© তন্ময় ফেরদৌস
বিজয়ের মাসে আসুন জেনে নেই, আমাদের জাতীয় পতাকার প্রাসঙ্গিক কিছু কথা। ফেসবুক এবং উইকি থেকে পাওয়া কিছু তথ্য দেই।
এই ছবির ভদ্রলোকটির নাম শিবনারায়ণ দাশ।
তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রথম ডিজাইনার।
শিবনারায়ণ দাশ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের কাছে অজানা একটি নাম, অপরিচিত মানুষ।
খুব কম সংখ্যক লোকই এ নামের সঙ্গে পরিচিত।
১৯৭০ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ৪০১ নং (উত্তর) কক্ষে রাত এগারটার পর পুরো পতাকার ডিজাইন সম্পন্ন করেন. সেই রাতেই নিউমার্কেট এলাকার বলাকা বিল্ডিংয়ের ৩ তলার ছাত্রলীগ অফিসের পাশে নিউ পাক ফ্যাশন টেইলার্সের টেইলার্স মাস্টার খালেক মোহাম্মদী পতাকার নকশা বুঝে কাজ শুরু করেন
উল্লেখ্য, লাল সূর্যের মাঝে বাংলাদেশের মানচিত্র ছিল তখনকার ডিজাইনে.
শিবনারায়ণ দাশ-
*কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে টানানো তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইউব খানের ছবি পদদলিত করার কারণে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়
*আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ৩৫ জন আসামির ১৭তম সদস্য ছিলেন তিনি
* বাংলাদেশের পতাকার ডিজাইনের শুরু ও শেষ
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে কুমিল্লায় প্রথম আক্রমণ চালায় তাদের বাগিচাগাঁওয়ের বাসায়। তাকে না পেয়ে তার বাবাকে ধরে নিয়ে যায় ক্যান্টনমেন্টে। সে রাতেই তাকে হত্যা করা হয় নৃশংসভাবে। শিবনারায়ণকে ধরার জন্য দশ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করা হয়।
ঘটনার সময় তিনি শাসনগাছায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে গাড়ির টায়ার পুড়িয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দিচ্ছিলেন।
২০০১ সালের মার্চে একটি প্রথম শ্রেণীর দৈনিক তার সাক্ষাতকারের জন্য যোগাযোগ করলে তিনি সরাসরি নাকচ করে দেন এবং তিনি বলেন-
‘আমি যদি পুরো ঘটনা বলি তাহলে এমন কিছু কথা বেরিয়ে আসবে যা আপনারা ছাপতে পারবেন না। এ সরকারও সে কথাগুলোকে ভালভাবে নেবে না। তাছাড়া প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদীরা এসব কথায় উৎসাহিত হতে পারে। যা আমার কাম্য নয়, তাই আমি ঠিক করেছি আপাতত কিছুই বলবো না।
সময় আসুক, তখন দেখা যাবে। ১৯৭১ সালে আমি কি করেছিলাম তাতে কিছু যায় আসে না। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়ও আমার নাম নেই। এ নিয়েও আমার কোন আক্ষেপ নেই। ’
অনেক স্বাধীনতাবিরোধী রাও স্বাধীনতা পদক বাগিয়েছে. কিন্তু শিবনারায়ন এর কথা সবাই ভুলে গেছেন..... নিভৃতে বসবাস করছেন. স্যালুট জানাই তাকে, কারন তিনি ইচ্ছা করলে এই নোংরা রাজনীতির সাথে সংপৃক্ত হতে পারতেন, দিতে পারতেন অনেক ব্যাখ্যা, ফায়দা লুটতে পারতেন.... কিন্তু দেশের জন্য তিনি যা করেছেন, তার বিনিময়ে কিছু চান নি.
হয়তো একদিন তিনি চলে যাবেন, তারপর তাকে নিয়ে আমাদের দুটি রাজনৈতিক দল ব্যাস্ত হয়ে যাবেন. পদকে পদকে ভরিয়ে দেবেন. নতুন কোন রাজনীতির চাল খেলবেন তাকে নিয়ে.....
এ কোন ভাবেই আমাদের কাম্য হতে পারেনা।
এ মহান মানুষটির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
কৃতজ্ঞতা: ব্লগার সাইমুম,ফেসবুক পেজ-আমরা স্টুডেন্ট খারাপ হইতে পারি , কিন্তু আমাদের ব্যাসিক অস্থির ।
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া
---------------------------------------------------
আরো কিছু অজানা মানুষের গল্প জানার জন্য পড়তে পারেন এই পোস্ট দুটি।
দারাশিকোর লেখা -মুক্তিযুদ্ধের গল্প: একজন বিদেশীর পাগলাটে ভালোবাসা
এবং আমার লেখা-
ফিরে দেখা- ১৯৭১, জানা অজানা কিছু ঘটনা
কস্ট করে পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।