জানতে ভালোবাসি,...তাই প্রশ্ন করি... আপনাদের সাথে আমার জীবনের একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করবো। ২০০৬ সালের ঘটনা, তেমন কিছু না হলেও এখনও এই ঘটনাটি আমার জীবনকে অনেক ভাবে প্রভাবিত করে।
পেশায় আমি একজন ইন্টিরিয়র আর্কিট্যাক্ট।
পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে কখনোই এরকম বিব্রত ও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। আমার এই ৩৮+ বৎসরের জীবনে লেখাপড়া করার পাশাপাশি সবসময় চেষ্টা করেছি বাবা মায়ের আদেশ সঠিক ভাবে পালন করা ও তাদের দোয়া নিয়ে সুন্দর একটি জীবন গঠন করা।
ঘটনা কালঃ ২০০৬
সেদিন ছিল পবিত্র শবে'বরাতের দিন। আমি কিছুটা অসুস্থ ছিলাম তাই আমার নিজস্ব ব্যবসায়িক কর্মস্থল ধানমন্ডিতে সকাল বেলায় যাওয়া হয়নি তবে দুপুরে গিয়েছিলাম প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করতে এবং বিকেলের আগেই বন্ধ করে রিক্সাযোগে আমরা তিনজন ফিরছিলাম। আমার সাথে ছিল আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও আমার পাড়ার এক ছোট ভাই, তারা দুইজনই আমার প্রতিষ্ঠানে সেলসে চাকুরি করতো।
সময়ঃ বিকাল প্রায় ৫ঘটিকা।
ধানমন্ডি থেকে রিক্সাযোগে আমরা তিনজন মালিবাগ মোড় হয়ে খিলগাঁও আসবো।
আমার বন্ধুটি নামবে গুলবাগ আর আমরা দুইজন নামবে খিলগাঁও। মালিবাগ মোড় থেকে গুলবাগ যাওয়া রাস্তাটি ছিল এলোমেলো রিক্সার জ্যাম। আমি রিক্সায় বসেই কর্তব্যরত এক কনষ্টেবল পুলিশকে (ট্রাফিক পুলিশ নয় তবে সে জ্যাম নিয়ন্ত্রন করছিল) বললাম ভাই আপনি এইদিকটার রিক্সাগুলি একটু সরিয়ে দিন তাহলে জ্যামটা ছুটে যাবে। সে সাথে সাথে আমাকে বলে বসলো তুই কর। আমি হকচকিয়ে গেলাম এবং তাৎখনিক ভাবে রিক্সা থেকে নেমে পুলিশটাকে জিজ্ঞাসা করলাম কেন তিনি আমাকে তুই করে কথা বললেন, আপনাকে তো আমি কোনো খারাপ কথা বলিনি।
সে আমার সাথে এক হাত নেওয়ার জন্য তর্ক শুরু করলো এবং যখন তর্ক চলছিলো তখন আমার বন্ধুটি আমার ঠিক পিছন থেকে ডান হাত দিয়ে পুলিশের কলার ধরে বসে আর ঠিক তখনই পুলিশের আরেক কর্তব্যরত সার্জেন্ট দূর থেকে বিষয়টি দেখে সামনে চলে আসে। আমি সেটা লক্ষ্য করেনি তবে আমার সাথের দুজন লক্ষ্য করে আমার পিছন থেকে চলে যায় তখন পুলিশের সার্জেন্ট আমাকে ধরে বসে আর আমাকে ধরার কিছুক্ষণ পর দেখি পিছন থেকে আমার বন্ধুটি চলে এসে স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে ধরা দেয় (কারণ সে জানতো আমার কোনো দোষ ছিল না) আর আমার আমার পাড়ার ছোট ভাইটি ভয় পেয়ে সরে পড়ে।
আমাদের ধরার কিছুক্ষণ পর সার্জেন্ট ওয়্যারলেসে রাষ্ট্রীয় কাজে বাঁধা দান বলে সংবাদ পাঠিয়ে পুলিশের পিক-আপ ভ্যান নিয়ে আসে। আমরা যখন মালিবাগ এসবি অফিসের সামনে বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনতার মাঝে তখন আমার নিজের কাছে নিজের অনেক ছোট মনে হচ্ছিল। যাই হোক এর মধ্যে আমার সাথের বন্ধুর এক বন্ধু হঠাৎ উয়দ হয় এবং আমাদের পুলিশি ঝামেলা থেকে বাচাঁনোর জন্য সকলের সামনে পুলিশের কাছে মাফ চাইতে বলে এমনকি পা ধরে মাফ চাইতেও চাপ দেয়।
আমিতো অবাক, বলে কি!! আমিতো কোনো অন্যায় করিনি কেন মাফ চাইবো তাও আবার পা ধরে!!! প্রশ্নই আসেন না। নো নেভার....... ডেথ বিফোর ডিজঅনার।
রাস্তায় যখন কোনো রফা হলো না তখন আমাদের দু'জনকে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে পিক-আপ তোলা হলো কিন্তু বসতে দেয়া হলো পিক-আপের দুই সিটের মাঝে রাখা বড় টায়ারের উপরে যেন আমরা অনেক বড় অপরাধী বা ছিনতাইকারী। এর মধ্যে কিছু বুঝে উঠার আগেই একজন উৎসুক পুলিশ আমার ও আমার বন্ধুটি হাঁটুর উপরে মোটা লাঠি দিয়ে বাড়ি মারতে শুরু করলো আর অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়ে বলতে লাগলো পুলিশের গায়ে হাত। আমরা অসহায়ের মতো শুধু হাত দিয়ে ফেরাতে চাইলাম, পারলাম না ফেরাতে গিয়ে আমি আংগুলে প্রচন্ড ব্যথা পেলাম।
রাগে আর অপমানে আমার শরীর কাঁপছিলো তবুও ধর্য্য ধরে বসে ছিলাম।
আমাদের দু'জনকে পিক-আপ-এ করে থানায় নেয়ার সময় এক পুলিশ কি ঘটনা তা জানতে চাইলো আমি বলতে চাইলে আমাকে থামিয়ে আমার বন্ধুটির কাছে জানতে চাইলো (হয়তো পুলিশ ধরেই নিয়েছিল আমিই মূল অপরাধী)। বন্ধুটি ঘটনাটা বর্ণনা করলো এবং এক সময় মতিঝিল থানায় (বর্তমান পল্টন থানা) পৌঁছালাম।
সময়ঃ বিকাল প্রায় ৬ঘটিকা।
থানায় পৌছানোর পর এক মহিলা পুলিশ আমার ও আমার বন্ধুর নাম ঠিকানা বৃত্তান্ত খাতায় লিখে আমাদের সাথে যা যা আছে তা জমা দিতে বললো এমনকি প্যান্টের বেল্ট পর্যন্ত।
বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারিনি,পরে বুঝতে পারি আমাদের এখন লকারে ঢুকানো হবে। আমি তখন ৩৩১০ নকিয়া মোবাইল ফোন ব্যবহার করি এবং কি মনে করে কৌশলে মোবাইল ফোনটি সাইল্যান্ট মুডে দিয়ে আমি আমার প্যান্টের পিছন পকেটে লুকিয়ে ফেলি। ফোনটি ছোট ছিল বিধায় চেকার পুলিশ কনস্টেবল বুঝতে পারলো না। আর এই মোবাইল ফোনটি আমাকে দ্রুত মুক্তি দানে সহায়তা করেছিল।
যাই হোক আমাদের স্যান্ডল জোড়া বাইরে রেখে লকারে ঢুকানো হলো।
লকারে ভিতরে ঢুকে দেখি অন্য এক জগত, পূর্বে যারা অবস্থান করছিল তারা আমাদের দিকে তাকিয়ে দেখছে। পূর্বের ৬-৭জন সহ আনুমানিক ৮-৯জনের মতো আমরা হলাম তখন এর মধ্যে আমাদের একজন জিঞ্জাসা করলো কি কারণে আমাদের ধরে আনা হয়েছে আমি তাদের বিষয়টি সংক্ষেপে বললাম একজন বললো 'ঠিকই আছে হালাগো(পুলিশ) মারছেন' আমি বললাম ভাই মারিনি শুধু কলার ধরেছিলাম।
সময়ঃ সন্ধ্যা প্রায় ৭ঘটিকা।
জীবনের প্রথম লকারে ভিতরে। চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম এক কোনায় একটি মাত্র টয়লেট ব্যবস্থা সাথে একটি মাত্র উন্মুক্ত গোসলখানা।
স্যাঁত স্যাঁতে ঠান্ডা মেঝে, একটি মাত্র বাল্ব টিমটিম করে জ্বলছিল, দেয়ালের উপর দিকে মোটা রড দিয়ে তৈরি ছোট্ট একটি ভেন্টিলেটর যা দিয়ে আলো আসতেও কষ্ট হয়। খুব ঠান্ডা একটা ভাব অনুভব করলাম। ঢুকার পর অন্য কয়েদির সাথে আমাদের পরিচয় হলো সম্ভবত দুইজন ছিল কেরানীগন্জের ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামী। দেখলেই ভয় লাগার মতো তাদের চেহারা ও দেহ। তারা আমাদের ও অন্যদের চেয়ে বয়সে বড়।
তারা দুজন লকারের এক কোণায় গামছা বিছিয়ে তাদের জায়গা নির্ধারিত করে নিয়েছিল, যেন এটা তার পৈতৃক জায়গা। তাদেরকে দেখে একবার ভেবেছিলাম তারা না আবার আমাদেরকে তাদের হাত-পা টিপতে বলে। ভাগ্য ভাল সে রকম কিছু ঘটেনি। আসলে তাদের আচরণ ভাল ছিল এবং তাদের মধ্যে একজন আমাদের কমলা খেতে দিয়েছিল, আমি খাইনি। কারণ কিছু খাওয়ার মতো মানুষিক অবস্থা ছিল না।
সময়ের সাথে সাথে আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম কি করা যায়, আমরা দু'জনের একজনও আমাদের কোনো আত্নীয়কে তখনও জানাইনি। নিজেরাই সমাধানে পথ খুঁজতে লাগলাম। তবে কেউ যদি ফোন করে তাদের আত্নীয় স্বজনকে কিছু জানাতে চায় তাহলে ১০টাকা দিয়ে কনস্টেবলকে অনুরোধ করতে হয় বাহির থেকে ফোন করার জন্য।
আমার ব্যবসা ও ব্যক্তিগত পরিচয় সুবাদে বর্তমান ও অতীতের কয়েকজন এমপি'র আমার সখ্যতা ছিল এবং এখনও আছে। তারা আমাকে স্নেহ করেন এবং অবসরে একসাথে আড্ডাও দেই।
তেমনি তখনকার বিএনপি'র সুপরিচিত একজন এমপি'র সাথে সুসম্পর্ক ছিল, যেহেতু মোবাইল ফোনটা সাথে ছিল তাই দেরি না করে আমি এমপি বড় ভাইকে ফোন করি। তিনি আমাকে বললেন "তুমি চিন্তা করোনা আমি ওসি সাহেবকে বলে দিচ্ছি"।
এদিকে আমি অসুস্থবোধ করতে শুরু করেছি কারণ শারীরিক অসুস্থতা পাশাপাশি যোগ হয়েছে হাঁটুতে ব্যথা। লম্বা করে পা বিছিয়ে বসে পড়লাম এক কোনায়।
এভাবে আধা ঘন্টা চলে গেলো মুক্তি পাওয়ার কোনো রকমের আভাস পেলাম না।
এর মধ্যে জানাতে পারলাম এখানে যাদেরকে ধরে আনা হয় তাদেরকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কোর্টে চালান করা হয় এবং কোর্ট থেকে পরে জামিন নিতে হয়। তাই এই ঝামেলা দ্রুত সমাধান করতে চাইলাম কারণ আজ শবে'বরাত হওয়ায় আগামীকাল কোর্ট বন্ধ অতঃপর লকারে যারা আছে তারা আরও একদিন বেশী থাকবে কোর্টে চালানের অপেক্ষায়।
দেরি দেখে আমি আবার এমপি ভাইকে ফোন করি সে আমাকে বলল ওসি সাহেব আজ রোজা রেখেছে তাই দেরি হচ্ছে থানায় পৌছেতে। মাগরিবের পরে আসবে।
সময়ঃ সন্ধ্যা প্রায় ৮ঘটিকা।
অপেক্ষা করছি কখন মুক্তির ডাক আসে। আমার উদ্বিগ্নতা বাড়তে থাকলো। হাজতের ভিতরে আমার মোবাইল ফোন ব্যবহার করা দেখে অনেক হাজতি তার আত্নীয়দের ও মা'র সাথে কথা বলতে চাইলো আমিও না করতে পারলাম না কারণ আমি ততোক্ষণে বুঝে গিয়েছে আসলে হাজতের ভিতরে থাকা কতো কষ্টের আর অসহায়ত্বের জীবন।
একে একে বেশ কয়েকজন গলার স্বর নামিয়ে এক কোনায় দাঁড়িয়ে তাদের আত্নীয়দের সাথে কথা বলল। দেখ খুব ভাল লাগলো।
লকারের ভিতর এমন সু্যোগ হয়তো তাদের আর নাও আসতে পারে।
এর মধ্যে আরো বেশ কিছু আসামী হাজতে ধরে নিয়ে আসা হলো। সবার অনুমান বয়স ১৮ থেকে ২২ এর মধ্যে হবে। হাজতে তখন বলা যায় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন হয়ে গেছি। বেশ গদা গাদি।
নতুন যাদেরকে ধরে নিয়ে আসা হলো তাদের কয়েকজন কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজতের এক কোনায় বসেই নেশা করা শুরু করে দিল, দেখে মনে হতে পারে যে এটা তাদের বাসা-বাড়ী। বিষয়টি দেখে আমি আশ্চর্যের হলাম। পরে বুঝতে পারলাম আসলে হাজত বাস তাদের পুরোনো অভ্যাস।
কয়েকজন আগেও এসেছিল। এর মধ্যে এক হাজতী হাজতের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকা সাদা পান্জাবী পরা এক লোকের কাছে বাংলা মদ এনে দিতে বলছে প্রতিত্তোরে পান্জাবী পরা লোকটা বলল 'আইজকা খাইস না আইজকা শবে'বরাত, দেহসনা আমি খাই নাই।
ক্যাইলকা আইনা দিমুনে। '
পরে জানতে পারলাম লোকটা পুলিশের একজন সোর্স।
সময়ঃ রাত প্রায় ৯ঘটিকা।
আমি অসুস্থতা বোধ করতে থাকি এবং পায়ের হাঁটুতে যেখানে পুলিশ লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে সেখানে ব্যথা শুরু হয়েছে।
এর মধ্যে আমাকে এমপি ভাই আমাকে ফোন করলো।
তুমি বের হয়েছ? আমি বললাম না।
তখন তিনি আমাকে হোল্ডে রেখে ওসি'কে আরেকটা মোবাইল ফোন দিয়ে ফোন করলো। ওসি'র ফোনটা রেখে আমাকে বললো এখনই ছেড়ে দিবে আর আমি ১০টায় এয়ারপোর্ট চলে যাচ্ছি রাতের ফ্লাইটে নিউইর্য়কে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দান করতে।
আমি তখন একটু সংকিত হয়ে পড়ি, যদি কোনো কারণে বা টাকা খাওয়ার জন্য পুলিশ না ছাড়ে তাহলেতো বিপদ আরো বাড়বে।
তবে দেখলাম ১৫ মিনট পর আমাকে ডাকা হলো।
আমি আমার মোবাইল ফোনটা বন্ধুর কাছে রেখে লকার থেকে বের হই।
সময় রাত প্রায় ৯.৩০ঘটিকা।
সেকেন্ড অফিসার আমাকে ডেকে পাঠিয়ে আমার নাম, পেশা জিঞ্জাসা করলো আমি তাৎক্ষণিক জবাব দিলাম। এমপি সাহেব কি হয় জিঞ্জাসা করলো আমি বললাম আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই।
সেকেন্ড অফিসার বলল, কেন যে আপনারা পুলিশের সাথে এগুলি করতে যান।
দিন এমপি সাহেবের মোবাইল নম্বরটা দিন।
আমি তখন মোবাইটা আনতে আমার বন্ধুর কাছে যাই এবং মোবাইলটা নিয়ে আসি। তখন সেকেন্ড অফিসার আমাকে প্রশ্ন করে এই আপনি মোবাইল কোথা থেকে নিয়ে আসলেন? আমি বললাম মোবাইলটা আমার বন্ধুর কাছে ছিল।
সেকেন্ড অফিসার বলল তার মানে আপনি মোবাইল ফোন নিয়ে হাজতের ভিতরে প্রবেশ করছিলেন?
আমি নিশ্চুপ।
শুরু হলো আরেক মুসিবত ও তদন্ত কিভাবে আমি মোবাইল ফোন নিয়ে হাজতে প্রবেশ করলাম।
তখন হাজতের কনষ্টেবলকে ডেকে পাঠানো হল।
সে: অ:- উনি কিভাবে মোবাইল ফোন নিয়ে হাজতে প্রবেশ করলো, তুমি ঢুকানোর সময় চেক করো নাই?
কনষ্টেবল বলল, স্যার আমিতো তখন ডিউটিতে ছিলাম না।
সে: অ:- কে ছিল? (কনষ্টেবল একজনের নাম বলল ঠিক মনে নাই)
সে: অ:- ডাকো ওরে। (একটু পরে খবর আসলো উক্ত কনষ্টেবল ঘুমাইতেছে)
সে:অ: ওরে ঘুম থেকে উঠাইয়া নিয়া আসো,বলো আমি ডাকতাছি।
অতপর উক্ত কনষ্টেবল হাজির হলো এবং মৌখিক ধোলাই হলো।
তারপর সেকেন্ড অফিসার আমার মোবাইল দিয়ে এমপি সাহেবকে ফোন করলেন। বললেন তিনি নাকি আমাদের অনেক আদর যত্ন করেছেন। ফোন রেখে আমাকে একটা সাদা কাগজ আনতে বললেন।
আমি বাইরে বের হয়ে সাদা কাগজ খুঁজতে থাকি সব দোকান তখন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে ভাগ্য ভাল ছিল একটি দোকানে সাদা কাগজ পাওয়া গেল।
অবাক হলাম লিখার জন্য কি একটি সাদা কাগজ কি থানায় ছিল না।
যাই হোক সাদা কাগজে আমাদের নাম ঠিকানা ও এমপি সাহেবের রেফারেন্সে আমাকে দিয়ে একটি মুচলেকা লিখালেন।
তারপর মিলল মুক্তি।
রিক্সায় দুই বন্ধু বাড়ি ফেরার পথে এমপি ভাইকে ধন্যবাদ ও কৃজ্ঞতা প্রকাশ করলাম।
আজও মনে পরে আমার সেই দিনে ঘটনাটি।
দেখেছি আমাকে দিয়ে কি কষ্ট বন্দী জীবনের আর শিক্ষিত ও নিরাপোরাধ মানুষদের সে কষ্ট আরো দ্বিগুণ ও অপমানের।
ঘৃণাভরে তাকাই সেই সব পুলিশের দিকে যারা শাসনের নামে, পোশাকের দম্ভ ও গর্বে মানুষকে মানুষ মনে করে না সবাইকে অপরাধীই ভাবে।
ধন্যবাদ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।