মানবিক দায় ও বোধহীন শিক্ষা মানুষকে প্রশিক্ষিত কুকুরে পরিণত করে....আইস্ট্যাইন। তারা সবাই নরসিংদীর আলোচিত লোকমান হত্যা মামলার আসামি। এদের মধ্যে যারা মন্ত্রী রাজুর ভাই কিংবা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী তারা জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন অল্প সময়ের মধ্যে। তাদের মুক্তিতে কোনো সময়ক্ষেপণ হয়নি। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মী হলে জামিন হওয়াই বড় কঠিন।
আবার আদালত জামিন দিলেও মুক্তি অনিশ্চিত। বিএনপি করাই যেন আসামির বড় অপরাধ।
নরসিংদী পৌর মেয়র লোকমান হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি মন্ত্রীর ভাইসহ এজাহারভুক্ত প্রায় সব আসামি দ্রুত সময়ে জামিনে বেরিয়ে এলেও ৫নং আসামি ও নরসিংদী সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলামকে নিয়ে চলছে নানা নাটক। তিন দফায় মোট ৭ দিনের রিমান্ড শেষে জামিন মঞ্জুর করার পর বিকালে জেলগেটে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করে স্থানীয় প্রশাসন। জামিননামা জেলা কারাগারে পৌঁছলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত কারাগার থেকে বের হতে দেয়া হয়নি তাকে।
পুলিশ বার বার বিএনপির অপেক্ষমাণ নেতাকর্মীদের গেটের সামনে থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় উত্তেজনাকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। গতকাল দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ নুরুল ইসলামকে তৃতীয় দফায় ২ দিনের রিমান্ড শেষে নরসিংদীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিতাই চন্দ্র সাহার আদালতে হাজির করেন।
এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ মন্ডল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার লক্ষ্যে আদালতে চতুর্থ দফায় আরও ৭ দিনের রিমান্ড চান।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, এস এ হাদি ও টিটোসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগসমর্থিত অর্ধশতাধিক আইনজীবী জানান, লোকমান হত্যার সঙ্গে নুরুল ইসলাম কোনোভাবেই জড়িত নয়।
এই হত্যাকাণ্ডের আগেই নুরুল ইসলাম ব্যবসায়িক কাজে মালোয়েশিয়া যান। মূলত তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে চক্রান্তকারীরা তাকে এই মামলায় জড়িয়েছে—উল্লেখ করে আইনজীবীরা তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন জানান। বিজ্ঞ আদালত উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক শুনে আসামি নুরুল ইসলামের রিমান্ড বাতিল করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পরে বিকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ফের আসামিপক্ষ জামিনের আবেদন করলে তার জামিন মঞ্জুর হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট রিমান্ড ও জামিন বাতিল করার পরপরই জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের প্রার্থনা করা হয়।
পরে ওই আদালতের বিচারক ড. মো. শাহজাহান আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে আদালত সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত মেয়র লোকমান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১৪ জন আসামির মধ্যে ১২ জনেরই দ্রুত জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মামলার অন্যতম আসামি মোবারক হোসেন মোবা এখনও বিদেশে পলাতক রয়েছেন এবং অপর আসামি আশরাফুল সরকার নরসিংদী জেলা কারাগারে আটক রয়েছেন।
তবে এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু গত ১৫ জানুয়ারি মামলার এজাহারভুক্ত অপর আরও ৪ আসামিকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। সঙ্গীয় আসামিরা হলো ৬নং আসামি মনোয়ার হোসেন খান ওরফে মঈন, ৭নং হিরন মিয়া, ১৩নং আমির হোসেন ওরফে আমু ও ১৪নং আসামি সন্ত্রাসী মামুন।
এদের মধ্যে সালাউদ্দিন বাচ্চু, আমির হোসেন আমু ও মামুনকে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত আর বাকিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একদিন পর তারা জামিনে বেরিয়ে আসে।
এছাড়া মামলার ২নং আসামি জেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃৃত সহ-সভাপতি আবদুল মতিন সরকার, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ৪নং আসামি মোন্তাজ উদ্দিন ভূঞা, ৯নং আসামি ও মন্ত্রীর রাজুর এপিএস মাসুদুর রহমান মুরাদ, ১০নং আসামি কবীর সরকার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও এজাহারভুক্ত ১২নং আসামি ভিপি মঞ্জুর আদালতে হাজির হলে জামিন পেয়ে যান।
অথচ এই বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর তাকে তিন দফায় ৭ দিন রিমান্ড নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করে পুলিশ। সন্ধ্যায় পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জেলগেটে নুরুল ইসলামকে ফের গ্রেফতার করা হতে পারে।
এ সময় জেলগেটের সামনে উপস্থিত হাজারও জনতাকে বলতে শোনা গেছে—বিএনপি নেতা হওয়াই নুরুল ইসলামের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুত্রঃ এইখানে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।