আমেরিকান লবিস্ট ফার্ম ও জামায়াত নেতার মধ্যে চুক্তি
০ লবিস্ট ফার্মের নাম ক্যাসিডি এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস
০ জামায়াতের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন মীর কাশেম আলী
০ ৬ অক্টোবর ২০১০-এ চুক্তি হয়
০ প্রথম ছয় মাসের জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার
০ এর পর প্রতি ছয় মাসের জন্য একই হারে অর্থ দেয়া হবে
২৫ মিলিয়ন ডলার কথা বলছে। কথা বলছে যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে। আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী পত্রিকাগুলোয়ও প্রকাশ হচ্ছে সে কথা। তবে কথা বলানোর জন্য এ অর্থের পরিমাণ আরও বেড়েছে। ২০১০ সালের ৬ অক্টোবর ওয়াশিংটনের ক্যাসিডি এ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর চুক্তি হয়।
ক্যাসিডির পৰে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন এ্যান্ড্রিও জে ক্যামিরস ও কাশেম আলী। মীর কাশেম আলী বাংলায় মীর আলী স্বাৰর করেন। যার নিচে ইংরেজীতে পূর্ণ নাম লেখা আছে মীর কাশেম আলী। চুক্তিতে বলা হয়, ক্যাসিডিকে অগ্রিম ২৫ মিলিয়ন দিলেই তারা কাজ শুরু করবে। এ ছাড়া ক্যাসিডির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এ কাজে ভ্রমণের জন্য একশ' পঞ্চাশ হাজার ডলার অতিরিক্ত দিতে হবে।
এ ছাড়া ভ্রমণের যাবতীয় পকেটমানি মীর কাশেম আলী বহন করবে। টাকা একটি বিশেষ ব্যাংকের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে ট্রান্সফার হবে। মীর কাশেম আলীকে লেখা ক্যাসিডির চিঠিতে বলা হয় তারা ১৭ অক্টোবর ২০১০ থেকে বাংলাদেশে আসবে। আর চুক্তিতে তারা উলেস্নখ করে সিনেটর, কংগ্রেসম্যান ও দক্ষিণ এশীয়বিষয়ক প্রকাশকদের প্রভাবিত করার কাজ করবে।
২৫ মিলিয়ন ডলারে ক্যাসিডি ছয় মাস কাজ করবে।
এরপরে আবার কাজের প্রয়োজন হলে পরবর্তী ছয় মাস একই পরিমাণ অর্থ দিতে হবে।
ক্যাসিডি ও জামায়াত নেতার এই চুক্তির পরে সাঈদীর পৰে ব্রিটিশ এক আইনজীবী বাংলাদেশে আসেন। আমেরিকান যুদ্ধাপরাধ বিষয় প্রশাসনও অধিক নজর দিচ্ছে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে। তবে চুক্তির প্রথম ছয় মাস পার হওয়ার পর আরও ৮ মাস পার হয়েছে। এই আট মাসের ভেতর কিছু মার্কিন প্রশাসনিক তৎপরতা দেখা গেছে।
তবে সেগুলো নিরপেৰভাবেই হচ্ছে। এর থেকে প্রমাণিত হয় আলোচ্য জামায়াত নেতা কর্তৃক এই লবিস্ট ফার্ম নিয়োগের পরে মার্কিন প্রশাসনে কোন প্রভাব পড়েনি। তবে গত কিছুদিন ধরে লৰ্য করা যাচ্ছে, আনত্মর্জাতিক কিছু প্রভাবশালী পত্রিকা বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে জামায়াতের পৰ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে।
অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। একাত্তরে বাংলাদেশে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ, নারকীয় গণহত্যা, পাশবিক, নিষ্ঠুর, অমানবিক ঘটনা ঘটলেও একে সুচতুরভাবে পাশ কাটিয়ে ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের জন্য মানবিক আবেদন জানানো হয়েছে সেসব প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশের ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ নারীর সম্ভ্রমহানির মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতার ৪০ বছর পর দেশ যখন ন্যায়বিচার প্রাপ্তির প্রত্যাশায় লড়ছে তখন প্রশ্ন তোলা হয়েছে, বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে বিরোধ দূর করে সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করছে নাকি প্রতিশোধ নিচ্ছে?
৩০ নবেম্বর দি ইকোনোমিস্ট, ২৯ ও ১৭ নবেম্বর দি নিউইয়র্ক টাইমসে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, নগ্ন দলীয়করণের মাধ্যমে ন্যাযবিচার দেয়ার চচর্া বাংলাদেশ জন্মের প্রকৃত ইতিহাস রচনায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। প্রতিবেদনগুলোতে যুদ্ধাপরাধ ইসু্যতে বর্তমান সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে। মানবিক বিষয় বাদ দিয়ে বার বারই তুলে আনা জামায়াত নেতাদের প্রতি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে 'প্রহসন' এর বিচারের মুখোমখি করার বিষয়টি। স্বাধীনতার এতো বছর পর প্রথমবার স্বাধীনতার পৰের দল সংসদে পৌনে তিন শ' আসন নিয়ে জন রায় ও নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরম্নর পর এ ধরনের প্রতিবেদন কার স্বার্থে করা হচ্ছে তা নিয়ে ইতোমধ্যে শুরম্ন হয়েছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।
প্রতিবেদনগুলোতে এক তরফাভাবে যুদ্ধাপরাধীদের পৰে সাফাই গাইতে গিয়ে পুরোপুরি উপেৰা করা হয়েছে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে দেশের বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, ভাষা দিবসসহ সব ঐতিহাসিক দিবসে গণজাগরণকে, জনগণের প্রত্যাশাকে। তবে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিচারের মুখোমুখি থাকা জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বাঁচাতে হাইপ্রোফাইল আনত্মর্জাতিক আইনজীবী নিয়োগের বিষয়টি। প্রতিবেদকদের একজন আবার অভিযুক্তদের পৰে জামায়াত নিযুক্ত আইনজীবী।
দি ইকোনোমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক ৰত উপশমের চেয়ে বিচারে নগ্ন দলীয়করণ হচ্ছে। বিচার ব্যবস্থায় স্বাধীনতা ও নিরপেৰতা নেই।
একতরফাভাবে বিচার চলছে। বিরোধী পৰের প্রতি প্রতিশোধ নেয়ার মানসিকতার কারণে এ বিচার প্রহসনের ও হাস্যকর হওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরই কয়েকজন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত করা এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারে দেশের মানুষের দাবি থাকলেও দি নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে ১৯৯৫ সালের পর গণআদালতে ১৬ জনের বিরম্নদ্ধে প্রতীকী বিচারের ব্যবস্থার মাধ্যমে বেশিরভাগ বাংলাদেশীর কাছে যুদ্ধাপরাধীদের প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। দি নিউইয়র্ক টাইমসে আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের নগ্ন দলীয়করণের মাধ্যমে ন্যাযবিচার দেয়ার চর্চা বাংলাদেশ জন্মের প্রকৃত ইতিহাস রচনায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। আগামী নির্বাচনে বিরোধী দলকে দুর্বল করতে সুবিধা অনুযায়ী কয়েকজনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছে।
আনত্মর্জাতিক অপরাধ আদালতকে প্রদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের কাজটি বেশি গুছিয়ে নিচ্ছেন।
৩০ নবেম্বর বুধবার দি ইকোনমিস্টে এশিয়ার জন্য নির্ধারিত বানইয়ান কলামে 'প্রচেষ্টা এবং পাওয়া গেল ন্যায়বিচারের অৰমতা : এশিয়ায় যুদ্ধাপরাধের নিষ্পত্তি রেকর্ড অাঁকড়ে ধরে সংকীর্ণতার প্রকাশ ঘটানো হচ্ছে' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুদ্ধাপরাধের বিরম্নদ্ধে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া ও শ্রীলঙ্কার বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ উলেস্নখ করে বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধের ৰেত্রে এশিয়ার দেশগুলো ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। সেৰেত্রে ইউরোপ, আফ্রিকা ও দৰিণ আমেরিকার শক্তিশালী ট্রাইবু্যানাল ও ট্রুথ কমিশনের উদাহরণ অনুসরণ করতে পারেনি এশিয়ার দেশগুলো।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের কয়েক লাখ সাধারণ নাগরিক পাকিসত্মানী সৈন্য ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের হাতে হত্যাকা-ের শিকার হয়। গত ২০ নবেম্বর বাংলাদেশের আনত্মর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবু্যানালে দেশের অন্যতম প্রধান ইসলামী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী প্রথম যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচারের সম্মুখীন হয়েছেন।
তাঁর বিরম্নদ্ধে গণহত্যা, হত্যা, ধষর্ণ, লুণ্ঠন, অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ট্রাইবু্যনাল প্রশংসা পেতে পারে। এটা ছিল ইতিহাসের এক ভয়াবহ ঘটনা এবং ন্যায়বিচার এ সংক্রানত্ম বিরোধ দূর করতে পারে। তবে এতে ন্যায়বিচারের পরিবর্তে তা হাস্যকর অনুকরণেরও ঝুঁকি রয়েছে। বিচারব্যবস্থাকে এক তরফা বলে মনে হচ্ছে।
অভিযুক্তদের এক আইনজীবী এটাকে বিরোধীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা' বলেও উলেস্নখ করেছেন। ঘটনার মূল হোতা, পাকিসত্মানী সৈন্য কাউকেই হাজির করা হবে না আদালতে। আবার পাকিসত্মানীদের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকার কারণে বিহারীদের হত্যা ও নির্যাতন করার জন্য স্বাধীনতা পৰের বাহিনীদেরও বিচারের জন্য মুখোমুখি করা হবে না।
পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, অতীতের ভুলের চেয়ে অভিযুক্তদের বিরম্নদ্ধে রাজনৈতিক কারণে টার্গেট করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীপ্রধান বিরোধী জোটের শরিক দল।
অভিযুক্তদের কয়েকজন দেশের আগের সরকারে মন্ত্রীও ছিলেন। বিরোধী পৰকে দুর্বল করতে পরবতর্ী নির্বাচনের আগে আগে তাদের শাসত্মি দেয়া হতে পারে। ঐতিহাসিক ৰত উপশম করার পরিবর্তে বিচার নিয়ে নগ্ন দলীয়করণ করা হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের বাইরে, এমনকি মাকির্ন সরকারও একবার এ ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য আদালতকে পরামর্শ দিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, প্রত্যৰদশর্ী ও অভিযুক্তদের আইনজীবীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
আইনজীবীরা প্রসত্মতি নেয়ারও সময় পাচ্ছেন না। তাঁরা বিচারকের নিরপেৰতা চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। তাদের মতে, ট্রাইবু্যনালের চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেয়া উচিত। কারণ ওই চেয়ারম্যান ১৯৯৪ সালে এ সংক্রানত্ম অভিযোগ তদনত্ম ও গণআদালতের সভাপতিত্ব করেছিলেন। তাঁরা আরও অভিযোগ করেছেন, আনত্মর্জাতিক আদালতের বিধি মেনে বিদেশী আইনজীবীরা সেখানে যেতে চাইলেও বাধাগ্রসত্ম হচ্ছেন।
একজন ব্রিটিশ আইনজীবী বলেছেন বিচারব্যবস্থায় স্বাধীনতা ও নিরপেৰতার প্রচ- অভাব রয়েছে। সাংবাদিকরা প্রতিবেদন করার চেষ্টা করলেও তাদের ভয় দেখিয়ে বশে আনা হয়।
২৯ নবেম্বর মঙ্গলবার দি নিউইয়র্ক টাইমসে 'যুদ্ধাপরাধ আদালত এবং প্রহসনমূলক ন্যায়বিচার' শীর্ষক প্রতিবেদনটি লিখেছেন ব্যাঙ্ককে কর্মরত এক সাংবাদিক টম ফেলিঙ্ জোনেক। প্রতিবেদনের শুরম্নতে আদালতের একটি কর্মব্যসত্ম দিনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেছেন, এটা নামে মাত্র আনত্মর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল। আদালতের মূল ফোকাস পাকিসত্মানী সৈন্যদের হাতে বাংলাদেশী হত্যা- তবে আদালতটি পরিণত হয়েছে দেশের লোকদেরই বিষয়টির সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়ার সরকারী ইচ্ছা বাসত্মবায়নে।
বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের জন্য পাকিসত্মানের সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের শাসত্মি দেয়ার চেষ্টা করা রাজনৈতিক কারণে সংবেদনশীল। এতে করে পাকিসত্মানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব পড়বে। আর এটা অবাসত্মবও। কারণ শাসত্মির জন্য বাংলাদেশ ও পাকিসত্মানের মধ্যে কোন চুক্তিও নেই।
প্রতিবেদনে আদালত ন্যায়বিচারের জন্য হাস্যকরণ অনুকরণ করছে উলেস্নখ করে বলা হয়, সরকার আদালতটিকে রাবারস্ট্যাম্পে পরিণত করেছে।
অভিযুক্তদের দোষী বানানোর জন্য আগে থেকেই সিদ্ধানত্ম নিয়ে নেয়া হয়েছে। ১০ জনের বিরম্নদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জন জামায়াতে ইসলামীর, ২ জন বিএনপির। আর দুই জনের একজন আশরাফুজ্জামান খান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মইনউদ্দিন চৌধুরী ব্রিটিশ নাগরিক। তাদের বিরম্নদ্ধে অভিযোগ তারা আলবদর বাহিনীর হয়ে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাঙালী বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছে।
১৯৯৫ সালে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের করা একটি গণআদালতে ১৬ জনকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করার পর থেকে বেশিরভাগ বাংলাদেশীর কাছে তা সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। ওই গণআদালতের প্যানেলের একজন সদস্যকে আনত্মর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এসব বিষয় পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলকে দুর্বল করার জন্য আগামী দুই বছরের মধ্যেই জামায়াত নেতাদের শাসত্মি কার্যকর করা হবে। এ ধরনের নগ্ন দলীয়করণের মাধ্যমে ন্যাযবিচার দেয়ার চার্চ বাংলাদেশ জন্মের প্রকৃত ইতিহাস রচনায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
প্রতিবেদনে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক এম এ হাসানের দেয়া তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, এই স্বতন্ত্র কমিটি তাদের তদনত্মে দেখিয়েছে, ১৯৭১ সালে ৯৫ শতাংশ বর্বর হত্যাকা- ঘটেছে পাকিসত্মানী সৈন্যদের হাতে।
থিওরি অনুযায়ী, পাকিসত্মানের দুটি অংশের ইসলামী ঐক্য সেখানে সমঝোতা করেনি। অথচ সেই পাকিসত্মানী সৈন্যদের কাউকেই আদালতে হাজির করা হবে না। এমনকি সে সময় পাকিসত্মানের অনুগত ও সমর্থক ১০ হাজার বিহারীকে যারা হত্যা করল তাদেরও আদালতে শাসত্মির মুখোমুখি করা হবে না। অভিযুক্তদের বর্তমান তালিকা দেখলেই বোঝা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সুবিধা অনুযায়ীই তালিকা করা হচ্ছে। আনত্মর্জাতিক মানের কথা বলে একটি স্বাধীন যুদ্ধাপরাধ বিচার আদালতকে প্রদর্শন করে শেখ হাসিনা বিচারের নামে নিজের কাজটিই বেশি আদায় করে নিচ্ছেন।
অভিযুক্তরা উচ্চ পর্যায়ের আনর্ত্মজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিচারকদের নিয়োগ করতে চাইলেও সরকার তাদের দেশটিতে প্রবেশ করতেই দিচ্ছে না।
এদিকে গত ১৭ নবেম্বর দি নিউইয়র্ক টাইমসের অপর একটি প্রতিবেদনে যুদ্ধাপরাধীদের পৰে প্রচার চালানো হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের পৰের একজন আইনজীবীর লেখা 'বাংলাদেশ : বিরোধিতা দূর করে খাপ খাওয়ানো নাকি প্রতিশোধ?' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যে পন্থায় যুদ্ধাপরাধের বিচার করা হচ্ছে তাতে আইনের আদর্শ, ন্যায়বিচার ও দায়বদ্ধতার অপব্যবহার হতে পারে। জন কেমেঘ নামের ওই আইনজীবী প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের পৰে আমি তিনজন ব্রিটিশ আইনজীবীর একজন। আমি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পৰে কাজ করার জন্য নিযুক্ত হই।
যেভাবেই হোক গত মার্চে আমি ম্যানেজ করে ঢাকায় যেতে পারলেও নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারিতে পড়ি। আমি বা অপর দু'জন ব্রিটিশ আইনজীবীর কেউই বিচারের কাজে অংশ নিতে পারিনি। আমাদের বাধা দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, ২০১২ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ চলবে। আর ২০১৩ সালে তাদের শাসত্মি কার্যকর করা হবে।
এটা যদি সত্যিই হয়, তবে বুঝতে হবে, এ বিচার প্রতিশোধ নেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।
উপরোক্ত খবরগুলো প্রকাশের পরে সচেতন মহল মনে করছে_ এই খবরগুলো মূলত ওই চুক্তির ফসল। এ না হলে যুদ্ধাপরাধীর পৰ নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের মতো পত্রিকা তাদের অনলাইন সংস্করণ ও বস্নগে এমন রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারে কি? অন্যদিকে সারাবিশ্বে রৰণশীল পত্রিকা হিসেবে পরিচিত ইকোনমিস্ট তাদের এশীয় সংস্কারণ এ ধরনের খবর প্রকাশ করে কিসের স্বার্থে?
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।