এটা আমার জন্য অনেক সুখকর যে, আমি এখন ব্লগ ও ফেইসবুক থেকে নিজেকে আসক্তিমুক্ত রাখতে পারছি। পরিবার ও পেশাগত জীবনের কর্মব্যস্ততা অনেক আনন্দের। ... ব্লগে মনোযোগ দিতে পারছি না; লিখবার ধৈর্য্য নেই, পড়তে বিরক্ত লাগে। ভাবি নি তুমি এখানে। গাঢ় চোখে তাকিয়ে থাকলে।
এরপর বললে, 'আমি জানতাম, দেখা হবেই। '
'এতোদিন আসো নি কেন?' ঘাড় দুলিয়ে জিজ্ঞাসা করলে।
একটু সময় নিয়ে বললাম, 'খুব ব্যস্ত থাকি। ঘর, সংসার। জানো তো।
'
'খুব ভালো লাগছে তোমাকে দেখে। মনেই হয় না আজই তোমায় প্রথম দেখছি। ' এ কথা বলতে বলতে পুনর্বার জিজ্ঞাসা করলে, 'এতোদিন আসো নি কেন? ইচ্ছে করে নি আমাকে দেখবে?'
'তুমি খুব আন্তরিক। ' আমি বলতে থাকি, 'সহজেই কাছে টানতে পারো। '
'নাহ্! মিছে কথা।
তোমাকে কাছে পেতে বড্ড দেরি হলো। '
'তাই? কীভাবে সময় কাটে?'
প্রশ্ন শুনে তোমার মুখ ম্লান হয়ে গেলো। স্বগতোক্তি করলে, 'সময়? বড় দীর্ঘ! একাকী! জীবন!' একটু বিরতি নিয়ে বললে, 'ভালো লাগে না। কষ্ট। তবু আনন্দে থাকি।
অর্থাৎ থাকবার চেষ্টা করি। '
পূর্বাপর না ভেবেই বলে বসি, 'আচ্ছা, তোমার বয়স কতো হলো?'
'এবারে ৫০। তুমি?'
'ঢের কম। থাক, যতো ভুলে থাকা যায় বয়স। বরং একটা গান ধরো।
তুমি খুব গাইতে পারো, শুনেছি। '
'ঠিক শুনেছো। তবে গলা আর নেই আগের মতো। তুমি নাকি কবিতা লেখো, শোনাবে?'
'হ্যাঁ লিখি। হয় না।
তবু লিখি, কিচ্ছু হয় না, তবুও। '
'কী খাবে লাঞ্চে? মাছ? নাকি মাংশ?'
'না না। আমি এক্ষুণি উঠবো। যেতে হবে। '
'তা কি হয়? আমি রাঁধবো।
' স্বল্প বিরতির পর বললে, 'আমাকে ভালো লাগে নি?'
আমি টেনে টেনে বলি, 'হ্যাঁ। '
তুমি কৌতুক করে হাসলে। বললে, 'তুমি খুব লাজুক। একবারও ভালো করে আমাকে দেখো নি। ' কথা বলতে বলতেই হাত বাড়িয়ে গালে টুসকি দিলে।
আমার ভিতের ঘুমন্ত লাভা। মুহূর্তে জ্বলে উঠলাম। খপ করে বাহু ধরে বুকের কাছে এনে বলি, 'এখনই চাই। '
তুমি 'ছিঃ ছিঃ' করতে করতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলে। আমার শরীর তখন ঘামছিল।
জ্বলছিল।
'তুমি বসো। চা করি। ' উঠে ডাইনিং টেবিল মুছে সাজালে। পাশের ঘরে গিয়ে কী কী টুকিটাকি কথা বললে।
বাজার সওদা কিচ্ছুটুকুন ঘরে নেই। এক ফাঁকে ছোট্ট একটা লিস্টি করে কাজের ছেলেটাকে বাজারে পাঠালে।
আমি ল্যাপটপ অন করে ফেইসবুক আর ব্লগে ঠোকাঠুকি করি। ভালো লাগে না।
তুমি কিচেনে ঢুকলে।
টুংটাং শব্দ শুনি।
'চা কি হলো?' উঠে কিচেনের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালাম।
তুমি চমকে পেছনে তাকালে। হাসলে। সে-হাসিতে কতো কিছু বোঝা যায়।
'তুমি রাঁধতে পারো?' হাঁড়িতে চা-পাতা ঢালতে ঢালতে জিজ্ঞাসা করলে।
আমার রাগ হয়। বলি, 'শোনো, এসব রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়ার যথেষ্ট সময় পাবে। '
'ইলিশ আনতে পাঠিয়েছি। ইলিশ তোমার খুব প্রিয়, শুনেছি।
'
আমি তোমার ঘাড়ের পেছনে গিয়ে দাঁড়াই। তুমি মাঝে মাঝে ঘাড় ঘুরিয়ে কথা বলছো। ঘাড়ের উপর চুলের নিচে কালো ব্লাউজ ভেদ করে মাখনের মতো যে জায়গাটা ফুটে আছে, উবু হয়ে ওখানে একটা চুমু খেতেই তুমি শিউরে উঠলে।
তুমি রেগে গেলে। বললে, 'এসব আমি চাই না।
১৫ বছর ধরে কি বেঁচে নেই?'
'আমি তোমাকে অমৃতের স্বাদ দেব। তোমার সমগ্র যৌবন ফিরিয়ে দেব। '
'না, এসব চেয়ো না তুমি। বুঝতে চেষ্টা করো। '
আমি কিছুই বুঝতে চেষ্টা না করে পেছন থেকে জড়িয়ে তোমার বুক পিষ্ট করি, ঘাড়ে কামড় বসিয়ে দিই যত্রতত্র।
তুমি এক ঝটকায় আমাকে সরিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলে।
তোমার আয়োজন ও ইঙ্গিত বুঝতে আমি ভুল করেছিলাম। কাজের ছেলেকে ছুতো করে বাজারে পাঠালে। ঘর ফাঁকা করে একটা নিরুপদ্রপ সংগমের ইঙ্গিত দিলে। অথচ কী নিষ্ঠুর আর বিপরীত আচরণই না তুমি এখন করলে!
আমি ল্যাপটপে বসি।
ভালো লাগে না।
তুমি কোথায় যেন হারিয়ে গেলে। আমার অস্থির লাগে। পিসি অফ করে ব্যাগ গোছালাম। চলে যাবো।
তোমার সাথে দেখা হবার কথা ছিল না, কেন বা কীভাবে আজ দেখা হলো কে জানে? তোমার উপর হাত বাড়াবার ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু তুমিই প্রথম লোভ দেখালে। আমার ভিতরেও একটা অন্য আমি আছে, অথচ সে 'আমি'টা কেউ চেনে না। তোমাকে চিনিয়ে নিজেকে খুব খাটো মনে হচ্ছে। তোমাকে যদি সত্যিকারে পাওয়া যেতো, নিজের কাছে নিজেকে আরো অনেক বড় মনে হতো। আমি লজ্জাবোধ করছিলাম।
তুমি কোথায় যেন হারিয়ে গেলে। চোরের মতো পালিয়ে আসতে পারি। না, বীরের মতোই তোমার সাথে শেষ দেখাটা করে যাই।
তোমাকে খুঁজতে বেডরুমের দিকে পা বাড়াই। নিথর শরীরে চোখ বুজে শুয়ে আছো তুমি।
আমি ধীর পায়ে তোমার কাছে গিয়ে দাঁড়াই। তুমি চোখ বুজেছিলে। আমার উপস্থিতি টের পেয়ে কাত হয়ে অন্যদিকে শরীর ফিরিয়ে নিলে। নরম করে সিথানের কাছে বসলাম। আর কালবিলম্ব নয়।
উপুড় হয়ে তোমার ঠোঁটদুটো মুখের ভিতর পুরে নিলাম। এতো মধু! এতো অমৃত! একটু পরই যখন দুহাতে আমার পিঠ জড়িয়ে ধরলে, তখন মনে হলো, এতোক্ষণ মিছেমিছি তোমাকে ভুল বুঝে নিজেকে কষ্ট দিয়েছি। আর মনে হলো, এমন একটা ঝড়ো তাণ্ডবের জন্য তুমি অপেক্ষা করছিলে অনেক বছর। তোমার ১৫ বছরের ক্ষুধার্ত শরীর কোনো বাধ মানে না। খাবলে খুটে খেতে থাকে আমাকে, যেমন আমি তোমার সর্বাঙ্গ নিয়ে শুধু উন্মত্ত ভাঙচুরের খেলা খেলতে থাকি।
হায়, শরীর যে মনের বারন মানে না, মুনিঋষিরা কি তা জানতেন না? কিছুক্ষণ আগের তুমি, আর এখনকার তুমি! আগামীকালের 'তুমি'তে কোন্ রূপ দেখবে তা কি তুমি নিজেই জানো?
বের হচ্ছি। তখন বাসাভর্তি অনেক মানুষ। আমি বাইরের দরজায়, সবার সাথে বিদায়ী শুভেচ্ছা বিনিময় হচ্ছে। আমার চোখ তোমাকে খুঁজছিল। তুমি দূরে ভিতেরর এক অন্ধকার দরজায়।
আড়চোখে চোখাচোখি হতেই মাথা নামিয়ে নিলে। কী লাজুক তোমার মুখ! তোমাকে সর্বৈব জয় করবার তুমুল উল্লাস আমার ভিতরে টগবগ করে ফুটছিল।
তুমি বলো নি, 'আবার এসো। ' মনে হলো, তুমি দূর থেকে অস্ফুট শব্দে বললে, 'কীভাবে বেঁচে থাকবো, তোমাকে ছাড়া?'
তোমাকে সাথে করে আমি বেরিয়ে পড়লাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।