আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

।। রহমান হেনরীর দুটি সনেট ।।

বাঙলা কবিতা । । ব্রজরাণী । । ------------- সুরভিত সমুদ্রের ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে আসা, সুললিত মৃদু-কোলাহল, যেন, প্রত্ন-দিনের বঙ্গ-অভিযাত্রীদের উল্লসিত আবেগের; যখন বুঝেছে তারা, হলো উপনীত, 'ওই দ্যাখো, স্বদেশের উপকূল, তীরের নিশানা দ্যাখো ফের!' ব্রজরাণী, তোমার রূপের ছবি, আমাকে তেমনি করে প্রীত।

তোমার চুলের দেবদারু; অণ্ণপূর্ণাসম মোহনীয় মুখ, সবুজের জলপরী-ডানা থেকে মৃদুমন্দ মিহিন বাতাস বলে দেয়, হতাশা-সমুদ্র নয়, এই তো আবার সেই সুখ; আবার হৃদয় জুড়ে আঁকা হবে গৌরবের অনার্য আকাশ! সুজলা-সুফলা সেই প্রত্নবঙ্গ, অক্ষত, দেখাবে আদি-বুক। ব্রজের প্রাসাদ ঘেঁষে, ওহো রাণী, আলোকিত প্রধান তোরণে মানুষের বিস্ফারিত চোখে চোখে অচেনার রূপমূর্তি তুমি মণির প্রদীপ হাতে, আলোকিত, দাঁড়িয়ে রয়েছো এক মনে, আহ! সেই ব্রজধাম, প্রকৃত হৃদয় জানে, প্রেম-পূণ্য-ভূমি; প্রণয়-প্রণত যত যুগল-বাসনা ছোটে যেই বৃন্দাবনে! । । দর্পিতা । ।

------------ স্বেচ্ছা-অন্ধ, স্বেচ্ছা-বধির, মধ্য-যৌবনা, সেই দর্পিতা হরিণী; অপরূপ জ্ঞান করে অজগর-শোভা আর প্যাঁচের মহিমা। তার উষ্ণ রক্ত আর মাংসের ঘ্রাণ নিয়ে বাঘের নিকটে অরণ্যের নিরাপত্তা চায়; কুৎসিৎ নেকড়েদের বন্ধু ভেবে, জঙ্গলের ঝোপ নাড়ে, কাঁপিয়ে ত্বকের লোম, আহ্লাদে নাচে। যেন সব সুন্দরের সমূহ কদর থাকে শ্বাপদের কাছে! আমরা জেনেছি এই গল্পটুকু; কোনওদিন আমলে ধরিনি। অরণ্যে সুদূর এই কহিনীর জন্মদাত্রী, হরিণী-গরিমা। কিছুকাল, শান্তি শান্তি; কিছুদিন সুখ সুখ, চমৎকার বটে! তারপর, আকাশ বিধ্বস্ত হয়ে চেপে এলে, মাটি গেল দেবে।

কী ঘটিবে? কী ঘটেছে? বুঝে নাও অনুমানে, মগজের আঁচে; হরিণী দর্পিতা হোক, তাতে বুঝি রক্ত-মাংস অবিরাম বাঁচে? অরণ্য গহীনে দ্যাখো, পড়ে আছে শিঙশোভা, ত্বক, ত্যাক্ত হাড়; নির্বোধ হরিণ শুধু অপচয় করে গেছে স্বরতন্ত্রী তার! ---------- ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।