আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গডফাদার-২৯

ঢাকার উদ্দেশ্যে বাস দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। জুঁই কোনদিন ঢাকা শহরে যায়নি আজ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়ার পর থেকে তার মন আনন্দে ভরে গেছে। জুঁই সবসময় শুধু ভাবছে আর মাঝে মাঝে আপন মনে হাসছে। জুঁই আর জামাল একই সিটে পাশাপাশি বসেছে জুঁই জামালের দিকে তাকিয়ে আছে, জামাল মাঝে মাঝে ঘুমাচ্ছে মাঝে মাঝে জেগে জুঁইয়ের দিকে তাকাচ্ছে। যতক্ষণ জেগে থাকে ততক্ষণ বিভিন্ন ধরণের কথাবার্তা বলছে কখনোবা ঘুমের ঘোরে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে জুঁইয়ের গা ঘেঁষে বসছে, জুঁইয়ের কাঁধে মাথা রেখে হাত দিয়ে উরু স্পর্শ করছে।

জুঁইয়ের শরীর শীর শীর করে উঠছে আবার কখনো জামালের প্রতি কৃতজ্ঞতায় মন ভরে উঠছে। গাড়ি একসময় শহরে ঢুকলো। তারপর বাস থেকে নেমে একটা ট্যাক্সি ক্যাব ভাড়া নিয়ে ছুটে চলল। জুঁই জিজ্ঞেস করল, আমরা এখন কোথায় যাব ভাইয়া? জামাল হেসে বলল, জুঁই তুমি প্রথম এসেছ প্রশ্ন করো না, আমি তো তোমার সঙ্গে আছি, তোমার চিন্তার কিছু নেই। জুঁই কিছুটা লজ্জা পেল, সে বুঝতে পারল এভাবে জিজ্ঞেস করা তার ঠিক হয়নি।

তারপর জুঁই আর কিছু জিজ্ঞেস করল না। জামালকে অনুসরণ করে চলল। ট্যাক্সি ক্যাব এসে দাঁড়ালো একটি আবাসিক হোটেলের সামনে। ট্যাক্সি ক্যাব ছেড়ে দিয়ে দু'জনে হোটেলের ভিতরে ঢুকতেই একজন বয় এসে ব্যাগ হাতে নিয়ে দু'জনকে রিসিপশনে নিয়ে গেল। হোটেলের ম্যানেজার প্রথমে সালাম দিয়ে বলল, স্যার এসি রুম লাগবে? জামাল বলল, হুঁম,একটা এসি রুম দাও তো।

ম্যানেজার জামালের কাছ থেকে তার নাম ঠিকানা লিখে জিজ্ঞেস করে লিখল তারপর একবার উভয়ের দিকে একবার আপাদমস্তক তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, উনি আপনার কে হয়? জামাল রাগান্বিত চোখে তাকাতেই ম্যানেজার প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে জুঁইকে জিজ্ঞেস, আপনার নাম প্লিজ? জিন্নাত আরা জুঁই। ঠিকানা? জামাল বলল, আমার ঠিকানাই লিখে দাও। রেজিস্টারে নাম এন্ট্রি করার পর দু'জনে উঠে গেল হোটেলের তৃতীয় তলায়। বড় আকারের একটা এসি রুম পাশাপাশি দু'টা সিট রাখা আছে, এটাচ্‌ড বাথ রুমে কিছুক্ষণ আগে সুগন্ধি স্প্রে করা হয়েছে। জুঁই রুমে ঢুকে প্রথমে কৌতুহলী হয়ে রুমটা ভালোভাবে দেখল।

তারপর একবার জামালের চোখের দিকে তাকাতেই জুঁই লক্ষ্য করল তার দু'চোখ লোভে চিক্‌চিক করছে, জুঁইয়ের বুক আঁতকে উঠল। সে শুষ্ক মুখে জিজ্ঞেস করল, ভাইয়া আমরা কখন যাব? আচ্ছা একটু রেষ্ট নেই তারপর উনাকে মোবাইল করতে হবে। যদি উনি এখনি যেতে বলেন তবে এখনি যাব। জামাল মোবাইলের বাটন কিছুক্ষণ টিপে কানের কাছে লাগিয়ে বলল, হ্যালো ভাই, আমি তো ঢাকায় ক্যান্ডিডেটকে নিয়ে এসেছি, আপনার কাছে নিয়ে আসবো? অপর পাশ থেকে কোন ধ্বনি এলো কী না বোঝা গেল না। জামাল বলল, আপনি আজ সাতটায় আসতে বলেছিলেন তো তাই এসেছি।

আপনার কথা আমি কিচ্ছু শুনতে পাচ্ছি না। আচ্ছা আমি আবার পরে ফোন করবো। বলে জামাল কানের কাছে মোবাইল রেখে মোবাইল অফ করল। জুঁই তুমি তাঁর কথা বুঝবে না, তিনি সবসময় শুধু ব্যস্ত, অনেক কাজ, তাঁর কথা বলার সময় নেই। এখন হয়তো কোন মিটিং এ আছে।

ফ্রি হলে একটু পরে মোবইল করে তার বাসায় যাব বলে জামাল বাথ রুমে ঢুকলো। জামাল বাথরুমে ঢোকার পর জুঁই সাবধানে জামালের কল রেকর্ড দেখে হতবাক হয়ে গেল। জামালের মোবাইলে দু'ঘণ্টার মধ্যে কোন ডায়ালড কল নেই। তারমানে জামাল কারো সংগে কথা বলেনি! তবে কী সব! জামাল আসার আগেই জুঁই মোবাইলটা ঠিক যেমনভাবে ছিল তেমনিভাবে রেখে দিল। বাথরুম থেকে বের হয়ে এক রকম জুঁইয়ের মুখোমুখি বসে জুঁইয়ের চোখের দিকে তাকাতেই জুঁইয়ের বুক কেঁপে উঠল।

অজানা আশংকায় জুইয়ের হৃদপিন্ডের গতি বেড়ে গেল, মুখ শুকিয়ে গেল। জুঁইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে জামাল জুঁইয়ের মনের অবস্থা কিছুটা অনুমান করল, জুঁই তোমার মন খারাপ কেন? জুঁই একটা শুষ্ক হাসি হেসে বলল, না তো ভাইয়া। তোমার কি থাকার জায়গা পছন্দ হয়েছে? জুঁই মাথা ঝাকিয়ে সায় দিল। হ্যাঁ এত খোলামেলা রুম, এটাচ্‌ড বাথ, আবার এয়ার কন্ডিশন্ড, সবকিছু মিলিয়ে এ রুমটা আমার খুব পছন্দ, তুমি কিছু খাবে? চা? কফি? জুঁই মুখে কিছু বলল না মাথা নত করে বসে রইল। জামাল কলিং বেল এ টিপ দিতেই বয় এসে দাঁড়ালো।

জামাল বলল, দু'টা কফি আধ ঘন্টা পর একটা জনসন ওয়াকার সঙ্গে কোল্ড ড্রিংক্স আর রাত নটায় ভাত, তরকারি থাকবে মুরগীর মাংস, চিংড়ী মাছ ভুনা, শব্জি আর ডাল ভাজি যাও এখন কফি নিয়ে এসো, কথাগুলো জামাল একরকম একটানে বলে ফেলল। জি স্যার বলে বয় চলে গেল। কয়েকমিনিট পর কফি নিয়ে এলো। জামাল কফি খেতে খেতে মোবাইল করল, হ্যালো আস্‌সালামুয়াআলায়কুম। অপর পাশ থেকে কোন শব্দই ধ্বনিত হলো না জামাল আবার বলল, বড়ভাই আপনি ঢাকার বইরে? কাল সকালে আসবেন? বলে জামাল একটা কৃত্রিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলল, আচ্ছা আমি আগামীকাল নিয়ে আসবো? বলে জামাল মোবাইল অফ করল।

জুঁই শুষ্কমুখে জিজ্ঞেস করল, কী বললেন? তিনি হঠাৎ করে ঢাকার বাইরে গেছেন আগামীকাল দেখা করতে বললেন। কফি শেষ করে জামাল আবার কলিং বেল-এ টিপ দিতেই বয় এসে কাপ নিয়ে গেল। কিছুক্ষণ দু'জনে গল্প করল তারপর বয় এসে জনসন ওয়াকার এবং কোল্ড ড্রিংক্স দিয়ে গেল। জামাল গ্লাসে কোল্ড ড্রিংক্স আর জনসন ওয়াকার মিশিয়ে জুঁইয়ের হাতে একটা গ্লাস বাড়িয়ে দিয়ে বলল, জুঁই নাও। কী ভাইয়া? কোল্ড ড্রিংক্স।

আপনি খান ভাইয়া আমি খাব না। জামাল জোর করে জুঁইয়ের হাতে গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে বলল, খাও খুব ভালো লাগবে, ক্লান্তি দূর হবে। জুঁই এতক্ষণে জামালের সব কৌশলের কথা বুঝতে পারল। সে এই অজানা বোতলের নাম বুঝতে পারেনি কিন্তু এটা যে মদ এতক্ষণে তার কাছে ষ্পষ্ট হয়ে গেছে। সে রাগান্বিতস্বরে বলল, থাক আমার ক্লান্তি দূর করার দরকার নেই।

কিন্তু জামাল জুঁইয়ের কোন কথাই শুনল না। সে একরকম জোর করে জুঁইয়ের মুখে মদ ঢেলে দিতে চাইল। অগত্যা জুঁই মদের গ্লাসটা জামালের হাত থেকে নিয়ে নিজের হাতে নিয়ে এক ঢোক গিলে বলল, ভাইয়া আমি খেতে পারছি না, প্লিজ আমাকে আর খেতে বলবেন না। জুঁই আনসোশ্যাল মেয়ের মতো কথা বলবে না আর দু'য়েক বার খেলে তোমার কাছে ইজি হয়ে যাবে, দেখবে তোমার খুব ভালো লাগবে, হালকা লাগবে, তুমি রঙীন স্বপ্ন দেখতে থাকবে, বলে জামাল জুঁইয়ের দিকে আরো এক গ্লাস বাড়িয়ে দিয়ে বলল, নাও। কয়েক প্যাক খাওয়ার পর জুঁইয়ের চোখ বন্ধ হয়ে এলো, তার গলার স্বর পরিবর্তন হলো, সে এলোমেলো কথাবার্তা বলতে থাকল জামাল বুঝতে পারল জুঁই নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে তাই জামাল দরজা বন্ধ করে দিল।

জুঁই জড়ানো গলায় বলল, দরজা বন্ধ করলেন কেন? জামাল জুইয়ের গা ঘেঁষে বসল। জুঁই জড়ানো গলায় বলল, প্লিজ ভাইয়া, আপনি ঐ বেড এ বসুন। জুঁইয়ের কথা যেন জামালের কানে গেল না। সে জুঁইয়ের একটা হাত নিজের হাতের মধ্যে নিল, জুঁইয়ের মুখের দিকে কয়েকমুহূর্ত তাকিয়ে রইল তারপর জুঁইয়ের গালে, ঠোঁটে এলোমেলোভাবে চুমু দিতে লাগল এবং জুঁইয়ের ষ্পর্শকাতর অংগসমূহে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলল। ততক্ষণে জুঁই নিজেও মদের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে, সে মৃদু শক্তি দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো।

অবশেষে নিজেকে জামালের কাছে সমর্পন করল। জুঁই যখন চোখ মেলে তাকালো তখন সকাল সাতটা বাজে। জামাল তাকে শক্তভাবে বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। জুঁই জামালের হাতটা সরিয়ে দিতেই জামাল জেগে উঠল, জুঁই আর একটু শুয়ে থাক প্লিজ। জুঁই কিছু বলল না, নিজেকে জামালের হাত থেকে মুক্ত করে মুখ ফিরিয়ে নিল।

জামাল মৃদু কন্ঠে ডাক দিল, জুঁই। জুঁই তবুও কিছু বলল না। জামাল বলল, জুঁই কিছু বলো? জুঁই শুষ্ক কন্ঠে বলল, কী বলব? তুমি কী মন খারাপ করেছ? জুঁই কিছু বলল না তার দু'চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল। জামাল চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল, জুঁই তুমি অযথা এমন করছ। এটা আর আজ কালকার দিনে এমন কি? এসব ভুলে যাও এটাকে খুব ইজিভাবে নাও।

জুঁই কান্নাভাঙ্গা গলায় বলল, ভাইয়া এখন আমার কী হবে? দুর পাগলি তোমার কী হবে। আমরা শুধুমাত্র এন্‌জয় করেছি একথা তুমিও কাউকে বলবে না। বরং আজ থেকে একটা সিস্টেম হলো এখন থেকে তোমাকে আর রিকোয়েষ্ট করতে হবে না। তোমাদের বাসাতেই.....বলে জামাল একটা কুৎসিত ইঙ্গিত করে চোখ টিপল। চলবে... ঢাকার উদ্দেশ্যে বাস দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।

জুঁই কোনদিন ঢাকা শহরে যায়নি আজ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়ার পর থেকে তার মন আনন্দে ভরে গেছে। জুঁই সবসময় শুধু ভাবছে আর মাঝে মাঝে আপন মনে হাসছে। জুঁই আর জামাল একই সিটে পাশাপাশি বসেছে জুঁই জামালের দিকে তাকিয়ে আছে, জামাল মাঝে মাঝে ঘুমাচ্ছে মাঝে মাঝে জেগে জুঁইয়ের দিকে তাকাচ্ছে। যতক্ষণ জেগে থাকে ততক্ষণ বিভিন্ন ধরণের কথাবার্তা বলছে কখনোবা ঘুমের ঘোরে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে জুঁইয়ের গা ঘেঁষে বসছে, জুঁইয়ের কাঁধে মাথা রেখে হাত দিয়ে উরু স্পর্শ করছে। জুঁইয়ের শরীর শীর শীর করে উঠছে আবার কখনো জামালের প্রতি কৃতজ্ঞতায় মন ভরে উঠছে।

গাড়ি একসময় শহরে ঢুকলো। তারপর বাস থেকে নেমে একটা ট্যাক্সি ক্যাব ভাড়া নিয়ে ছুটে চলল। জুঁই জিজ্ঞেস করল, আমরা এখন কোথায় যাব ভাইয়া? জামাল হেসে বলল, জুঁই তুমি প্রথম এসেছ প্রশ্ন করো না, আমি তো তোমার সঙ্গে আছি, তোমার চিন্তার কিছু নেই। জুঁই কিছুটা লজ্জা পেল, সে বুঝতে পারল এভাবে জিজ্ঞেস করা তার ঠিক হয়নি। তারপর জুঁই আর কিছু জিজ্ঞেস করল না।

জামালকে অনুসরণ করে চলল। ট্যাক্সি ক্যাব এসে দাঁড়ালো একটি আবাসিক হোটেলের সামনে। ট্যাক্সি ক্যাব ছেড়ে দিয়ে দু'জনে হোটেলের ভিতরে ঢুকতেই একজন বয় এসে ব্যাগ হাতে নিয়ে দু'জনকে রিসিপশনে নিয়ে গেল। হোটেলের ম্যানেজার প্রথমে সালাম দিয়ে বলল, স্যার এসি রুম লাগবে? জামাল বলল, হুঁম,একটা এসি রুম দাও তো। ম্যানেজার জামালের কাছ থেকে তার নাম ঠিকানা লিখে জিজ্ঞেস করে লিখল তারপর একবার উভয়ের দিকে একবার আপাদমস্তক তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, উনি আপনার কে হয়? জামাল রাগান্বিত চোখে তাকাতেই ম্যানেজার প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে জুঁইকে জিজ্ঞেস, আপনার নাম প্লিজ? জিন্নাত আরা জুঁই।

ঠিকানা? জামাল বলল, আমার ঠিকানাই লিখে দাও। রেজিস্টারে নাম এন্ট্রি করার পর দু'জনে উঠে গেল হোটেলের তৃতীয় তলায়। বড় আকারের একটা এসি রুম পাশাপাশি দু'টা সিট রাখা আছে, এটাচ্‌ড বাথ রুমে কিছুক্ষণ আগে সুগন্ধি স্প্রে করা হয়েছে। জুঁই রুমে ঢুকে প্রথমে কৌতুহলী হয়ে রুমটা ভালোভাবে দেখল। তারপর একবার জামালের চোখের দিকে তাকাতেই জুঁই লক্ষ্য করল তার দু'চোখ লোভে চিক্‌চিক করছে, জুঁইয়ের বুক আঁতকে উঠল।

সে শুষ্ক মুখে জিজ্ঞেস করল, ভাইয়া আমরা কখন যাব? আচ্ছা একটু রেষ্ট নেই তারপর উনাকে মোবাইল করতে হবে। যদি উনি এখনি যেতে বলেন তবে এখনি যাব। জামাল মোবাইলের বাটন কিছুক্ষণ টিপে কানের কাছে লাগিয়ে বলল, হ্যালো ভাই, আমি তো ঢাকায় ক্যান্ডিডেটকে নিয়ে এসেছি, আপনার কাছে নিয়ে আসবো? অপর পাশ থেকে কোন ধ্বনি এলো কী না বোঝা গেল না। জামাল বলল, আপনি আজ সাতটায় আসতে বলেছিলেন তো তাই এসেছি। আপনার কথা আমি কিচ্ছু শুনতে পাচ্ছি না।

আচ্ছা আমি আবার পরে ফোন করবো। বলে জামাল কানের কাছে মোবাইল রেখে মোবাইল অফ করল। জুঁই তুমি তাঁর কথা বুঝবে না, তিনি সবসময় শুধু ব্যস্ত, অনেক কাজ, তাঁর কথা বলার সময় নেই। এখন হয়তো কোন মিটিং এ আছে। ফ্রি হলে একটু পরে মোবইল করে তার বাসায় যাব বলে জামাল বাথ রুমে ঢুকলো।

জামাল বাথরুমে ঢোকার পর জুঁই সাবধানে জামালের কল রেকর্ড দেখে হতবাক হয়ে গেল। জামালের মোবাইলে দু'ঘণ্টার মধ্যে কোন ডায়ালড কল নেই। তারমানে জামাল কারো সংগে কথা বলেনি! তবে কী সব! জামাল আসার আগেই জুঁই মোবাইলটা ঠিক যেমনভাবে ছিল তেমনিভাবে রেখে দিল। বাথরুম থেকে বের হয়ে এক রকম জুঁইয়ের মুখোমুখি বসে জুঁইয়ের চোখের দিকে তাকাতেই জুঁইয়ের বুক কেঁপে উঠল। অজানা আশংকায় জুইয়ের হৃদপিন্ডের গতি বেড়ে গেল, মুখ শুকিয়ে গেল।

জুঁইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে জামাল জুঁইয়ের মনের অবস্থা কিছুটা অনুমান করল, জুঁই তোমার মন খারাপ কেন? জুঁই একটা শুষ্ক হাসি হেসে বলল, না তো ভাইয়া। তোমার কি থাকার জায়গা পছন্দ হয়েছে? জুঁই মাথা ঝাকিয়ে সায় দিল। হ্যাঁ এত খোলামেলা রুম, এটাচ্‌ড বাথ, আবার এয়ার কন্ডিশন্ড, সবকিছু মিলিয়ে এ রুমটা আমার খুব পছন্দ, তুমি কিছু খাবে? চা? কফি? জুঁই মুখে কিছু বলল না মাথা নত করে বসে রইল। জামাল কলিং বেল এ টিপ দিতেই বয় এসে দাঁড়ালো। জামাল বলল, দু'টা কফি আধ ঘন্টা পর একটা জনসন ওয়াকার সঙ্গে কোল্ড ড্রিংক্স আর রাত নটায় ভাত, তরকারি থাকবে মুরগীর মাংস, চিংড়ী মাছ ভুনা, শব্জি আর ডাল ভাজি যাও এখন কফি নিয়ে এসো, কথাগুলো জামাল একরকম একটানে বলে ফেলল।

জি স্যার বলে বয় চলে গেল। কয়েকমিনিট পর কফি নিয়ে এলো। জামাল কফি খেতে খেতে মোবাইল করল, হ্যালো আস্‌সালামুয়াআলায়কুম। অপর পাশ থেকে কোন শব্দই ধ্বনিত হলো না জামাল আবার বলল, বড়ভাই আপনি ঢাকার বইরে? কাল সকালে আসবেন? বলে জামাল একটা কৃত্রিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলল, আচ্ছা আমি আগামীকাল নিয়ে আসবো? বলে জামাল মোবাইল অফ করল। জুঁই শুষ্কমুখে জিজ্ঞেস করল, কী বললেন? তিনি হঠাৎ করে ঢাকার বাইরে গেছেন আগামীকাল দেখা করতে বললেন।

কফি শেষ করে জামাল আবার কলিং বেল-এ টিপ দিতেই বয় এসে কাপ নিয়ে গেল। কিছুক্ষণ দু'জনে গল্প করল তারপর বয় এসে জনসন ওয়াকার এবং কোল্ড ড্রিংক্স দিয়ে গেল। জামাল গ্লাসে কোল্ড ড্রিংক্স আর জনসন ওয়াকার মিশিয়ে জুঁইয়ের হাতে একটা গ্লাস বাড়িয়ে দিয়ে বলল, জুঁই নাও। কী ভাইয়া? কোল্ড ড্রিংক্স। আপনি খান ভাইয়া আমি খাব না।

জামাল জোর করে জুঁইয়ের হাতে গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে বলল, খাও খুব ভালো লাগবে, ক্লান্তি দূর হবে। জুঁই এতক্ষণে জামালের সব কৌশলের কথা বুঝতে পারল। সে এই অজানা বোতলের নাম বুঝতে পারেনি কিন্তু এটা যে মদ এতক্ষণে তার কাছে ষ্পষ্ট হয়ে গেছে। সে রাগান্বিতস্বরে বলল, থাক আমার ক্লান্তি দূর করার দরকার নেই। কিন্তু জামাল জুঁইয়ের কোন কথাই শুনল না।

সে একরকম জোর করে জুঁইয়ের মুখে মদ ঢেলে দিতে চাইল। অগত্যা জুঁই মদের গ্লাসটা জামালের হাত থেকে নিয়ে নিজের হাতে নিয়ে এক ঢোক গিলে বলল, ভাইয়া আমি খেতে পারছি না, প্লিজ আমাকে আর খেতে বলবেন না। জুঁই আনসোশ্যাল মেয়ের মতো কথা বলবে না আর দু'য়েক বার খেলে তোমার কাছে ইজি হয়ে যাবে, দেখবে তোমার খুব ভালো লাগবে, হালকা লাগবে, তুমি রঙীন স্বপ্ন দেখতে থাকবে, বলে জামাল জুঁইয়ের দিকে আরো এক গ্লাস বাড়িয়ে দিয়ে বলল, নাও। কয়েক প্যাক খাওয়ার পর জুঁইয়ের চোখ বন্ধ হয়ে এলো, তার গলার স্বর পরিবর্তন হলো, সে এলোমেলো কথাবার্তা বলতে থাকল জামাল বুঝতে পারল জুঁই নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে তাই জামাল দরজা বন্ধ করে দিল। জুঁই জড়ানো গলায় বলল, দরজা বন্ধ করলেন কেন? জামাল জুইয়ের গা ঘেঁষে বসল।

জুঁই জড়ানো গলায় বলল, প্লিজ ভাইয়া, আপনি ঐ বেড এ বসুন। জুঁইয়ের কথা যেন জামালের কানে গেল না। সে জুঁইয়ের একটা হাত নিজের হাতের মধ্যে নিল, জুঁইয়ের মুখের দিকে কয়েকমুহূর্ত তাকিয়ে রইল তারপর জুঁইয়ের গালে, ঠোঁটে এলোমেলোভাবে চুমু দিতে লাগল এবং জুঁইয়ের ষ্পর্শকাতর অংগসমূহে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলল। ততক্ষণে জুঁই নিজেও মদের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে, সে মৃদু শক্তি দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো। অবশেষে নিজেকে জামালের কাছে সমর্পন করল।

জুঁই যখন চোখ মেলে তাকালো তখন সকাল সাতটা বাজে। জামাল তাকে শক্তভাবে বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। জুঁই জামালের হাতটা সরিয়ে দিতেই জামাল জেগে উঠল, জুঁই আর একটু শুয়ে থাক প্লিজ। জুঁই কিছু বলল না, নিজেকে জামালের হাত থেকে মুক্ত করে মুখ ফিরিয়ে নিল। জামাল মৃদু কন্ঠে ডাক দিল, জুঁই।

জুঁই তবুও কিছু বলল না। জামাল বলল, জুঁই কিছু বলো? জুঁই শুষ্ক কন্ঠে বলল, কী বলব? তুমি কী মন খারাপ করেছ? জুঁই কিছু বলল না তার দু'চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল। জামাল চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল, জুঁই তুমি অযথা এমন করছ। এটা আর আজ কালকার দিনে এমন কি? এসব ভুলে যাও এটাকে খুব ইজিভাবে নাও। জুঁই কান্নাভাঙ্গা গলায় বলল, ভাইয়া এখন আমার কী হবে? দুর পাগলি তোমার কী হবে।

আমরা শুধুমাত্র এন্‌জয় করেছি একথা তুমিও কাউকে বলবে না। বরং আজ থেকে একটা সিস্টেম হলো এখন থেকে তোমাকে আর রিকোয়েষ্ট করতে হবে না। তোমাদের বাসাতেই.....বলে জামাল একটা কুৎসিত ইঙ্গিত করে চোখ টিপল। চলবে... গডফাদার-০১  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।