আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক নজরে ব্লগ জুড়ে চলমান নানামুখী ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে নয়া সাম্রাজাবাদী ভারতের বিরুদ্ধে জনমানসের ক্ষোভ এখন চুড়ান্ত। ব্লগারাও বিক্ষিপ্ত। নেটবিহীন মানুষের তুলনায় নেটময় মানুষ তাদের বিক্ষোভ প্রকাশের নানা উপায় পাচ্ছেন এবং অন্যের মধ্যে সংক্রমনেরও সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে নেটে বিক্ষিপ্ততা টের পাওয়া যাচ্ছে ব্যাপকহারে। সাধারণত ভারতের কোনো অন্যায়-নিপীড়নের প্রতিবাদ করে সোচ্চার জনসমষ্টির পেছনে এসে হানা দেয় জামাত-শিবির সহ সাম্প্রদায়িক শক্তি।

সেজন্য বিভিন্নমুখী চলমান ক্যাম্পেইনগুলো সম্বন্ধে ছোটখাটো অনুসন্ধান চালালাম যার সংক্ষিপ্তসার নিচে দেয়া হলো: ১. পহেলা ফেব্রুয়ারী থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ভারতীয় পণ্য বয়কট কর্মসুচি সামহোয়ারইন ব্লগে মাহমুদুল হাসান কায়রো ২০শে জানুয়ারী পহেলা ফেব্রুয়ারী থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ভারতীয় পণ্য বয়কট কর্মসুচি নামক পোস্টে লেখেন, ব্লগে ব্লগে অনেক ঝর তুলা হয়েছে, তাই মুখে বলার কাজ এবার মোটামোটি শেষ, সময় এসেছে ত্যাগ স্বীকার করার। (মনে রাখতে হবে, ভালবাসার মানে মুখে বলা ও সেটা কাজে পরিণত করা) মনে রাখতে হবে, এই কাজ কখনো একা সম্ভব নয় আবার এক দিনেও সম্ভব নয়। দরকার সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এক দল মানুষের দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম করা। সেই প্রেক্ষিতে অনেক ভেবে চিন্তে আমাদের গৌড়বের ফেব্রুয়ারি মাসকে আমি ভারতীয় পণ্য বর্জনের মাস হিসেবে ডাক দিচ্ছি। আমার বিশ্বাস প্রস্তাবটা খারাপ নয়, আপনারা কি বলেন? থাকবেন না!!! কেন এই ফেব্রুয়ারি মাস: কারণ-১।

ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা। কারণ-২। হিন্দি ভাষার অগ্রাসন থেকে আমাদের বাংলা ভাষাকে রক্ষা করার এটাই মুক্ষম সময়। কারণ-৩। ফেব্রুয়ারি মাস আসতে আরো ১০ দিন সময় পাব যেই সময়টাতে আমরা আমাদের আহ্বান সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারব।

উক্ত ব্লগার ফেসবুকের একটা গ্রুপ তৈরী করে শেয়ার করেছেন যার নাম Boycott indian product (ভারতীয় পণ্য বর্জন) এবং যেখানে এখন সদস্য সংখ্যা ৬ হাজারের উপরে। এই পোস্টটির লিংক সহ উক্ত ব্লগারের বিএসএফ এর অত্যাচারের চিত্র ও তথ্য সমৃদ্ধ একটি পোস্ট সামহোয়ারইনে স্টিকি থাকায় বিষয়টি অসংখ্য ব্লগার ও অনলাইন এ্যাকটিভিস্টদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। ২. ১লা মার্চ ভারত বনধ সচলায়তনে ব্লগার হিমু আহবান জানিয়েছেন, আসুন, ১ মার্চ ভারত বনধ করি এই পোস্টে, যা প্রকাশিত হয় ২১শে জানুয়ারী, মার্চ ১ হোক আমাদের ভারত বনধের দিন। এই দিন আমরা ভারতের কোনো জিনিস কিনবো না, ভারতের কোনো সেবা নেবো না, ভারতের কোনো চ্যানেল দেখবো না। আগের আটত্রিশ দিন আসুন আমরা এই ডাক ছড়িয়ে দিই, সবাইকে জানাই।

পরিচিত সবাইকে বলি, নিজেদের আত্মসম্মানের কথা স্মরণ করিয়ে দেই। আমরা কুকুর নই, আমরা মানুষ। আমাদের মানুষের মর্যাদা দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, এখন থেকে সীমান্তে একজন বাংলাদেশীও যদি নিহত বা আহত হয়, আমরা পরদিন বাংলাদেশে ভারত বনধ পালন করবো। পারবেন? না পারলে প্যান্টের নিচে পাছার চামড়াটা মোটা করুন।

কারণ বিএসএফের পরবর্তী ন্যাংটো ভিকটিম আপনিই। এই পোস্টটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে এবং প্রায় ১ হাজারের বেশী বার ফেসবুকে ছড়িয়েছে। ধারণা করা যায় এর ফলে বিশাল সংখ্যক ব্লগার ও অনলাইন এ্যাকটিভিস্ট গ্রুপ ক্যাম্পেইনে অংশ নিচ্ছেন। হিমু ও সচলায়তন গ্রুপ কেউ সাম্প্রদায়িক নয়। রাজাকারদের বিরুদ্ধেই বরাবর তাদের অবস্থান।

প্রায় একই রকম আহবান দেখা যায় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন এর ২২শে জানুয়ারী সামহোয়াইন ব্লগে লেখা এক পোস্টে উগ্র জাতীয়তাবাদ বা সাম্প্রদায়িকতা থেকে নয়, মানবতার স্বার্থেই ভারতীয় পণ্য বয়কট করুন । তিনি লিখেছেন, আগামী ১ মার্চ ব্লগার অনলাইন একটিভিস্টরা ভারত বনধের ডাক দিয়েছে। আপনিও আপনার পরিবার আপনার বন্ধু মহলে ভারতীয় পন্য বয়কট করে অন্তত একটিবার দেশপ্রেম দেখান, মানুষের প্রতি ভালবাসা দেখান, নির্যাতিত মানুষের পক্ষে দাড়ান। আসিফ মহিউদ্দিন অসাম্প্রদায়িক ব্লগার এবং তার আহবান হিমুর আহবানের পরপরই, ফলে ধারণা করা যায় এই ক্যাম্পেইন অভিন্ন। ৩. ২৭ শে ফেব্রুয়ারী বাণিজ্য মেলায় ক্যাম্পেইন ও ৩রা মার্চ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ২৪শে জানুয়ারী সামহোয়ারইনব্লগে শুভ্র নামের ছেলে তার পোস্ট সীমান্তে ভারতীয় বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসুচী তে আহবান জানান, ২৭ তারিখ, শুক্রবার বিকাল ৪টায় আমরা একত্রিত হচ্ছি বানিজ্য মেলায়।

সাথে থাকবে প্ল্যাকার্ড আর লিফলেট। প্ল্যাকার্ড আর লিফলেটের মাধ্যমে আমরা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিব আমাদের কথা - আসুন আমরা ভারতীয় আর সকল বিদেশী পন্য বর্জন করে নিজেদের দেশের পন্য কিনি। ৩ তারিখ, শুক্রবার আমরা আবার একত্রিত হচ্ছি প্রেসক্লাবের সামনে, আরও বিশাল আঙ্গিকে মানববন্ধন করব। সেই একই মেসেজঃ আসুন আমাদের স্বদেশী পন্য ব্যাবহার করি সবাই। এই পোস্টের লিংকও মাহমুদুল হাসান কায়রোর স্টিকি পোস্টে উল্লেখ থাকায় ২৭শে জানুয়ারী বাণিজ্য মেলায় ভারতীয় পন্যের বিরুদ্ধে প্রচারণা এবং ৩রা মার্চ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের পক্ষে ব্লগারদের আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়।

৪. ইন্ডিয়ান দূতাবাস/হাইকমিশনে মানব বন্ধনের আয়োজন-ব্লগান্দোলন পুশকিন নামে একজন ব্লগার তার ২২শে জানুয়ারীর পোস্টে আহবান জানান, এখন কর্মসূচীর স্থান নির্ধারণের বিষয়। আমরা চাচ্ছি ভারতীয় দূতাবাসের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচী দিতে। সেখানে সম্ভব না হলে হাইকমিশনের সামনে। সকলের মতামতের ভিত্তিতে সম্ভাব্যতা যাচাই করেই আমরা কর্মসূচি ফাইনালাইজ করবো। এই আয়োজনের এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ বা সময় ঠিক হয়নি।

অতপর যা বোঝা গেলো সীমান্তে ভারতের আগ্রাসনের (সচলায়তনের ভাষায় বললে হারামীপনা) প্রতিবাদে আমাদের প্রতিবাদ করা উচিত। ব্লগসমূহ ও ব্লগাররা উপরোক্ত নানা আয়োজনে ব্যস্ত। আমি এসবই যৌক্তিক ভাবছি। এসমস্ত ব্লগাররা রাজনৈতিক কর্মী নন, কিন্তু রাজনৈতিক এই সচেতনতা রাজনৈতিক দলসমূহের জন্য বড় ধরণের একটা শিক্ষা হয়েই থাকবে। উপরোক্ত সকল প্রোগ্রামের সাথে আমি আছি।

জয় বাংলা। আপডেট: উপরোক্ত প্রোগ্রামের মধ্যে ১লা মার্চ ভারত বনধ আন্দোলন ছাড়া অন্য সবগুলো প্রোগ্রামের উদ্যোক্তাদের প্রাথমিকভাবে সাধারণ ব্লগার মনে হলেও এখন কিছু তথ্য পেয়ে সেরকম মনে হচ্ছে না। যার ফলে ১লা মার্চ ছাড়া অন্য প্র্রোগ্রামগুলোর বিষয়ে আমার সমর্থন প্রত্যাহার করলাম। আশরাফ আজীজ ইশরাক নামক একজন সক্রিয় সদস্য যিনি বাণিজ্য মেলার সামনে প্রচারণা সম্বন্ধে বাংলা নিউজকে এ কথা বলেছেন, "আমাদের মূল লক্ষ্য বাণিজ্যমেলায় আগত সবাইকে দেশি পণ্য ব্যবহারে আর ভারতীয় পণ্য বর্জনে সচেতন করা। সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমরা ৩টা পদ্ধতি নেব, লিফলেট, প্ল্যাকার্ড এবং টিশার্ট।

" তিনি একজন চিহ্নিত ছাগু। আপডেট-২: ছাগু বিষয়ে কনফিউশন তৈরী হয়েছে। এখনও আমি নিশ্চিত না। তবে তার ব্লগ পড়ে আমার ইসলামিক মনে হয়েছে, ছাগু জাতিয় কোনো কনটেন্ট দেখলাম না। যাই হোক নিশ্চিত না হয়ে কোনো কিছুতে অংশ নিতে চাই না।

জামাতিদের ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের সুযোগ দিতে চাই না। জয় বাংলা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।