অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন নিশ্চিত করতে গাজীপুরে ভোট গ্রহণের দিন সেনাবাহিনী মোতায়েনেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে রাজধানীতে এক যুব সমাবেশে তিনি বলেন, সরকার গাজীপুরে ‘ভোট কারচুপির নীল নকশা’ করছে।
“আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, এই নির্বাচনে ভোট কারচুপি হলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। সেখান থেকেই সরকারকে চলে যেতে আন্দোলনের সূচনা হবে। ”
শনিবার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত এম এ মান্নান ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আজমত উল্লা খানসহ মোট ছয় প্রার্থী মেয়র পদে লড়ছেন।


গাজীপুরে সেনা মোতায়েনের পক্ষে যুক্তি দিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, ক্ষমতাসীন দল ঢাকা থেকে সন্ত্রাসীদের গাজীপুরে নিয়ে জড়ো করেছে। বিপুল পরিমাণ কালো টাকা ছড়ানো হয়েছে। ”
এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে একাট্টা হয়ে কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, “সেজন্যই আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সেনা বাহিনী মোতায়েনের আবারো দাবি জানাচ্ছি।
“নির্বাচন কমিশনকে বলব, এখনো সময় আছে সেনাবাহিনী মোতায়েনে ব্যবস্থা নিন।

নইলে যে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি হবে, এর দায়ভার নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তাবে। ”
চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর সরকার মারিয়া হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “জনগণ থেকে সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সিটি নির্বাচনের ফলাফলে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। বুধবার কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা ভোট লুট করেছে। এ থেকে প্রমাণ হয়, তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।

’’
লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সব গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু দেশে কোনো গণতান্ত্রিক সরকার নেই। এই সরকার একটি ফ্যাসিবাদী সরকারে পরিণত হয়েছে। ”
বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে পিটুনির ঘটনার  ‘দ্বিতীয় বার্ষিকীতে’ দোষীদের বিচারের দাবিতে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই যুব সমাবেশ হয়।
২০১১ সালের ৫ জুলাই হরতাল চলাকালে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিরোধী দলের সাংসদরা মিছিল করলে পুলিশের লাঠিপেঠায় আহত হন জয়নুল আবদিন ফারুক।


স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, আবেদ রাজা ও নাগরিক সংসদের সভানেত্রী খালেদা ইয়াসমীন সমাবেশে বক্তব্য দেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (জিটাব) এর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন-২০১৩ উপলক্ষে এক আলোচনা সভাতেও বক্তব্য দেন ফখরুল।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিতের জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র তা ফিরিয়ে দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী ফখরুল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, মহিলা দল সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি কাশেম হায়দার ও তাঁতী দলের সভাপতি হুমায়ুন ইসলাম খান বক্তব্য রাখেন।
এদিকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ অভিযোগ করেন, সরকার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ছিনতাই করতে বেপোরোয়া ও মরিয়া হয়ে উঠেছে।


“সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীকে জিতিয়ে নিতে দলীয় লোকজনকে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ”
ক্ষমতাসীনরা প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পরও নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান। স্বাধীন কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। ”
এনপিপির মহাসচিব ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল মবিন,  মুসলিম লীগের আনোয়ারুল ইসলাম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব আলমগীর মজুমদার, ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া ও ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।


।