"অ্যাবসার্ড"
Such a gorgeous kid like me
আলফ্রেড হিচকক এর যোগ্য ভাবশিস্য ত্রুফোর সিনেমা বরাবরই এরকম উত্তেজনায় ঠাসা থাকে। ৯৮ মিনিটের এই সিনেমা যে কোন ফাকে শেষ হইল টের পাইলাম না। পুরা সিনেমায় হাসতে হাসতে শেষে গিয়া বিশাল এক টাস্কি খাইলাম।
১৯৭২ সালে সিনেমাটি নির্মাণ করেন François Truffaut একি নামের একটি উপন্যাস থেকে। মুভিটি কমেডি ড্রামা, ক্রাইম জেনারের।
প্রত্যেকেই খুব ভালো অভিনয় করসে।
সোশিয়লজি র এক প্রফেসর(André Dussollier) ক্রিমিনাল সাইকোলজির উপর একটি থিসিস করতে চায়। সে কারাগার কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এক খুনের অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত এক মহিলার সাক্ষাতকার নিতে যায়। মহিলার নাম কেমিলা ব্লিস(Bernadette Lafont)।
এই ভাবে সিনেমা শুরু হয়।
প্রতিদিন সাক্ষাতকার পর্ব চলে। অতিব সুন্দরী ব্লিস তার জীবনে ঘটে যাওয়া অজানা সব অধ্যায় প্রকাশ পেতে থাকে।
শৈশবে মাতাল পিতার অত্যাচার কেমিলা ব্লিসের মনের উপর এক বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সে গায়িকা হতে চাইত, ভালো ব্যাঞ্জো বাজাত। একদিন তার মাতাল বাপ এসে তার মাকে পিটায়,তাকেও মারধর করে, তার ব্যাঞ্জো ভেঙ্গে দেয়।
তখন সে সিদ্ধান্ত নেয় ভাগ্যের খেলা খেলার।
মারধর শেষে তার বাবা যখন দোতালা সমান এক ঘরে যায় মই বেয়ে, তখন কেমিলা চুপি চুপি মই সরিয়ে নেয়। তার যুক্তি ছিল, যদি তার বাবা মই সরিয়ে নেয়া হইসে দেখতে পায় তাহলে কেমিলা হেরে গেল এবং বাপের হাঁতে ব্যাপক মার খাবে কিন্তু যদি সে মই খেয়াল না করে তাহলে পড়ে মারা যাবে এবং কেমিলা জিতে যাবে। মজার ব্যাপার হল তার মাতাল বাপ মই খেয়াল না করে নীচে পড়ে মারা যায়।
এই অপরাধে তাকে শিশু রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানো হয়।
সেখান থেকে সে পালায়। রাস্তায় পরিচয় হয় ব্লিসের(Philippe Léotard) সাথে। সে তার রূপ দেখে তাকে বাড়ীতে নিয়ে যায় এবং আশ্রয় দেয়ার বিনিময়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে।
একদিন ব্লিসের মায়ের কাছে ধরা পড়ে গেলে তারা বিয়ে করে। এক পর্যায়ে শাশুড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শাশুড়িকে নিয়েও ভাগ্যের খেলা খেলে এবং যথারীতি শাশুড়িও
এরপর কেমিলা কোল্ট সেলুনে ওয়েট্রেস এর কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হয় স্যাম গোল্ডেন(Guy Marchand)এর সাথে।
তুমুল হ্যান্ডসাম স্যাম কেমিলা কে পটায় শুধু তার সুন্দর শরীরের লোভে।
এইভাবে তার সাথে যে কজন পুরুষের পরিচয় হয় সবাই তার শরীর চায়, তাকে আসলে কেউ ভালবাসে না। কেমিলাও তার ফায়দা লুটে প্রচুর টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয় এবং সব পুরুষের সাথে ভাগ্যের খেলা খেলে।
একটা ভাগ্যের খেলার কথা না বলে পারছি না,
এক লোকের সাথে কেমিলার পরিচয় হয়, সে তাকে বলে সে প্লেটোনিক ভালবাসায় বিশ্বাসী। কিন্তু সুযোগ মত সেও কেমিলাকে ছাড়ে না।
তো ঘটনা ক্রমে সে জানতে পারে কেমিলার ভাগ্যের খেলা নামক পাপের কথা। সে সিদ্ধান্ত নেয় দুজনে মিলে আত্মহত্যা করে তাদের পাপ মোচন করবে। তারা ঠিক করে চোখ বন্ধ করে লাফ দিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করবে। চোখ বন্ধ করে লোকটা লাফ দেয় ঠিকই কিন্তু কেমিলা দেয় না।
এই ভাবে সাক্ষাতকার নিতে নিতে এক পর্যায়ে প্রফেসর কেমিলার সত্যিকারের প্রেমে পড়ে।
তাকে নির্দোষ প্রমান করে জেলে থেকে ছাড়িয়ে আনে। তারপর সে যায় কেমিলার সাথে দেখা করতে। তারা যখন একে অপরের সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ঠিক ওইসময় কেমিলার স্বামী এসে উপস্থিত হয়। তারপর ঘটে এক জটিল ঘটনা।
এই জায়গায়ই সিনেমার আসল মজা।
দেইখা নিয়েন
ভোগবাদী পুরুষ সমাজের প্রতি,(যারা নারীকে শুধুই ভোগের পণ্য মনে করে) কটাক্ষই সিনেমার মূল উপজীব্য।
আর ত্রুফোর কথা কি বলব??
গুরু লাল সেলাম
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।