আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জল নিয়ে ঘোলা জল এবং ভারত

থেমে যাবো বলে তো পথ চলা শুরু করিনি। একটি সংবাদ পড়ে দেখুন। Click This Link ভৌগলিক ভাবে বাংলাদেশ অনেকগুলো নদীর অববাহিকায় অবস্থিত একটি দেশ। এই দেশের জন্ম আসলে অনেকগুলো ব-দ্বীপের সমন্বয়ে। আমাদের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া অনেকগুলো নদীর প্রধান কয়েকটি হল গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, বরাকের থেকে সৃষ্ট সুরমা-কুশিয়ারা, তিস্তা ইত্যাদি।

এ ছাড়াও আছে আরো অনেক নদী-উপনদী। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত আমাদের জল বন্টনের সমস্যা ছিল না। সমস্যা শুরু হয় ১৯৪৭ সালের পর থেকে। সে সময়ে ভারত আর পাকিস্তানের জন্ম হয়, এবং ভারত একচেটিয়া ভাবে উজানের দেশ হিসাবে বর্তমান বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রতিটি নদীর জলের উপরে তাদের মালিকানা দাবী করে বসে। অথচ ভারত আর পাকিস্তানের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সিন্ধু নদের জল নিয়ে ভারত পাকিস্তানের সাথে জল ঘোলা করার খেলা খেলতে সাহস পায় নাই, এখনো পায় না।

তিস্তা ও বরাক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে ভারত বাংলাদেশকে বঞ্চিত করছে। অথচ এরই মধ্যে ভারত কৌশলে বাংলাদেশের কাছ থেকে ফেনী নদীর পানি নেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে। গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের আগমুহূর্তে ঢাকায় দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে তিস্তা চুক্তির বিনিময়ে ভারত বাংলাদেশের কাছে ফেনী নদী থেকে প্রতিদিন পৌনে দুই কিউসেক পানি চায়। ফেনী নদী থেকে পানি নিয়ে তারা ত্রিপুরার খাবার পানির সঙ্কট দূর করতে একটি পানি শোধনাগার স্থাপনের কথা বলে। এতে ফেনী নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল সেচ প্রকল্পগুলোও মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ড. মনমোহন সফরের পর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিজ উদ্যোগে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ভারতকে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে বসার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়। ভারত এখন পর্যন্ত একটি চিঠিরও জবাব দেয়নি। উজানের দেশ ভারতের পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে ভাটির দেশ হিসেবে আমাদের উদ্বিগ্ন ও উত্কণ্ঠিত হওয়ার কথা। জেআরসি হচ্ছে ভারতের কাছে বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের একটি স্বীকৃত ফোরাম। কিন্তু ওই ফোরামকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে।

ভারত এ ফোরামকে তাদের মর্জি মতো ব্যবহার করছে। আর আমরা সবলের প্রতি দুর্বলের যে মনোভাব থাকে, তাই প্রকাশ করে আসছি। এখন আমাদের প্রাপ্তিনির্ভর করছে ভারতের করুণার ওপর। পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন ভারতের ব্যাপারে কিছু বলতে বা পানি নিয়ে কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে রাজি নন। বারবার অনুরোধের পরও যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে বসতে ভারতের অনাগ্রহ ও বাংলাদেশের স্বার্থহানি বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

যৌথ নদী কমিশনের বাংলাদেশের সদস্য মীর সাজ্জাদ হোসেনও দু’দেশের পানিবণ্টন সমস্যা ও যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভারতের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের অংশ হিসেবেই যৌথ নদী কমিশনকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। ভারতের অবজ্ঞা, অবহেলা আর অনীহা এবং বাংলাদেশের কার্যকর ভূমিকার অভাবে যৌথ নদী কমিশন এখন একটি মৃত সংস্থায় পরিণত হয়েছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।