আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছয় বছর শিকল বন্দি এক বৃদ্ধ

দীর্ঘ ৬ বছর যাবত্ শিকলবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মানসিক ভারসাম্যহীন খোরশেদ আলম। পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় রাখা হয়েছে এই হতদরিদ্র বৃদ্ধকে। নিজ ঘরের বাইরে ৪টি ঢেউটিন দিয়ে ছাউনি দিয়ে সেখানে সারাক্ষণ রাখা হয় তাকে। সেখানেই খাওয়া - দাওয়া, সেখানে মলত্যাগ, সেখানে ঘুমানো, আবার সেখানে বসবাস ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কলাকান্দা গ্রামে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানসিক ভারসাম্যহীন খোরশেদ আলম পায়ে শিকলবন্দি অবস্থায় নিজ বসত ঘরের পিছনের বারান্দায় বসে রয়েছেন।

সাংবাদিককে দেখে খোরশেদ হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে হাউমাউ করে বলে উঠেন মা আমাকে ভাত দাও। তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ছুটে আসে সাংবাদিকের কাছে। কথা হয় রোকেয়া বেগমের সাথে। স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানান, আজ থেকে ৬ বছর যাবত্ তার স্বামী খোরশেদ আলম মানসিক ভারসাম্যহীন। তার পায়ে শিকল কেন জানতে চাইলে স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানান, বাড়ির পাশেই পাকা রাস্তা ও ছোট খাল রয়েছে, শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা না হলে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা গাড়ির নিচে কিংবা খালে পরার আশঙ্কা রয়েছে।

তাই তাকে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, আজ থেকে ৬ বছর পূর্বে ঢাকার সাভারের হেমায়েত পুরে কলাকান্দা গ্রামের মিলন মিয়ার একটি বাড়িতে নৈশ প্রহরী হিসেবে চাকরি করাকালীন সময়ে এক দিন রাতে হঠাত্ খোরশেদ স্ট্রোক করে। পরে সকালে মহাখালি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চার-পাঁচ দিন হাসপাতালে রাখার পর ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র লিখিয়ে ভাল মত চিকিত্সা না করিয়েই তার গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তবে ঐ সময় তিনি মোটামুটি সুস্থ ছিলেন।

বাড়িতে আনার পর আর্থিক দৈন্যদশা ও নানান টানাপোড়ন আর অভাব- অনটনের কারণে সে ডাক্তারী চিকিত্সাপত্র অনুযায়ী ওষুধ না খাওয়ার কারণে দিন দিন খোরশেদ প্যারালাইসেস হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারাতে থাকেন। তাদের কোন সহায় সম্পদ না থাকায় শেষ সম্বল দুটি গরু বিক্রি করে ১০ হাজার টাকা দিয়ে চিকিত্সা করতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ঢাকায়। কিন্তু তার এ রোগের চিকিত্সায় ব্যয় বহুল ও দীর্ঘমেয়াদী হওয়ার কারণে তার পরিবারের পক্ষে আর সম্ভবপর হয়নি Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।