ধর্ষন সব করেছে ।
এ যেনো ৪০ বছর পর এসে ১৯৭১সালের সেই পাকিস্তানি মিলিটারির বাংগালি রূপ ।
ক্ষতি যে শুধু ঐ ঘটনার শিকার পরিবারগুলো হয়েছে তাই নয় । ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি আমরা ।
কেননা আমাদের টাকায় চলে এই আর্মি ।
প্রত্যেকটা আর্মি অফিসারের পিছনে খরচ করা হয় কোটি কোটি টাকা ।
প্রত্যেকটা ক্যাপ্টেন , মেজর , এবং এই সব পোষ্টের চেয়েও উচু পোষ্টে কর্মরত অফিসারদের পাঠানো হয় বিদেশে । বিভিন্ন ডিগ্রি আর প্রশিক্ষনের জন্য ।
অথচ এতোগুলো মেধাবি মারা গেলেন । আর কোটি কোটি টাকা এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন কিছু মানুষ হারালাম আমরা ! !
একটা মাত্র উদাহরন দিচ্ছি।
কর্নেল গুলজার । যিনি কিনা জেএমবি ধ্বংসের মূল নায়ক ছিলেন । তাকে নিমর্মভাবে হত্যা করে , তার লাস জ্বালিয়ে দেয়া হয় ।
এরকম আরো ৫৬ জন মেধাবি অফিসারের অকাল মৃত্যু হয়েছে ।
অথচ আমাদের কোন বিকার নেই।
(৯)--{সর্বশেষ কিছু কথা}--
অন্যান্য সব বড় বড় ঘটনার মত এই নির্মম ঘটনাটাও চাপা পড়ে গেছে । কে দায়ি এই নিষ্ঠুর ঘটনার জন্য ??
কেনো করা হলো এতোগুলো অফিসারের খুন ?
কেনো আর্মিকে নিদের্শ দেয়া হলো না পিলখানায় ঢোকার ?
অনেকগুলো কেনো এসে যায় ।
তাহলে কি এই প্রশ্নগুলোর সাথে সাথে অমিমাংসিতোই থেকে যাবে পিলখানা হত্যাকান্ড ? ?
আমার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা আর্মিতে জয়েন করার । কিন্তু এই ঘটনার পর আম্মা আব্বা রাজি হন না ।
তাদেরকে অনেক কষ্ট হচ্ছে বুঝাতে ।
তারা বুঝতেই চাননা ।
হয়তো আর্মিতেই জয়েন করবো । হয়তো এভাবেই মারা যাবো ।
হয়তো এভাবেই চাপা পরে যাবে আমার মৃত্যুর কথা ।
কিন্তু তবুও তৃপ্তি নিয়ে মরতে পারবো যে আমি দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছি ।
কয়জন পারে তৃপ্তি নিয়ে মরতে ? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।