বেশ কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং কালের কন্ঠ হালাল উপায়ে মুরগী জবেহ হচ্ছে না বলে বেশ উষ্মা প্রকাশ করছেন। যেসব রিপোর্টার এই রিপোর্টগুলো করছেন, তারা বাজার থেকে মুরগী কিনেন কিনা জানি না। বাজারে গিয়ে হয়ত মুরগী কিনে ওজন করে দাম দিয়ে সবাই চলে যায়, তারপর মুরগীওয়ালাকে বলে ভালো করে ড্রেসিং করে দিতে, এই বলে সবাই অন্য বাজার করতে চলে যায়। এখন আপনার কিনা মুরগী কিভাবে ড্রেসিং হচ্ছে, সেটা কি জানেন?
আমাদের দেশের বাজারে গত ১০-১২ বছর ধরে বাজারে কিছু মেশিন বের হয়েছে, যেগুলো দিয়ে সেমিঅটোমেটিক উপায়ে মুরগী ড্রেসিং করা হচ্ছে। যারা জানেন না, তাদের জন্য এই পোস্ট।
১। এটা হলো সেই মেশিন।
২। মেশিনের ভিতরে কিছু বল্টু আছে, দেখেন ভিতরে। এইখানে মুরগী ফেলা হয়।
৩। মেশিনে মুরগী ফেলার আগে সেটাকে গরম পানিতে বয়েল করতে হয়। বয়েল করলে মুরগীর চামড়া নরম হয়ে যায়। মেশিনে তখন সহজে পালক পরিষ্কার করে।
৪।
মুরগী গুলানকে জবেহ করার পর এইরকম একটা চোঙার মধ্যে ফেলা হয়, যাতে চিল্লাফাল্লা আর লাফালাফি করতে না পরে।
৫। তারপর মুরগীগুলাকে গরম পানিতে চুবানো হয়। ১-২ মিনিট ধরে।
৬।
এইবার হলো মেশিনের কাজ। মেশিনের মধ্যে মুরগীটা পিংপং বলের মতও লাফাতে থাকে। মাংশ থেতলে যায় অনেকটা।
৭। হালকা পানি মারা হয় মেশিনে।
৮। মুরগীর খসে যাওয়া পালকগুলো মেশিনের নিচে জমা হয়।
৯। মেশিনের মধ্যে অর্ধপরিষ্কার হওয়া বেচারা মুরগীর অবস্হা দেখেন।
উপরের ছবিগুলো একটা বিদেশী ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
এইখানে সমগ্র প্রসেসটা যথেষ্ট পরিষ্কার মনে হচ্ছে। তবে ড্রেসিং এর লোকাল ভার্সন দেখতে চাইলে বাজারে যেতে হবে আপনাকে।
একইভাবেই আমাদের দেশেও বাজারে মুরগী ড্রেসিং করা হয়। আপনাদের কারো সুযোগ থাকলে সচক্ষে বাজারে গিয়ে দেখে আসবেন। আর যে গরম পানিতে মুরগীগুলো দেওয়া হয়, সেই পানিটা ড্রেনের কালো কুচকুচে পানি থেকেও বেশি নোংরা।
সারাদিন একটার পর একটা মুরগী সেই কালো পানিতে চুবানো হয়। হয়ত একবালতি পানিতে ৪০-৫০টা মুরগীর কাজ করা হয়। বার বার পানি বদল করা সম্ভব নয়, কারণ এই পানি গরম করা লাগে। এই মুরগীর দোকান গুলোতে গ্যাসের লাইন থাকে না, তারা কেরোসিন দিয়ে পানি গরম করে। তাই একটু কস্টইফেক্টিভ ওয়েতে তারা চিন্তা করে।
অনেক কাল আগে যখন নতুন ড্রেসিং মেশিন বাজারে এলো, তখন ২-১টা মুরগী ড্রেসিং করিয়েছিলাম। পরে সেই কালো পানিতে মুরগী ডুবানো দেখে বমি চলে এসেছিলো।
এখন মুরগী কিনলে সেটা জবেহ করে হাতে চামড়া সহ হাতে ছিড়ে ফেলে দিতে বলি। আর জবেহ করার সময় বিসমিল্লাহ বলতে বলি। সবচেয়ে ভালো হচ্ছে, নিজে জবেহ করা।
সেটা তো সবসময় সম্ভব হয় না।
সেদিন এক মুরগীওয়ালা বললো, তারা এতো বেশি ব্যস্ত, সারাদিন বিসমিল্লাহর উপর থাকে। কেউ বিসমিল্লাহ বলতে না বললেও তারা বলে। (আসলে বলে কিনা জানি না, মাসের শুরুতে একবার বিসমিল্লাহ বলে নিয়ে সারা মাসের মুগরীকে হালাল করেও নিতে পারে। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।