"অ্যাবসার্ড"
Last Tango in Paris
১৯৭২ সালে বানানো এই সিনেমা টি পরিচালনা করেন বারনার্দ বারতুলুচ্চি। অভিনয়ে বস মারলন ব্রান্ডো, অখ্যাত নায়িকা মারিয়া স্নেইডার।
প্যারিসে একটা এপার্টমেন্ট ভাড়া করতে গিয়ে পরিচয় হয় এক তরুনির জিন(মারিয়া) সাথে মধ্যবয়সী এক মার্কিন ব্যাবসায়ি পল(মারলন)।
স্ত্রীর পরকীয়া এবং আত্মহত্যা র কারনে চরম মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে থাকা পল, জিনের প্রতি এক ধরনের শারীরিক আকর্ষণ অনুভব করে। তারা ঠিক করে এই ফ্ল্যাটে দেখা করবে নিয়মিত।
তবে কেউ কারো নাম, ঠিকানা বলতে পারবে না। সম্পর্ক হবে শুধুই শারীরিক। ধীরে তারা একে অপরকে জানতে পারে। জিন জানতে পারে, পল তার স্ত্রীর আত্মহত্যা এবং পরকিয়ার কারনে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। পল জানতে পারে, এক উঠতি ফিল্ম ডিরেক্টরের সাথে তার প্রেমের কথা।
এভাবে তাদের সম্পর্কের গভিরতা বারতে থাকে।
এক উভয়ে প্রেমে পড়ে যায়।
কিন্তু হঠাৎ একদিন জিন এসে দেখতে পায় পল কিছু না বলে এপার্টমেন্ট ছেড়ে চলে গেসে। ফিরে যাওয়ার পথে রাস্তায় দেখা হয় পলের সাথে। পল তাকে নিয়ে একটি ট্যাঙ্গো বারে যায়।
সেখানে মদ্যপান এবং ট্যাঙ্গো নাচের তালে সে জিন কে বলে তার ভালবাসার কথা। একসাথে নতুন ভাবে বাঁচতে চায় সে।
কিন্তু কোন এক অজানা কারনে জিন অস্বীকার করে তার ভালবাসার কথা। বার থেকে চলে যায় তার বাড়িতে। পেছনে পেছনে ছুটে যায় পল।
শেষ পর্যায়ে জিন তাকে গুলি করে। যন্ত্রণার চাইতে বেশী অবাক হয় পল। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
ড্রামা , রোমান্স জেনারের এই মুভিটির রান টাইম ১৩৬ মিন।
অসম্ভব সুন্দর অভিনয়ের কথা নতুন করে বলার কিছুই নাই।
পৃথিবী থেকে নিজেকে আলাদা করে একটা জগত তৈরি করার চেষ্টা, যেখানে কোন নাম থাকবে না, পরিচয় থাকবে না, থাকবে শুধু ভালবাসা। অদ্ভুত এক আইডিয়া।
কয়েকটা দৃশ্যের কথা আলাদা করে বলতে চাই
যখন পল তার স্ত্রীর প্রেমিকের কাছে জানতে চায়,"তোমার মধ্যে কি আছে, যা দেখে আমার স্ত্রী তোমার প্রেমে পড়ল?"একই সঙ্গে নিজের ব্যার্থ জীবনের প্রতি করুনা, স্ত্রীর প্রতি ক্রোধ আর স্ত্রীর প্রেমিকের প্রতি ঈর্ষা চেহারায় নিয়ে আসা মনে হয় মারলন এর পক্ষেই সম্ভব।
আরেকটা দৃশ্য, যখন পল তার স্ত্রীর মৃত দেহের সামনে বলে, সে তাকে কত ঘৃণা করে। এক পর্যায়ে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং বলে সে তাকে কত ভালবাসত।
আরেক দৃশ্যে যখন জিনের প্রেমিক তাকে বিয়ের কথা বলে, হ্যাঁ, না, হ্যাঁ, না
করতে করতে হাসতে থাকে, সে এক অদ্ভুত পাগলা দৃশ্য।
সব শেষের দৃশ্যে, যখন জিন পল কে গুলি করে,যন্ত্রণার চেয়ে বেশী অবাক হয় পল। কাতর কণ্ঠে সে তার অসম্পূর্ণ সপ্নের কথা বলতে বলতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
শেষে দেখান হয়, জিন বলছে," আমি তাকে চিনি না, তার নাম জানি না"
ভয়ংকর পরিস্থিতি
সিনেমার আরেকটা দিক না বললেই নয়। সেটা হল জিনের প্রেমিক চরিত্রে জিন পিয়েরে র কথা।
কেউ কেউ বলেন এই চরিত্র নাকি পরিচালক বারতুলুচ্চির নিজের জীবন থেকে নেয়া।
সিনেমাটি ১৮ প্লাস বলা যায়। কিছু কিছু দৃশ্য খুবই সেক্সুয়ালি এক্সপ্লিসিট।
নায়িকা মারিয়া এই সিনেমা করার কিছুদিন পরে মানসিক ভাবে অসুস্থ্য হয়ে যান। তাই পরবর্তীতে আর তেমন কোন সিনেমায় তাকে দেখা যায়নি।
সিনেমা সম্পর্কে মারিয়া সব সময়ই নেগেটিভ কমেন্ট করেন। এক জায়গায় তিনি বলেন, বারতুলুচ্চি তাকে কৌশলে ধর্ষণ করেছেন।
সিনেমাটি সম্পর্কে ভালো খারাপ দুই ধরনেরই মতামত আছে। নির্ভর করে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির উপর। একটা উক্তি দিয়ে শেষ করছি,
"Any moviegoers who are not shocked, titillated, disgusted, fascinated, delighted or angered by this early scene in Bernardo Bertolucci's new movie, Last Tango in Paris, should be patient. There is more to come,Much more- টাইম ম্যাগাজিন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।