"অ্যাবসার্ড" ইদানিং আমার কি হইল বুজতেসি না। ডাক্তারি বাদে সবই ভালো লাগে। কয়দিন যাবত তো মনে হইতাসে সিনেমা বানান শুরু করি। কলেজে থাকতে তো মঞ্চ টঞ্চ কাপাইয়া ফেলসিলাম।
যাইহোক মূল কথায় আসি।
অনেকদিন থেকে ভাবসিলাম The Virgin Spring সিনেমাটা দেখব। কঠিন শীতে লেপের নীচে শুয়ে শুয়ে আজ দেখে ফেললাম।
১৯৬০ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমার স্রষ্টা জনাব ইন্মার বাইরমেন, হলিউডি উচ্চারন ইংমার বার্গম্যান। "Töres döttrar i Wänge" নামক একটি সুইডিশ উপকথার কাহিনী অবলম্বনে জনাব উল্লা ইসাকসন সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখেন। বাইরম্যান এর জাদুকরি পরিচালনায় এটি জীবন পায়।
মূল কাহিনীর সাথে সিনেমার কিছু পার্থক্য আছে, যেমন , ৩ বোনের জায়গায়, একমাত্র কারিন কে দেখানো হয়। ইঙ্গেরির কোন ডায়লগ নাই উপকথায়।
কাহিনীর প্লট মধ্যযুগের সুইডেন। এক ধার্মিক খ্রিস্টান পরিবারের অতি আদরের কন্যা কারিন(Birgitta Pettersson)। খ্রিস্টীয় আইন অনুযায়ী সে দূরবর্তী এক চার্চের জন্য মোমবাতি এবং কিছু উপহার সামগ্রী নিয়ে যাবার দায়িত্ব পায়।
নিয়মটা হল যে নিয়ে যাবে তাকে কুমারি হতে হবে।
তার সাথে যায় সৎবোন ইঙ্গেরি(Gunnel Lindblom)। ইঙ্গেরি সব সময় কারিন কে ঘৃণা করত। সে সব সময় নরস গড ওডিন এর কাছে চাইত কারিন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পথে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাবার সময়, ইঙ্গেরি পিছনে পড়ে যায়।
তাকে রেস্ট করতে বলে কারিন একা এগিয়ে যায়। রাস্তায় দেখা হয় ৩ রাখাল ভাই এর সাথে। তারা কারিন কে নিরদয় ভাবে ধর্ষণ করে এবং তার সব কাপড় চোপড় খুলে নিয়ে যায়। সব ঘটনা দুরে দাঁড়িয়ে দেখে ইঙ্গেরি। সে ভাবতে থাকে নর্স গড ওডিন তার দোয়া শুনেছে।
ঘটনাক্রমে ওই তিন রাখাল পালিয়ে গিয়ে রাতের বেলা আশ্রয় নেয় কারিনের বাড়িতে। কারিনের ধার্মিক মা মারিতা(Birgitta Valberg) বাবা টর(Max von Sydow) তাদের কে অত্যন্ত আদর আপ্যায়ন করে রাতে থাকার জায়গা করে দেয়। যদিও তাদের মেয়ের জন্য খুব দুশ্চিন্তায় ছিল। রাতে যখন বিদায় নিয়ে মারিতা ঘুমাতে যাবে, তখন এক রাখাল তার কাছে কারিনের কাপড় বিক্রি করতে চাইলে সে বুজতে পারে তাদের আদরের মেয়ের কি হয়েছে এবং কে করেছে।
সে গিয়ে তার স্বামী কে এই কথা বলার পর টর এসে ৩ রাখাল কে খুন করে।
পরে যায় তার মেয়ের লাশ খুঁজতে। গিয়ে যখন মারিতা তার মেয়ের মাথা কোলে নেয় তখন সেখান থেকে একটা ঝরনা বইতে থাকে The Virgin Spring ।
ক্রিটিকাল রিভিউ ব্যাপক ভালো তবে, যদি আপনি টাইম পাস সিনেমা দেখতে চান, এইটা দেইখেন না। । কারন সিনেমায় দুঃখের ছড়াছড়ি।
একই সাথে খ্রিস্টিয়ানিটি, পাগানিসম, নর্স মিথ, নিহিলিসম, এবং ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি কটাক্ষ, মানে বেধড়ক মিশ্রণ আর কি।
ধার্মিক মারিতা, সব সময় প্রার্থনা রত।
টর আপাত ধার্মিক,সে প্রায়ই বলে,"আই ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড ইউ গড"
আবার সিনেমার শেষ দৃশ্যে বলে,"ইউ স ইট। হোয়াই ইউ লেট ইট হেপেন গড?" পরক্ষনে সে তার কৃতকর্মের জন্য কষ্ট পায়। সে ওয়াদা করে নিজ হাঁতে একটা চার্চ নির্মাণের।
ইঙ্গেরি নর্স গড অডিনের ভক্ত
তিন রাখাল বিবেক বিবেচনাহীন
শেষ দৃশ্যে যখন কারিনের মাথার নিচ থেকে ঝরনা প্রবাহিত হয়, তখন দেখানো হয় সবাই সেই ঝরনার পানিতে মুখ মাথা মুছে, এটা যেন নিজের পাপ মোচনের এক চেষ্টা।
উস্তাদ বাইরম্যান হয়ত আরও অনেক কিছু মিন করতে পারেন। তবে সিনেমাটা আমার অ্যান্টেনায় এতটুকুই ধরা পরসে
ক্রাইম , ড্রামা জেনারের মুভিটির দৈর্ঘ্য ৮৯ মিনিট।
সিনেমাটি ১৯৬০ সালে কান এ গোল্ডেন পাম পায়।
১৯৬১ সালে বিদেশী ভাষার ক্যাটাগরি তে অস্কার পায়।
১৯৬১ তে এটি গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড পায়।
ডাউনলোড লিংক
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।