লুসি ব্রডবেন্ট · সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান, লন্ডন · প্রথম পর্ব · ‘আজ থেকে আট বছর আগে আমার জীবনে যে ঘটনাটি ঘটে গিয়েছিল তা নিয়ে মুখ খুলতে পারিনি এতদিন’- এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ম্যারিসেল্লা গুজমান। বলছিলেন, ‘নৌবাহিনীতে যোগ দেওয়ার মাসখানেকও হয়নি তখন। একেবারেই কম বয়স্ক ছিলাম আমি। ঘটনাটি কর্তৃপক্ষকে জানানোর চেষ্টা করেছিলাম অনেক। কিন্তু আমার অভিযোগটির প্রতি মনোযোগ দেওয়ার পরিবর্তে তারা আমাকে বিষয়টি চেপে যেতে বলে।
’ কেট ওয়েকার বলছিলেন, ‘আমি ওষুধ না খেয়ে ঘুমাতে পারি না। কিন্তু তারপরও মাঝে মাঝেই মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায় আমার। আমার কান্না পায়। অস্থিরমতি হয়ে পড়ি আমি। অন্ধকারেই জেগে শুয়ে থাকি।
ধর্ষিতা হওয়ায় স্মৃতি কুরে কুরে খায় আমাকে। ভাবি এবার হয়তো ঘটনাটি আর সেভাবে ঘটবে না। কিন্তু বার বার সেই পুরুষটিই জয়ী হয়। ’
মার্কিন সামরিক বাহিনীতে যৌন নিপীড়ন বা ধর্ষণের ঘটনা একটি নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধারণা করা হয়ে থাকে যে, ইরাকের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়োজিত একজন নারী সৈনিকের জন্য শত্রুর গোলাগুলির মুখে পড়ার চাইতে তার একজন পুরুষ সহকর্মীর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
বিষয়টি এতটাই উদ্বেগজনক পর্যায়ে গিয়ে পেঁŠছেছে যে, একদল অভিজ্ঞ সৈনিক এ ব্যাপারে সংস্কার চেয়ে পেন্টাগনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। তিনজন পুরুষ ও ২৫ জন নারী সৈনিক এই মর্মে একটি আইনি মামলা দায়ের করেছেন যে, সামরিক বাহিনীতে চাকরি করার সময় তারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তারা তাদের আর্জিতে অভিযোগ করেন, সামরিক বাহিনীতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে যারা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন তারাই বরং উল্টো শাস্তি ভোগ করেছেন। এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য তারা সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডোনাল্ড রামসফেল্ড এবং রবার্ট গেটসকে দায়ী করেছেন। একই সঙ্গে তারা যৌন নির্যাতনকারীদের বিচারের আওতায় আনতে না পারার ব্যর্থতার জন্য তাদের অভিযুক্ত করেছেন।
মামলা দায়েরের ব্যাপারটি ফেব্রুয়ারিতে জনসমক্ষে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে আরো অন্তত ৪০ জন ভুক্তভোগী মামলা পরিচালাকারী অ্যাটর্নি সুসান ব্রুকের সঙ্গে দেখা করেছেন। ধারণা করা যায়, এরাও সবাই সম্ভাব্য মামলাকারী। তারা এখন গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন দায়েরকৃত মামলাটির শুনানি শুরু হয় কিনা তা দেখার জন্য।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন বিভাগ অবশ্য দায়ের করা মামলাটি বাতিল করে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। এ ব্যাপারে ১৯৫০ সালে দেওয়া মার্কিন আদালতের একটি নির্দেশকে তারা নিজেদের পক্ষে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল যে, সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় কোনো সৈনিক আহত হলে তার দায়দায়িত্ব মার্কিন সরকারের ওপর বর্তাবে না। তখন থেকেই সামরিক বাহিনীতে চাকরিরতরা তাদের নিয়োগ কর্তার বিরুদ্ধে কোনোরকম মামলা করার সুযোগ পায় না। দায়েরকৃত মামলাটির ওপর শুনানি হবে কি হবে না জানি না। তবে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অভ্যন্তরে ঘটতে থাকা গোপন নোংরামিগুলো প্রকাশ করে দেওয়ার আয়োজন এখন পর্যন্ত খুব একটা চোখে পড়ছে না। গত বছর মার্কিন সামরিক বাহিনীতে ৩ হাজার ১৫৮টি যৌন নির্যাতনের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার কথা জানা গেছে।
এর মধ্যে আদালতে মামলা হয়েছে মাত্র ৫২৯টির। আর দায়েরকৃত মামলায় ১০৪টিতে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট প্রিভেনশন অ্যান্ড রেসপন্স অফিস (এসএপিআরও) কর্তৃক প্রকাশিক ২০১০-এর এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এই চিত্র প্রকৃত বাস্তবতার ক্ষুদ্রাংশমাত্র। যৌন নির্যাতনের ঘটনা খুব কমই জানাজানি হয়।
প্রকাশিত সেই একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর আরো অন্তত ১৯ হাজার যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে যেগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে জানাজানি হয়নি।
এদিকে সাবেক সৈনিকদের বিষয়াদি সংক্রান্ত বিভাগ তাদের একটি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনীতে কাজ করা প্রতি তিনজন মহিলার একজনই তাদের কর্মস্থানে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে মানসিক বিষণ্ণতায় ভুগছেন। এ সংখ্যা বেসামরিক কর্মজীবনের দ্বিগুণ। সেখানে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন প্রতি ছয়জনে একজন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ৩৬ বছর বয়স্কা ওয়েবা বলেন, বছরের পর বছর ধরে আমি ভেবে এসেছিলোম যে এমন একটি ঘটনা বুঝিবা কেবল আমার জীবনেই ঘটেছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এটি অনেকটা মহামারী আকারে সামরিক বাহিনীতে ছড়িয়ে আছে। ১৬ বছর আগে জার্মানিতে ধর্ষণের শিকার হওয়া ওয়েবার নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে আরো বলেন, এই ঘটনা আমাকে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন করে ফেলেছিল। ওয়েবার বর্তমানে বিবাহিতা এবং নিজের চারটি সন্তানসহ সানফ্রান্সিসকোতে বসবাস করেন।
কিন্তু বছরের পর বছর চিকিৎসা নেওয়া সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত রাতে ঘুম হয় না। তিনি বলেন, মার্কিন সামরিক বাহিনীতে ধর্ষণের বিস্তার এতটাই ঘটেছে যে এটাকে একটি অসুস্থ অবস্থাই বলতে হয়। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের ব্যাপার হলো ধর্ষিতা একজন নারী সৈনিককে তার নিজের ইউনিট থেকে ব্ল্যাকবল প্রদান করা হয়। এমনকি কখনো কখনো তার পদাবনতিও ঘটে। ওয়েবা বলেন, আমি আমার ধর্ষণের ঘটনাটি প্রথমে আমার স্টাফ সার্জনকে জানাই।
তিনি আমাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ঘটনাটি যেন আমি আর কাউকে না জানাই। এর পর ঘটনাটি আমি একজন মহিলা সার্জেন্টের গোচরে আনি। তিনি ছিলেন পুরুষ সার্জেনটির চেয়ে নিম্নস্তরের কর্মকর্তা। আমি ভেবেছিলাম তিনি হয়তো আমর প্রতি কিছুটা সহানুভূতিশীল হবেন। আমি কেন তাকে বাদ দিয়ে আগে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাতে গেলাম তা নিয়ে তিনি আমার ওপর ক্ষুব্ধ হন।
আমি এরপরই একজন ডাক্তারের কাছে যাই। ভেবেছিলাম তিনি অন্তত আমার ঘটনাটি নথিভুক্ত করবেন। কিন্তু তিনি কিছুই করলেন না। আমি অবশ্য আমার এক সহযোদ্ধা নারী সৈনিককেও ঘটনাটির কথা জানিয়েছিলাম। সব শুনে সে মন্তব্য করেছিল, আমি সেই পুরুষটিকে চিনি।
সে বিবাহিত এবং এ ধরনের কাজ করতে পারে না। ‘তুমি একটি মিথ্যুক এবং নোংরা ধরণের মেয়ে’ অনেক আগে থেকেই সবাই আমাকে বেশ্যা এবং কুক্কুরী বলে ডাকছিল। তারা পরস্পরের মধ্যে বলাবলি করছিল : এই মেয়েটি তোমার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণের অভিযোগ আনবে। সুতরাং তার থেকে দূরে থাক। আমার বয়স তখন সবে ১৮ বছর।
এই প্রথম আমি বাড়ি ছেড়ে দূরে কোথাও গিয়েছি। সুতরাং কী করতে হবে সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। ওয়েবারের জীবনে যা ঘটেছে তা একটি নৈমিত্তিক কাহিনী। আমি আমার ‘মাই ডিউটি টু স্পিকডট কমে দেখেছি, সেখানে সামরিক বাহিনীতে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ারা নিজেদের মধ্যে অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান করেন। সেখান থেকেই নিষ্ঠুরতা আর অবিচারের দমবন্ধ করা কাহিনী শুনতে পেয়েছি।
মাত্র ২১ বছর বয়স্ক মারসেল্লা গুজমান তার কাহিনী বলতে গিয়ে জানায়, সবে কয়েক সপ্তাহ হলো সে তার প্রশিক্ষণ কোর্সে যোগ দিয়েছে। ইলিনয়ের গ্রেট লেকে অবস্থিত একটি সামরিক ক্যাম্পে ধর্ষিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনাটি সে তার সুপারভাইজারকে অবহিত করেছিল। গুজমান বলেন, আমি তার অফিসকক্ষে ঢুকে পড়েই বলি, আপনার সঙ্গে আমার কিছু কথা বলার আছ। ’ লস এঞ্জেলসের একটি কলেজে মনোবিজ্ঞানের ছাত্রী বর্তমানে ৩৪ বছর বয়স্ক গুজমান জানান, ধর্ষণের সেই ঘটনা বহু বছর ধরে তার জীবনের স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে রেখেছিল। তিনি বলেন, আপনি যদি নৌবাহিনীতে কারো সঙ্গে কথা বলতে চান তবে আপনাকে প্রথমে তার কক্ষের দরজায় তিনবার টোকা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি চাইতে হবে।
কিন্তু আমি সেটি করিনি। কারণ আমি তখন একেবারেই বিধ্বস্ত অবস্থায় ছিলাম। সুতরাং আমার সুপারভাইজর আমাকে বললেন, ‘থাম’, যার অর্থ হলো ব্যাপারটি চেপে যাওয়া। আমিও তাই করলাম। কিন্তু তখনো আমার চোখ থেকে অশ্রু ঝরছিল।
আমি যখন তাকে বললাম, আপনাকে আমার কিছু বলার আছে তখন তিনি আবারো বললেন, থাম। যতবার আমি আমার কথাটা বলতে চেয়েছি ততবারই তিনি আমাকে থামিয়ে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি যেমনটা চেয়েছিলেন আমিও তেমনটাই শান্ত হয়ে গিয়েছিলাম এবং আমি আর কিছুই বলতে পারছিলাম না। কিছুতেই পারছিলাম না। ’ এর পর থেকে শুরু করে পরবর্তী আটটি বছর এ নিয়ে আর একটি কথাও বলার চেষ্টা করেনি গুজমান।
এটা এখন প্রায় সর্বজন বিদিতই যে, যৌন নির্যাতকরা সবসময়ই ছাড় পেয়ে গেছে। আর নির্যাতিত ব্যক্তি বিষয়টি জানাতে গিয়ে শাস্তির শিকার হয়েছে। বলা হয়েছে এসব ঘটনা কিছুই না। নিজের ব্যারাক কক্ষের মেঝেতে কীভাবে পড়ে থেকেছিলেন তার বর্ণনা দিয়েছেন মিচেল জোন্স। ছিঁড়ে ফেলা মোজাজোড়া তার পায়ের গোড়ালির মধ্যে আটকে ছিল।
এমনি অবস্থায় তার ওপর উপগত হয়ে ধর্ষণকারীটি বলে উঠলো, ‘তুমি যদি ঘটনাটি কাউকে জানাও তবে আমি সবার কাছে বলে বেড়াবো যে তুমি একটি বেশ্যা। সবাই তখন লাথি মেরে তোমাকে এখান থেকে বের করে দেবে। ’ চাকরির মেয়াদকালের দুই-তৃতীয়াংশ তার তখন পার হয়ে গেছে। ৩৯ বছর বয়স্ক জোন্স তাই বললেন, ‘আমি আমার চাকরিটি তখন হারাতে চাইছিলাম না। ’ বর্তমানে তিনি একজন তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সানজুসে বসবাস করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডোন্ট আস্ক ডোন্ট টেল’ নীতির আওতায় সামরিক বাহিনীতে অসচ্চরিত্রের মেয়েদের থাকতে দেওয়া হয় না। জোন্স অবশ্য তখনো নিশ্চিত ছিলেন না যে, সে একজন অসচ্চরিত্রের মেয়ে হিসেবে তখন বিবেচিত হচ্ছিলেন কিনা। তবে ধর্ষিত হওয়ার ঘটনাটি জানিয়ে দেওয়ার মধ্যে কোনো ঝুঁকি ছিল না। জোন্স বলছেন, ‘আমি যদি ঘটনাটি জানিয়ে দিতাম তবে আমার ব্যাপারে একটি তদন্ত হতো। তবে তা আমার জন্যে কোনো সুফলই বয়ে আনতো না।
আমি আরো অন্তত এমন ১৫ মহিলাকে চিনতাম যারা তাদের ধর্ষিত হওয়ার ঘটনাটি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল, কিন্তু তাতে কোনো লাভই হয়নি। ’ ধর্ষণ যেকোনো অবস্থাতেই নৃশংস। কিন্তু সামরিক বাহিনীতে ধর্ষিত হওয়ার ফলাফল বহুদিক থেকেই তিক্ত। এখানে ধর্ষিত ব্যক্তিকে আমলেই আনা হয় না। তাদের কষ্ট লাঘবেরও কোনো চেষ্টা করা হয় না।
ধর্ষিত হওয়ার ফলে জন্ম নেওয়া মনস্তাত্ত্বিক সংকট তাকে কুরে কুরে খায় এবং তার জীবন হয়ে ওঠে বিস্ময়। ধর্ষিতাকে তার দৈনন্দিন কর্মকান্ড চলিয়ে যেতে হয়। চোখের সামনে ধর্ষককে দেখেও কিছু বলার বা করার থাকে না তার। বেসামরিক কর্ম ক্ষেত্রের মতো সামরিক বাহিনীতে চাকরিরত ধর্ষিতরা কিন্তু চাইলেই তার চাকরি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চলে যেতে পারেন না। সামরিক বাহিনীতে ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা রোধে আন্দোলনরত সংগঠন সার্ভিস ওমেন্স একশন নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক অনু ভগবতী বলেন, ‘সামরিক বাহিনীতে ধর্ষিত হয়ার ঘটনা যেন অনেকটা পারিবারিকভাবে ধর্ষিত হওয়ার মতোই।
ধর্ষিতারা এখানে তাদের ধর্ষণকারীদের কাছ থেকে মাঝে মাঝে ভয়ানক হুমকিরও শিকার হচ্ছেন। ’ (চলবে)
সূত্র : View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।