আমার ব্যক্তিগত ব্লগ {ভূমিকা: বড় বিলাই এর ইরান যাওয়া ঠিক হওয়ার পর ওকে আমার ডায়রী দিয়ে বলেছিলাম ভ্রমন কাহিনী লিখতে}
২২শে সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার, ১৯৯৪ রাত ৮টা, বাংলাদেশ
আর এক মাস। এক মাস পর ইরানে ক্বেরাত আর হিফজ প্রতিযোগিতা শুর হবে। বিভিন্ন দেশের ১২ থেকে ১৮ বছরের ছেলে মেয়ে এতে অংশ নিবে। বাংলাদেশ থেকেও ৪ জন ছেলে মেয়ে যাচ্ছে।
এবার নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে কেন এই ভুমিকা? হ্যাঁ বাংলাদেশ থেকে ক্বিরআতে মেয়ে হিসাবে আমার সুযোগ হয়েছে।
সুযোগটা ভাগ্যক্রমেই হঠাৎ এসে গেল।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার কথা শুনলেই আমার পেট কামড়ায়। শ্বাস ফুরিয়ে আসে। তবুও বাছাই পর্বে টিকে গেলাম। কিভাবে টিকে গেলাম তাহলে সেটা বলি।
বাছাইয়ের দিন ইসলামিক ফাউন্ডেশনে গিয়ে দেখি তারানা বসে আছে। ও আমার চেয়ে ভাল সুর আনতে পারে। কাজেই আমার আশা ভরষা একধাপ নিচে নেমে গেল। সমস্ত আশা কিভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল বলি,
প্রথম ধাপ: আগেই বলেছি তারানাকে দেখে
দ্বিতীয় ধাপ: কিছুক্ষনের মধ্যেই ফাতিহা ও আয়েশা সিদ্দীকা নামে দুজন ভাল ক্বারীয়ার দেখা পেলাম
তৃতীয় ধাপ: আরও কিছুক্ষন পর তানজিনার দেখা পেলাম। ও আমার চেয়ে ভাল পড়ে না জানি।
তবুও একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
চতুর্থ ধাপ: আরোও কিছুক্ষন পর হাসি অর্থাৎ জোহরা এলো। ও আমার চেয়ে অনেক ভাল পড়ে। কাজেই আমার আশার প্রদীপ নিবু নিবু করতে লাগল।
পঞ্চম ধাপ: ব্যস।
এই ঝাপটারই দরকার ছিল, আমার নিবু নিবু প্রদীপ নেভানোর জন্য। বুঝতেইি পারছেন কার কথা বলছি। তুসি। খুলনার মেয়ে তুসি। যেমন আর দম, আর তেমনি তার সুর।
আর চিন্তা নেই। সম্পূর্ন নিশ্চিত হতে আর বাকি নেই।
এখন ভাবছেন সম্পুর্ন নিশ্চিত হবার পরও যখন আমিই টিকলাম তখন নিশ্চয়ই খুব ভাল পড়েছি। না তা নয়। আমি যেই তিমিরে ছিলাম, সেই তিমিরেই আছি।
তাহলে?
রহস্যটা তাহলে খুলেই বলি। সাধারনত: প্রতিযোগিতায় আমি গলা আটকে বোবা হয়ে যাই। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে এবার কোথাও না আটকে পড়ে গেলাম। আর অন্যরা নানা কারনে আটকে গেল। আচ্ছা কারন গুলো খুলেই বলি।
তানজিনা সাধারনত: একটা সুরা অনেকদিন বার বার না পড়লে ভাল পড়তে পারে না। প্রতিযোগিতায় মাত্র ৩০ মিনিট আগে সুরা হাতে দেয়া হয়, তাই সে ভাল মতোন আয়ত্ব করতে পারে নি।
তারানাকে প্রথমে একটি সুরার প্রথম থেকে ৬ আয়াত পড়তে দিয়ে পরে ৬ থেকে ১২ আয়াত পড়তে বলা হলো। ফলে সে হাতে সময় পেল ১০ মিনিট। এতো কম সময়ে সে ঠিক মতোন প্রস্তুতির সময় পায়নি।
ফলে...।
জোহরা সূরা পড়ার সময় শেষের আয়াত বাদ দিয়ে পড়েছিল। কাজেই সেও বাদ হয়ে গেল।
আর তুসি। যাকে নিয়ে এতো নিশ্চিত ছিলাম, সেও পড়ার সময় হঠাৎ ভুল করলো।
এতো কিছুর পরও কিন্তু আমার চেয়ে ০.৫ নম্বরে এগিয়ে ছিল ফাতিহা। কিন্তু না। তার বয়স আবার ১৮ এর বেশি হয়ে গিয়েছিল।
অর্থাৎ আমার ইরানে যাওয়া নিশ্চিত হলো। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।