আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পথ অনেক, পেট্রোল কম’

শপথ নেওয়ার ৯ দিনের মাথায় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে নিজের দপ্তরে যোগ দিয়ে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনগণের বিপুল প্রত্যাশার বিপরীতে তার হাতে সময় কম হলেও তহবিলের দিকে নজর রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা সাজাবেন তিনি। বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি দপ্তরে গেলে কর্মকর্তা-ককর্মচারীরা ফুল দিয়ে নতুন মন্ত্রীকে বরণ করে নেন। ওবায়দুল কাদের এরপর নিজের কক্ষে কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর নিজের কক্ষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ১০ বছর পর আজ সচিবালয়ে প্রবেশ করেছি। এর আগে ২০০১ সালে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে অফিস করে শেষবারের মতো বেরিয়ে গিয়েছিলাম।

” মন্ত্রী হিসেবে সচিবালয়ে ফিরে কেমন লাগছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “একটা খেলা হলে খেলোয়াড়-কর্মকর্তা সবাই চাপের মধ্যে থাকে। আমি তীব্র চাপ অনুভব করছি জনগণের প্রত্যাশার ক্ষেত্রে। ” “এখানে প্রত্যাশা অনেক, সময় কম। পথ অনেক, পেট্রোল কম,” যোগ করেন যোগাযোগ মন্ত্রী। কর্মকর্তারা জানান, কার্যালয়ে ঢুকে নিজের চেয়ারে বসে কাদের বলেন যে, তিনি এ অফিসকে দলীয় কার্যালয় বানাতে চান না।

কাজেই দলীয় বিষয়ে কারো কোনো কথা থাকলে তা যেন তার বাড়িতেই বলা হয়। এরপর সচিবকে উদ্দেশ্য করে ‘বেশি আরামদায়ক’ চেয়ার সরিয়ে নিতে বলেন নতুন মন্ত্রী। সৈয়দ আবুল হোসেনের উত্তরসূরি কাদের বলেন, “আমি সোজা হয়ে বসতে চাই। ” শেখ হাসিনার সরকারের মন্ত্রী হিসেবে গত ২৮ নভেম্বর শপথ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাদের। এর ছয় দিন পর তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সড়ক দুর্ঘটনা, বেহাল মহাসড়ক এবং দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন স্থগিত হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে আলোচিত-সমালোচিত মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় নবগঠিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কী কী করবেন- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, “আমার হাতে দুই বছর সময় আছে বলা হচ্ছে। এটা ঠিক না। আমি বলবো আমার সময় রয়েছে দেড় বছর। কারণ মেয়াদ শেষের ৬ মাস আগে থেকেই নির্বাচনের কাজ শুরু হয়ে যায়।

” তারপরও ‘সময় ও ফান্ডের দিকে নজর রেখে’ উন্নয়ন পরিকল্পনা করবেন বলে জানন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “মন্ত্রণালয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। এগুলো সহজে ভাঙা যাবে না। তবে আমি সবকিছু দ্রুততার সঙ্গে করতে চাই। ” দপ্তর পাওয়ার পর গত সোমবার ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ঝুলে যাওয়া পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর ওপরই সবচেয়ে বেশি জোর দেবেন তিনি।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বুধবার তিনি বলেন, “আমার সময়ে আমি কাজ শুরু করে দিয়ে যাবো। এটি একটি ধারাবাহিক প্রসেস। পরেও এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। ” পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করাকেই এখন সবচে বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেন যোগাযোগমন্ত্রী। দেশের সর্ববৃহৎ নির্মাণ প্রকল্প পদ্মা সেতুর মূল অর্থ যোগানদাতা বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন স্থগিত করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কোনো দুর্নীতি হয়নি।

যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এখন থেকে ‘টিম ওয়ার্কে’ অভ্যস্ত হতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “তাদের সাথে সভা করে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ৯টা-৫টা অফিস করাই সব কিছু নয়, একে অপরকেও সহযোগিতা করতে হবে। ” মন্ত্রণালয়ে ভাল কাজের পুরস্কার দেওয়া হবে জানিয়ে কাদের বলেন, তিনি অতীত থেকে শিক্ষা নিতে চান। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন অধিদপ্তরের দুর্নীতির বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “ওয়েট অ্যান্ড সি। ” মন্ত্রীত্ব পাওয়ার আগে সংসদে বিভিন্ন মন্ত্রীর সমালোচনা করে বহুবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছে ওবায়দুল কাদের। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে কিনা জানতে চাইলে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “আমি কোনো সমালোচনা করিনি।

আমি যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থমন্ত্রীর অতিকথন নিয়ে কথা বলেছি। ” প্রধানমন্ত্রী এবার যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে চান বলেও উল্লেখ করেন যোগাযোগ মন্ত্রী। কাদের বলেন, “আমাকে অসহযোগিতা করলে দেশ পিছিয়ে যাবে। এটি আপনাদের মনে রাখতে হবে। ” ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।