আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাতির দুলাভাই!

I like to hear complain from my readers about my lacks.............................................আমি এক পরী যার ডানাও নেই, আকর্ষনও নেই ''দুলাআভাই'' বলে ডাক দিল মৌটুসী। দাতটা কটমট করতে লাগল অপুর, মনে চাচ্ছি একটা থাপ্পর দেয় নিজের গালে। কি দরকার ছিল বিয়ে করার, আর করবই এত হইচই দিয়ে কি হবে? মাঝখান থেকে ওর পকেটের সব টাকা শেষ। বরের আসনে বসে আছে অপু, আর মুখটা বাংলা-পাচ করে। বড় ভুল করে ফেললাম, ভাবতে লাগল অপু, কোন দরকার ছিলনা, কতটাকা মানিব্যাগে আছে? হতদিয়ে পকেট অনুভব করতে দেখল মইানিব্যাগ নেই।

হায় হায়, কি সর্বনাশ। বিয়ে বাড়িতেও চোর আছে নাকি! মনের দুঃখে উদাস হতে মনে চাচ্ছিল, আবার একই সাথে হিমিকে দেখতে ইচ্ছা করছিল। ওরা এখন আনেনি হিমিকে, কখন আনবে কে জানে! বসে বসে ভাবছিল চার ঘন্টা আগের কথা, যখন বিয়ে বাড়িতে আসার জন্য গাড়িতে বসেছিল। গাড়িতো না, মনে হচ্ছিল সে কোন গাধার পিঠে চড়ছিল। রাস্তায় কেটে গেছে টানা দুই ঘন্টা, শুক্রবারেও এত জ্যাম লেগে থাকলে কেমন লাগে! তারপর বিয়ে বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে পড়ল তার অতি দেখানো আদরের শ্যালক-শ্যালিকাদের ফান্দে।

ওদের আচরন দেখে মনে হচ্ছিল সে রাজপ্রাসাদে বা জাদুঘরে ঢুকছে, তাকে তাই দর্শনার্থী হিসেবে টিকেট কিনতে হবে। আরে সবাইতো আসবে তাকে আর হিমিকে দেখতে, দোয়া করতে, তবে ওদের এত টাকা টাকা করা বিরক্তিকর। তারউপর এই টাকা নিয়ে ঝগড়ায় কাটল টানা এক ঘন্টা। দাড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যাথা হয়ে গেছে। আগে জানলে সে বিয়েই করত না! তারপর উহাদের টাকার রেট শুনেতো মাথা গরম হবার অবস্থা, বলে কিনা পনের হাজার টাকা চাই বাড়িতে ঢুকতে।

নিরুপায় হয়ে দিতে হল, আর কতক্ষনই বা দাড়িয়ে থাকা যায়? হিমিকে ওরা নিয়ে এসেছে, খুব সুন্দরী মনে হচ্ছে ওকে। কিছুটা লজ্জিত মুখে ও তাকাচ্ছে অপুর দিকে। হাসি পেল অপুর, কিন্তু হাসতে পারল না সে। সবাই যেভাবে ড্যাব ড্যাব করে ওদের দুজনকে দেখছে তাতে মনে হচ্ছে ওরা চিরিয়াখানার জীবজন্তু। দুলাভাই চলেন খাবেন, বলে নিয়ে গেল বরকে খাওয়াতে ওর জানা অজানা হবু আত্মীয়দের দল।

বিয়ে নাকি পরে পড়ানো হবে। ''তাতে কি আসে যায়'' ওদের ভাব মনে হচ্ছে! এর পর শুরু হল ওদের চুরি, তবে এবার ওর জুতাটা নিল কয়েকটা টেবিলের নিচে ঢুকে। এরপর খাওয়া শেষ হলে ওরা দাবী করল আরও পাঁচ হাজার টাকা!ওরা ক্রমাগত ''দুলাভাই দিন'' বলে অপুর মাথা অর্ধেক নষ্ট করে দিল। বিপাকে পড়ল অপু, কোনমতে মৌনকে ডেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে জুতা পেল। আহ, বাচলাম, ভাবল অপু! বাড়ি ফেরার সময় বিপত্তি, গাড়িতে বসে জ্যামের মধ্যে বিরক্তি লাগছিলো।

একটা ছেলে জানালার ধারে এসে বলতে লাগল, ''দুলাভাই, কয়েকটা ফুল কিনে নেন আফার জন্য''। ''হায়রে, একটা বিয়ে করে কি জাতির দুলাভাই পর্যন্ত বনে গেলাম নাকি?'' ভাবল অপু! (সমাপ্ত) এবার আমাদের অবিবাহিত ব্লগার ভাইয়াদের জন্য কিছু টীপস(আপুরা না পড়লেও চলবে): ১. বিয়ে করার আগেই প্রয়জনীয় হল আপনার শ্যালক-শ্যালিকাদের ডিমান্ড ও সংখ্যা জেনে নেয়া। ডিমান্ড জানতে তাদের সাথে অথবা তাদের বোনের সাথে কথা বলতে পারেন। আর সংখ্যা জানতে যে কোন আত্মীয়কে জিজ্ঞেসা করুন। তবে এটা মনে রাখা ভাল, বিয়ে বাড়িতে এমন সব শ্যালক-শ্যালিকাদের দেখা পাবেন যাদের তিন বছরে একবার দেখা যায়, সুতরাং সেভাবে হিসেব করবেন সংখ্যা, আর ডিমান্ড বলতে বিয়েবাড়ির ভিতরে প্রবেশ করার জন্য যে টাকা প্রদান করতে হবে, তার রেট বুঝাচ্ছি।

এতে করে উহাদের কবল থেকে সহজে নিস্তার পেয়ে বাড়িতে প্রবেশ করতে পারবেন। ২. আপনার আদরের শ্যালক-শ্যলিকাদের ''জুতা খুলে খান দুলাভাই'' নামক আবদারে বিচলিত না হওয়াই ভালো। কেননা ওরা আপনার জুতা খুলিয়ে আপনার কাছে টাকা আদায় করার ফন্দি করছে। এখেত্রে আপনার যদি ওদের আবদারের কাছে পরাজিত হবার সম্ভাবনা থাকে তবে আপনার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে অতিরিক্ত এক জোড়া জুতা নিয়ে যাওয়া। তবে জুতা আপনার বিশ্বস্ত এমন কারো কাছে রাখবেন যে আপনার সর্বসময় কাছাকাছি থাকবে, বিশেষ করে খাবার সময়।

তাছাড়া উহারা যদি বুদ্ধিমান/বুদ্ধিমতী হয়ে থাকেন, তবে টেবিলের নিচে দিয়েই আপনার জুতা চুরি করতে পারেন। সুতরাং, সাবধান! ৩. বিয়ে বাড়িতে শ্যালক-শ্যালিকাদের চোর্যবৃত্তির কবলে পড়তে পারে আপনার মানিব্যাগ, সুতরাং আপনি তা বিশ্বস্ত কারো কাছে রাখতে পারেন। অথবা আপনি যদি মজা করতে চান আপনার শ্যালক-শ্যলিকাদের সাথে, তবে শুধু টাকাবিহীন মানিব্যাগ রেখে দিন। মনে রাখবেন সাবধানতা অবলম্বন করাই বুদ্ধিমানের কাজ! সবাই ভালো থাকুন! ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।