আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই আমার দেশ, এই আমার জন্মভূমি, এই তাদের স্বাধীনতা!! (প্লীজ, পারলে একবারের জন্য হলেও দেখেন)

"মাসুদ পারভেজ মিঠু" দ্যা "পেক পেক পেক" বয়!!! ছোটবেলা থেকে জেনে আসছি (বা পড়ে আসছি বলে পারেন) যে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা যেকোন একটা দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা বা অধিকার। আমাদের এই দেশ বাংলাদেশ। আমাদের বীর শহীদদের রক্তে অর্জিত স্বাধীন দেশ বাংলাদেশ। আমাদের মাতৃভুমি বাংলাদেশ। এখনো আমরা চাই যে আমাদের এই বাংলা মায়ের কোলেই যেন আমাদের মৃত্যু হয়।

আসলে আমাদের এই দেশ আমাদেরকে সবই দিয়েছে। বেঁচে থাকার জন্য দিয়েছে খাদ্য, সমাজে চলার জন্য দিয়েছে বস্ত্র, বাসস্থান, মাথা উঁচু করে দাড়ানোর জন্য দিয়েছে শিক্ষা আর বোনাস হিসেবে দিয়েছে চিকিৎসা! কিন্তু একটিবার আমরা যদি ভাবি যে বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষকি এইগুলা পাচ্ছে? যেকোন সময়ের সরকার দলের লোক ছাড়া ইনশাল্লাহ আর সবাই বলবেন যে “না”। আসলে আমরা “হ্যাঁ” বলবই বা কিভাবে? যে সময় যে দলই ক্ষমতায় আসে তাদের মতে তারাই একমাত্র আমাদের দেশকে সব দিতে পারছে। অন্যরা শুধু দেশকে নিয়ে খেলা করে। স্বাধীনতার পরবর্তি ৩৯ টা বছর ধরে এই প্রতিযোগীতার রাজনীতি চলে আসছে।

আসলে এদের গেরাকলে পড়ে ভুক্তভুগী হচ্ছে বা হচ্ছি আমরা সাধারন বা তাদের মত পথহারা মানুষ। আসুন আমরা একটূ গেরাকলের চিত্র দেখে আসি। খাদ্যঃ আমাদের দেশে এখনো অনেক মানুষ আছেন যারা ঠিকমত খেতে পান না। দু বেলা পেট পুরে ভাত খাওয়া যেন তাদের কাছে সপ্নের মতো মনে হয়। কিন্তু আমরা যারা সচ্ছল তারা কত খাবারই না নষ্ট করি।

আমরা কি পারি না তাদের মুখে খাবার তোলে দিতে? আমাদের কোন সরকার কি পেরেছে দেশের সব মানুষের মুখে খাবার তোলে দিতে? কিন্তু তারা নিজেদের খাবারের পিছনে কত্ত টাকা খরচ করে, তাও আবার নিজেদের পকেটের টাকা না! রমজান মাসের আল্লাহর প্রতিটা দিন তারা ইফতার পার্টির আয়োজন করে! দাওয়াত ও দেয় তাদের যাদের বাসায় ইফতারের অভাব নাই। যেখানে ওরা পথহারা শিশু, বৃদ্ব মানুষ মূখে খাবার তোলে দিতে পারছে না তারা কোন বিবেকে এত এত টাকা খরচ করে? বিলাসী খানা! নিজেকে কল্পনা করতে পারি আমরা এই জায়গায়? বিগত রমজানে একটা প্রতিবেদন দেখেছিলাম। ঐখানে দেখায় যে একটা বৃদ্ব লোক (প্রায় ৬৫+) সারাদিন রোজা রেখে রিকশা চালিয়ে সন্ধাবেলা পানি আর সামান্য কিছু খাবার দিয়ে ইফতার করে। লোকটার কাছে কিছু জানতে চাওয়া হলে সে বলে যে বড় বড় মানুষ ইফতারে কত কত খাবার খায় যেমন "কলা", "ডালিম", "আপেল" ইত্যাদি। তখন একটা জিনিস ভেবে অবাক হই যে অদের চিন্তা ভাবনা সুধু কলা, ডালিম, আপেল পর্যন্তই।

ওরা মনে হয়, “বড় বাপের পোলা”, “শিক কাবাব”, “বটি কাবাব”, “কিমা” এইগুলার নামও কল্পনা করে না। আর আমরাও তাদের এই নগন্য কল্পনাকেও সত্যি করতে পারি না। কিন্তু রমজান মাসে আমরা তাদের রিকশায় উঠে পায়ের উপর পা তোলে বলে “মামা, জোড়ে টানেন!” এই হলো আমাদের অবস্থা। আমাদের রাজনীতিবিদেরা যদি বড় বড় মানুষদেরকে খাইয়ে টাকা অপচয় না করে ওদের দিকে একটু মুখ তোলে তাকায় তাহলে আল্লাহ কি ওদের সাহায্য করবেন না? আমাদের নিজেদের এইরকম ব্যবহার আর রাজনীতিবিদদের করণীয় দেখে মন আপনা থেকে বলে উঠে “স্বার্থক জনম মাগো জন্মেছি এই দেশে, স্বার্থক জনম মাগো তোমায় ভালোবেসে!!” বস্ত্রঃ আমাদের দেশের পথহারা মানুষদেরকে আমরা রাস্তা ঘাটে প্রায়ই দেখি। তাদের পরনে আছে ছেড়া জামা কাপড়।

এই একটা কি দুইটা কাপড় তাদের সম্বল। কিন্তু আমরা এমন অনেকেই আছি যারা কিনা প্রতিদিন নতুন নতুন কাপড় পরি! একটি বার কি ভাবি ওদের কথা? ওরা কি করছে? ওরা কি পরছে? আসলে সত্যি কথা বলতে কি আমরা নিজেদের নিয়ে ভাবতে ভাবতে এমন উচ্চতায় চলে গেছি যে নিচে তাকানোর সুযোগটাও পাই না। বিলাসী পোশাক! নিজেকে কল্পনা করতে পারি আমরা এই জায়গায়? আমাদের সরকার, বোদ্বামহল কি পারছে এইগুলার সমাধান দিতে? তারাও আছে আমাদের মতো নিজেদের নিয়ে চিন্তা ভাবনায়। কখন ক্ষমতায় যাবে, কখন ক্ষমতায় যাবে। ওদের কথা ভাবার টাইম কই? আসলেই আমাদের টাইম নাই।

কিন্তু আমরা যদি ওদের কথা ভাবি তাহলে তো নিজেকে কোন্দিন বলতে পারব যে তুমি মানুষকে সাহায্য করেছিলে নিশ্চয়ই তোমার বিপদেও তুমি কারো সাহায্য পাবে। আমাদের রাজনীতিবিদেরা যদি ওদের দিকে একটু মুখ তোলে তাকায় তাহলে আল্লাহ কি ওদের সাহায্য করবেন না? আমাদের নিজেদের এইরকম ব্যবহার আর রাজনীতিবিদদের করণীয় দেখে মন আপনা থেকে বলে উঠে “স্বার্থক জনম মাগো জন্মেছি এই দেশে, “স্বার্থক জনম মাগো তোমায় ভালোবেসে!!” বাসস্থান: এর কথা না বললেও চলে। নিউ মার্কেট এর সামনে, পলাশীর মোড়ে, সহ ঢাকার আরো অনেক জায়গায় দেখা যায় তাদের বসবাসের জায়গা। একটু বৃষ্টি হলেই তাদের পলিথিনের তৈরী ঘর নষ্ট হয়ে যায়। এই অবস্থায় কোলের বাচ্ছাকে নিয়ে তাদের বেঁচে থাকতে হয় মৃত্যু পর্যন্ত।

এই জন্যই কি তারা স্বাধীন হয়েছিল? নিশ্চয়ই না। তাহলে তাদের অধিকার কোথায়? সংসদের প্রতিটা সাংসদের জন্য নতুন বাড়ি তৈরী করা হয় যাতে তাদের কোন কষ্ট না হয়। কিন্তু যাদের ভোটে তারা এই পর্যন্ত আসতে পেরেছে তাদের কষ্ট দেখার কেউ নাই। কারো কারো নামে কয়েকটা বাড়ি আছে কিন্তু তাদের অনেকের নামে একটা থাকার ঘরও নাই! বিলাসী বাড়ি নিজেকে কল্পনা করতে পারি আমরা এই জায়গায়? আসলেই কি তারা স্বাধীন হয়েছে? তারা কি এখন পর্যন্ত পরাধীন না এই রাজনীতির গেরাকলের কাছে? তাদের ছোট বাচ্চারা কি বড় হতে হতে বলবে না যে “স্বার্থক জনম মাগো জন্মেছি এই দেশে”। চিকিৎসাঃ চিকিৎসার কথা শুনলে প্রথমেই মুঞ্চায় একটু হাসি দিতে! অবস্থা এখন এমন হয়েছে যে বেশী জোড়ে হাচি বা কাশি দিলে দেশের বাহিরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়।

কিন্তু প্রতিদিন কত শত মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে তার ইয়ত্তা কি সরকারের কোন লোকের কাছে আছে? সরকারী টাকায় প্রতি মাসে চেক আপ করাতে হয় কিন্তু এই গরীব মানুষদের চিকিৎসার বেলায় “কি হবে এত ডাক্তার দেখিয়ে, আল্লাহ যেদিন ডাকবেন সেইদিনই তো যেতে হবে” এই টাইপের আবস্থা। আসলেই মা, আমার জনম স্বার্থক যে আমি এই দেশে জন্মেছি। আমরা কি পারি না ওদের জন্য কিছু করতে? আমাদের সরকারের দায়িত্বের মধ্যে কি তাদের সুখ প্রাধান্য পায় না? একটু ভেবে বলবেন প্লীজ। সবাই ভালো থাকবেন।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।