আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দ্য বার্ণিং এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস

নরসিংদীর জনপ্রিয় মেয়র ও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় তরুণ নেতা লোকমান হোসেনকে হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রলীগ ও বিক্ষুব্ধ জনতা পুড়িয়ে দিল এগার সিন্দুর এক্সপ্রেস। স্থানীয় সরকার প্রশাসনে সুকৃতির জন্য দুবার গোল্ড মেডেল পেয়েছেন লোকমান। এই সরকার আওয়ামী লীগের লোকমানের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আমরা আমজনতা কী রকম নিরাপদ আছি তার প্রমাণ পুড়ে যাওয়া এগারসিন্দুর। ঈদে ঘরমুখী আমজনতার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।

আওয়ামী লীগের নেতা নিহত হলে জনগণের রক্ত পানি করে কেনা ট্রেন পুড়িয়ে ফেলতে হবে? এ কেমন রাজনৈতিক শিক্ষা। লোকমান দেশপ্রেমিক ছিলেন, কিন্তু তার মৃত্যুতে দিশেহারা লীগ কর্মীরা দেশদ্রোহীর মতো আচরণ করেছে আমজনতার জীবন ও সম্পদ বিপন্ন করে। মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকান্ড চালিয়েছে। ফলে হত্যাকান্ডের হোতাদের খুঁজে বের করতে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হবে। এই হত্যাকান্ডের কারণ জানা যায়নি।

তবে দলীয় কোন্দলের জের হতে পারে এই হত্যাকান্ডের কারণ। নরসিংদীর ছাত্রলীগ ও লোকমানের আত্মীয়দের বয়ান থেকে এরকম একটি অনুমান করা যায়। আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক মন্ত্রী্র দিকে অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে দলীয় কর্মীদের মাঝ থেকেই। এত অল্প বয়েসে লোকমান জনপ্রিয় নেতা হয়ে উঠেছেন এতে আওয়ামী লীগের আদু ভাই রাজনীতিবিদদের চক্ষুশূল হতে পারেন তিনি। তদন্তের আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে পুলিশ গভীর রাতে বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনকে তুলে নিয়ে গেছে। খোকন যেহেতু ঐ এলাকার বিরোধী দলীয় নেতা প্রাথমিক সন্দেহের তালিকায় তিনিও থাকতে পারেন। তবে খোকনের শত্রুতা স্থানীয় এক মন্ত্রী্র সঙ্গে থাকতে পারে। নরসিংদীর তরুণ মেয়রের সঙ্গে খোকনের শত্রুতার কোন কারণ থাকতে পারে কিনা পুলিশ নিশ্চয়ই খুঁজে বের করতে পারবে। কিন্তু খোকনের মতো একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদকে গভীর রাতে তুলে না নিয়ে গিয়ে সম্ভবত তাকে ডেকে পাঠালেই উনি পুলিশের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন।

অন্যদিকে অভিযোগের আঙ্গুল একজন মন্ত্রীর দিকে থাকলেও তিনি এখনো অধরা। এইখানে বাংলাদেশ রাজনীতির প্রতিহিংসা পরায়ণতার মিথটি আরো পোক্ত হলো। শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জে দেখেছেন কীভাবে শামীম ওসমান যুগের অবসান ঘটে আইভী এগিয়ে গেল। নিহত লোকমান ছিলেন আরেকজন আইভী। আমজনতার নেতা।

সুতরাং আওয়ামী লীগের তরুণ আমজনতার নেতাদের শত্রু আওয়ামী লীগের গডফাদার আদু ভাইয়েরা এটা হাসিনা যত তাড়াতাড়ি বোঝেন তাতেই মঙ্গল। খোকন ডাকসুর সাবেক জিএস ও সাবেক সাংসদ। তাকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করা হলে বিএনপির জনপ্রিয়তা বাড়বে। শত্রুতার সবগুলো ফ্রন্ট ওপেন করে বাংলাদেশের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ জেতা অসম্ভব। বিএনপি যেভাবে বলে এসেছে দেশে গ্যাস-বিদ্যুত-পানি নেই আবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।

আওয়ামী লীগ লাগেনি, আমজনতাই এর উত্তর দিয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গ্যাস-বিদ্যুত-পানির কী সম্পর্ক। একিভাবে আওয়ামী লীগ যেকোন নাশকতার সঙ্গে যুদ্ধাপরাধী বিচারের যোগসূত্র খুঁজলে তা হালে পানি পাবে না। বিচার চলছে ট্রাইবুনালে, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে র্যােব-পুলিশ। আওয়ামী লীগের কাজ দেশ চালানো, সেই কাজে মনোনিবেশ করা জরুরী। দেশের নানা জায়গায় চোরাগুপ্ত হামলা হচ্ছে।

এই হামলাকারীদের খুঁজে বের করার কাজটি হোম মিনিস্ট্রি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অধিকাংশ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না। বাংলাদেশের নির্বোধ রাজনীতির বলি লোকমান, এগারসিন্ধুর ট্রেন, বিপন্ন ট্রেন যাত্রীরা। আর লোকমান হোসেন অজাতশত্রু এক দিনবদলের নেতা। তার অপরাধ তিনি সৎ ও জনপ্রিয়।

তার মৃত্যুতে দলিত পরিচ্ছন্ন কর্মীরাও বিক্ষোভ করেছে যারা কোন দলের নয়। পুরো নরসিংদী জুড়ে ছড়িয়ে আছে নরসিংদীর এই সোনার ছেলের জনপ্রিয়তার চিহ্ন। মানুষের ভালোবাসাই তার শত্রু হলো। কারণ তার উত্থানে দিশেহারা রাজনীতির অচল মালেরা। নরসিংদীর তরুণেরা ঠিকই বুঝতে পারছে সারাদেশে দুটো লড়াই চলছে।

এক। জামাত-বিএনপির জঙ্গী লুটেরাদের বিরুদ্ধে লড়াই। দুই। আওয়ামী লীগের গডফাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই। ছাত্রলীগের কর্মীদের ক্ষোভের আগুণের তাপ আমরা অনুভব করতে পারি।

রাজনীতির গডফাদার লুটেরাদের গাড়ী-বাড়ী পুড়িয়ে দাও। কেন পোড়ালে এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস। রাষ্ট্রের সম্পদ পোড়ানো মানে নিজেকে পোড়ানো। প্রিয় সাহারা খাতুন ব্লেম গেমে সময় নষ্ট না করে, সত্যিকার অপরাধীকে খুঁজে বের করুন। সে খোকনই হোক আর ঐ আওয়ামী মন্ত্রীই হোক বা যেই হোক।

লোকমান হত্যার বিচার না হলে সোনার ছেলেরা দিন বদলে দিতে আর রাজনীতিতে আসবে না, রাজনীতি বন্দী থেকে যাবে গডফাদারের হারেমে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।