আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশ পরিচিতি: শ্রীলঙ্কা

গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র শ্রীলঙ্কা। দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথে অবস্থানের কারণে দেশটিকে পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নৌ যোগাযোগের সংযোগস্থল বলা যায়। সিংহলিরা সম্ভবত উত্তর ভারত থেকে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষ ভাগে শ্রীলঙ্কায় আগমন করে। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে এখানে বৌদ্ধ ধর্মের চর্চা শুরু হয়।

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে একটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের গোড়াপত্তন হয়, যার মাধ্যমে ১৯৪৮ সালে একটি শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে শ্রীলঙ্কা। এক নজরে রাজধানীঃ কলম্বো রাষ্ট্রপতিঃ মাহিন্দ রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীঃ রত্নশ্রী বিক্রমানায়েক আয়তনঃ ৬৫,৬১০ বর্গ কিমি জনসংখ্যাঃ ২১,১২৮,৭৭৩ (২০০৮ সাল) জন্মহারঃ প্রতি হাজারে ১৬ জন মৃত্যুহারঃ প্রতি হাজারে ৬.৫ জন গড় আয়ুঃ পুরুষ ৬৪, মহিলা ৭৪ জনসংখ্যার ঘনত্বঃ প্রতি বর্গ কি.মি. ৩০৯ জন সাক্ষরতার হারঃ ৯১% ভাষাঃ সিংহল ধর্মঃ বৌদ্ধ ৭০%, হিন্দু ১৬%, মুসলিম ৭%, খ্রিস্টান ৭% স্বাধীনতা লাভঃ ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮ জিডিপিঃ ৩২.৩৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০০৭) মাথাপিছু আয়ঃ ১,৬২৩ মার্কিন ডলার দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ২২% ভৌগোলিক অবস্থা ও জলবায়ু :শ্রীলঙ্কা ভারত মহাসাগরে অবস্থিত। বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং আরব সাগরের দক্ষিণ-পূর্বে। এর আয়তন ৬৫,৬১০ বর্গ কিলোমিটার। সমুদ্র উপকূল ১,৩৪০ কিলোমিটার।

অধিকাংশ ভূখণ্ড নিচু, সমতল; সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল এবং দক্ষিণ অঞ্চলে কিছু পর্বত রয়েছে। সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ‘পিদুরুতলাগলা’ যার উচ্চতা ২,৫২৪ মিটার (৮,২৮১ ফুট)। শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উষ্ণ। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আর জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়। প্রাকৃতিক সম্পদ ও ঝুঁকি :এ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে চুনাপাথর, গ্রাফাইট, খনিজ বালু, রত্ন, ফসফেট উল্লেখযোগ্য।

অনিয়মিত ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো দেশটির বৃহত্ প্রাকৃতিক ঝুঁকি। সরকার ও রাজনীতিঃ শ্রীলঙ্কা গণতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিক মূলনীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত একটি দেশ। এর সরকার রাষ্ট্রপতি এবং সংসদীয় পদ্ধতির সমন্বয়ে গঠিত। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রীয় প্রধান, সরকার প্রধান এবং সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তিনি জনগণের ভোটে ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন।

রাষ্ট্রপতি সংসদের নিকট দায়ী থাকেন। শ্রীলঙ্কার সংসদ এক কক্ষবিশিষ,্ব যার সদস্য সংখ্যা ২২৫ জন। রাষ্ট্রপতি সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে মন্ত্রিপরিষদের নিয়োগ প্রদান করেন এবং পরিষদের প্রধান থাকেন। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির অধীন থাকেন। সংসদ সদস্যগণ প্রাপ্ত বয়স্ক জনসাধারণের প্রত্যক্ষ ভোটে ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন।

কোনো সংসদ এক বছর কাল অতিক্রম করলে রাষ্ট্রপতি ইচ্ছা করলে সংসদ মুলতবি, সমাপ্তি অথবা বিলুপ্ত করতে পারেন। সংসদই সকল আইন প্রণয়নের অধিকার রাখে। শ্রীলঙ্কা নয়টি প্রদেশের অধীন ২৫টি জেলা নিয়ে গঠিত। প্রতিটি প্রদেশ নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদের দ্বারা পরিচালিত হয়। ১৯৩১ সাল থেকে শ্রীলঙ্কায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিরাজমান।

অর্থনীতি :ঊনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীতে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ব্যাপকভাবে বনায়ন ও কৃষিনির্ভর হয়ে উঠেছে। দেশটি দারুচিনি, রাবার, সাইলন চা রপ্তানিতে পৃথিবী বিখ্যাত। আধুনিক সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ফলে ব্যবসা কেন্দ্র হিসাবে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার দারিদ্র্য দূর করতে পারেনি বরং অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কা মুক্তবাজার এবং রপ্তানি-নির্ভর অর্থনৈতিক পন্থা গ্রহণ করেছে।

দেশের সর্বাপেক্ষা গতিশীল খাত হচ্ছে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, তৈরি পোশাক ও অলংকার শিল্প, খাদ্য ও পানীয়, টেলিযোগাযোগ, ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স। জনশক্তি রপ্তানির ফলে বছরে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।