আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জয় পরাজয়ের রসায়ন!

i am just i am............. জয় পরাজয়ের রসায়ন! সিলেট, বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী চার সিটি নির্বাচনে হেরে বেকায়দায় আছে নীল দল (সরকার)। দলীয় অনেক সাদা মনের মন্ত্রী-এমপি ইতিমধ্যে সে কথা স্বীকার করেছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে একমাত্র বড় নির্বাচন হল গাজীপুর সিটি নির্বাচন (ঢাকার দুই সিটির ভবিষ্যৎ আপাতত ডি-মাইনরে!)। আগামীতে ক্ষমতা যাওয়ার ক্ষেত্রে এই নির্বাচন সরকার দলের জন্য ট্রাম কার্ডের মতো। সুতরাং জয়ের জন্য মরিয়া তারা।

জাতীয় অনেক নেতাই গাজীপুরে আজমত উল্লাহর পক্ষে ভোট ফেরী করেছেন। নারায়ণগঞ্জের নন্দিত সিটি মেয়রও সেই তালিকা আছে। ইতিমধ্যে আজমত উল্লাহ সমর্থন পেয়েছেন গণতন্ত্রের খল নায়ক এইচ এম এরশাদের। দেশের ভবিষ্যত দ্রষ্টাদের মুখে চুনকালি মেখে তিনি আজমতকে সমর্থন দিয়েছেন, যদিও জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতারা আগে থেকেই এম এ মান্নানের পক্ষে কাজ করছিল। সব কিছু ঠিক থাকলে আজমতের রাস্তা পরিস্কার বলেই মনে করছেন অনেকেই।

অন্যদিকে জনাব এরশাদের দোয়াকে সমর্থন হিসেবে কবুল করে নিয়ে প্রফুল্ল চিত্তে ছিলেন এম এ মান্নান, হঠাৎ সমর্থন হাত ছাড়া হওয়ায় খুব বেশি দমে যাননি তিনি। তার একটা কারণ পূর্ববর্তী নির্বাচন গুলোর ফলাফল। বিএনপির হর্তাকর্তারা ধরেই নিয়েছেন যে, ক্ষমতা তাদের বগলতলে আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সংসদে দলের এক বিতর্কিত নেতা আগামী অর্থ বছরের জন্য বর্তমান বাজেটের দ্বিগুণ পরিমানের বাজেট ঘোষণা করেছে। ‘নির্বাচনে ভোট চুরির পায়তারা করছে সরকার’ অথবা ‘লাগুক না লাগুক, সেনাবাহিনী চাই’ জাতিয় দু চারটা মিডিয়া ফেসেস বুলি আওড়ানো ছাড়া মোটের ওপর বেশ স্বস্তিতেই আছে বলে মনে হচ্ছে বিরোধী দলপতিদের।

সিটি নির্বাচন যদিও নির্দলীয় নির্বাচন, তবুও আমাদের সেমি কমার্শিয়াল ডেমোক্রেসিতে নীল সাদার বাইরে অন্য কিছুর উপস্থিতি আপাতত ভাববার উপায় নেই। নতুন কিছু আসলেও তরী ভেরানোর জায়গা দুটোই। যা হোক কি হবে গাজীপুরের ফলাফল? চার সিটি নির্বাচনের পর ভরিষ্যত দ্রষ্টারা ঘটমান বর্তমানের চুল ছেড়া বিশ্লেষন করে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিরোধী প্রার্থীদের তুলনায় অধিক যোগ্য হওয়ার পরেও তারা শোচনীয় ভাবে হেরেছে। অথাৎ জনগণ যোগ্যতার বিচার করে ভোট দেন নি। সরকারের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডের জবাব জনগণ দিতে পারে একদিনে এবং পাচঁ বছরের দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে।

সরকারের হার যদি সে কারণে হয় তাহলে বলতে হবে জনগণ সরকারে উপর সন্তুষ্ট নয়। তবে তারা ভোট বিএনপিকে দেয় নি, তারা কেবল নিজেদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। কিন্তু অন্য কোন জায়গা না থাকায় ছিল পরেছে দলীয় ব্যালট পেপারে, যা জনগণের অনন্য দুর্ভাগ্য হলেও সৌভাগ্য বিএনপির। গাজীপুরের ক্ষেত্রে কি এ চিত্রের খুব একটা পরিবর্তন হবে? ২. গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর একটি বড় ফ্যাক্টর যা অনেক আগেই আমি বলে ছিলাম। স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে যতটকু মনে হয়েছে, তাতে আজমত উল্লাহর চেয়ে জাহাঙ্গীরের পরিচিতি বেশি বলে মনে হয়েছে।

একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিপতি দলীয় নেত্রীর কথায় তার সরে দাড়ানো, তাকে এবং তার সমর্থকদের কতটা আহত করেছে তা টিভি মিডিয়ার বদান্যতায় আমরা দেখেছি। আহত বাঘ নাকি সুস্থ বাঘের চেয়ে শক্তিশালী হয়! তাই যদি হয়, তবে জাহাঙ্গীরের শক্তির প্রয়োগ কোথায় হবে তাও ভাবনার বিষয়। নেত্রীর হুকুম তার ভিতরের ক্ষতকে ছাপিয়ে উঠতে পারবে কি না? কে জানে! ৩. অনেকেই এরশাদ সাহেবের সমর্থনকে গুরত্বপূর্ণ মনে করছেন না। কিন্তু এর একটা প্রভাব এই নির্বাচনে পড়া খুব স্বাভাবিক। শুরু থেকে তিনি মহাজোট সরকারকে তুলোধুনো করে আসছিলেন।

তার কথা ও আচরণের সমন্বয় করে ধরে নেয়া হয়েছিল তিনি মহাজোট ছাড়ছেন। এইসাথে সাক্ষাত করার পরও আজমত উল্লাহ কে সমর্থন না দেওয়ায় সে ধারনা বিশ্বাসে পরিনত হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতারা মান্নানের পক্ষে কাজ করতে শুরু করে। কিন্তু বৃহস্পতিবারে এরশাদের নতুন ভেলকির পর তার দলের স্থানীয় নেতারা ইতিমধ্যে তাদের প্রতিক্রয়া ব্যক্ত করেছেন। গাজীপুরে জাতীয় পার্টির ভোটাদের কাছে এরশাদের চেয়ে স্থানীয় নেতাদের কথার গুরত্ব বেশী বলেই আমার মনে হয়।

সুতরাং আজমত উল্লার জন্য এ সমর্থনও কাল হতে পারে। যা হোক নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, ভবিষ্যত বাণী মূল্যহীন। কারণ নির্বাচন আর সমসাময়িক কালের বিশ্ব ক্রিকেট, দুটোতোই যোগ্যতার বাইরে স্পট ফিক্সিং একটি বড় ফ্যাক্টর। রুহুল রবিন খান মিডিয়া কর্মী ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।