যেখান থেকে শুরু হয়েছিল আর যেখানে আমার থামা হল, এ দুই আমার নিজের কাছেই ব্যাখ্যাতীত।
মসৃণ, বাঁধাহীন, নিরুদ্বিগ্ন পথে আমার গতি স্বভাবতঃই প্রচণ্ড আর উদ্দাম ছিল, তাই ধাক্কা যখন খেলাম, এক ধাক্কাতেই চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেলাম, কিচ্ছু করার থাকল না আমার। বুঝলাম, স্বাভাবিক মৃত্যুর অপেক্ষা ছাড়া জীবনের আর কোন অর্থ থাকল না কিন্তু, অহংকারটুকু তখনও যায় নি, তাই গুড়িয়ে যাওয়া পঙ্গু আমি চট করে গায়ে জড়িয়ে নিলাম অভিনয়ের চাঁদর। হাসিটা আমার বড় মোক্ষম ছিল কাজেই অভিনয়কে পরিপূর্ণ নিখুঁত করতে মোটেই বেগ পেতে হল না আমার।
আমার তো কখনও কোন বন্ধু ছিল না, ভাই বলিস, আপন বলিস, বন্ধু বলিস সবই তুই আমার একা ছিলি।
আমার কথা আমি তোকেও জানাই নি, জানাতে পারি নি। সেটা নিজেকে ছোট করব না এই অহংকারে নাকি তুরা কোন সমাধান দিতে পারবি না বরং সমস্যা আরও বাড়বে এই আস্থার সংকটে নাকি আমার বোঝাটা বইতে তোদের যে কষ্ট হবে তা আমি সইতে পারব না এই মমতার দায়ে সে হিসেব করি নি কখনও, ইচ্ছে হয় নি হিসেব করতে। নাগালে যা কিছু পেয়েছি তাই দিয়েই আমি আমার মনের চারপাশে প্রাচীরের পর প্রাচীর গড়েছি, ছিদ্রগুলো বন্ধ করতে থেকেছি প্রতিনিয়ত। চলছিল তো ভালই।
ঘটনা এবং অবস্থার পট পরিবর্তনে তুই দূরের মানুষ হয়ে গেলি, তুই হলি নাকি আমি দূরের করতে বাধ্য হলাম জানি না।
এদিকে কেমন করে কিভাবে আমার মনে টর্ণেডো এল বুঝতে পারলাম না। উড়ে গেল অভিনয়ের চাদর, ভেঙ্গে গেল সমস্ত প্রাচীর, প্রকাশিত অসহায় আমার লজ্জা ঢাকবার আর কোন উপায়ই রইল না।
আমি পাগোল হয়ে গেছি, আমি স্বার্থপর, আমি নষ্ট মেয়ে, যার যা খুশি তাই তুরা ভাবলি, বললি, সে রকম আচরণও আমার সাথে করলি, কোন প্রতিবাদ করতে পারলাম না। ভালই হল। মৃত্যুর জন্য নিরহংকার, শান্ত, সৌম অপেক্ষা।
এখন শুনছি, আমার আমেরিকায় যেতে হবে। কেন রে? আমার কাগজ ছাড়া তুই অন্যদেরগুলো জমা দিবি না বলে চার বছর অপেক্ষা করলি, নিজে এসে সব নিয়ে গেলি। কেন বুঝিস না মৃতের জন্য জীবনের আয়োজনকে বাধাগ্রস্থ করতে নেই? এখন জোরে শোরেই শুনছি যেতে হবে।
আমার জীবনটাকে কঠিন থেকে কঠিনতর না করলে কি তোদের চলছেই না! কি করব আমি ওখানে গিয়ে! মানুষের বাসায় আয়া-বুয়ার কাজ করব নাকি দুয়ারে দুয়ারে ঘুরব আর বেকার ভাতা খাব? সার্টিফিকেটগুলোকে মনে হয় মূল্যহীন কাগজ, আত্মবিশ্বাস যে কোন এক সময় ছিল তাও ভুলে গেছি। কি করে বুঝাই তোদের স্বপ্নের ভারও আমার কাছে এখন বিষম ভারী!!??
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।