বাঙলা কবিতা -------------------------
সব যুগেই ওরা পাহাড়ের দিকে যেতে চেয়েছিলো; ডিমের নৈঃশব্দ্য ফুটে, গড়-পড়তা, বারো লক্ষ প্রতিধ্বনি জন্ম নেয়- এই সত্য প্রমাণ করতে চেয়েছিলো; ধ্বনির রূপারঙ মেখে দিতে চেয়েছিলো, পাষাণের মত শাদা বরফের গায়ে। তারপর... হিমশয্যা, রান্নাঘর...
লোহার তীক্ষ্ণতা দিয়ে, রূপার আকাঙ্খাগুলি কর্তনের কালে, স্বপ্নের পেট থেকে প্রায়ঃশই পাওয়া যেতো বহু গুপ্ত ধন। এই তো সে দিন, পাওয়া গেল টাটকা এক কব্জি, মানুষের। সেই হাত কার ছিলো? সন্ধান মেলেনি; শণাক্তকরণ-চিহ্ন নেই। কব্জির চোখ-মুখ-দন্তাদি থাকে না।
অথচ আঙুলে যে-আংটিটা ছিলো, জানা গেল, আকবর বাদশার! আংটির নানামুখি চিহ্নাদি থাকে, ইতিহাস-পরিচিতি থাকে। নিহত হবার পর কোনও কিছু অবশিষ্ট হয়তো থাকে না--- মানুষের, ইলিশের।
প্রত্যেক বর্ষায় তবু কোটি কোটি ডিমের নৈঃশব্দ্য পেটবন্দি ক'রে ছুটে আসে ইলিশের দল, হিমালয় খুঁজে খুঁজে যেতে চায় নদীর উজানে।
বার বার বর্ষা আসে কেন?
------------------------
২.
মানুষ নদীর মত। প্রকাশ্যে বিভক্ত হয়ে যায়।
ইলশেভোজী মানুষেরা উৎকর্ণ, জেগে থাকে বাংলাদেশে, ত্রিপুরাতে, পশ্চিমবাঙলায়, আসামের বরাক অঞ্চলে; ফলে তো ইলিশ চার-টুকরো হয়ে যায়! কে পায় মাথার ঘৃত্যমধু, লেজ, পেটির তেলুক স্বাদ; ডিমের নৈঃশব্দ্য কে পায়?
রূপনারাণের জলে, গোদাবরে, পদ্মা-মেঘনায় তুমুল ইলিশ-আলোড়ন! ওদিকে তিস্তার স্রোতে বাঙালির স্বপ্ন ভেসে যায়, এতিমের মত, হু হু দক্ষিণের দিনে। রাই-সরিষার ক্ষেত, বেগুন-বাগান বিরহের দোঁহা গেয়ে ওঠে। আমাদের হৃৎপিণ্ড তড়পায়।
হায়!
এই ঘরহীন পরিযায়ী যাযাবর মাছ, পদ্মা-মেঘনা-যমুনার ত্রিবেণীসঙ্গম থেকে হঠাৎ ছিটিয়ে দেয় জ্যোৎস্নারঙ রূপবতী আঁশ, নীতির টেবিলে। ত্রিপক্ষ বৈঠক বয়ে যায়...
-------------
৩.
ইলিশ।
স্যামনের মত তুমি অভিবাসী। অ্যানাড্রোমাস। লোভনীয় মাছ। গাঙ্গেয় ত্রিবেণীময়, রাজনৈতিক হাসি। ফিসফিস।
ফিস!
পদ্মার পরী তুমি। গরীবের বউ। আপনা মাছে বাঙালি বৈরী। এদেশের দুঃখ তুমি। আমিষ-পুরাণ।
----------------
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।