আমি সত্যের এবং সুন্দরের পুজারী। কজন মানুষের সাথে হাসিমুখে মিষ্টি ভাষায় যারা কথা বলে তাদের প্রতি আমার অপরিসীম শ্রদ্ধা । আর যারা নিজেদের অনেক বড় ভাবে, তাদের প্রতি আমার রয়েছে করুণা । যেটা আমার কাছে ভুল মনে হয় , তার তাত্ক্ষণিক যুক্তিসম্মত প্রতিবাদ করতে আমার ব
শাহবাগের হাজার হাজার বাংলাদেশি তরূণ তরূণীর আহবানে সাড়া দিয়েছিল কোটি বাংলাদেশি জনতা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ দেখেছিল এত স্বতঃস্ফূর্ত প্রাণের স্পন্দন।
সারা বিশ্বের শত সহস্র প্রবাসী একাত্মতা ঘোষণা করেছে সারা বাংলার হাজার তরূণ তরূণীর সাথে। কি চেয়েছিল তারা ? ক্ষমতা, টাকা ? না তো। তারা চেয়েছিল ১৯৭১ সালে আমাদের এই জন্মভূমিতে ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা বোনের ইজ্জত এর সম্মান। তারা চেয়েছিল সেই সময়ের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। তারা কি কোন গরীব মানুষকে মেরে ফেলেছিল ? শাহবাগ থেকে কি তারা কোন ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল ? তারা কি সরকার বা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল? তারা কি রিক্সা উলটে দিয়েছিল ? তারা কি বাস এ আগুন দিয়েছিল ? তারা কি ভাংচুর করেছিল ? না তো, তারা চেয়েছিল একসময়ে পরাধীন থাকা আমাদের দেশের মুক্তিকামী মানুষ গুলাকে হত্যাকারী আর ধর্ষণকারীদের বিচার
আর তাদের এই আন্দোলন কে থামানোর জন্য শুরু হলো চক্রান্ত।
তাদের কে এবং তাদের সমর্থক যে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়েন, যারা নিয়মিত পুজা দেন, যারা নিয়মিত বাইবেল পড়েন, বা যারা কোন ধর্ম কে সেভাবে পালন করেন না, তাদের সবাইকে আখ্যা দেয়া হলো নাস্তিক !
কি অসম্ভব কথা ? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইলে নাস্তিক, আর যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি চাইলে আস্তিক ? যারা আজ এ মন্ত্রণা ছড়াচ্ছে, তারা কি প্রতারক নয় ? তাদের কি মৃত্যু হবে না ? তাদের ও জবাব দিতে হবে আখিরাতে, হাশরের ময়দানে। এবং তাদের কে যারা সমর্থন করছেন, তাদেরকেও।
বাংলাদেশের তরূণেরা, বাংলার আপামর জনতা কি ভাবে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি র দাবী করেছিল ? মোমবাতি প্রজ্বলন করে, তারা অগ্নিপূজক হয়ে গেল ? লাখ লাখ ছাত্র ছাত্রী একসাথে আন্দোলন করেছিল বলে কি তারা অপরাধ করেছিল ছেলে মেয়ে একসাথে একটা অহিংস আন্দোলন করে ? তাহলে তো এই আন্দোলন কে অসমর্থনকারী সবাই যারা, তাদের কর্মক্ষেত্রে আর যাওয়া উচিত না, কেননা পুরুষ আর নারী এক জায়গায় থাকতে পারে না। হাসপাতালে সেবা দিতে যাবেন। ওখানে যে পুরুষ নারী সব ডাক্তার এক সাথে কাজ করে ! কি সব বেহায়াপনা !
সারা বিশ্ব যখন নারী পুরুষকে সম্মান দিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছে, তখনি আমাদের দেশে কিছু অদ্ভুত মানুষ বিশুদ্ধ ঋদয়ের হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী যারা শাহবাগে আন্দোলন শুরু করেছে, তাদের কে নিয়ে নোংরা কথা বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করছে না ? এরা ধর্মের প্রচারক ?
সত্যিকার শান্ত ভদ্র মুমিন এবং আলেম মানুষ যারা ইসলামের অহিংস কথা বলেন, যাদের মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, যারা নারী পুরুষ সকলকে সম্মান দেয়, যারা বাংলার সংস্কৃতিকে ছোট করে না, যারা বাংলাদেশের ছাত্র ছাত্রীদের সম্মান দিতে জানে তাদের কথা শুনুন।
আর যারা ইসলামের পোশাক বাইরে পরিধান করে, কিন্তু ভিতরে বহন করে প্রচন্ড ঘৃণা, যারা দেশের সংস্কৃতি কে লালন করে না, যারা এদেশের কর্মজীবী নারী পুরুষ কে বা এদেশের ছাত্র ছাত্রীদের সম্মান দিতে জানে না, তাদের কে প্রতিহত করুন। তাদের কে মোকাবিলা করুন। কারণ তারা হত্যাকারীদের বিচার চাবে কি ? তারা তো লাশের সংখ্যা ৩০ লাখ না ৩ লাখ ছিল সে হিসাবে ব্যস্ত। সে সময়ে দেশ মাতৃকার জন্য যুদ্ধ করে মারা যাওয়াদের শহীদ বলা ঠিক কিনা তা নিয়ে ব্যস্ত, শহীদদের স্মৃতি র উদ্দেশ্যে নির্মিত স্থাপত্য তাদের কাছে পুজার নৈবেদ্য। পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন, বা ভাষাদিবস পালন তাদের কাছে ধর্মের বিরুদ্ধ কাজ ! সত্যি বিচিত্র জাতি একটা আমরা।
আমি আমার জীবদ্দশায় যেমন ইসলাম কে ছাড়ার কথা কল্পনা করতে পারব না, একি সাথে আমার দেশের সংস্কৃতিকে বিজাতীয় সংস্কৃতি, বা আমার দেশের হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রীকে নিমিষে নাস্তিক, ফ্যাসিবাদী বলে কলংক দেয়া মানুষগুলাকে ও কোন দিন ক্ষমা করব না।
আমি চিকিতসক। অন্তত কিছু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছি। হত্যা করিনি কাউকে। যদি সুযোগ থাকে আরো মানুষকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করব আমি ইনশাআল্লাহ।
যদি শেষ বিচারের দিন আমাকে সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়, আমি সাক্ষ্য দেব সেইসমস্ত ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে, যারা এদেশের হাজার হাজার তরূণ তরূণী ছাত্র ছাত্রী কে নাস্তিক বলে ঘোষণা দিয়েছে আর যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মানব হত্যাকারী দের বিচার একদিন না একদিন তো হবেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।