বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার ইনকরপোরেটেড জানিয়েছে, ২০১১ সালে বিশ্বব্যাপী কম্পিউটার চিপ বিক্রি থেকে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ২০০ কোটি ডলার। আগের বছর থেকে এ আয় দশমিক ৯ শতাংশ বেশি।
বছরের শুরুটা ভালো হলেও শেষদিকে এসে ব্যক্তিগত পর্যায়ে এ ধরনের যন্ত্রাংশ ও কম্পিউটার চিপের চাহিদা কমে যাওয়ায় সমস্যায় পড়ে কোম্পানিগুলো।
গার্টনারের সেমিকন্ডাকটর গবেষণা পরিচালক স্টেফান ওর জানান, হতাশাপূর্ণ ২০১০ সালকে পেছনে ফেলে নতুন বছরে নতুন আশা দেখতে পেয়েছিল কোম্পানিগুলো। তিনি বলেন, ‘তবে বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে গ্রাহকরা কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছে; সেসঙ্গে অবকাঠামো সম্প্রসারণে ঋণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় সরকারি সহায়তা প্রত্যাহার কোম্পানিগুলো সার্বিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানগুলোর গুদামে পণ্যের পাহাড় জমে গিয়েছিল, যার প্রভাব বাজারের ওপর গিয়ে পড়েছে। ’
এ সত্ত্বেও কোম্পানিগুলোর আয়, কৌশল আর সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে শীর্ষ ৫-এর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। গত ২০ বছর ধরে এ খাতে শীর্ষস্থান ধরে রাখা ইন্টেল এবারও অবস্থান ধরে রেখেছে।
ইন্টেল, যুক্তরাষ্ট্র
২০১১ সালে এসে সেমিকন্ডাকটর বাজারের ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ দখলে সক্ষম হয় ইন্টেল। একটানা ২০ বছর শীর্ষে থাকলেও এবারই এত বিশাল অংশ দখলে নিতে পেরেছে প্রতিষ্ঠানটি।
১৯৯৮ সালে বাজারের ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ অধিকার করতে পেরেছিল তারা।
বছরের প্রথমার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ইন্টেল। সে সময় ব্যক্তিগত কম্পিউটারের চাহিদা বেশি থাকায় হুহু করে ইন্টেলের পণ্য বিক্রি বাড়তে থাকে। এ বছর তাদের আয়ের সঙ্গে বেতার ব্যবসা শাখার রাজস্বও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে ইনফাইননের কাছ থেকে ১৪০ কোটি ডলারের বিনিময়ে এ ব্যবসাটি কিনে নেয় ইন্টেল।
চলতি বছরে কোম্পানিটির মোট আয় হয়েছে ৪ হাজার ৯৬৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
স্যামসাং, দক্ষিণ কোরিয়া
ট্যাবলেট কম্পিউটারের জোয়ারে ডির্যামের ব্যবসায় ভাটা পড়লেও শিল্প গড়ের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানটি দখল করেছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস।
কম্পিউটারের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ন্যান্ড (ঘঅঘউ) চিপের ব্যবসায় বেশ ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয় কোম্পানিটি। অবশ্য মেমোরি ব্যতিরেকে অন্যান্য চিপের ব্যবসায় দারুণ সফলতা লাভ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাপলিকেশনভিত্তিক যন্ত্রাংশ বিশেষ করে বেতার যোগাযোগসংক্রান্ত চিপ।
এ খাতে তাদের মোট আয়ের পরিমাণ ২ হাজার ৯২৪ কোটি ২০ লাখ ডলার।
টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্টস, যুক্তরাষ্ট্র
অ্যানালগ সেমিকন্ডাকটর তৈরিতে টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্টস ইনকরপোরেটেডের বিশেষ সুনাম আছে। অবশ্য ব্যক্তিগত কম্পিউটারের ব্যবসায় ভাটা পড়ায় এ কোম্পানিটিরও আয় তুলনামূলক কম হয়েছে। তবে নতুন তথ্যকেন্দ্র নির্মাণ আর পিসির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ তৈরির ব্যবসা ভালোই প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। তাদের মোট আয়ের পরিমাণ ১ হাজার ৪০০ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
তোশিবা সেমিকন্ডাকটরস, জাপান
বছরের শেষ দিকে অন্যান্য কোম্পানির মতো ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবসা কমে যাওয়ায় অপেক্ষাকৃত কম মুনাফা পেয়েছে তোশিবা সেমিকন্ডাকটর।
থাইল্যান্ডে দীর্ঘায়িত বন্যার কারণে কোম্পানিটির উত্পাদনও কমে গিয়েছে। এ বছর তাদের মোট আয়ের পরিমাণ ১ হাজার ৩৩৬ কোটি ২০ লাখ ডলার।
রেনেসাস ইলেকট্রনিকস, জাপান
মাইক্রোকন্ট্রোলার নির্মাণে বিশ্বের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান রেনেসাস ইলেকট্রনিকস ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো পাঁচের তালিকায় স্থান করে নেয়। চলতি বছরে এ কোম্পানিটির মোট আয়ের পরিমাণ ১ হাজার ১১৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আইসাপ্লাই ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।