আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রবি আর শেভ্রনের কোটি কোটি টাকা কর ফাঁকিঃবহুজাতিক কোম্পানির অবাধ লুণ্ঠন আর শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য ঘটনা-১ঃ ২০০৬ সালের আগস্ট থেকে ২০০৭ সালের মার্চ পর্যন্ত সিমকার্ডের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ রবির কাছে পাওনা ৯০ কোটি ৯০ লাখ টাকা দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পরিশোধে গড়িমসি করে আসছে রবি। এনবিআর এর চাপে গতকাল কর পরিশোধের নির্ধারিত সময়ের শেষ দিনে রবি মাত্র পাঁচ কোটি কর দেয় এবং বাকি ৮৫ কোটি টাকা পড়ে পরিশোধ করবে বলে আশ্বাস দেয়, কবে কখন এই টাকা পরিশোধ করবে নাকি পুরাই মেরে দিবে তা বলা মুশকিল কারন এর আগেও সিম বদল জালিয়াতির মাধ্যমে ৬৫৫ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে রবি! এই রবিই আবার বলে জ্বলে উঠুন আত্মশক্তিতে! কার আত্মশক্তি? এই কোম্পানি যেভাবে বাংলাদেশের ৭৪০ কোটি টাকা মেরে দিল তাতে তো মনে হচ্ছে এদের কাজই হচ্ছে দুর্নীতি, লুটপাট আর শোষণের অগ্নিতে বাংলাদেশকে দগ্ধ করার শক্তিতে বলিয়ান হওয়া। শুধু রবি না, গ্রামীণ ফোন এর বিরুদ্ধেও কোটি কোটি টাকা লুণ্ঠনের অভিযোগ আছে। এরাই আবার বাহারি আর আবেগি বিজ্ঞাপনে দেশপ্রেমিকের গান গায়, স্বাধীনতা, একুশ এখন এদের বিজ্ঞাপনে জ্বলজ্বল করে উঠে পুঁজিবাদের দানবীয় শক্তিতে, দেখুন রবির দেশপ্রেমিকের গানঃ https://www.facebook.com/photo.php?v=495762287152920&set=vb.189729221039415&type=2&theater এইসব মোবাইল কোম্পানি বিজ্ঞাপনে একুশ, স্বাধীনতা, জাতীয় পতাকা এই বিষয়গুলো ব্যাবহার করে গণমানুষের আবেগ অনুভূতিকে পুঁজি করে নিজেদের ব্যবসায়িক ইমেজ বৃদ্ধি করে কেননা জনগণের গভীর অনুভূতি আর আবেগ যেসব বিষয়কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় তাকে সহজেই ব্যাবহার করে কোম্পানির প্রতি এক ধরনের সহনশীল মনোভাব সৃষ্টি সম্ভব। দেশের কোটি কোটি টাকা লুণ্ঠন করার কাজে যারা নিয়োজিত সেই বহুজাতিক কোম্পানির শোষণ আর লুণ্ঠনের বিজ্ঞাপনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা আর বিজয় দিবস, আমরা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে দেশাত্মবোধক গানে আর প্রতীকে তাই দেখে এসেছি।

ঘটনা-২ঃ বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের শীর্ষ বহুজাতিক মার্কিন কোম্পানি শেভরনের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৩ কোটি ডলার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে । রাজস্ব ফাঁকি দিতে শাখা অফিস না খুলে লিয়াজোঁ অফিসের নামে ব্যবসা পরিচালনা করছে শেভ্রন এবং লিয়াজোঁ অফিসের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার কারণে রাজস্ববঞ্চিত হয়েছে সরকার। (Click This Link) আসলে বাহ্যিকভাবে দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্হা কায়েম থাকলেও শাসকগোষ্ঠী মূলত বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত;৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেললেও শাসকগোষ্ঠীর কাজ হচ্ছে বাংলাদেশকে বহুজাতিক কর্পোরেশনের কাছে ইজারা দেয়ার মিশন বাস্তবায়ন করা, এদেশকে বহুজাতিক কোম্পানির লুটপাটের অভয়ারণ্য বানিয়ে তারা বাংলাদেশকে পরিণত করেছে সাম্রাজ্যবাদীদের নয়াউপনিবেশে । দেশের বিরোধী দল বিএনপি, জামাত, জাতীয় পার্টি এসব গণমুখী বিষয়ে প্রতিবাদ প্রতিরোধ এবং আন্দোলন না করে সাম্রাজ্যবাদীদের এবং তাদের মালিকানাধীন বহুজাতিক কোম্পানির প্রতি তাদের নিরঙ্কুশ আনুগত্তের প্রমাণ জানান দিচ্ছে। আশির দশক থেকে বাংলাদেশে নিওলিবারেল পলিসির বাস্তবায়ন এবং তার প্রেক্ষিতে এদেশের বাজার ও সেবা খাতে বহুজাতিক কোম্পানির আগ্রাসন, দেশের তেল গ্যাস খনিজের উপর সাম্রাজ্যবাদীদের মালিকানাধীন TNC এর নিরংকুশ মালিকানা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দেশের সম্পদের লুণ্ঠন, অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে বিদেশি আধিপত্ত প্রতিষ্ঠা এই প্রত্যেকটি বিষয়ে বাংলাদশের মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলার অবস্থান ছিল জাতীয় স্বাধীনতা এবং স্বার্থের পরিপন্থি।

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সমাজপরিবর্তনের রাজণৈতিক-সামাজিক শক্তিকে অবশ্যই গ্লোবাল ইম্পেরিয়ালিজম এবং গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে, অবস্থান নিতে হবে তাদের দেশিয় এজেন্সির বিরুদ্ধে। সেই শক্তি জামাত, বিএনপি-আলীগ কেউ তো নয়ই বরং এরা প্রত্যেকেই তার সহযোগী। দেশের বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে প্রতিবাদের আশা না করে বহুজাতিক কোম্পানির অবাধ লুণ্ঠন আর অবৈধ শোষণের বিরুদ্ধে জনগণকেই রুখে দাড়াতে হবে। আজ তাই বাংলাদেশের জনগণের তরফ থেকে গণমুখী রাজনীতির অভিমুখ হওয়া উচিত নয়া উপনিবেশবাদ , ইম্পেরিয়ালিজম এবং গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম এর মোকাবিলার জন্য নতুন সামাজিক ও রাজনৈতিক শক্তির উত্থান। আজ এই মহান স্বাধীনতা দিবসে সেই শক্তির উত্থান কামনা করছি!  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।