"সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে", "এ্যান্টি ব্লগারদের ঘৃণা করুন", "দাঁতভাঙ্গা জবাব দেন", "অশ্লীল মন্তব্যকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলুন", "প্রয়োজনে তাদেরকে ব্লক করুন" একটি ফান পোস্ট। বে-রসিকরাও পড়তে পারেন।
সে অনেক আগের কথা। কোন এক গ্রাম্য মোড়ল নিজেকে সেই গ্রামের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তি বলে মনে করতো। কিন্তু নিজেকে শুধু বুদ্ধিমান মনে করলেইতো হবেনা, এটারতো প্রমানও দিতে হবে।
তাই সে মনে মনে চিন্তা করলো, এই গ্রামে আমিইতো বেশী বুদ্ধিমান, এটা যে করেই হোক, মানুষকে বোঝাতে হবে। যেই ভাবা, সেই কাজ। সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের সকল স্থানে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা দেয়া হলো, এই গ্রামের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তি কে, তাকে নির্বাচন করা হবে এবং সেই হবে এই গ্রামের পরবর্তী মোড়ল। কথামতো দিনক্ষণ ও স্থান নির্ধারণ করা হলো। একের পর এক লোক মাঠে আসতে লাগলো।
মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেল। গায়ের মোড়লও সেখানে উপস্থিত।
এমন সময় দেখা গেল, এক লোক গাধার পিঠে চড়ে মাঠের দিকেই এগিয়ে আসছে। কাছে আসতেই দেখা গেল, লোকটির এক পায়ে স্যান্ডেল আর এক পায়ে জুতা। লোকজন ভাবলো, লোকটি বোধহয় পাগল।
লোকজন তাকে জিজ্ঞেস করলো, আপনি কোথায় যাচ্ছেন ? লোকটি উত্তর দিলো, আমি শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছি। তাতো বুঝলাম, কিন্তু আপনার এক পায়ে স্যান্ডেল আর অন্য পায়ে জুতা !!!!!!!, ব্যাপারটা কি ? লোকটি উত্তর দিলো, ব্যাপার আর কিছুই না। আমি যদি দুই পায়ে জুতা পড়ি, তাহলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মনে করবে আমার বুঝি স্যান্ডেল নাই, আর যদি দুই পায়ে স্যান্ডেল পড়ি, তাহলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মনে করবে আমার বুঝি জুতা নাই। তাই এই ব্যবস্থা। তাতো বুঝলাম, কিন্তু আপনি সম্মুখ দিকে মুখ না দিয়ে গাধার পিছন দিকে মুখ ফিরে বসেছেন কেন ? লোকটি উত্তর দিলো, আমার গাধার বাচ্চা হবেতো, তাই বাচ্চা যদি মাটিতে পড়ে না যায়, সময় মতো ধরতে পারি, তাই পিছন দিকে মুখ ফিরে বসেছি।
লোকজন এই কথা শুনে হাসাহাসি করতে লাগলো। তাদের সাথে সাথে বাড়ীর আশে পাশে থাকা মেয়ে-ছেলেরাও হাসতে লাগলো। তারা কেউবা শাড়ীর আঁচল দিয়ে আর কেউবা উড়না দিয়ে মুখ ঢাকলো। এই দেখে গ্রামের মোড়ল ভাবলো, সবাই এইভাবে হাসতেছে কেন ? আর মহিলারা ওভাবে মুখ ঢাকছে কেন ? মোড়ল মনে করলো তারও ঐভাবে মুখ ঢাকা উচিৎ। সে সঙ্গে সঙ্গে তার লুঙ্গি উঠিয়ে মুখ ঢাকলো।
তাই দেখে সকলেই শরম পেল। ছেলে পেলেদের মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেল। আর মহিলারা দৌড়ে বাড়ির ভিতর পালিয়ে গেল। তা দেখে মোড়ল তার চামচাকে জিজ্ঞেস করলো, সবাই এইভাবে হাসতেছে কেন? আর মহিলারাই বা ঐভাবে দৌড়ে ঘরের ভিতর চলে গেল কেন ? চামচা উত্তরে তাকে বললো, মোড়ল সাহেব, সেই কথা আমি আপনাকে কিছুতেই বলতে পারবো না। আপনি এই অবস্থায় ঘরে যান এবং আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখুন।
কথামতো মোড়ল ঘরে গিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে যা দেখলো, তাতে তার নিজের মাথা-ই হেট হয়ে গেল। আর মনে মনে বলতে লাগলো, “আপনারে বড় বলে, বড় সেই নয়, লোকে যারে বড় বলে, বড় সেই হয়। ”
আমাদের দেশে যারা নিজেদেরকে বুদ্ধিজীবি বলে দাবী করে, তাদেরকে আমার কাছে গাধার পিঠে চড়া সেই ব্যক্তি ও বুদ্ধিমান মোড়লের মতোই মনে হয়। সত্যিকার বুদ্ধিজীবি তারাই, যারা নিজেদেরকে কখনো বুদ্ধিজীবি বলে দাবী করেনা। তারা তাদের বুদ্ধিকে নিজের আখের গোছানোর কাজে ব্যবহার না করে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যানে ব্যবহার করে, নিজের জীবন দিয়ে দেশের সম্মান রক্ষা করে।
তাদের মধ্যে শ্রদ্ধেয় জহির রায়হান, শহীদুল্লাহ কায়ছার, মুনীর চৌধুরী এবং ডঃ হুমায়ুন আজাদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।