আমাদের দেশের ইতিহাস সাক্ষর দেয় সাধরণ মানুষের আধিকার আদায়ের জন্য সব সময় ছাত্ররাই মূল ভূমিকা পালন করেছে। আর তা হয়েছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের তৎপরতায় সাধারণ ছাত্রদের সংগঠিত করার মাধ্যমে। ৯০’র স্বৈরাচার বিরুধী আন্দোলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভূমিকা অবশ্যয় অত্যান্ত প্রশংসিত। তখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সৃজনশীল নেতৃত্ব স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়ে ছিল। কিন্ত বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নব্য স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লক্ষণী কোন ভুমিকা পালন করতে পাচ্ছে না।
যে কোন সংগঠনের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকা বাঞ্চণীয়। যেমন আইনজীবীদের সংগঠনের আইনজীবী , সাংবাদিকদের সংগঠনের সাংবাদিক থাকা বাঞ্চণীয় তেমনি ছাত্র সংগঠনগুলোতে ছাত্রদেরই থাকা বাঞ্চণীয়। আমাদের প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলেও সকল পর্যায়ের নেতৃত্বে ছাত্রদেরই থাকা আবশ্যক। কিন্তু কিছু কুচক্রী মহলের কারণে ছাত্রদলে অছাত্র, বয়স্ক, বিবাহিতদের আধিপত্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলসূতিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সাধারণ ছাত্রদের আস্তা অর্জনে ব্যার্থ হচ্ছে।
আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কর্মকান্ড ও তার ঘোষিত করমসূচির আর্দশ উপলাব্ধি করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে সম্পৃক্ত হয়েছি। কিন্তু ছাত্রদলের নানা সময়ের প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকান্ডে আমি মঝে মধ্যেই হতাশ হয়ে পরি। আবার নতুন সম্ভবনার কথা জেনে আশান্বিত হই।
ছাত্রদলে এখন টাকা ও পেশীশক্তি মূখ্য ভুমিকা পালন করছে বলে একটি কথার বেশ প্রচলন শুনা যাই যা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে সধারণ ছাত্রদের থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। যে সব লোকেরা টাকা ও পেশীশক্তির বলে ছাত্রদলের নেতৃত্বে আসছে তারাই তারা মূলত ছাত্রদলের নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছে যা ছাত্রদলের সুনাম নষ্ট করছে।
আর স্বাভাবিক ভাবেই সচেতন সাধারণ ছাত্ররা এসব নেতাকে ঘৃণা করে এবং তারা এই কারণে ছাত্রদলে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের সংগঠন মনে করে ছাত্রদলের আদর্শ উপলব্ধিতে ব্যার্থ হয়। মূলত এ কারণেই ছাত্রদল দেশের এ সংকট মূহুর্তেও সাধারণ ছাত্রসমাজকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পাচ্ছে না। বয়স্কদের অভিঞ্জতা বেশী থাকলেও বয়সের পার্থক্যের কারণে সাধারণ ছাত্ররা এসব বড় ভাইদের সালাম দেয় , কিন্তু ভালবেসে তাদের সঙ্গী হয় না। আর ছাত্রলীগও এখন বলতে শুরু করেছে যে ছাত্রদলের সবাই চাচার বয়সী আর তাই ছাত্রদলই ডাকসু নির্বাচন চাই না।
আবার আমরা যারা তৃণমূল পর্যায়ে ছাত্রদল করি তাদের অনেকে সঠিকভাবে মূল্যায়িত না হওয়ায় হতাশ হয়ে এক সময় রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
আধুনিক এই যুগে একজনও যদি কোথাও কোন বিষয়ে অবমূল্যায়িত হয় তবে তার সাথে সাথে আরও অনেকেই ঐ বিষয়ে হতাশ হয়ে ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যখন একটি নেতৃত্ব তৃণমূল থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছাঁতে পারে না তখনই ছাত্রদল মেধাবী ছাত্রনেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
মাঝে মাঝে আবার ছাত্রদলের অনেক সাধারণ কর্মীরা মূলদল কিংবা গ্রুপিং-এর কারণে ছাত্রদলের কাছ থেকেই বিপদের সময় প্রত্যশা অনুযায়ী সহয়তা না পওয়ায় ছাত্রদলে অনেক মেধাবী নেতৃত্ব অকালেই ঝরে পরে। গত এপ্রলে যখন আমার বিরুদ্ধে সরকার বিরুধী প্রচারণার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয় তখন আমি বি এন পি কিংবা ছাত্রদল থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী সহয়তা পাই নি। ফলে আমি আমার ফাইনাল পরীক্ষাতেও অংশ নিতে পারি নি।
আমি একজন দৃঢ়চেতা এবং প্রচন্ডভাবে জিয়া ভক্ত মানুষ বলেই এখনও ছাত্রদল করি ও ছাত্রদলের কল্যান কামনা করি। কিন্তু অনেকেই আমার এই বিষয় দেখে হতবাক হয়েছে আমার দিকে প্রশ্নবান ছুড়ে দিয়েছে ,“কেন করিস এই অছাত্রদের ছাত্রদল? কেন করিস অসৎদের সাথে রাজনীতি? কেন করিস দেশপ্রেমহীন লবাসধারীদের সাথে রাজনীতি? ” তখন আমি শুধু বলেছি ,“ আমিই এই দলটাকে আবার অতীতের মত জনপ্রিয়, ছাত্রবান্ধব, সৎ ও দেশপ্রেমিকদের সংগঠনে রূপান্তর করব। “ নানা ভাবে আমি সে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি , সফল হবই। কারণ বি.এন.পি-র চেযারপারসন বেগম জিয়া সিলেটের জনসভায় তরুণের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেয়ার কথা ঘোষনা করেছেন। তিনি অবশ্যই তা করবেন এবং তা দ্রুত সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতৃত্ব পরিবর্তনের মাধ্যমে সূচনা করবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
তিনি এমন একটি তরুণ ও নিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করবেন যেটি টাকা কিংবা পেশীশক্তির কারণে তৃণমূল কমিটি গঠনে পক্ষপাত করবে না ,সৃজনশীলতার মাধ্যমে আন্দোলন পরিচালনা করবে, ছাত্র সমাজের কল্যানে কর্মসূচি পালন করবে, দেশ ও ছাত্র কল্যানে কাজ করবে সততা মাধ্যমে। যে কমিটিতে থাকবে না বয়স্ক, অছাত্র ও বিবাহিতরা। যে কমিটিতে থাকবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেধাবী ছাত্রনেতা যারা ছাত্রদলকে ছাত্রবান্ধব করে তুলতে সক্ষম হবে এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে সাধারণ ছাত্রদের প্রতিনিধি সংগঠন হিসাবে পরিচিতি দিতে পারবে। এই প্রত্যাশা শুধু আমার নয় , এটি এখন সমাজের প্রতিটি মানুষের প্রত্যাশা।
আঃ রব মোঃ রায়হান হোসেন (রিবু)
সদ্যস সচিব,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ,সিলেট।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।