আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরব বসন্তের উথ্থান পতন.....

প্রায় দুই বছর আগে ইরানের নির্বাচনের পর থেকে শুরু হওয়া মধ্যপ্রাচ্যের বিক্ষোভে তিউনিশিয়া ও মিশরে একনায়কতন্ত্রের পতন হয়েছে। সবশেষ লিবিয়ার স্বৈরশাসক গাদ্দাফি নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে আরব বিশ্বের আরেক একনায়কের অবসান ঘটলো। এছাড়াও জর্ডান, মরক্কো, আলজেরিয়া, ইয়েমেন, লেবানন, বাহরাইন ও সিরিয়াসহ কয়েকটি দেশে বিক্ষোভ চলছে। আরব বসন্তের’ ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছে এক দেশ থেকে অন্য দেশে। অন্যদিকে গ্রীসে ব্যয় সংকোচন, যুক্তরাজ্যে শেয়ার মার্কেট এবং যুক্তরাস্ট্রেও শুরু হয়েছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আন্দোলন।

তিউনিশিয়ার এক গ্রাজুয়েট হকার ছিলেন বুআজিজি। তার ফল বিক্রির গাড়িটা অন্যায়ভাবে আটক করে পুলিশ। এমন জুলুমের প্রতিবাদে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহুতি দেন বুআজিজি। ৪ জানুয়ারী বুআজিজির মৃত্যু দেশটিতে জনরোষের সঞ্চার করে। দুর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধি আর ব্যাপক দারিদ্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের জমা ক্ষোভ প্রতিবাদী মিশরবাসী আন্দোলনে ফেটে পড়ে।

শেষ পর্যন্ত বেন আলি দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। তিউনিশিয়ার দেখানো গণপ্রতিরোধ উদ্দীপ্ত করে মিশরকে। ৩০ বছর ধরে চলা মুবারকের পদত্যাগের দাবীতে মানুষ পথে নেমে আসে। রাজধানী কায়রোর তাহরীর স্কোয়ারে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রতিবাদী জমায়েত হয়, বিক্ষোভ চলে লাগাতার। অনেক টালবাহানার পর গণপ্রতিরোধ শেষপর্যন্ত মুবারককে ক্ষমতা ও দেশ ছাড়তে বাধ্য করে।

তিউনিশিয়া ও মিশরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সফল বিপ্লবের প্রেরণা ছড়িয়ে পড়ছে ‘মধ্যপ্রাচ্যের’ দেশে দেশে। লিবিয়া, ইয়েমেন, বাহরাইন, জর্ডানসহ আরব বিশ্বের অনেক দেশেই গণবিক্ষোভের ঢেউ লাগে। এর মধ্যে লিবিয়ার পরিস্থিতি ছিলো সবচেয়ে উত্তপ্ত। তবে অন্যান্য আরব দেশের তুলনায় লিবিয়ার পরিস্থিতি ছিলো কিছুটা ভিন্ন। শুরুতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হলেও পরে তা রূপ নেয় সশস্ত্র যুদ্ধে।

সেখানে ন্যাশনাল ট্রানিজিশনাল কাউন্সিল-এনটিসি'র আবির্ভাব ঘটে এবং ন্যাটোসহ পশ্চিমা দেশের সহযোগিতায় অবশেষে পতন ঘটে চার দশকের স্বৈরশাসক কর্ণেল গাদ্দাফির। এদিকে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লা সালেহর পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ চলছে। জনবিক্ষোভের মুখে ৩২ বছরের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বদলে সংসদীয় পদ্ধতি চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি আলী আবদুল্লাহ সালেহ। এ বছরই সেখানে নতুন নির্বাচনী আইনে গণভোটের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। জর্ডনের প্রধানমন্ত্রী সামীর রিফাই এর পদত্যাগের দাবীতে জর্ডানে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্ট, বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন ও বামপন্থী সংগঠন এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আরব দুনিয়ার এই বিক্ষোভ বিশ্ব রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে নতুন দিশা হাজির করছে। বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু এই দেশগুলি হয় রাজতান্ত্রিক বা একনায়কতান্ত্রিক। জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে বাহরাইনের সেনা প্রধানকে বিক্ষোভ দমনে যে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন দেশটির বাদশাহ হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা। সারা আরব বিশ্বে হঠাৎ করে গণবিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আর এই গণবিভোক্ষে সংগঠিত করছে তরুণ সমাজ, যারা ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে একের পর এক পরিবর্তন ডেকে আনছে আরব বিশ্বে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।