বাস জার্নি আমার কখনও আনন্দময় কখনো বিষাদময় । এই জার্নিটার মত কখনও বিষাদময় হয়ে উঠেনি আমার বাস জার্নি। আপনাদের সাথে শেয়ার করার মাধ্যমে কিছু দরকারি মেসেজ তুলে ধরার ক্ষুদ্র চেষ্টা। সময়টা সম্ভবত জুন মাসের। আমি হঠা ৎ আমাকে একটি জরুরী কাজে চিটাগাং থেকে ঢাকা আসছি।
শ্যামলী বাস এর ১১ টার বাস এর শেষের দিকে একটি টিকেট পাই অনেক কষ্টে। শহরের জি.ই.সি. মোড় থেকে বাস এ উঠি। কিছুক্ষন পর দেখি দুটি ছেলে ও দুটি মেয়ে বাস এ উঠে এবং দেখি শেষ পর্যন্ত একটি মেয়ে ঢাকা যাবে একা। মেয়েটির সিট আমার রোয় এর একটি সিট এর পর। আমার কাছে একটু অবাক লাগল একা মেয়ে এই রাতে ঢাকা যাবে।
আমি আমার মত কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনছি র জানালার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। বাস চলতে শুরু করল ,অন্ধকার পথ পেরিয়ে অনেক দূর চলে আসলাম। হাল্কা হাল্কা শীত লাগছিল,বাস এর মাক্সিমাম যাত্রী ঘুমিয়ে ছিল। ওই মেয়েটি ও ঘুমিয়ে ছিল তবে একটি জিনিস দেখে আমার একটু অন্যরকম লাগল মেয়েটির সাথে অনেক গুলো ব্যাগ ছিল ইচ্ছে করলে ব্যাগ গুলো বাস এর নিচে বক্স এ দিতে পারত। কি জানি বেশি নিরাপত্তার জন্য হতে ও পারে।
কাহিনী র শুরু ঢাকার কাছাকাছি আসার পর। বাস মেঘনা-গোমোতী সেতু টোল দিচ্ছিল এর পর বাস সেতু র সামনে পুলিশ চেকিং। বাস এর সিরিয়াল। এর আগেও চেকিং হয়েছিল যতবার আসাযাওয়া করেছিলাম। আজ মনে হল একটু বেশিই।
আমাদের বাস এর সিরিয়াল আসল। পুলিশ এসে চেকিং করছে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড দেখালাম বলে তেমন কিছু চেকিং করে নেই আমাকে। একটা কথা বলে নেই পুলিশকে সহজভাবে চেকিং করতে দিলে তেমন ঝামেলা করেনা। যখন পুলিশ ওই মেয়েটির কাছে আসে তখন কিছুক্ষন পর পুলিশ জিজ্ঞাসা করল তখন হঠাৎ পুলিশ উত্তেজিত হয়ে মেয়েটিকে তার আইডি দেখাতে বলে। মেয়েটি বলে সে নেপালি আর চিটাগাং তার USTC বন্ধুদের সাথে দেখা করতে আসে তাই ভুলে আইডি আনেনি।
পুলিশটি আর ও উত্তেজিত হয়ে তার সাথে থাকা ব্যাগ গুলো ভালভাবে চেক শুরু করে। আমরা তাকিয়ে দেখতে থাকি বেপারটা কি আসলে?মেয়েটিকে খুব খারাপ ভাবে চেকিং শুরু করে তখন অনেক যাত্রী উত্তেজিত হয়ে উঠে। তখন মনে হয় ৪ টা বাজে। পুলিশ আরও ভালভাবে চেকিং এর জন্য মেয়েটিকে বাস থেকে নামায়। আমরা কিছু যাত্রী এর বিরোধিতা করি এবং নিচে নেমে ঘটনা দেখি এবং চেষ্টা করি যে মেয়েটা কে যাতে ধরে থানায় নিয়ে না যায়।
নিচে নেমে মেয়েটির সব ব্যাগ খোলে ভাল ভাবে চেকিং করে কিন্তু তেমন কিছুই পায় না। দুঃখ লাগল মেয়েটির প্রতি যে এত রাতে এভাবে পুলিশ কর্তৃক হেনস্থা হলো। পরে বাস চলা শুরু করল ঢাকায় এসে মেয়েটি দেখলাম ঊত্তরায় নামল। এর পর আমিও নেমে গেলাম। বাসায় এসে কিছুদিন থেকে আবার ক্যাম্পাস এ এসে এক কাছের বন্ধুকে ঘটনাটা বললাম।
ও এটা শুনে বেচারির জন্য দুঃখ প্রকাশ করল। আবার বলল যেহেতু মেয়েটি বিদেশি বাংলাদেশে লেখাপড়া করে তাই চলাচল করতে তার অব্শ্যই আইডি রাখা উচিত সবসময়। আমিও ওর সাথে একমত ছিলাম। রাতের একাকি জ়ার্নিতে এটা অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা হয়ে আছে। কিছু দিন আগে কোরবানীতে বন্ধে বাসাই আসি এটা আমার জন্য অন্য রকম মজার অভিজ্ঞতা।
আপনাদের সাথে শেয়ার করব অবশ্যই। ধন্যবাদ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।